লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার চার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা ও সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার চার ইউপিতে ১১ নভেম্বর ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

চার ইউপি হলো কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, চরলরেন্স, চরকাদিরা এবং রামগতির চরগাজী। এর মধ্যে চরলরেন্স ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী একেএম নুরুল আমিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া অন্য তিনটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চার ইউপিতে সদস্য হিসেবে পুরুষ ও সংরক্ষিত মহিলা ২৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ না নিলেও তিন ইউপিতে আওয়ামী লীগের রয়েছে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী।

সাধারণ ভোটাররা বলছেন, হানাহানি-মারামারি নয়, শান্তিপূর্ণ ভোটের আশা করেন তাঁরা। যেন সুন্দরভাবে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। সেই সুযোগ যেন তাঁরা পান, এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।

চরলরেন্স ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবদুল খালেক ইতিমধ্যে ভোলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এলাকায় এনেছেন। আবদুল খালেক, তাঁর ছেলেসহ সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিচ্ছেন। ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আমার বিজয় নিশ্চিত জেনে তারা সন্ত্রাসী পথ বেছে নিচ্ছে।’

চরমার্টিন ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো. ইউসুফ আলী মিয়া অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ইতিমধ্যে তাঁর কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভোট গ্রহণের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ দরকার। কিন্তু এখনো কোনো পরিবেশ নেই। নৌকার প্রার্থী ইউসুফ আলী প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন।

একই অভিযোগ করেন চরকাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন রাজনসহ (রাজু) অন্য স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম সাগর ও তাঁর সমর্থকেরা তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতিসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন। তাঁদের ভয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দেওয়ার সাহস পাচ্ছে না। নির্বাচনী আচরণবিধি মানছেন না নৌকার প্রার্থী। এ কারণে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর পরো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন জানান. অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের টহল থাকবে।

পুলিশ সুপার এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, সবাই যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। তাই প্রতিটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় সবাইকে সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন পুলিশ সুপার।