গোমস্তাপুরের মোড়ে মোড়ে ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ০৯

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে ভাপা পিঠা বিক্রি। প্রতিদিন বিকেলের পর ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ভাপা পিঠা। আবার উপজেলার বেশকিছু স্থানে সকালেও বিক্রি হয় ভাপা পিঠা।

ভাপা পিঠাকে এ অঞ্চলে ধুপি অথবা ধুপপি বলা হয়। এলাকার অনেকেই এই ভাপা পিঠা বিক্রি করে চালাচ্ছেন সংসার।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রহনপুরসহ গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরম-গরম শীতের ভাপা পিঠা বা ধুপি বিক্রি হচ্ছে। পিঠা কিনতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে। ঝামেলা ছাড়া শীতের পিঠা খাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হলো ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। কেউ সকালে পিঠা বানানো শুরু করলেও অধিকাংশ দোকানে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে পিঠার বেচা-কেনা। তবে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকে বেশি। ভ্রাম্যমাণ দোকানের বেশির ভাগ পিঠা বিক্রেতা দরিদ্র। এখানকার পিঠা প্রকারভেদে ৫ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।

ভাপা পিঠা খেতে আসা শিক্ষার্থী আহসানুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকায় জন্মস্থান হলেও পরিবারের চাকরি সুবাদে এখানে বসবাস করি। প্রায় প্রতিদিন বিকেলে বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ডাকবাংলো চত্বর মোড়ের ভাপা পিঠা খেতে যাই। এখানকার ভাপা পিঠা খেতে ভালোই লাগে।’

এ বিষয়ে পিঠা বিক্রেতা সুমন আলী বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রহনপুর বড়বাজারে পানের দোকানে কাজ করেন তিনি। বিকেলে মতির মোড়ে ভাপা পিঠা বিক্রি করেন।

রহনপুর পৌর এলাকার পিঠা বিক্রেতা বেলাল বলেন, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাপা পিঠার কদর বেড়ে যায়। পিঠা বিক্রেতা বেলাল আরও বলেন, ‘আমি পেশায় একজন ভ্যানচালক। ভ্যান চালানো বন্ধ করে শীত মৌসুমে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এ ব্যবসা করছি। আমি পৌর কার্যালয়সংলগ্ন তেঁতুল মোড়ে ভাপা বা ধুপি পিঠা বিক্রি করি। এ পিঠা তৈরি করতে প্রথমে চাল সেদ্ধ করতে হয়, তারপর সে চাল রোদে শুকিয়ে ঢেঁকি বা মেশিনে আটা তৈরি করা হয়। এ আটা, গুড় বা খেজুরের গুড়, নারকেল, আর হালকা লবণ দিয়ে তৈরি হয় ধুপি পিঠা। প্রতিদিন দু-তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি।’

শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যুগের পরিবর্তনে বর্তমানে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পিঠা উৎসব। আগে শীত বা নতুন ধান বাড়িতে উঠলেই গৃহবধূরা নতুন পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন। এ দৃশ্য গ্রামে কমে গেলেও বাণিজ্যিকভাবে ভাপা পিঠা বিক্রি হচ্ছে হাটবাজার ও রাস্তার মোড়ে। দামে কম হলেও অনেক সুস্বাদু খাদ্য এ পিঠা। তবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন হচ্ছে কিনা সেদিকে কর্তৃপক্ষের সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত