জায়েদুল আহসান
রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তার কাজ ছিল না। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর আরও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের যাঁরা জেনে-শুনে-বুঝে খুনিদের হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে সহায়তা করেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং বিচারের পথ বন্ধ করেছেন, তাঁদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৭তম বার্ষিকীতে এসেও আমরা সেই উদ্যোগটি দেখতে পাইনি।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালের মার্চ থেকেই প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়। খুনিরা তখন থেকেই ক্যান্টনমেন্ট, মেজর রশিদের বাসভবন, কুমিল্লার বার্ড, গাজীপুরের সালনা, খন্দকার মোশতাকের পুরান ঢাকার আগামসি লেন ও কুমিল্লার দাউদকান্দির বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। খুনিরা তাদের অভিপ্রায়ের কথা সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল জিয়াকেও অবহিত করেছিল। জিয়া তাতে নিজে জড়াবেন না বললেও ষড়যন্ত্র ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে যাঁরা বিদ্রোহ করেন এবং বিদ্রোহে উসকানি দেন বা উৎসাহিত করেন, তাঁরা যেমন দোষী, তেমনি যাঁরা বিদ্রোহের প্রস্তুতির খবর পেয়ে চুপ থাকেন অথবা যাঁরা বিদ্রোহ প্রত্যক্ষ করে তা দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগে বিরত থাকেন, তাঁরাও দোষী। সেনা অভ্যন্তরে কোনো বিদ্রোহ বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার খবর কোনো সেনাসদস্য বা কর্মকর্তা জানতে পারলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা তাঁর কর্তব্য। সেই কর্তব্য পালনে ব্যর্থতার দায়ে তাঁকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়।
বঙ্গবন্ধু দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে গোয়েন্দাদের নজরের আওতায় থাকার কথা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড শুধু এক রাতের সিদ্ধান্তে হয়নি, দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছিল, সেই ষড়যন্ত্র আঁচ করতে না পারা এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আক্রমণের সময় গোয়েন্দাদের কোনো তৎপরতা না থাকার ব্যর্থতার জন্য সেই সময়ের সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দাপ্রধান বা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসভবনে আক্রমণের খবর স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকে টেলিফোন করে বাহিনীপ্রধানকে জানাতে হয়েছে। এরপরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তাঁকেও সামরিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি করার কথা।
যেসব ব্যাটালিয়ন বা ব্রিগেডের সৈনিক বা অফিসাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই সব কমান্ডারকে সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনা উচিত ছিল। সামরিক বাহিনীর মধ্যকার চেইন অব কমান্ড ভঙ্গকারীদের দমাতে ব্যর্থতার দায় তাঁদের কাঁধেও বর্তায়।
সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিট মুভ করলে জিএস ব্রাঞ্চ, এমও ডিরেক্টর, এমআই ডিরেক্টর ও ট্রেনিং ডিরেক্টরকেও অবহিত করতে হয়। সেনাবাহিনীর দুটি ইউনিট ১৫ আগস্ট খুনি মেজর ফারুক ও মেজর রশিদের নেতৃত্বে মুভ করে। তারা ৪৬ ব্রিগেডের অধীনে হলেও ৪৬ ব্রিগেড ওই মুভ সম্পর্কে কিছুই জানত না। এসব ইউনিটের কর্মরত অধিনায়কদেরও কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা।
১৮ আগস্ট সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর দপ্তরে সব সিনিয়র অফিসারদের বৈঠকে খুনিদের আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরও খুনিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় সিনিয়র অফিসারদেরই নিতে হবে। খুনিরা প্রকাশ্যে খুনের কথা স্বীকার করার পরও তাঁদের সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকায় অবস্থানরত সক্রিয় প্রতিটি কমান্ডের অধিনায়কদেরও নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়েও বলা হয়েছে, ‘এই মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যাঁরা ঢাকায় ছিলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালন করেননি, এমনকি দায়িত্ব পালনের কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করেননি, যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও।’
১৫ আগস্টে দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পর উপরাষ্ট্রপতি বহাল থাকা অবস্থায় খন্দকার মোশতাকের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে, রেডিওতে ভাষণ দিয়ে খুনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বাহিনীপ্রধানেরাও রাষ্ট্রপতি হত্যাকে অনুমোদন দিয়ে খুনিদের সহায়তা করেছেন। তাঁরা যতই বলেন না কেন চাপে পড়ে মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন বা গৃহযুদ্ধ এড়াতে করেছেন, সেটা গ্রহণযোগ্য কোনো যুক্তি নয়। হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে না পারলেও পরবর্তীকালে কয়েকজন খুনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারার দায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা এড়াতে পারেন না।
জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারে সামরিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতাই শুধু নয়, ব্যর্থ ছিলেন রাজনীতিবিদেরাও। তাঁরাও খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, এ জন্য তাঁদেরও দায় নিতে হবে।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে যাঁরা বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন, পাশাপাশি সংসদে যে ২৪১ জন সদস্য ভোট দিয়ে ওই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করার দায়ে অপরাধ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর মৃতদেহ ডিঙিয়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাও অপরাধী। যে পরিস্থিতিতেই হোক তাঁরা খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। যুদ্ধের ময়দানে যদি কোনো সৈনিক প্রতিপক্ষের ভয়ে গুলি ছোড়া থেকে বিরত থাকেন, তাঁকে যেমন কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়, তেমনি বঙ্গবন্ধুর সহচর যাঁরা সেদিনই মোশতাকের মন্ত্রিসভায় গিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক অপরাধী।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিটি সরকারই খুনিদের নিরাপত্তা দিয়েছে। আনুকূল্য দিয়েছে। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ তাঁদের পেছনে ব্যয় করেছে। আদালতের রায়ে দণ্ডিত না হলেও যেহেতু তাঁরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন, তাই আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খন্দকার মোশতাকের মতোই জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া অপরাধ করেছেন। একই সঙ্গে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ রেখে তাঁরা আরও একটি অপরাধ করেছেন।
১৯৭৬ সালের ৮ জুন ১২ খুনিকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়। ফারুক আর রশিদ চাকরি নেননি। তাঁরা জিয়াকে দিয়ে তাঁদের আরও কিছু অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চান। এ নিয়ে বিরোধে ফারুক-রশিদ একাধিকবার অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেন। ১৯৭৭ সালের ১ মার্চ জিয়াবিরোধী সেনাবিদ্রোহের দায়ে ফারুকের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।
১৯৮০ সালের ১৭ জুন আরেকটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের দায়ে খুনিদের কয়েকজনকে সামরিক আইনে সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ায় ডালিম, হুদা ও নূর দূতাবাসের কাজ ফেলে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যান। ঢাকায় আজিজ পাশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজসাক্ষী হলে জিয়াউর রহমান তাঁকে আবারও কূটনীতিকের দায়িত্ব দিয়ে রোমে পাঠান।
এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে জিয়ার সময় যে কয়জন কর্মস্থল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের বকেয়া বেতন দিয়ে পুনর্বহাল করেন। এরপর ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরেও খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি ও পদোন্নতির ধারা অব্যাহত রাখেন।
১৯৯৬ সালের জুন মাসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ৬ খুনিকে চাকরিচ্যুত করে। ১৯৯৮ সালে বিচার আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ওই বছরের অক্টোবরে খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসেন। তারপর সুপ্রিম কোর্টে এই বিচারের কার্যক্রম পুরোপুরি আটকে যায়। ২০০২ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি আজিজ পাশাকে খালেদা জিয়ার সরকার মরণোত্তর সব সুবিধা দেয়।
এসব তথ্য গোপন কিছু নয়। সবই হয়েছে প্রকাশ্যে। খুনিদের রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা দেওয়ায় জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সমানভাবেই দায়ী। উল্লিখিত প্রশাসনিক ও বিচারিক সুবিধার বাইরে জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া খুনিদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে আরেক ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এ কাজটার মূলে ছিলেন জেনারেল এরশাদ।
গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় খুনি শাহরিয়ার রশিদ ও বজলুল হুদা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি (প্রগশ) নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৮৫ সালে ফারুক ও রশিদ ‘১৫ আগস্ট বিপ্লবের আদর্শ বাস্তবায়ন’ নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৮৭ সালের ৩ আগস্ট শেরাটন হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে খুনি ফারুককে সভাপতি করে ফ্রিডম পার্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন খুনি রশিদ। ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে বজলুল হুদাকে সব দলের বর্জনের মধ্যে ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। এর আগে ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে খুনি ফারুককে নির্বাচন করার সুযোগ দেন এরশাদ।
শুধু তা-ই নয়, তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভিতে খুনি রশিদকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ করে দেন এরশাদ। ১৫ আগস্টের পর জাতি আবার খুনিকণ্ঠ শুনতে পায়।
একইভাবে খালেদা জিয়ার আমলেও রশিদকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হয়। সংসদে বিরোধী দলের নেতার আসনে খুনি রশিদের বসার দৃশ্যও তখন জাতি প্রত্যক্ষ করে।
এটা প্রমাণ করার দরকার হয় না যে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের সময় খুনিরা রাষ্ট্রীয় মদদে সব ধরনের আনুকূল্য পেয়েছিলেন। তাই তাঁরাও খুনিদের সহযোগী হিসেবে দায় এড়াতে পারেন না। খুনিদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের সুযোগ যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল।
শেষ করি ১৯৭৬ সালের একটি ঘটনা দিয়ে। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম তখন লন্ডন হাইকমিশনে কর্মরত। তিনি এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য বইতে লিখেছেন, ব্রিটেনের একটি ছাপাখানায় বাংলাদেশি মুদ্রা ছাপানো হতো। ওই ছাপাখানায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অঙ্কিত বিভিন্ন মানের কোটি কোটি টাকা জমা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুজন কর্মকর্তা লন্ডন যাবেন। তাঁদের যেন হাইকমিশন সহায়তা করে, জেনারেল মইনুলকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই দুই কর্মকর্তা যথারীতি লন্ডন যান। হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা ওই সব টাকা পুড়িয়ে ধ্বংস করে ঢাকায় ফেরেন।
প্রশ্ন হলো শুধু সামরিক আর রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সহায়তা করেননি, প্রশাসনের ভেতরেও এমন অনেকে ঘাপটি মেরে বসে ছিলেন, যাঁরা বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও ভয় পেতেন। সেই সব ঘাতককে খুঁজে বের করবে কে? তারা কি এখনো সক্রিয় নয়?
রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তার কাজ ছিল না। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর আরও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের যাঁরা জেনে-শুনে-বুঝে খুনিদের হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে সহায়তা করেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং বিচারের পথ বন্ধ করেছেন, তাঁদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৭তম বার্ষিকীতে এসেও আমরা সেই উদ্যোগটি দেখতে পাইনি।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালের মার্চ থেকেই প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়। খুনিরা তখন থেকেই ক্যান্টনমেন্ট, মেজর রশিদের বাসভবন, কুমিল্লার বার্ড, গাজীপুরের সালনা, খন্দকার মোশতাকের পুরান ঢাকার আগামসি লেন ও কুমিল্লার দাউদকান্দির বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। খুনিরা তাদের অভিপ্রায়ের কথা সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল জিয়াকেও অবহিত করেছিল। জিয়া তাতে নিজে জড়াবেন না বললেও ষড়যন্ত্র ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে যাঁরা বিদ্রোহ করেন এবং বিদ্রোহে উসকানি দেন বা উৎসাহিত করেন, তাঁরা যেমন দোষী, তেমনি যাঁরা বিদ্রোহের প্রস্তুতির খবর পেয়ে চুপ থাকেন অথবা যাঁরা বিদ্রোহ প্রত্যক্ষ করে তা দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগে বিরত থাকেন, তাঁরাও দোষী। সেনা অভ্যন্তরে কোনো বিদ্রোহ বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার খবর কোনো সেনাসদস্য বা কর্মকর্তা জানতে পারলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা তাঁর কর্তব্য। সেই কর্তব্য পালনে ব্যর্থতার দায়ে তাঁকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়।
বঙ্গবন্ধু দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে গোয়েন্দাদের নজরের আওতায় থাকার কথা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড শুধু এক রাতের সিদ্ধান্তে হয়নি, দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছিল, সেই ষড়যন্ত্র আঁচ করতে না পারা এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আক্রমণের সময় গোয়েন্দাদের কোনো তৎপরতা না থাকার ব্যর্থতার জন্য সেই সময়ের সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দাপ্রধান বা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসভবনে আক্রমণের খবর স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকে টেলিফোন করে বাহিনীপ্রধানকে জানাতে হয়েছে। এরপরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তাঁকেও সামরিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি করার কথা।
যেসব ব্যাটালিয়ন বা ব্রিগেডের সৈনিক বা অফিসাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই সব কমান্ডারকে সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনা উচিত ছিল। সামরিক বাহিনীর মধ্যকার চেইন অব কমান্ড ভঙ্গকারীদের দমাতে ব্যর্থতার দায় তাঁদের কাঁধেও বর্তায়।
সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিট মুভ করলে জিএস ব্রাঞ্চ, এমও ডিরেক্টর, এমআই ডিরেক্টর ও ট্রেনিং ডিরেক্টরকেও অবহিত করতে হয়। সেনাবাহিনীর দুটি ইউনিট ১৫ আগস্ট খুনি মেজর ফারুক ও মেজর রশিদের নেতৃত্বে মুভ করে। তারা ৪৬ ব্রিগেডের অধীনে হলেও ৪৬ ব্রিগেড ওই মুভ সম্পর্কে কিছুই জানত না। এসব ইউনিটের কর্মরত অধিনায়কদেরও কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা।
১৮ আগস্ট সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর দপ্তরে সব সিনিয়র অফিসারদের বৈঠকে খুনিদের আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরও খুনিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় সিনিয়র অফিসারদেরই নিতে হবে। খুনিরা প্রকাশ্যে খুনের কথা স্বীকার করার পরও তাঁদের সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকায় অবস্থানরত সক্রিয় প্রতিটি কমান্ডের অধিনায়কদেরও নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়েও বলা হয়েছে, ‘এই মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যাঁরা ঢাকায় ছিলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালন করেননি, এমনকি দায়িত্ব পালনের কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করেননি, যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও।’
১৫ আগস্টে দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পর উপরাষ্ট্রপতি বহাল থাকা অবস্থায় খন্দকার মোশতাকের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে, রেডিওতে ভাষণ দিয়ে খুনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বাহিনীপ্রধানেরাও রাষ্ট্রপতি হত্যাকে অনুমোদন দিয়ে খুনিদের সহায়তা করেছেন। তাঁরা যতই বলেন না কেন চাপে পড়ে মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন বা গৃহযুদ্ধ এড়াতে করেছেন, সেটা গ্রহণযোগ্য কোনো যুক্তি নয়। হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে না পারলেও পরবর্তীকালে কয়েকজন খুনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারার দায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা এড়াতে পারেন না।
জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারে সামরিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতাই শুধু নয়, ব্যর্থ ছিলেন রাজনীতিবিদেরাও। তাঁরাও খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, এ জন্য তাঁদেরও দায় নিতে হবে।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে যাঁরা বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন, পাশাপাশি সংসদে যে ২৪১ জন সদস্য ভোট দিয়ে ওই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করার দায়ে অপরাধ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর মৃতদেহ ডিঙিয়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাও অপরাধী। যে পরিস্থিতিতেই হোক তাঁরা খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। যুদ্ধের ময়দানে যদি কোনো সৈনিক প্রতিপক্ষের ভয়ে গুলি ছোড়া থেকে বিরত থাকেন, তাঁকে যেমন কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়, তেমনি বঙ্গবন্ধুর সহচর যাঁরা সেদিনই মোশতাকের মন্ত্রিসভায় গিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক অপরাধী।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিটি সরকারই খুনিদের নিরাপত্তা দিয়েছে। আনুকূল্য দিয়েছে। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ তাঁদের পেছনে ব্যয় করেছে। আদালতের রায়ে দণ্ডিত না হলেও যেহেতু তাঁরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন, তাই আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খন্দকার মোশতাকের মতোই জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া অপরাধ করেছেন। একই সঙ্গে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ রেখে তাঁরা আরও একটি অপরাধ করেছেন।
১৯৭৬ সালের ৮ জুন ১২ খুনিকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়। ফারুক আর রশিদ চাকরি নেননি। তাঁরা জিয়াকে দিয়ে তাঁদের আরও কিছু অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চান। এ নিয়ে বিরোধে ফারুক-রশিদ একাধিকবার অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেন। ১৯৭৭ সালের ১ মার্চ জিয়াবিরোধী সেনাবিদ্রোহের দায়ে ফারুকের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।
১৯৮০ সালের ১৭ জুন আরেকটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের দায়ে খুনিদের কয়েকজনকে সামরিক আইনে সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ায় ডালিম, হুদা ও নূর দূতাবাসের কাজ ফেলে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যান। ঢাকায় আজিজ পাশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজসাক্ষী হলে জিয়াউর রহমান তাঁকে আবারও কূটনীতিকের দায়িত্ব দিয়ে রোমে পাঠান।
এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে জিয়ার সময় যে কয়জন কর্মস্থল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের বকেয়া বেতন দিয়ে পুনর্বহাল করেন। এরপর ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরেও খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি ও পদোন্নতির ধারা অব্যাহত রাখেন।
১৯৯৬ সালের জুন মাসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ৬ খুনিকে চাকরিচ্যুত করে। ১৯৯৮ সালে বিচার আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ওই বছরের অক্টোবরে খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসেন। তারপর সুপ্রিম কোর্টে এই বিচারের কার্যক্রম পুরোপুরি আটকে যায়। ২০০২ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি আজিজ পাশাকে খালেদা জিয়ার সরকার মরণোত্তর সব সুবিধা দেয়।
এসব তথ্য গোপন কিছু নয়। সবই হয়েছে প্রকাশ্যে। খুনিদের রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা দেওয়ায় জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সমানভাবেই দায়ী। উল্লিখিত প্রশাসনিক ও বিচারিক সুবিধার বাইরে জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া খুনিদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে আরেক ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এ কাজটার মূলে ছিলেন জেনারেল এরশাদ।
গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় খুনি শাহরিয়ার রশিদ ও বজলুল হুদা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি (প্রগশ) নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৮৫ সালে ফারুক ও রশিদ ‘১৫ আগস্ট বিপ্লবের আদর্শ বাস্তবায়ন’ নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৮৭ সালের ৩ আগস্ট শেরাটন হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে খুনি ফারুককে সভাপতি করে ফ্রিডম পার্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন খুনি রশিদ। ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে বজলুল হুদাকে সব দলের বর্জনের মধ্যে ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। এর আগে ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে খুনি ফারুককে নির্বাচন করার সুযোগ দেন এরশাদ।
শুধু তা-ই নয়, তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভিতে খুনি রশিদকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ করে দেন এরশাদ। ১৫ আগস্টের পর জাতি আবার খুনিকণ্ঠ শুনতে পায়।
একইভাবে খালেদা জিয়ার আমলেও রশিদকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হয়। সংসদে বিরোধী দলের নেতার আসনে খুনি রশিদের বসার দৃশ্যও তখন জাতি প্রত্যক্ষ করে।
এটা প্রমাণ করার দরকার হয় না যে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের সময় খুনিরা রাষ্ট্রীয় মদদে সব ধরনের আনুকূল্য পেয়েছিলেন। তাই তাঁরাও খুনিদের সহযোগী হিসেবে দায় এড়াতে পারেন না। খুনিদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের সুযোগ যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল।
শেষ করি ১৯৭৬ সালের একটি ঘটনা দিয়ে। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম তখন লন্ডন হাইকমিশনে কর্মরত। তিনি এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য বইতে লিখেছেন, ব্রিটেনের একটি ছাপাখানায় বাংলাদেশি মুদ্রা ছাপানো হতো। ওই ছাপাখানায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অঙ্কিত বিভিন্ন মানের কোটি কোটি টাকা জমা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুজন কর্মকর্তা লন্ডন যাবেন। তাঁদের যেন হাইকমিশন সহায়তা করে, জেনারেল মইনুলকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই দুই কর্মকর্তা যথারীতি লন্ডন যান। হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা ওই সব টাকা পুড়িয়ে ধ্বংস করে ঢাকায় ফেরেন।
প্রশ্ন হলো শুধু সামরিক আর রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সহায়তা করেননি, প্রশাসনের ভেতরেও এমন অনেকে ঘাপটি মেরে বসে ছিলেন, যাঁরা বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও ভয় পেতেন। সেই সব ঘাতককে খুঁজে বের করবে কে? তারা কি এখনো সক্রিয় নয়?
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে