গাজীপুরের টঙ্গী সেতুর মেরামতকাজ শেষ হওয়ার ১১ দিন পর যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে বিআরটিএর সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতুতে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ১১ নভেম্বর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের যান চলাচল।

বিআরটিএর প্রকল্প পরিচালক (এলিভেটেড অংশ) মো. মহিরুল ইসলাম খান জানান, দুই দফায় গত শনিবার রাত ৯টা ও পরে মধ্যরাত থেকে সেতু দিয়ে যান চলাচলের জন্য ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। তবে সেতু কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী সংস্কারকাজ রাতে শেষ না হওয়া ও ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের পর দিন রোববার দুপুরে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।

এর আগে ৯ নভেম্বর মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে সেতুর কিছু অংশের কংক্রিট ধসে পড়ায় সেতুর একপাশ দিয়ে ধীরগতিতে যান চলাচল করে। পরে ঝুঁকি এড়াতে পর দিন বুধবার থেকে সেতুটিতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হলে দুর্ভোগে পড়েন এ সড়কে চলাচলকারী লাখ লাখ যাত্রী। দুর্ভোগ কমাতে পর দিন বৃহস্পতিবার তুরাগ নদের ওপর বেইলি সেতু ব্যবহার করে রাজধানীতে প্রবেশ করে উত্তরাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা সব ধরনের যানবাহন। সেই সঙ্গে রাজধানীর সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগ চলমান রাখতে আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া টঙ্গী মুন্নু গেট সংযোগ সড়ক ব্যবহারের নির্দেশনা দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরের ট্রাফিক বিভাগ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ ট্রাফিক বিভাগ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) বলেন, ‘সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচলে কিছুটা ধীরগতি থাকলেও দুপুরে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করায় যানজট কমে আসে।’

একটি ওষুধ কোম্পানির আঞ্চলিক বিক্রয় কর্মকর্তা হোসাইন আল আরাফাত বলেন, ‘১০ দিন ধরে উত্তরা এলাকা থেকে কাজ শেষ করে টঙ্গীতে ফিরতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এতে যানজটে দিনের মোট কর্মঘণ্টা থেকে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় সড়কেই নষ্ট হতো। সেতুটি খুলে দেওয়ায় দুর্ভোগ কমেছে।’

মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম কালা বলেন, ‘আবদুল্লাহপুর মাছের আড়ত থেকে প্রতিদিন মাছ কিনে টঙ্গীর নতুন বাজার এলাকায় বিক্রি করি। গত ১০ দিনে মাছ কিনে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আড়ত থেকে মাছ কিনে কামারপাড়া এলাকায় যানজটে আটকে থাকতে হতো। গুনতে হয়েছে দ্বিগুণ ভাড়াও।’

তুরাগ পরিবহনের চালক নান্টু বলেন, ‘সেতু দিয়ে যান চলাচলের পরও যানজটে পড়তে হচ্ছে। কামারপাড়া সড়ক দিয়ে গাজীপুরে প্রবেশ করতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপসচিব-কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন বলেন, ‘সেতুটি পুনরায় যান চলাচলের উপযোগী রয়েছে বলে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে জানায়। পরে রোববার বেলা ২টায় ট্রাফিক বিভাগের সমন্বয় শেষে যান চলাচল শুরু হয়।’

বিআরটি প্রকল্প পরিচালক (এলিভেটেড অংশ) মো. মহিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিআরটিএর সেতু বিভাগের প্রকৌশলীরা সেতুর ধসে যাওয়া অংশটি পরিদর্শন শেষে সংস্কারের বিষয়টি জানালে সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হয়। ১১ দিন সংস্কারকাজ শেষে সেতুটি যান চলাচলের জন্য আজ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।’