‘আজকে থাকি মোর মানিক দুইটার পড়ালেখার খরচের ভার কায় নিবে? আজকে থাকি মোর এই সংসারের খরচ কায় চালাইবে? মোর মানিক দুইটা যে পড়ালেখা করির না পাইলে নষ্ট হয়া যাইবে।’ বাড়ির উঠানে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সৌরভকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছিলেন দিনমজুর রণজিৎ রায়ের স্ত্রী সুনিতা রানী।

গত শনিবার সকাল আটটার দিকে রণজিৎ রায় (৩৫) বাইসাইকেলযোগে কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হন রংপুর নগরীর উদ্দেশে। গঙ্গাচড়া সদরের মনাকষা গ্রামে হাইজানির সেতুর কাছাকাছি এলে ইটভাঙার কাজে ব্যবহার করা একটি গাড়ি চাপা দেয়। ঘটনাস্থল থেকে গাড়িচালক ও হেলপাররা পালিয়ে যান। স্থানীয়রা দৌড়ে এসে আহত রণজিৎ রায়কে উদ্ধার করে রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। রণজিৎ রায়ের বাড়ি গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের ধামুর গ্রামে। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে সজীব রায় (১৬) গঙ্গাচড়া বিএম কলেজের ভোকেশনাল শাখায় নবম শ্রেণিতে পড়ে। ছোট ছেলে সৌরভ রায় (৯) ধামুর গ্রামে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় রনজিতের পায়ের হাড় ভেঙে গুঁড়া হয়ে যায়।

এ বিষয় গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম লেবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার বিষয়টি জেনে আহত রণজিৎকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর পা কেটে ফেলতে হতে পারে। এতে বিপদে পড়বে তাঁর পরিবারটি।’

গঙ্গাচড়া মডেল থানার এসআই রাব্বি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, রণজিৎ কিছুটা সুস্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’