র‍্যাগিং সহ্য করতে না পেরে পালানোর চেষ্টা শিক্ষার্থীর

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২২, ০৭: ০৬

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষের একদল শিক্ষার্থীর র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. তারেক নামের ওই ভুক্তভোগী। গত মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, র‍্যাগিং সহ্য করতে না পেরে মেসের তিন তলার পাইপ বেয়ে পালাতে গিয়ে দোতলা পর্যন্ত নামেন ওই শিক্ষার্থী। পড়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে নিচে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি।

এদিকে লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী মো. তারেক জানান, ক্যাম্পাসের কাছের সন্তোষ আরিফ নগরের ছাত্রাবাসে গত ২৮ মার্চ রাতে দ্বিতীয় বর্ষের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম, আজমাইন, সেলিম, মাহিন ও রাহাত এবং ফার্মেসি বিভাগের সাফি ও আরও অনেকের দ্বারা র‍্যাগিংয়ের শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে লেখাপড়া চালানো কঠিন। অভিযোগপত্রে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার গভীর রাতে তারেককে টাঙ্গাইলের সন্তোষ আরিফ নগরে অবস্থিত ছাত্রাবাসের সামনে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় লোকজন, পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে মঙ্গলবার সকালে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনা হয়।

প্রদীপ শর্মা নামের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, র‍্যাগিং শয্যা করতে না পেরে তিন তলা থেকে পালাতে চেয়েছিল তারেক।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তারেক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক র‍্যাগিং এবং শারীরিক-মানসিক অত্যাচার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও রাতে তাঁরা বিভিন্ন মেসে ডেকে নিয়ে র‍্যাগিং করেন একদল শিক্ষার্থী। চলে শারীরিক নির্যাতনও। তিনি আরও বলেন, আমরা অসহায় আমাদের বলার কেউ নাই। এ ছাড়া কাকে বলব জানি না। বললে পরে আরও শাস্তি পেতে হয়।

জাহিদুল ইসতিয়াক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, অতিসম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীরা এসেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। কিন্তু র‍্যাগিং বিষয়টি আমরা একদম চাই না। আমরা আশা করব বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযোগের আলোকে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করব। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা র‍্যাগিং বন্ধে শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারসহ অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত