সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পর যুক্তরাজ্য সরকার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, অর্থাৎ এমবিএসকে বরণ করার জন্য লন্ডনে লালগালিচা বিছানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। অথচ খাশোগি হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন খোদ মোহাম্মদ বিন সালমান। তাঁর নির্দেশেই একটি দল খাশোগিকে হত্যা করে। এমন একজন ব্যক্তিকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়ার পেছনে আসলে কাজ করছে যুক্তরাজ্য সরকারের পেট্রোডলারের লোভ। সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে দেশটি ইতিমধ্যে প্রচুর পেট্রোডলার কামিয়েছে।
ব্রিটিশ জনগণকে যা জিজ্ঞাসা করা উচিত তা হলো, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষাশিল্পের মুনাফা কি জাতীয় মূল্যবোধ এবং নিরাপত্তার চেয়ে বেশি দামি; যার জন্য তারা সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্যে নেমেছে?
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে এমবিএসের কট্টর সমালোচক খাশোগি হত্যাকাণ্ডে ব্রিটিশ সরকারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল বিশ্বের অন্য সরকারগুলোর মতোই। তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের সরকার।
তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট সৌদি সরকারের কাছে এ ঘটনার উত্তর চেয়েছিলেন। তখন সৌদি সরকার ঘটনাটিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।কিন্তু এর দুই বছরের কম সময় পরে, ব্রিটিশ সরকার অন্য সুর গাইতে শুরু করে
এবং সৌদি আরবের সঙ্গে ফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ২০২২ সালে একটি ইউরোপীয় রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে এমবিএসকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে প্রথম হতে পারেন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার আরও শান্তভাবে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির প্রক্রিয়া ফের শুরু করে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন প্রশাসন ঘোষণা করেছিল যে তারা সৌদি আরবের কাছে ‘আক্রমণাত্মক’ অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দেবে। কিন্তু যুক্তরাজ্য এ রকম কিছু করতে অস্বীকার করে এবং যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল, যুক্তরাজ্য সেই সব অস্ত্রই সৌদি আরবের কাছে বিক্রি করা শুরু করে। অতিসম্প্রতি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জার্মানিকে ৪৮টি টাইফুন ইউরোফাইটার জেট সৌদি আরবের কাছে বিক্রির অনুমোদন না দিলে তাদের নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সৌদি আরবের ৬০০ বিলিয়ন ডলারের পাবলিক ইনভেস্ট ফান্ড ক্রমে ফুলেফেঁপে উঠছে। তারা মর্যাদাপূর্ণ বিভিন্ন ব্রিটিশ সংস্থা কিনে নিচ্ছে। এর মধ্যে আছে ফুটবল ক্লাব নিউ ক্যাসেল (দাম ৭৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার) এবং স্পোর্টস কার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্টন মার্টিনের ১৭ শতাংশ মালিকানা।
যুক্তরাজ্য সরকার সৌদি যুবরাজ এমবিএসকে কাছে টানার আগে যুক্তরাষ্ট্রের নরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। এর সংকেত চলে আসে ২০২২ সালের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জেদ্দায় গিয়ে এমবিএসের সঙ্গে দেখা করার মাধ্যমে। এখন যুক্তরাষ্ট্র আগের জায়গায় ফিরে আসায় সৌদি বাদশাহদের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়াতালি দিতে যুক্তরাজ্যকে আরও দ্রুত দৌড়াতে হয়েছে। সৌদি আরব উপসাগরীয় এলাকার দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছিল অন্যদের এটা বোঝাতে যে তাদের দেশে ব্যবসার সুযোগ ব্যাপকভাবে বাড়বে।
এটা এমনটাও হতে পারে যে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেই এমবিএসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সুনাক। নিজেই চুক্তিটিকে আকর্ষণীয় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে সৌদি আরবকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। দুবার প্যারিস সফরের পর এবার লন্ডন—বোঝাই যাচ্ছে এমবিএস একটু বেশিই ছাড় চাইতে পারেন। এই ছাড়ের প্যাকেজে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে বাইডেনের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ চাইতে পারেন।
কেউ কেউ হয়তো যুক্তি দেবেন যে রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাহরাইন, আমিরাত, মিসর ও ইসরায়েলের ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য যেমন এসব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে, তেমনি সৌদি আরবের সঙ্গে চলা ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই। ব্রিটেনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং এর জনগণের নিরাপত্তার জন্য এই যুক্তিগুলো কখনোই কিছু মনে করে না।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি সম্প্রতি দাবি করেছেন, ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন শুধু স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে না; বরং সেই সব স্বৈরশাসকের জন্য এটি একটি বার্তা, যারা মনে করে যে তারা সব অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। দুঃখজনকভাবে এটি এমন একটি পাঠ যা সৌদি আরবের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য প্রয়োগ করতে অস্বীকার করে।
সৌদি সরকার শুধু নিজের নাগরিকদের বিরুদ্ধে জঘন্য আচরণ করছে তা নয়, ইয়েমেনে অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির বাসিন্দাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানে ৩ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। সম্প্রতি সৌদি সীমান্তে ইথিওপিয়ান অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের গণহারে হত্যা করা হয়েছে। তারা যুক্তরাজ্য, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারকর্মীদের ওপর আক্রমণ ও হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় একজন কানাডীয় নাগরিককে ভারত সরকারের হত্যার বিষয়ে প্রতিবেদনগুলো স্পষ্ট করে, স্বৈরশাসকেরা প্রকৃতপক্ষে আত্মবিশ্বাসী যে পশ্চিমারা অন্য দিকে তাকাবে। তারা কেবল সৌদি আরবকে জবাবদিহি করতে পশ্চিমাদের অস্বীকৃতিই দেখে না; বরং এটিকে আড়াল করার জন্য তাদের নির্লজ্জ প্রচেষ্টাও দেখেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে ইউক্রেনকে সমর্থন না করে পশ্চিম ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর কঠোর নিরপেক্ষতা বা সরাসরি প্রত্যাখ্যান যদি কোনো ইঙ্গিত হয়, তবে বিশ্বের খুব কম লোকই গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার বিষয়ে ক্লেভারলির বক্তব্যকে বিশ্বাস করবে। ব্রিটেনের মুখে পেট্রোডলার ঢেলে দিলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য কথিত সমর্থনের কী হবে, তা তারা বেশ স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে তার সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার এবং পেট্রোডলারের জন্য দেশটির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে যুক্তরাজ্য সরকার এটাই বুঝিয়ে দিয়েছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সমর্থন কত সহজেই ত্যাগ করা যায়।
(মিডল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি
ইংরেজি থেকে অনূদিত)
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পর যুক্তরাজ্য সরকার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, অর্থাৎ এমবিএসকে বরণ করার জন্য লন্ডনে লালগালিচা বিছানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। অথচ খাশোগি হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন খোদ মোহাম্মদ বিন সালমান। তাঁর নির্দেশেই একটি দল খাশোগিকে হত্যা করে। এমন একজন ব্যক্তিকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়ার পেছনে আসলে কাজ করছে যুক্তরাজ্য সরকারের পেট্রোডলারের লোভ। সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে দেশটি ইতিমধ্যে প্রচুর পেট্রোডলার কামিয়েছে।
ব্রিটিশ জনগণকে যা জিজ্ঞাসা করা উচিত তা হলো, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষাশিল্পের মুনাফা কি জাতীয় মূল্যবোধ এবং নিরাপত্তার চেয়ে বেশি দামি; যার জন্য তারা সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্যে নেমেছে?
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে এমবিএসের কট্টর সমালোচক খাশোগি হত্যাকাণ্ডে ব্রিটিশ সরকারের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল বিশ্বের অন্য সরকারগুলোর মতোই। তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের সরকার।
তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট সৌদি সরকারের কাছে এ ঘটনার উত্তর চেয়েছিলেন। তখন সৌদি সরকার ঘটনাটিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।কিন্তু এর দুই বছরের কম সময় পরে, ব্রিটিশ সরকার অন্য সুর গাইতে শুরু করে
এবং সৌদি আরবের সঙ্গে ফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ২০২২ সালে একটি ইউরোপীয় রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে এমবিএসকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে প্রথম হতে পারেন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার আরও শান্তভাবে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির প্রক্রিয়া ফের শুরু করে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নতুন প্রশাসন ঘোষণা করেছিল যে তারা সৌদি আরবের কাছে ‘আক্রমণাত্মক’ অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দেবে। কিন্তু যুক্তরাজ্য এ রকম কিছু করতে অস্বীকার করে এবং যুক্তরাষ্ট্র যেসব অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল, যুক্তরাজ্য সেই সব অস্ত্রই সৌদি আরবের কাছে বিক্রি করা শুরু করে। অতিসম্প্রতি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জার্মানিকে ৪৮টি টাইফুন ইউরোফাইটার জেট সৌদি আরবের কাছে বিক্রির অনুমোদন না দিলে তাদের নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সৌদি আরবের ৬০০ বিলিয়ন ডলারের পাবলিক ইনভেস্ট ফান্ড ক্রমে ফুলেফেঁপে উঠছে। তারা মর্যাদাপূর্ণ বিভিন্ন ব্রিটিশ সংস্থা কিনে নিচ্ছে। এর মধ্যে আছে ফুটবল ক্লাব নিউ ক্যাসেল (দাম ৭৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার) এবং স্পোর্টস কার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্টন মার্টিনের ১৭ শতাংশ মালিকানা।
যুক্তরাজ্য সরকার সৌদি যুবরাজ এমবিএসকে কাছে টানার আগে যুক্তরাষ্ট্রের নরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। এর সংকেত চলে আসে ২০২২ সালের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জেদ্দায় গিয়ে এমবিএসের সঙ্গে দেখা করার মাধ্যমে। এখন যুক্তরাষ্ট্র আগের জায়গায় ফিরে আসায় সৌদি বাদশাহদের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়াতালি দিতে যুক্তরাজ্যকে আরও দ্রুত দৌড়াতে হয়েছে। সৌদি আরব উপসাগরীয় এলাকার দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছিল অন্যদের এটা বোঝাতে যে তাদের দেশে ব্যবসার সুযোগ ব্যাপকভাবে বাড়বে।
এটা এমনটাও হতে পারে যে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করেই এমবিএসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সুনাক। নিজেই চুক্তিটিকে আকর্ষণীয় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে সৌদি আরবকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। দুবার প্যারিস সফরের পর এবার লন্ডন—বোঝাই যাচ্ছে এমবিএস একটু বেশিই ছাড় চাইতে পারেন। এই ছাড়ের প্যাকেজে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে বাইডেনের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ চাইতে পারেন।
কেউ কেউ হয়তো যুক্তি দেবেন যে রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাহরাইন, আমিরাত, মিসর ও ইসরায়েলের ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য যেমন এসব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে, তেমনি সৌদি আরবের সঙ্গে চলা ছাড়া তার আর কোনো উপায় নেই। ব্রিটেনের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং এর জনগণের নিরাপত্তার জন্য এই যুক্তিগুলো কখনোই কিছু মনে করে না।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি সম্প্রতি দাবি করেছেন, ইউক্রেনের প্রতি যুক্তরাজ্যের সমর্থন শুধু স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে না; বরং সেই সব স্বৈরশাসকের জন্য এটি একটি বার্তা, যারা মনে করে যে তারা সব অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে। দুঃখজনকভাবে এটি এমন একটি পাঠ যা সৌদি আরবের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য প্রয়োগ করতে অস্বীকার করে।
সৌদি সরকার শুধু নিজের নাগরিকদের বিরুদ্ধে জঘন্য আচরণ করছে তা নয়, ইয়েমেনে অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির বাসিন্দাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানে ৩ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। সম্প্রতি সৌদি সীমান্তে ইথিওপিয়ান অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থীদের গণহারে হত্যা করা হয়েছে। তারা যুক্তরাজ্য, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারকর্মীদের ওপর আক্রমণ ও হুমকি অব্যাহত রেখেছে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় একজন কানাডীয় নাগরিককে ভারত সরকারের হত্যার বিষয়ে প্রতিবেদনগুলো স্পষ্ট করে, স্বৈরশাসকেরা প্রকৃতপক্ষে আত্মবিশ্বাসী যে পশ্চিমারা অন্য দিকে তাকাবে। তারা কেবল সৌদি আরবকে জবাবদিহি করতে পশ্চিমাদের অস্বীকৃতিই দেখে না; বরং এটিকে আড়াল করার জন্য তাদের নির্লজ্জ প্রচেষ্টাও দেখেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে গিয়ে ইউক্রেনকে সমর্থন না করে পশ্চিম ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর কঠোর নিরপেক্ষতা বা সরাসরি প্রত্যাখ্যান যদি কোনো ইঙ্গিত হয়, তবে বিশ্বের খুব কম লোকই গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার বিষয়ে ক্লেভারলির বক্তব্যকে বিশ্বাস করবে। ব্রিটেনের মুখে পেট্রোডলার ঢেলে দিলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য কথিত সমর্থনের কী হবে, তা তারা বেশ স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে তার সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার এবং পেট্রোডলারের জন্য দেশটির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে যুক্তরাজ্য সরকার এটাই বুঝিয়ে দিয়েছে, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সমর্থন কত সহজেই ত্যাগ করা যায়।
(মিডল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি
ইংরেজি থেকে অনূদিত)
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে