শাহ নিসতার জাহান
গত ২৩ আগস্ট ভারতের একটি মহাকাশ যান চাঁদে গেছে। আমাদের পত্রিকাগুলো খুব সংগত কারণেই তা উৎসাহ নিয়ে প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে আমাদেরও বেশ আগ্রহ ছিল। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছিল নানা মন্তব্য; বিশেষ করে ফেসবুক দেখলে মনে হবে, এরপর আমাদের আর মান-সম্মান
থাকছে না! অনেকে দুষছেন এ দেশের মুসলমানের ধর্মকে, দুষছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।
আমি এই জীবনে এমন কোনো দেশের নাম জানি না, যেখানে মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য উপাসনালয় নেই; বরং আমার মনে হয় ওই সব দেশে উপাসনালয়ের সংখ্যা অনেক, অন্তত মানুষের তুলনায়। যেমন খ্রিষ্টানদের ৮ থেকে ১০টি শাখা। কেউ কারও চার্চে যাবে না। সবারই চাই ভিন্ন ভবন। আবার সাদা-কালো এক জায়গায় যাবে না। তাদেরও ভিন্ন ব্যবস্থা।
আবার যাদের চাঁদ ভ্রমণের বিষয় নিয়ে আমাদের এত উৎসাহ, তাদের বিজ্ঞানীরা যানটি আকাশে পাঠানোর সময় কীভাবে মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করলেন (আমরা অনেকেই সেটি নিয়েও হাসাহাসি করলাম, খোঁচা দিলাম, টিপ্পনী কাটলাম), তারপরও আমরা মুসলমানের ধর্মকে গালি না দিয়ে পারলাম না। যেন আমরা ধর্ম পালন না করলে, অন্তত মুসলমান না হলে, সবাই চাঁদে গিয়ে বসে থাকতে পারতাম! কিংবা অন্তত মাদ্রাসা না থাকলেই কাজটি হয়ে যেত। বললাম, আমরা মসজিদ করছি, নারীদের আটকে রাখছি, এসব কারণে আমরা পিছিয়ে; যেন ভারতে এগুলো নেই।
অনেকে মাদ্রাসা শিক্ষাকে ইঙ্গিত করে বলছেন, তারাই তো এখন চাঁদে যাবে। এ রকম বহু কথা সেখানে। আসলে আমরা বোধ হয় একটু ভুল করছি, ধর্ম তার জায়গায় সব সময় ছিল, থাকে, থাকবে। কিন্তু আসল উদ্যোগ নিতে হয় রাষ্ট্রকে। রাষ্ট্র ভোটাধিকার দেয়, দুর্নীতি কমায়, পুলিশের বাড়াবাড়ি থামায়, ভালো শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেয়, ভালো শিক্ষক দেয় ইত্যাদি।
সব মিলিয়ে তৈরি হয় একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ। যার নিশ্চয়তা অবশ্যই রাষ্ট্র করে এবং তাকেই করতে হবে। ভারতে এর কোনো বিষয়ে কমতি আছে বলে আমি মনে করি না। বিপরীতভাবে আমাদের সম্পর্কে কী বলা যায়? আবার এই যে একপক্ষ মসজিদ, ইসলাম, মুসলমান ইত্যাদিকে ধুয়ে দিচ্ছে, অন্য পক্ষ ভাবখানা এমন করছে যেন চাঁদে গেছে তো কী হয়েছে! মানে ওসব চাঁদে যাওয়ার চেয়ে আমরা আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করব—এমনি ধারায় তাদের বক্তব্য। তারা (দুপক্ষ) একটি দেশের সক্ষমতার কথা ভাবছে বলে মনে হয় না। একটু নজর দিলেই দেখা যাবে এখানেও রয়েছে পক্ষ-বিপক্ষ। মানে, ঘৃণা।
আমাদের দেশে শিক্ষকদের মর্যাদা এখন সর্বনিম্নে। আমলারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মাথা বাড়িয়ে আছেন। তাঁদের হাতে মোটামুটি এ কাজটিই বাকি আছে। মিলিটারিরা বহু আগে, নিজেদের উদ্যোগে ওসব করেছে। সাধারণ জনতা তাদের মতো পারে না, এমন তাদের বিশ্বাস। বিশ্বে কোথাও মিলিটারিরা শিক্ষা, ব্যবসা ইত্যাদি কাজে এত সময় দেয়, এমন নজির নেই। এ ক্ষেত্রে আমাদের মিলিটারি, পুলিশদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো।
সাংবাদিক, আমলা, এনজিও কর্মকর্তা সবারই ধারণা, তাঁরই উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো এবং এ কাজে তিনিই সবচেয়ে যোগ্য। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে ভালো পড়াবেন এবং সেটিই হওয়া উচিত। এ দেশের আমলারা একবারও ভাবেন না যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সব অপদার্থ শিক্ষক না থাকলে তিনি আমলা হতে পারতেন না, হতেন কাঠমিস্ত্রি বা ওস্তাগার। এখন এসব অপদার্থ শিক্ষক-শ্রেণির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়।
তাঁরা বহু ক্ষেত্রে অযোগ্যতার প্রমাণও দিচ্ছেন। তাঁরা পড়ছেন না, পড়াচ্ছেন না, এমনকি অন্যকে পথ দেখানোর যোগ্যতা তাঁদের নেই। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, তাঁরা কিছু না করেই পদোন্নতি নিচ্ছেন—খুব গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ এবং সব সময় মিথ্যা নয়।
যদি পদোন্নতির কথা আগে ধরি, তাহলে, আমরা কি আমলাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি এই সমস্যা দেখছি না? হতে পারে একজন শিক্ষক একটু কম মানের জার্নালে লিখেছেন, হতে পারে তাঁর লেখার মান ভালো নয়। কিন্তু শূন্য হাতে, শুধুই পায়ে ধরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতি কি হয়? হলে কতজন? আমরা খুব বেশি উদাহরণ দিতে পারব কি? কিন্তু অযোগ্য আমলা, পুলিশ, এবংবিধ ক্ষেত্রের কথা ধরলে তা হবে শত শত।
কত রকমের সুযোগ-সুবিধা তাঁদের? আবার অন্যভাবে, যাঁরা ভালো শিক্ষক, ভালো পড়ান, শিক্ষার্থীদের পড়তে বলেন—এমন কোনো শিক্ষককে আমরা কোথাও ডাকি? সব তো অযোগ্যরা দখল করে আছে। একজন আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন শিক্ষক নিশ্চয় আমাদের টেবিলের পায়া ধরে বসে থাকবেন না। তাঁকে আমাদের চিনে বের করতে হবে।
আবার এ দেশে নাকি সব হয় তদবিরে; মানে, শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে কথা। আপনাদের কি একবারও মনে হয় না এর পেছনে রয়েছে সততার অভাব? তার পেছনে ওই রাজনীতি? এ দেশে ভিসি নিয়োগ হয় দল দেখে। আমরা বলতেও পারি না, দলের ভিসি নয়, শিক্ষিত ভিসি চাই! বলব না। কারণ, সেই ভিসি যদি আবার আপনার-আমার দলের বাইরের কিংবা অন্তত পছন্দের মতো কেউ না হন! আপনি বিপদ দেখছেন চারদিকে। বহু অসততার পরও কি আমাদের দেশে বছরের পর বছর মন্ত্রী, এমপি, ভিসি, আমলাদের পদে রাখা হচ্ছে না?
আমাদের ফেসবুকে তাঁদেরই ছবিসহ একটি পোস্ট দিয়ে আমরা নিজেকে ধন্য করছি না? যাঁর অসততা প্রমাণিত, তাঁকে বারবার কেন দলের টিকিট দেওয়া হবে, মন্ত্রী বানানো হবে? বানানো যে কেন হয় আমরা জানি। তার প্রতিফলন শিক্ষাক্ষেত্রে থাকবে না, এমন ভাবা বোকামি।
এ দেশে একটি শিক্ষিত শ্রেণি তৈরি হয়নি। ফলে আমাদের দক্ষ আমলা নেই, মন্ত্রী নেই, শিক্ষক নেই। এই যে নেই, আমরা সেটি হতেও দিতে চাই না। ফলে এখানে সবাই সব বিষয়ে কথা বলে—রাস্তায় ডুগডুগি বাজানো থেকে হালের মহাকাশচর্চা পর্যন্ত। এর পেছনে রয়েছে গণতন্ত্রের অভাব। আবার আমাদের রয়েছে অদ্ভুত মনস্তত্ত্ব। সে ভোট দিতে চায়, মানে ‘গণতন্ত্রও’ চায়। কিন্তু নির্বাচন দিতে চায় না।
তার বিপরীত কেউ ক্ষমতায় যাক তা তো চায়ই না। আমাদের দেশে আমলা-রাজনীতিকেরা যত দুর্নীতিপরায়ণ, তার ছিটেফোঁটাও কি ভারতে আছে? নেই। ভারতের একজন আমলাকে দিয়ে তাঁর দেশের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করাতে পারবেন? কিন্তু আপনার দেশের একজন আমলাকে কিনতে কতক্ষণ লাগবে, কিংবা কত টাকা? আর রাজনীতিক কেনা তো নফর কেনার মতো। নিমেষে বিক্রি হন তাঁরা।
আমাদের রাজকোষ এমন শূন্য হলো কেমন করে তার হিসাব তো নিয়মিত বিরতিতে আমরা পাচ্ছি। এগুলো নিশ্চয়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা করছেন না। কিন্তু এই নানাবিধ দুর্বৃত্তায়ন থেকে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় দূরে থাকে কেমন করে? তাহলে শুধু ধর্ম আর বিশ্ববিদ্যালয়কে টেনে এনে তো লাভ হবে না। মূলে হাত দিন আগে। সেটি তো দিতে চান না। জটলা কিংবা জটিলতা ওখানে; মানে ওই স্বার্থের রাজনীতিতে, যা আমরা প্রায়ই ভুলে থাকি।
লেখক: শাহ নিসতার জাহান, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
গত ২৩ আগস্ট ভারতের একটি মহাকাশ যান চাঁদে গেছে। আমাদের পত্রিকাগুলো খুব সংগত কারণেই তা উৎসাহ নিয়ে প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে আমাদেরও বেশ আগ্রহ ছিল। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছিল নানা মন্তব্য; বিশেষ করে ফেসবুক দেখলে মনে হবে, এরপর আমাদের আর মান-সম্মান
থাকছে না! অনেকে দুষছেন এ দেশের মুসলমানের ধর্মকে, দুষছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের।
আমি এই জীবনে এমন কোনো দেশের নাম জানি না, যেখানে মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য উপাসনালয় নেই; বরং আমার মনে হয় ওই সব দেশে উপাসনালয়ের সংখ্যা অনেক, অন্তত মানুষের তুলনায়। যেমন খ্রিষ্টানদের ৮ থেকে ১০টি শাখা। কেউ কারও চার্চে যাবে না। সবারই চাই ভিন্ন ভবন। আবার সাদা-কালো এক জায়গায় যাবে না। তাদেরও ভিন্ন ব্যবস্থা।
আবার যাদের চাঁদ ভ্রমণের বিষয় নিয়ে আমাদের এত উৎসাহ, তাদের বিজ্ঞানীরা যানটি আকাশে পাঠানোর সময় কীভাবে মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করলেন (আমরা অনেকেই সেটি নিয়েও হাসাহাসি করলাম, খোঁচা দিলাম, টিপ্পনী কাটলাম), তারপরও আমরা মুসলমানের ধর্মকে গালি না দিয়ে পারলাম না। যেন আমরা ধর্ম পালন না করলে, অন্তত মুসলমান না হলে, সবাই চাঁদে গিয়ে বসে থাকতে পারতাম! কিংবা অন্তত মাদ্রাসা না থাকলেই কাজটি হয়ে যেত। বললাম, আমরা মসজিদ করছি, নারীদের আটকে রাখছি, এসব কারণে আমরা পিছিয়ে; যেন ভারতে এগুলো নেই।
অনেকে মাদ্রাসা শিক্ষাকে ইঙ্গিত করে বলছেন, তারাই তো এখন চাঁদে যাবে। এ রকম বহু কথা সেখানে। আসলে আমরা বোধ হয় একটু ভুল করছি, ধর্ম তার জায়গায় সব সময় ছিল, থাকে, থাকবে। কিন্তু আসল উদ্যোগ নিতে হয় রাষ্ট্রকে। রাষ্ট্র ভোটাধিকার দেয়, দুর্নীতি কমায়, পুলিশের বাড়াবাড়ি থামায়, ভালো শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেয়, ভালো শিক্ষক দেয় ইত্যাদি।
সব মিলিয়ে তৈরি হয় একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ। যার নিশ্চয়তা অবশ্যই রাষ্ট্র করে এবং তাকেই করতে হবে। ভারতে এর কোনো বিষয়ে কমতি আছে বলে আমি মনে করি না। বিপরীতভাবে আমাদের সম্পর্কে কী বলা যায়? আবার এই যে একপক্ষ মসজিদ, ইসলাম, মুসলমান ইত্যাদিকে ধুয়ে দিচ্ছে, অন্য পক্ষ ভাবখানা এমন করছে যেন চাঁদে গেছে তো কী হয়েছে! মানে ওসব চাঁদে যাওয়ার চেয়ে আমরা আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করব—এমনি ধারায় তাদের বক্তব্য। তারা (দুপক্ষ) একটি দেশের সক্ষমতার কথা ভাবছে বলে মনে হয় না। একটু নজর দিলেই দেখা যাবে এখানেও রয়েছে পক্ষ-বিপক্ষ। মানে, ঘৃণা।
আমাদের দেশে শিক্ষকদের মর্যাদা এখন সর্বনিম্নে। আমলারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মাথা বাড়িয়ে আছেন। তাঁদের হাতে মোটামুটি এ কাজটিই বাকি আছে। মিলিটারিরা বহু আগে, নিজেদের উদ্যোগে ওসব করেছে। সাধারণ জনতা তাদের মতো পারে না, এমন তাদের বিশ্বাস। বিশ্বে কোথাও মিলিটারিরা শিক্ষা, ব্যবসা ইত্যাদি কাজে এত সময় দেয়, এমন নজির নেই। এ ক্ষেত্রে আমাদের মিলিটারি, পুলিশদের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো।
সাংবাদিক, আমলা, এনজিও কর্মকর্তা সবারই ধারণা, তাঁরই উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো এবং এ কাজে তিনিই সবচেয়ে যোগ্য। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে ভালো পড়াবেন এবং সেটিই হওয়া উচিত। এ দেশের আমলারা একবারও ভাবেন না যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সব অপদার্থ শিক্ষক না থাকলে তিনি আমলা হতে পারতেন না, হতেন কাঠমিস্ত্রি বা ওস্তাগার। এখন এসব অপদার্থ শিক্ষক-শ্রেণির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়।
তাঁরা বহু ক্ষেত্রে অযোগ্যতার প্রমাণও দিচ্ছেন। তাঁরা পড়ছেন না, পড়াচ্ছেন না, এমনকি অন্যকে পথ দেখানোর যোগ্যতা তাঁদের নেই। সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, তাঁরা কিছু না করেই পদোন্নতি নিচ্ছেন—খুব গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ এবং সব সময় মিথ্যা নয়।
যদি পদোন্নতির কথা আগে ধরি, তাহলে, আমরা কি আমলাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি এই সমস্যা দেখছি না? হতে পারে একজন শিক্ষক একটু কম মানের জার্নালে লিখেছেন, হতে পারে তাঁর লেখার মান ভালো নয়। কিন্তু শূন্য হাতে, শুধুই পায়ে ধরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতি কি হয়? হলে কতজন? আমরা খুব বেশি উদাহরণ দিতে পারব কি? কিন্তু অযোগ্য আমলা, পুলিশ, এবংবিধ ক্ষেত্রের কথা ধরলে তা হবে শত শত।
কত রকমের সুযোগ-সুবিধা তাঁদের? আবার অন্যভাবে, যাঁরা ভালো শিক্ষক, ভালো পড়ান, শিক্ষার্থীদের পড়তে বলেন—এমন কোনো শিক্ষককে আমরা কোথাও ডাকি? সব তো অযোগ্যরা দখল করে আছে। একজন আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন শিক্ষক নিশ্চয় আমাদের টেবিলের পায়া ধরে বসে থাকবেন না। তাঁকে আমাদের চিনে বের করতে হবে।
আবার এ দেশে নাকি সব হয় তদবিরে; মানে, শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে কথা। আপনাদের কি একবারও মনে হয় না এর পেছনে রয়েছে সততার অভাব? তার পেছনে ওই রাজনীতি? এ দেশে ভিসি নিয়োগ হয় দল দেখে। আমরা বলতেও পারি না, দলের ভিসি নয়, শিক্ষিত ভিসি চাই! বলব না। কারণ, সেই ভিসি যদি আবার আপনার-আমার দলের বাইরের কিংবা অন্তত পছন্দের মতো কেউ না হন! আপনি বিপদ দেখছেন চারদিকে। বহু অসততার পরও কি আমাদের দেশে বছরের পর বছর মন্ত্রী, এমপি, ভিসি, আমলাদের পদে রাখা হচ্ছে না?
আমাদের ফেসবুকে তাঁদেরই ছবিসহ একটি পোস্ট দিয়ে আমরা নিজেকে ধন্য করছি না? যাঁর অসততা প্রমাণিত, তাঁকে বারবার কেন দলের টিকিট দেওয়া হবে, মন্ত্রী বানানো হবে? বানানো যে কেন হয় আমরা জানি। তার প্রতিফলন শিক্ষাক্ষেত্রে থাকবে না, এমন ভাবা বোকামি।
এ দেশে একটি শিক্ষিত শ্রেণি তৈরি হয়নি। ফলে আমাদের দক্ষ আমলা নেই, মন্ত্রী নেই, শিক্ষক নেই। এই যে নেই, আমরা সেটি হতেও দিতে চাই না। ফলে এখানে সবাই সব বিষয়ে কথা বলে—রাস্তায় ডুগডুগি বাজানো থেকে হালের মহাকাশচর্চা পর্যন্ত। এর পেছনে রয়েছে গণতন্ত্রের অভাব। আবার আমাদের রয়েছে অদ্ভুত মনস্তত্ত্ব। সে ভোট দিতে চায়, মানে ‘গণতন্ত্রও’ চায়। কিন্তু নির্বাচন দিতে চায় না।
তার বিপরীত কেউ ক্ষমতায় যাক তা তো চায়ই না। আমাদের দেশে আমলা-রাজনীতিকেরা যত দুর্নীতিপরায়ণ, তার ছিটেফোঁটাও কি ভারতে আছে? নেই। ভারতের একজন আমলাকে দিয়ে তাঁর দেশের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করাতে পারবেন? কিন্তু আপনার দেশের একজন আমলাকে কিনতে কতক্ষণ লাগবে, কিংবা কত টাকা? আর রাজনীতিক কেনা তো নফর কেনার মতো। নিমেষে বিক্রি হন তাঁরা।
আমাদের রাজকোষ এমন শূন্য হলো কেমন করে তার হিসাব তো নিয়মিত বিরতিতে আমরা পাচ্ছি। এগুলো নিশ্চয়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা করছেন না। কিন্তু এই নানাবিধ দুর্বৃত্তায়ন থেকে কেবল বিশ্ববিদ্যালয় দূরে থাকে কেমন করে? তাহলে শুধু ধর্ম আর বিশ্ববিদ্যালয়কে টেনে এনে তো লাভ হবে না। মূলে হাত দিন আগে। সেটি তো দিতে চান না। জটলা কিংবা জটিলতা ওখানে; মানে ওই স্বার্থের রাজনীতিতে, যা আমরা প্রায়ই ভুলে থাকি।
লেখক: শাহ নিসতার জাহান, অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে