আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন

নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২২, ০৭: ২২
আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ১৫: ৫৯

নরসিংদীর পলাশে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার সকালে পলাশ থানা সদর মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এ সম্মেলন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, সম্মানীত লোকজন আসবেন, স্থানীয় সাংসদ থাকবেন, তাই পরিস্থিতি বুঝে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস বলছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করা যেতে পারে। তবে দুই পালার শিক্ষার্থীদের ক্লাসের মধ্যবর্তী সময়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নবনির্মিত ভবনটি হস্তান্তর না হওয়ায় বিদ্যালয়ে দুই পালায় ক্লাস হচ্ছে। এই সম্মেলনের আয়োজক কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির কাছ থেকে মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়েছে। সম্মেলনের কারণে সকালের পালার শিক্ষার্থীদের ১০টার পরিবর্তে পৌনে ৮টায় ক্লাস শুরু হয়। পরিস্থিতির জন্য ৩০ মিনিট করে মোট ৪টি ক্লাস হয়েছে তাদের। আবার বেলা ২টা থেকে পরের পালার ক্লাসগুলো ঠিকঠাক হয়েছে। আগের দিনই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রতিদিন সকাল ১০টায় ক্লাস শুরু হলেও আওয়ামী লীগের সম্মেলনের কারণে সোমবার ক্লাস শুরু হবে সকাল পৌনে ৮টায়। অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী যথাসময়ে ক্লাসে এলেও পরবর্তীতে সময় কমিয়ে ও কয়েকটি ক্লাস বাদ দিয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় তাদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, অন্য কোনো মিলনায়তন বা খোলা স্থানে সম্মেলনের আয়োজন করা হলে ভালো হতো। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়ার প্রয়োজন হতো না। শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতো না।

এদিকে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ১০টার দিকে। এর আগে সকাল ৯টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে অসংখ্য নেতা-কর্মী মাঠে সমবেত হন। দীর্ঘ আট বছর পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপকে পুনরায় সভাপতি ও জিনারদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম গাজীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি (এমপি), নরসিংদী সদর আসনের সাংসদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, শিবপুরের সাংসদ জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ। সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির থাকার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি।

স্কুলের মাঠে সম্মেলন কতটুকু যৌক্তিক জানতে চাইলে পলাশ থানা সদর মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরুণ চন্দ্র দাস জানান, কত কারণেই তো আমরা স্কুল এক দিন দুই দিন বন্ধ দিই। সম্মানীত লোকজন আসবেন, স্থানীয় সাংসদ থাকবেন, তাই পরিস্থিতি বুঝে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের জন্য বরাদ্দ তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি থাকলেও আমরা সেই সুযোগ নিইনি। সম্মেলনের কারণে আমরা কিন্তু ক্লাস বন্ধ রাখিনি। সময় এগিয়ে এনে চারটি ক্লাস হওয়ার পর সম্মেলনের কারণে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম মিত্র বলেন, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এমন সম্মেলনের আয়োজন করা যেতে পারে। তবে আমি যত দূর জেনেছি, দুই পালার শিক্ষার্থীদের ক্লাসের মধ্যবর্তী সময়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত