ড. আর এম দেবনাথ
‘টাকা পাচারকারীদের শান্তিতে ঘুমাতে দেওয়া হবে না।’
কে বলেছেন এ কথা? বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর স্বয়ং ড. আহসান এইচ মনসুর (১৫ আগস্ট, ২০২৪)। একদম উচিত কথা। টাকা পাচারকারীরা বড় বড় রাঘববোয়াল। তাঁরা আবার বড় বড় ঋণ গ্রহীতা এবং অনেকে ঋণখেলাপি। যাঁরা সরাসরিভাবে ঋণখেলাপি নন, তাঁরা তাঁদের ঋণকে পুনঃ কাঠামো (রিস্ট্রাকচার) করিয়ে রেখেছেন। এমনতর বড় বড় অর্থ পাচারকারী ও ঋণখেলাপিকে ঘুমাতে দেওয়া হবে না বললে খুবই কম বলা হয়। শুধু তাঁদের ঘুম হারাম করা নয়, দেশবাসী তাঁদের কঠোর শাস্তি চায়। তাঁদের ছেলেমেয়েরা যাতে ওই সম্পত্তি ভোগ করতে না পারে, তা-ও চায়।
এখানেই শেষ নয় তালিকা। দেশবাসী চায় আরও কয়েকটি জিনিস। প্রথমত চায় বকেয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ টাকা উদ্ধার হোক। যেসব টাকা, ঋণের টাকা তাঁরা মাফ করিয়ে নিয়েছেন তা-ও উদ্ধার করা হোক। এটাও দেশবাসী চায়। তবে অবশ্যই আরও দুটো জিনিস চায়। তাঁরা বড় বড় শিল্প কারখানার মালিক। ওই সব কারখানা-শিল্প বন্ধ না হোক, তা-ও দেশবাসীর কামনা। ওই সব কারখানায় হাজার হাজার কর্মচারী-কর্মকর্তা চাকরি করেন। তাঁদের ঘর-সংসার চলে ওখানকার বেতন-ভাতা থেকে। একটি লোকেরও যাতে চাকরি না যায় তার নিশ্চয়তাও তারা চায়। সরকার ওই সব কারখানা-শিল্প থেকে যে রাজস্ব পায়, ওখান থেকে যে আমদানি-রপ্তানি হয়, যে ভ্যাট আদায় হয়, তা অব্যাহত থাকুক, এটাও দেশবাসীর চাওয়া।
এসব বলছি এ কারণে যে ঋণ জালিয়াত, ঋণখেলাপিদের শাস্তি দিতে গিয়ে, জেলে পাঠিয়ে অতীতে খুব বেশি ফল পাওয়া যায়নি। ‘হল-মার্ক মামলা’ এর উদাহরণ। মামলার ১২ বছর পর ১১টির মধ্যে মাত্র ১টি মামলার রায় হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা পাওনার মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ৪০০ কোটি টাকার মতো। মালিকদের শাস্তি হয়েছে, তাঁরা জেলে আছেন। কিন্তু যে সম্পদ আছে ওই কারখানার তার প্রকৃত অবস্থা কী, সে কথা কেউ জানে না। সম্পদ কি ‘কাজির গরু কেতাবে আছে’র মতো কি না, তা-ও কেউ জানে না। বলা হচ্ছে সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা উদ্ধার করা হবে। মর্টগেজ ওই সম্পত্তির কোনো দরদাতা পাওয়া যাবে কি না, তা-ও কেউ জানে না। আবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ‘ইকোনমিক পার্ক’ করে ওই টাকা উদ্ধার করার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ ছাড়া রয়েছে আরও অনেক উদাহরণ।
দেখা যাচ্ছে, জালিয়াত, ঋণখেলাপির বিচার হয়েছে কিন্তু হাজার হাজার লোকের চাকরি গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। আবার দুই নম্বরি করে যাঁরা ব্যাংকের ঋণ নিয়েছিলেন, পরে সাইফুর রহমান ধরেছিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতা ভিন্নতর। ওই সব জালিয়াতির কোনো ক্রিমিনাল বিচার হয়নি। তাঁরা দিব্যি বাইরে দাপটের সঙ্গে ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ওই টাকা আদায়ে ২০ বছরের বেশি সময় দেওয়া হয়। কোনো সুদ নেই। শুধু আসল টাকা আদায়। বিনা বিচারে টাকা আদায়। অবশ্য তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালু ছিল। এ ধরনের, বিচিত্র ধরনের উদাহরণ আছে। এই প্রেক্ষাপটে গভর্নর সাহেব যখন বলেন, ঘুমাতে দেবেন না, তখন নানা প্রশ্ন জাগে। কারণ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, ঋণ জালিয়াতদের ঘুম হারাম করে আমাদের লাভ কী? আমরা চাই ঋণের টাকা উদ্ধার হোক, আমরা চাই তাঁদের কঠোর শাস্তি হোক, আমরা চাই মিল-ফ্যাক্টরি চালু থাকুক। লোকের কর্মসংস্থান ঠিক থাকুক। সরকারের রাজস্ব অব্যাহত থাকুক। কঠিন কাজ। তাই নয় কি?
সত্যি সত্যি কঠিন কাজ। আবেগ ও বাস্তবতার মুখোমুখি বর্তমান গভর্নর। শুধু গভর্নর নন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে চারজন অর্থনীতিবিদ বিশ্বসেরা। তাঁরা গত ১০-১৫ বছর ধরে সরকারকে নানা পরামর্শ দিয়েছেন, কী করতে হবে বলেছেন। গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। প্রবন্ধ লিখেছেন। অতএব তাঁদের বাইরে থেকে পরামর্শ দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখানো আমার উচিত নয়। তাঁদের চারজনের সম্মিলিত মেধা জাতির জন্য উপহার হতে পারে। সবাই আশা করছেন তাঁরা সব জটিল সমস্যার সমাধান বের করতে পারবেন।
অবশ্য ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধারই তাঁদের একমাত্র কাজ নয়। অর্থনীতির ‘ছ্যাড়াব্যাড়া’ অবস্থার মেরামতও তাঁদের করতে হবে। মূল্যস্ফীতি রোধ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক রাখা, রপ্তানি-আমদানি ব্যবসা ঠিক রাখা, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা, চুরিচামারি-দুর্নীতির বিচার করা, সর্বোপরি এই মুহূর্তে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখা আশু কর্তব্য।
এরই মধ্যে আবার এক নতুন সমস্যা যোগ হয়েছে গত সপ্তাহে। ভয়াবহ বন্যায় দেশের কয়েকটি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি, জিনিসপত্র ভেসে গেছে। অনেকের খাবার নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। গরু-বাছুর, হাঁস-মুরগির ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে। আর? আর ক্ষতি হয়েছে খেতের ফসলের, আমন ধানের। আমন অন্যতম প্রধান ফসল।
কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস তাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার মাস। এই সময়ে এমনিতেই খাদ্যাভাব দেখা দেয়। বন্যাজনিত কারণে কত আমন ধানের কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে, আমরা এখনো জানি না। এমনিতেই নানা দাবি সত্ত্বেও আমাদের বছরে ৫-৭-১০ লাখ টন চাল এবং ৬০-৮০ লাখ টন গম আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে আমন পুরো বা আংশিক নষ্ট হলেও তার প্রভাব কী পড়বে, আমরা কেউ এখনো তা জানি না।
জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বাসনের কাজ করতে হবে। তার জন্যও টাকার দরকার। রাজস্ব আদায় হচ্ছে না ঠিকমতো। একটি রিপোর্টে দেখলাম, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব যা আদায় হয়েছে তার থেকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। ভাবা যায়, কত বড় জালিয়াতি! এখন আবার দেখতে পাচ্ছি, মূল্যস্ফীতি, জিডিপি ইত্যাদির পরিসংখ্যানও বিভ্রান্তিমূলক। আসলে অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র কী, তা-ই তো জানা যাচ্ছে না। খবর বেরোচ্ছে, বিদেশিরা আমাদের কাছে অনেক টাকা পাবে। চীনকে তাদের প্রদত্ত ঋণ পরিশোধে সীমা বাড়াতেও আমরা অনুরোধ করেছি। আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছে জরুরি ঋণ চাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতেও বিদেশিরা প্রচুর টাকা পাবে।
চারদিকের সব দায়-দাবি মেটাতে গেলে প্রচুর টাকার দরকার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁদের ব্যবসার অবস্থা খারাপ। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়াতে হবে, নইলে তাঁরা খেলাপি হবেন। যেখানে চোখ যায়, সেখানেই সমস্যা। প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর—এই চার অর্থনীতিবিদই আমাদের ভরসা। চারজনের সম্মিলিত মেধা কি আমাদের আগামীর সংকট মোকাবিলায় কান্ডারি হতে পারবে?
ড. আর এম দেবনাথ,সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক
‘টাকা পাচারকারীদের শান্তিতে ঘুমাতে দেওয়া হবে না।’
কে বলেছেন এ কথা? বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর স্বয়ং ড. আহসান এইচ মনসুর (১৫ আগস্ট, ২০২৪)। একদম উচিত কথা। টাকা পাচারকারীরা বড় বড় রাঘববোয়াল। তাঁরা আবার বড় বড় ঋণ গ্রহীতা এবং অনেকে ঋণখেলাপি। যাঁরা সরাসরিভাবে ঋণখেলাপি নন, তাঁরা তাঁদের ঋণকে পুনঃ কাঠামো (রিস্ট্রাকচার) করিয়ে রেখেছেন। এমনতর বড় বড় অর্থ পাচারকারী ও ঋণখেলাপিকে ঘুমাতে দেওয়া হবে না বললে খুবই কম বলা হয়। শুধু তাঁদের ঘুম হারাম করা নয়, দেশবাসী তাঁদের কঠোর শাস্তি চায়। তাঁদের ছেলেমেয়েরা যাতে ওই সম্পত্তি ভোগ করতে না পারে, তা-ও চায়।
এখানেই শেষ নয় তালিকা। দেশবাসী চায় আরও কয়েকটি জিনিস। প্রথমত চায় বকেয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ টাকা উদ্ধার হোক। যেসব টাকা, ঋণের টাকা তাঁরা মাফ করিয়ে নিয়েছেন তা-ও উদ্ধার করা হোক। এটাও দেশবাসী চায়। তবে অবশ্যই আরও দুটো জিনিস চায়। তাঁরা বড় বড় শিল্প কারখানার মালিক। ওই সব কারখানা-শিল্প বন্ধ না হোক, তা-ও দেশবাসীর কামনা। ওই সব কারখানায় হাজার হাজার কর্মচারী-কর্মকর্তা চাকরি করেন। তাঁদের ঘর-সংসার চলে ওখানকার বেতন-ভাতা থেকে। একটি লোকেরও যাতে চাকরি না যায় তার নিশ্চয়তাও তারা চায়। সরকার ওই সব কারখানা-শিল্প থেকে যে রাজস্ব পায়, ওখান থেকে যে আমদানি-রপ্তানি হয়, যে ভ্যাট আদায় হয়, তা অব্যাহত থাকুক, এটাও দেশবাসীর চাওয়া।
এসব বলছি এ কারণে যে ঋণ জালিয়াত, ঋণখেলাপিদের শাস্তি দিতে গিয়ে, জেলে পাঠিয়ে অতীতে খুব বেশি ফল পাওয়া যায়নি। ‘হল-মার্ক মামলা’ এর উদাহরণ। মামলার ১২ বছর পর ১১টির মধ্যে মাত্র ১টি মামলার রায় হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা পাওনার মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ৪০০ কোটি টাকার মতো। মালিকদের শাস্তি হয়েছে, তাঁরা জেলে আছেন। কিন্তু যে সম্পদ আছে ওই কারখানার তার প্রকৃত অবস্থা কী, সে কথা কেউ জানে না। সম্পদ কি ‘কাজির গরু কেতাবে আছে’র মতো কি না, তা-ও কেউ জানে না। বলা হচ্ছে সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা উদ্ধার করা হবে। মর্টগেজ ওই সম্পত্তির কোনো দরদাতা পাওয়া যাবে কি না, তা-ও কেউ জানে না। আবার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ‘ইকোনমিক পার্ক’ করে ওই টাকা উদ্ধার করার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ ছাড়া রয়েছে আরও অনেক উদাহরণ।
দেখা যাচ্ছে, জালিয়াত, ঋণখেলাপির বিচার হয়েছে কিন্তু হাজার হাজার লোকের চাকরি গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়েছে। আবার দুই নম্বরি করে যাঁরা ব্যাংকের ঋণ নিয়েছিলেন, পরে সাইফুর রহমান ধরেছিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতা ভিন্নতর। ওই সব জালিয়াতির কোনো ক্রিমিনাল বিচার হয়নি। তাঁরা দিব্যি বাইরে দাপটের সঙ্গে ছিলেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ওই টাকা আদায়ে ২০ বছরের বেশি সময় দেওয়া হয়। কোনো সুদ নেই। শুধু আসল টাকা আদায়। বিনা বিচারে টাকা আদায়। অবশ্য তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালু ছিল। এ ধরনের, বিচিত্র ধরনের উদাহরণ আছে। এই প্রেক্ষাপটে গভর্নর সাহেব যখন বলেন, ঘুমাতে দেবেন না, তখন নানা প্রশ্ন জাগে। কারণ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, ঋণ জালিয়াতদের ঘুম হারাম করে আমাদের লাভ কী? আমরা চাই ঋণের টাকা উদ্ধার হোক, আমরা চাই তাঁদের কঠোর শাস্তি হোক, আমরা চাই মিল-ফ্যাক্টরি চালু থাকুক। লোকের কর্মসংস্থান ঠিক থাকুক। সরকারের রাজস্ব অব্যাহত থাকুক। কঠিন কাজ। তাই নয় কি?
সত্যি সত্যি কঠিন কাজ। আবেগ ও বাস্তবতার মুখোমুখি বর্তমান গভর্নর। শুধু গভর্নর নন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে চারজন অর্থনীতিবিদ বিশ্বসেরা। তাঁরা গত ১০-১৫ বছর ধরে সরকারকে নানা পরামর্শ দিয়েছেন, কী করতে হবে বলেছেন। গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। প্রবন্ধ লিখেছেন। অতএব তাঁদের বাইরে থেকে পরামর্শ দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখানো আমার উচিত নয়। তাঁদের চারজনের সম্মিলিত মেধা জাতির জন্য উপহার হতে পারে। সবাই আশা করছেন তাঁরা সব জটিল সমস্যার সমাধান বের করতে পারবেন।
অবশ্য ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধারই তাঁদের একমাত্র কাজ নয়। অর্থনীতির ‘ছ্যাড়াব্যাড়া’ অবস্থার মেরামতও তাঁদের করতে হবে। মূল্যস্ফীতি রোধ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, রেমিট্যান্স প্রবাহ ঠিক রাখা, রপ্তানি-আমদানি ব্যবসা ঠিক রাখা, পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা, চুরিচামারি-দুর্নীতির বিচার করা, সর্বোপরি এই মুহূর্তে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখা আশু কর্তব্য।
এরই মধ্যে আবার এক নতুন সমস্যা যোগ হয়েছে গত সপ্তাহে। ভয়াবহ বন্যায় দেশের কয়েকটি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ গৃহহারা হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি, জিনিসপত্র ভেসে গেছে। অনেকের খাবার নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। গরু-বাছুর, হাঁস-মুরগির ক্ষতি হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে। আর? আর ক্ষতি হয়েছে খেতের ফসলের, আমন ধানের। আমন অন্যতম প্রধান ফসল।
কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাস তাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার মাস। এই সময়ে এমনিতেই খাদ্যাভাব দেখা দেয়। বন্যাজনিত কারণে কত আমন ধানের কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে, আমরা এখনো জানি না। এমনিতেই নানা দাবি সত্ত্বেও আমাদের বছরে ৫-৭-১০ লাখ টন চাল এবং ৬০-৮০ লাখ টন গম আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে আমন পুরো বা আংশিক নষ্ট হলেও তার প্রভাব কী পড়বে, আমরা কেউ এখনো তা জানি না।
জরুরি ভিত্তিতে পুনর্বাসনের কাজ করতে হবে। তার জন্যও টাকার দরকার। রাজস্ব আদায় হচ্ছে না ঠিকমতো। একটি রিপোর্টে দেখলাম, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব যা আদায় হয়েছে তার থেকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। ভাবা যায়, কত বড় জালিয়াতি! এখন আবার দেখতে পাচ্ছি, মূল্যস্ফীতি, জিডিপি ইত্যাদির পরিসংখ্যানও বিভ্রান্তিমূলক। আসলে অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র কী, তা-ই তো জানা যাচ্ছে না। খবর বেরোচ্ছে, বিদেশিরা আমাদের কাছে অনেক টাকা পাবে। চীনকে তাদের প্রদত্ত ঋণ পরিশোধে সীমা বাড়াতেও আমরা অনুরোধ করেছি। আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছে জরুরি ঋণ চাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতেও বিদেশিরা প্রচুর টাকা পাবে।
চারদিকের সব দায়-দাবি মেটাতে গেলে প্রচুর টাকার দরকার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁদের ব্যবসার অবস্থা খারাপ। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়াতে হবে, নইলে তাঁরা খেলাপি হবেন। যেখানে চোখ যায়, সেখানেই সমস্যা। প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর—এই চার অর্থনীতিবিদই আমাদের ভরসা। চারজনের সম্মিলিত মেধা কি আমাদের আগামীর সংকট মোকাবিলায় কান্ডারি হতে পারবে?
ড. আর এম দেবনাথ,সাবেক শিক্ষক, ঢাবি; অর্থনীতি বিশ্লেষক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে