তাপস মজুমদার
২৬ এপ্রিল আজকের পত্রিকায় ‘মানুষ যখন পশু’ শিরোনামে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে যার বিষয়বস্তু রোকন নামের এক নিকটজন কর্তৃক শিশুকে ধর্ষণ এবং হত্যা। একই পত্রিকার ২ এপ্রিল সম্পাদকীর শিরোনাম ছিল ‘বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি’। লেখাতে সম্প্রতি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত কিছু খবর উদ্ধৃত করা হয়েছে, যাতে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর ওপর পৈশাচিক আচরণ প্রকাশ পেয়েছে।
ব্যাপারটা এমন নয় যে, একটি বিশেষ স্থানে এমন ঘটনা ঘটেছে; অথবা এটাই দেশের প্রথম ঘটনা; অথবা শুধু ঘরেই নারীর প্রতি বিরূপ আচরণ করা হয়। নারী নিপীড়ন, বীভৎস নির্যাতন, ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, হত্যা এখন প্রতিদিনের খবর এবং তা যেন অপ্রতিরোধ্য। নারীর প্রতি কুৎসিত ও নির্মম আচরণ একটি গুরুতর সামাজিক অপরাধ। আইনত দণ্ডনীয় অপরাধও বটে।
সমাজের নানা স্তরে পুরুষ ও নারীর মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে এই গুরুতর অপরাধের বীজ বপন করা হয়। নিতান্তই অল্পকিছুসংখ্যক মানুষ নারীর প্রতি উদার বা নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। প্রকৃতপক্ষে, তা সমুদ্রের মাঝে এক বিন্দু জলের মতো।
নারীদের আত্মচেতনা বেড়েছে, বেড়েছে শিক্ষার মান ও সচেতনতা। পাশাপাশি নির্যাতনও অনেক বেড়েছে। মেয়েদের কর্মকাঠামো পাল্টে গেছে অনেক। স্বাধীনতার পর থেকে মেয়েরা অনেক বেশি সংখ্যায় বাইরে বেরোচ্ছে। এখন তো বাইরে বেরোনো অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। কিন্তু তারা নিরাপদ নয়। আশঙ্কা তাই উত্তরোত্তর বাড়ছে। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এ জন্য সমধিক দায়ী। এই সমাজে এখনো অভিভাবককে জিজ্ঞাসা করা হয়, মেয়েকে ‘বিয়ে দিচ্ছেন’ না কেন! এ কথা বলা হয় না ‘মেয়ে বিয়ে করেছে’ কি না। অভিভাবকেরাও অনেকে বলেন মেয়েকে ‘বিয়ে দেব’; মেয়ে ‘বিয়ে করবে’ নয়। ছেলের বিয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু এভাবে বলা হয় না। নারীর মুক্তির ক্ষেত্রে এই মনোভাব ক্ষতিকর।
নিকট অতীত এবং সাম্প্রতিক কালের কয়েকটি ঘটনা—যেমন, একজন নারী ডিসির প্ররোচনায় সাংবাদিক পেটানো, অন্য একজন নারী ডিসির স্যার সম্বোধন নিয়ে অনভিপ্রেত ঘটনা, একজন নারী বিচারক কর্তৃক তার মেয়ের স্কুলে গিয়ে অভিভাবককে দিয়ে মাফ চাওয়ানো, এক ইউএনওর সর্বসমক্ষে খেলার ট্রফি আছড়ে ভেঙে ফেলাসহ অনেক ঘটনার উল্লেখ করে কেউ কেউ প্রশাসনে নারীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন। এটিও একপেশে, রক্ষণশীল এবং অনুদার দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রশ্নে আমার অধ্যাপক স্ত্রীর কাছে, যার প্রশাসনিক কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে—মন্তব্য জানতে চেয়েছিলাম। তিনি বললেন, ‘যোগ্যতার অভাবের প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। দক্ষতার ঘাটতি থাকতে পারে, যা কিনা দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার ওপরে নির্ভরশীল। কেননা, দক্ষতার সঙ্গে অভিজ্ঞতার সম্পর্ক খুব নিবিড়। আজ দায়িত্ব পেলে কালই কেউ দক্ষ হয়ে ওঠে না। এতকাল নারীরা সেভাবে দায়িত্বচর্চার সুযোগ পায়নি।’ এর সাথে ততোধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা তিনি যোগ করলেন, ‘তা ছাড়া পুরুষ সহকর্মীরা অনেক সময়ই সহযোগিতা করেন না বলে নারীর যোগ্যতা-দক্ষতার পূর্ণ প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।’ কথাগুলো আমার মনে ধরল।
বেগম রোকেয়া পড়লে অথবা ৪০-৫০ বছর আগের বাংলা সিনেমাগুলো দেখলে এখন অবিশ্বাস্য ঠেকে! নারীর কি বীভৎস সামাজিক চিত্র! বৈধব্য, অবিশ্বাস, শিক্ষাবঞ্চনা, গৃহবন্দিত্ব, মতামত দানে, এমনকি প্রয়োজনমতো খাদ্য গ্রহণের অধিকারবঞ্চিত হয়ে কী মর্মান্তিক দুর্ভাগ্য বরণ করে নিতে হয়েছে! কত সমুদ্র চোখের জল ফেলে আর দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে রেখে গোটা জীবন কাটাতে হয়েছে নারীকে! অভাবনীয়। সুতরাং তুলাদণ্ডে মেপে নারীর যোগ্যতা-দক্ষতার পূর্ণতা প্রমাণের সময় এখনো আসেনি।
পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে না দেখে, ইতিবাচক দিকগুলোকে অবজ্ঞা করে শুধু নেতিবাচক দিকগুলোকে সামনে আনলে, তা অবিচারের শামিল। বড় বড় ব্যর্থতা তো পুরুষেরও রয়েছে। অপরদিকে নারীর অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে, যা শুধু নিপুণ গৃহকর্মে সীমাবদ্ধ নয়। দীর্ঘ চাকরিজীবনে দেখেছি, নারী কর্মী অধিকতর সৎ ও বিনয়ী। তাঁরা অফিসে সময় অপচয় করেন না, যেটা পুরুষ কর্মীরা প্রায়ই করে থাকেন। ব্যতিক্রম অবশ্য দুই ক্ষেত্রেই আছে। অনেক পুরুষ সহকর্মী নারীকে অকর্মণ্য বা নিদেনপক্ষে কম যোগ্য মনে করেন। শুধু তা-ই না, কখনো কখনো অবহেলাবশত অসহযোগিতাও করেন। এটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। সম্প্রতি বাংলাদেশের নারী জাতীয় ফুটবল দল প্যারিস অলিম্পিকের বাছাই পর্ব খেলতে যে মিয়ানমারে যেতে পারেনি, তার কারণ কি শুধুই অর্থের অভাব! কে বলবে এখানেও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি!
ভালো বা মন্দ, কর্মঠ বা উদাসীন, যোগ্য বা অযোগ্য—এ বিষয়গুলো লিঙ্গভেদে ভিন্ন হয় না। শিশুকাল থেকেই যে বিরুদ্ধতা ও বৈষম্য মোকাবিলা করে একজন নারীকে বেড়ে উঠতে হয়, সেগুলোসহ সন্তান পালনের গুরুদায়িত্বের কথা বিবেচনায় নিলে যোগ্যতার দিক থেকে নারীই বরং পুরুষের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকবে।
আমরা একটি উন্নত জাতি চাই। তার জন্য যেমন অঙ্গীকার থাকতে হবে, তেমনি বহুমাত্রিক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। সমতার দৃষ্টি মেলে নারীর প্রতি সুবিচার করা সেই ত্যাগের একটি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে খুবই আন্তরিক। এই সময়টি তাই সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারও কোনো ভুল, অন্যায়, অদক্ষতা বা অযোগ্যতা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তার ওপর ভর করে প্রগতির চাকাকে চেপে ধরা যাবে না। গৃহে অথবা কর্মক্ষেত্রে যাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ওঠাবসা, নানা কারণে তাদের সঙ্গে মতের অমিল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে শুধু তার ওপর ভিত্তি করে নারীকে বিচার করার দিন আর নেই। যদি তা করা হয়, কোনো সন্দেহ নেই, তাহলে প্রগতির চাকা উল্টো দিকে ঘুরবে। কিন্তু সে বোধ আমাদের সবার নেই। তাই সম-অধিকারের জন্য সচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো দরকার। পাশাপাশি নারী নির্যাতনসংক্রান্ত বিচার দ্রুত হওয়া, প্রতিষ্ঠানভিত্তিক যৌন নির্যাতন প্রতিরোধসংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা, প্রতিষ্ঠানে নারীকে গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা, বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, সম্পত্তি বণ্টনে বৈষম্য দূর করা, সর্বোপরি নারীর ব্যাপারে
পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া দরকার।
বলা বাহুল্য, শুধু আইন প্রয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। নারীকে মানুষ হিসেবে দেখার শিক্ষাটাই সমাধানের উপায়।
২৬ এপ্রিল আজকের পত্রিকায় ‘মানুষ যখন পশু’ শিরোনামে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে যার বিষয়বস্তু রোকন নামের এক নিকটজন কর্তৃক শিশুকে ধর্ষণ এবং হত্যা। একই পত্রিকার ২ এপ্রিল সম্পাদকীর শিরোনাম ছিল ‘বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি’। লেখাতে সম্প্রতি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত কিছু খবর উদ্ধৃত করা হয়েছে, যাতে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর ওপর পৈশাচিক আচরণ প্রকাশ পেয়েছে।
ব্যাপারটা এমন নয় যে, একটি বিশেষ স্থানে এমন ঘটনা ঘটেছে; অথবা এটাই দেশের প্রথম ঘটনা; অথবা শুধু ঘরেই নারীর প্রতি বিরূপ আচরণ করা হয়। নারী নিপীড়ন, বীভৎস নির্যাতন, ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, হত্যা এখন প্রতিদিনের খবর এবং তা যেন অপ্রতিরোধ্য। নারীর প্রতি কুৎসিত ও নির্মম আচরণ একটি গুরুতর সামাজিক অপরাধ। আইনত দণ্ডনীয় অপরাধও বটে।
সমাজের নানা স্তরে পুরুষ ও নারীর মধ্যে বৈষম্য তৈরি করে এই গুরুতর অপরাধের বীজ বপন করা হয়। নিতান্তই অল্পকিছুসংখ্যক মানুষ নারীর প্রতি উদার বা নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। প্রকৃতপক্ষে, তা সমুদ্রের মাঝে এক বিন্দু জলের মতো।
নারীদের আত্মচেতনা বেড়েছে, বেড়েছে শিক্ষার মান ও সচেতনতা। পাশাপাশি নির্যাতনও অনেক বেড়েছে। মেয়েদের কর্মকাঠামো পাল্টে গেছে অনেক। স্বাধীনতার পর থেকে মেয়েরা অনেক বেশি সংখ্যায় বাইরে বেরোচ্ছে। এখন তো বাইরে বেরোনো অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে। কিন্তু তারা নিরাপদ নয়। আশঙ্কা তাই উত্তরোত্তর বাড়ছে। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এ জন্য সমধিক দায়ী। এই সমাজে এখনো অভিভাবককে জিজ্ঞাসা করা হয়, মেয়েকে ‘বিয়ে দিচ্ছেন’ না কেন! এ কথা বলা হয় না ‘মেয়ে বিয়ে করেছে’ কি না। অভিভাবকেরাও অনেকে বলেন মেয়েকে ‘বিয়ে দেব’; মেয়ে ‘বিয়ে করবে’ নয়। ছেলের বিয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু এভাবে বলা হয় না। নারীর মুক্তির ক্ষেত্রে এই মনোভাব ক্ষতিকর।
নিকট অতীত এবং সাম্প্রতিক কালের কয়েকটি ঘটনা—যেমন, একজন নারী ডিসির প্ররোচনায় সাংবাদিক পেটানো, অন্য একজন নারী ডিসির স্যার সম্বোধন নিয়ে অনভিপ্রেত ঘটনা, একজন নারী বিচারক কর্তৃক তার মেয়ের স্কুলে গিয়ে অভিভাবককে দিয়ে মাফ চাওয়ানো, এক ইউএনওর সর্বসমক্ষে খেলার ট্রফি আছড়ে ভেঙে ফেলাসহ অনেক ঘটনার উল্লেখ করে কেউ কেউ প্রশাসনে নারীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন। এটিও একপেশে, রক্ষণশীল এবং অনুদার দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রশ্নে আমার অধ্যাপক স্ত্রীর কাছে, যার প্রশাসনিক কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে—মন্তব্য জানতে চেয়েছিলাম। তিনি বললেন, ‘যোগ্যতার অভাবের প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। দক্ষতার ঘাটতি থাকতে পারে, যা কিনা দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার ওপরে নির্ভরশীল। কেননা, দক্ষতার সঙ্গে অভিজ্ঞতার সম্পর্ক খুব নিবিড়। আজ দায়িত্ব পেলে কালই কেউ দক্ষ হয়ে ওঠে না। এতকাল নারীরা সেভাবে দায়িত্বচর্চার সুযোগ পায়নি।’ এর সাথে ততোধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা তিনি যোগ করলেন, ‘তা ছাড়া পুরুষ সহকর্মীরা অনেক সময়ই সহযোগিতা করেন না বলে নারীর যোগ্যতা-দক্ষতার পূর্ণ প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।’ কথাগুলো আমার মনে ধরল।
বেগম রোকেয়া পড়লে অথবা ৪০-৫০ বছর আগের বাংলা সিনেমাগুলো দেখলে এখন অবিশ্বাস্য ঠেকে! নারীর কি বীভৎস সামাজিক চিত্র! বৈধব্য, অবিশ্বাস, শিক্ষাবঞ্চনা, গৃহবন্দিত্ব, মতামত দানে, এমনকি প্রয়োজনমতো খাদ্য গ্রহণের অধিকারবঞ্চিত হয়ে কী মর্মান্তিক দুর্ভাগ্য বরণ করে নিতে হয়েছে! কত সমুদ্র চোখের জল ফেলে আর দীর্ঘশ্বাস বুকে চেপে রেখে গোটা জীবন কাটাতে হয়েছে নারীকে! অভাবনীয়। সুতরাং তুলাদণ্ডে মেপে নারীর যোগ্যতা-দক্ষতার পূর্ণতা প্রমাণের সময় এখনো আসেনি।
পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে না দেখে, ইতিবাচক দিকগুলোকে অবজ্ঞা করে শুধু নেতিবাচক দিকগুলোকে সামনে আনলে, তা অবিচারের শামিল। বড় বড় ব্যর্থতা তো পুরুষেরও রয়েছে। অপরদিকে নারীর অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে, যা শুধু নিপুণ গৃহকর্মে সীমাবদ্ধ নয়। দীর্ঘ চাকরিজীবনে দেখেছি, নারী কর্মী অধিকতর সৎ ও বিনয়ী। তাঁরা অফিসে সময় অপচয় করেন না, যেটা পুরুষ কর্মীরা প্রায়ই করে থাকেন। ব্যতিক্রম অবশ্য দুই ক্ষেত্রেই আছে। অনেক পুরুষ সহকর্মী নারীকে অকর্মণ্য বা নিদেনপক্ষে কম যোগ্য মনে করেন। শুধু তা-ই না, কখনো কখনো অবহেলাবশত অসহযোগিতাও করেন। এটা দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। সম্প্রতি বাংলাদেশের নারী জাতীয় ফুটবল দল প্যারিস অলিম্পিকের বাছাই পর্ব খেলতে যে মিয়ানমারে যেতে পারেনি, তার কারণ কি শুধুই অর্থের অভাব! কে বলবে এখানেও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি!
ভালো বা মন্দ, কর্মঠ বা উদাসীন, যোগ্য বা অযোগ্য—এ বিষয়গুলো লিঙ্গভেদে ভিন্ন হয় না। শিশুকাল থেকেই যে বিরুদ্ধতা ও বৈষম্য মোকাবিলা করে একজন নারীকে বেড়ে উঠতে হয়, সেগুলোসহ সন্তান পালনের গুরুদায়িত্বের কথা বিবেচনায় নিলে যোগ্যতার দিক থেকে নারীই বরং পুরুষের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকবে।
আমরা একটি উন্নত জাতি চাই। তার জন্য যেমন অঙ্গীকার থাকতে হবে, তেমনি বহুমাত্রিক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। সমতার দৃষ্টি মেলে নারীর প্রতি সুবিচার করা সেই ত্যাগের একটি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে খুবই আন্তরিক। এই সময়টি তাই সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারও কোনো ভুল, অন্যায়, অদক্ষতা বা অযোগ্যতা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তার ওপর ভর করে প্রগতির চাকাকে চেপে ধরা যাবে না। গৃহে অথবা কর্মক্ষেত্রে যাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ওঠাবসা, নানা কারণে তাদের সঙ্গে মতের অমিল হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে শুধু তার ওপর ভিত্তি করে নারীকে বিচার করার দিন আর নেই। যদি তা করা হয়, কোনো সন্দেহ নেই, তাহলে প্রগতির চাকা উল্টো দিকে ঘুরবে। কিন্তু সে বোধ আমাদের সবার নেই। তাই সম-অধিকারের জন্য সচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো দরকার। পাশাপাশি নারী নির্যাতনসংক্রান্ত বিচার দ্রুত হওয়া, প্রতিষ্ঠানভিত্তিক যৌন নির্যাতন প্রতিরোধসংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা, প্রতিষ্ঠানে নারীকে গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা, বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, সম্পত্তি বণ্টনে বৈষম্য দূর করা, সর্বোপরি নারীর ব্যাপারে
পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া দরকার।
বলা বাহুল্য, শুধু আইন প্রয়োগ করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। নারীকে মানুষ হিসেবে দেখার শিক্ষাটাই সমাধানের উপায়।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে