এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
বিচারকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে ক্ষমা করা হবে না বলে বারবার সতর্ক করছেন হাইকোর্ট। খুলনায় এক বিচারকের সঙ্গে তিন আইনজীবীর অসদাচরণের ঘটনায় গত ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এমন সতর্কবার্তা দেন। সেই সঙ্গে সব জেলা আইনজীবী সমিতিকে এই বার্তা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আলাদা ঘটনায় পিরোজপুরের সরকারি কৌঁসুলিকে (পিপি) তলব করেও সতর্ক করা হয়। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী গত ২৭ ডিসেম্বর জেলা জজদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কোনো অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত করা যাবে না।’ কোনো বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটলে তা জানাতে বলেন তিনি।
এরপরও আদালতকক্ষে বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ আসছে সুপ্রিম কোর্টে। এতে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিচারপ্রার্থীদের। ক্ষুণ্ন হচ্ছে বিচার বিভাগের মর্যাদাও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় তিন আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করার পরও আদালত বর্জন করে চলেছেন আইনজীবীরা। ওই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস
অ্যাসোসিয়েশনসহ বিচারকদের কয়েকটি সংগঠন। বিচার বিভাগীয় অনেক কর্মকর্তা ফেসবুকে তাঁদের প্রোফাইলে কালো ছবি দিয়েছেন।
তিন আইনজীবীকে তলব করার পরও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক বিচারকের বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ২১ জন আইনজীবীকে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট হাজির হয়ে তাঁদের আচরণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন অনেক মিডিয়া আছে, সামাজিক মাধ্যমেও প্রচারিত হয়; সে জন্য অনেকেই জানে। এসব ঘটনা আগেও হতো। তখন মিডিয়া জানত না, গুরুত্ব পেত না। এখন যেখানেই হচ্ছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিচারকের বিচার করার স্বাধীনতা আছে। বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীসমাজ দুর্ব্যবহার করে না; এক-দুজন যারা করে, তাদের আমরা প্রশ্রয় দিই না। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকলে যাদের মামলা, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হন।’
আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ অবশ্য বলেন, রুল জারি হওয়ায় এটি বিচারাধীন বিষয়। আর বিচারাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
আদালতে গালাগাল
খুলনা বারের সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গত বছর নিজের এক জুনিয়র আইনজীবীর জমির খতিয়ান সংশোধন করতে মামলা করেছিলেন খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে। বিচারক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তা দিতে পারেননি সাইফুল। এরপর আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করলে সাইফুল সময় চান। আবেদন খারিজ হলে এজলাসেই বিচারককে গালাগাল করেন তিনি। জেলা জজ গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পাঠালে প্রধান বিচারপতি তা নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।
মক্কেলের জামিন না হলেও হুমকি
জানা যায়, কুষ্টিয়া বারের সভাপতি নূরুল ইসলাম দুলাল গত বছরের ২ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি জামিনের আবেদন নিয়ে যান। ওই জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে খেপে গিয়ে দুলাল বিচারককে হুমকি দেন। বিচারকও তাৎক্ষণিক এজলাস থেকে নেমে যান। পরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি মীমাংসা করেন।
বাইরে যেতে বলায় বিতণ্ড
অর্থ আত্মসাৎ মামলার এক আসামি গত বছরের ২৫ জুলাই জামিন নিতে পিরোজপুর আদালতে গেলে দুপক্ষের আইনজীবীরা বিবাদে জড়ান। একপর্যায়ে পিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের তখনকার প্রচার সম্পাদক খান মো. আলাউদ্দিন ওই আদালতে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। পরে বিচারক মামলাসংশ্লিষ্ট আইনজীবী ছাড়া অন্যদের চলে যেতে বলেন। এরপরও পিপি থাকতে চাইলে বিচারকের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পিপি বিচারককে গালাগাল করেন। পরে হাইকোর্ট পিপিকে তলব করলে তিনি হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে রেহাই পান।
বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্যবিধির কারণে এক আইনজীবীকে বেরিয়ে যেতে বলায় ওই আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। তবে ২০ মিনিট পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান বিচারকেরা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে গত শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয়েছে, কতিপয় আইনজীবী এজলাসকক্ষে বেআইনিভাবে বিচারিক কাজে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেন। একই সঙ্গে তাঁরা বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত ও অশালীন আচরণ করেন, যা অনভিপ্রেত, ন্যক্কারজনক ও দুঃখজনক। এতে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও সম্মান মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নিন্দনীয় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।
বেশ কয়েকজন বিচারকের সঙ্গে কথা বলেও তাঁদের ক্ষোভের কথা জানা যায়। তবে সঙ্গত কারণে কেউ প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। ক্ষোভ জানান অবসরপ্রাপ্ত একাধিক বিচারকও।
সম্পর্কের উন্নতি চান সবাই
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই তৎপর। অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই চায়, বার ও বেঞ্চের সম্পর্ক ভালো থাকুক। নইলে সঠিকভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিচারপ্রার্থীরা।’
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, বার কাউন্সিল এ বিষয়ে আগের চেয়ে সচেতন। বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্কের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘এগুলো হয়েই থাকে। তবে আমরা চাই, যাতে এসব না হয়। চেষ্টা করছি সমাধানের জন্য। এসব ঠিক হয়ে যাবে।’
সামনে এসেছে নৈতিকতা
সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে কোনো দিন বিচারকদের সঙ্গে এ রকম হয়নি, এখন কেন হচ্ছে? আমাদের নৈতিকতা বোধ, দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি—এসব কারণে। কেউ কাউকে এখন মানুষ মনে করে না। কেউ কাউকে মানে না, সততা নেই। সবারই নেতা হওয়ার শখ।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘দেশে সুশাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। এ জন্যই এ রকম হচ্ছে। সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে চলতে দিচ্ছে না। এর সমাধানের জন্য মাসদার হোসেন মামলার রায় ফলো করতে হবে।’
বিচারকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে ক্ষমা করা হবে না বলে বারবার সতর্ক করছেন হাইকোর্ট। খুলনায় এক বিচারকের সঙ্গে তিন আইনজীবীর অসদাচরণের ঘটনায় গত ২৩ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এমন সতর্কবার্তা দেন। সেই সঙ্গে সব জেলা আইনজীবী সমিতিকে এই বার্তা পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলকে নির্দেশ দেওয়া হয়। আলাদা ঘটনায় পিরোজপুরের সরকারি কৌঁসুলিকে (পিপি) তলব করেও সতর্ক করা হয়। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী গত ২৭ ডিসেম্বর জেলা জজদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কোনো অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত করা যাবে না।’ কোনো বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটলে তা জানাতে বলেন তিনি।
এরপরও আদালতকক্ষে বিচারকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ আসছে সুপ্রিম কোর্টে। এতে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিচারপ্রার্থীদের। ক্ষুণ্ন হচ্ছে বিচার বিভাগের মর্যাদাও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় তিন আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব করার পরও আদালত বর্জন করে চলেছেন আইনজীবীরা। ওই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস
অ্যাসোসিয়েশনসহ বিচারকদের কয়েকটি সংগঠন। বিচার বিভাগীয় অনেক কর্মকর্তা ফেসবুকে তাঁদের প্রোফাইলে কালো ছবি দিয়েছেন।
তিন আইনজীবীকে তলব করার পরও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক বিচারকের বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ২১ জন আইনজীবীকে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট হাজির হয়ে তাঁদের আচরণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন অনেক মিডিয়া আছে, সামাজিক মাধ্যমেও প্রচারিত হয়; সে জন্য অনেকেই জানে। এসব ঘটনা আগেও হতো। তখন মিডিয়া জানত না, গুরুত্ব পেত না। এখন যেখানেই হচ্ছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিচারকের বিচার করার স্বাধীনতা আছে। বিচারকদের সঙ্গে আইনজীবীসমাজ দুর্ব্যবহার করে না; এক-দুজন যারা করে, তাদের আমরা প্রশ্রয় দিই না। বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক না থাকলে যাদের মামলা, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হন।’
আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ অবশ্য বলেন, রুল জারি হওয়ায় এটি বিচারাধীন বিষয়। আর বিচারাধীন বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
আদালতে গালাগাল
খুলনা বারের সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গত বছর নিজের এক জুনিয়র আইনজীবীর জমির খতিয়ান সংশোধন করতে মামলা করেছিলেন খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে। বিচারক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাইলে তা দিতে পারেননি সাইফুল। এরপর আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করলে সাইফুল সময় চান। আবেদন খারিজ হলে এজলাসেই বিচারককে গালাগাল করেন তিনি। জেলা জজ গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে পাঠালে প্রধান বিচারপতি তা নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।
মক্কেলের জামিন না হলেও হুমকি
জানা যায়, কুষ্টিয়া বারের সভাপতি নূরুল ইসলাম দুলাল গত বছরের ২ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি জামিনের আবেদন নিয়ে যান। ওই জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে খেপে গিয়ে দুলাল বিচারককে হুমকি দেন। বিচারকও তাৎক্ষণিক এজলাস থেকে নেমে যান। পরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিষয়টি মীমাংসা করেন।
বাইরে যেতে বলায় বিতণ্ড
অর্থ আত্মসাৎ মামলার এক আসামি গত বছরের ২৫ জুলাই জামিন নিতে পিরোজপুর আদালতে গেলে দুপক্ষের আইনজীবীরা বিবাদে জড়ান। একপর্যায়ে পিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের তখনকার প্রচার সম্পাদক খান মো. আলাউদ্দিন ওই আদালতে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। পরে বিচারক মামলাসংশ্লিষ্ট আইনজীবী ছাড়া অন্যদের চলে যেতে বলেন। এরপরও পিপি থাকতে চাইলে বিচারকের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পিপি বিচারককে গালাগাল করেন। পরে হাইকোর্ট পিপিকে তলব করলে তিনি হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে রেহাই পান।
বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্যবিধির কারণে এক আইনজীবীকে বেরিয়ে যেতে বলায় ওই আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। তবে ২০ মিনিট পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান বিচারকেরা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে গত শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয়েছে, কতিপয় আইনজীবী এজলাসকক্ষে বেআইনিভাবে বিচারিক কাজে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেন। একই সঙ্গে তাঁরা বিচারকের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত ও অশালীন আচরণ করেন, যা অনভিপ্রেত, ন্যক্কারজনক ও দুঃখজনক। এতে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও সম্মান মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নিন্দনীয় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।
বেশ কয়েকজন বিচারকের সঙ্গে কথা বলেও তাঁদের ক্ষোভের কথা জানা যায়। তবে সঙ্গত কারণে কেউ প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। ক্ষোভ জানান অবসরপ্রাপ্ত একাধিক বিচারকও।
সম্পর্কের উন্নতি চান সবাই
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই তৎপর। অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই চায়, বার ও বেঞ্চের সম্পর্ক ভালো থাকুক। নইলে সঠিকভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিচারপ্রার্থীরা।’
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, বার কাউন্সিল এ বিষয়ে আগের চেয়ে সচেতন। বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্কের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘এগুলো হয়েই থাকে। তবে আমরা চাই, যাতে এসব না হয়। চেষ্টা করছি সমাধানের জন্য। এসব ঠিক হয়ে যাবে।’
সামনে এসেছে নৈতিকতা
সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে কোনো দিন বিচারকদের সঙ্গে এ রকম হয়নি, এখন কেন হচ্ছে? আমাদের নৈতিকতা বোধ, দেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি—এসব কারণে। কেউ কাউকে এখন মানুষ মনে করে না। কেউ কাউকে মানে না, সততা নেই। সবারই নেতা হওয়ার শখ।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘দেশে সুশাসন নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। এ জন্যই এ রকম হচ্ছে। সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে চলতে দিচ্ছে না। এর সমাধানের জন্য মাসদার হোসেন মামলার রায় ফলো করতে হবে।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে