জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মাছ ধরা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে হামলা, ভাঙচুর,  পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যমুনা সার কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকার খুইটামারা বিলে মাছ ধরা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ বাধে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ উত্তেজনার জের ধরে দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পোগলদিঘা ইউপির চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সমর্থকেরা যমুনা সার কারখানা এলাকায় জমায়েত হতে শুরু করেন। পরে আশরাফুল ইসলাম মানিকের লোকজন সার কারখানার পাশের চরপাড়া গ্রামের দিকে চলে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পেছন থেকে ইটপাটকেলসহ গুলি ছোড়েন রফিকুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন। পরে আশরাফুল ইসলাম মানিকের লোকজনও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন।

এ সময় ইটপাটকেলের আঘাতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ হাফিজুর (৩৫), বাচ্চু (৩৬), মোতালেব (৪০), মোস্তাকসহ (৪২) অন্তত পাঁচজন আহত হন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে ৫-৬টি গুলির শব্দ শুনতে পান। তবে পুলিশের দাবি, তারা কোনো গুলির শব্দ শুনতে পায়নি। পরে রাস্তার পাশে গুলির খোসা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কারখানা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।

এ দিকে রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আশরাফুল আলম মানিকের লোকজন তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে জানালার কাচ ভেঙে যায়। পরে তাঁরা হামলা চালিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আড়াই লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তাঁর লোকজনও তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়েছে। তবে কোনো পক্ষই গুলি ছোড়েনি।

অন্যদিকে ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, তাঁর লোকজন চরপাড়া গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। এমন সময় রফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম ৫-৬টি গুলি ছোড়েন। আর রফিকুলের লোকজন তাঁর লোকজনকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পাঁচজন আহত হন।

এ বিষয়ে তারাকান্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) সরোয়ার জাহান বলেন, তাঁরা কোনো গুলির শব্দ শুনতে পাননি। গুলি ছোড়ার বিষয়টিও কেউ তাঁদের জানায়নি। তবে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন।

যমুনা সার কারখানা শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, খুইটামারা বিলে মাছ ধরা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে তা সার কারখানা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে দুই পক্ষই মুখোমুখি অবস্থান নেয়।