নাগরপুরে পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত দিবস উদ্‌যাপন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন দিবসটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উপজেলা চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত-ই-জাহান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো ইকবাল হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুজায়েত হোসেনসহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর বাংলার সূর্য সন্তানরা পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে নাগরপুর উপজেলাকে মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। এদিন জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো উপজেলা। নাগরপুরের মানুষ মুক্তির স্বাদ পান। যুদ্ধকালীন এ দিনে টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতার খবর দেশের সীমানা পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল।

১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর উপজেলার কেদারপুরে প্রায় চার হাজার মুক্তিযোদ্ধা নাগরপুর থানা আক্রমণের জন্য সমবেত হন। খবর পেয়ে হানাদার বাহিনী দুটি যুদ্ধ বিমান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করে তাঁদের এ পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়। পিছু হটে মুক্তিবাহিনী। পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে নাগরপুর থানা দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। অবশেষে ৯ ডিসেম্বর কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার হুমায়ুন বাঙ্গাল, রবিউল আলম, সাইদুর রহমান, সবুর খান ও বাতেন বাহিনীর কয়েকটি কোম্পানির যৌথ আক্রমণে পাক হানাদারদের বেশ কয়েকটি ট্যাংক ধ্বংস করে।

এ যুদ্ধে বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত পাক সেনা নিয়ে হানাদার বাহিনী নাগরপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়। নাগরপুর থানা স্থায়ীভাবে হানাদার মুক্ত হয়। সেদিন নাগরপুরবাসী ৯ মাসের দুঃখ বেদনা মুহূর্তেই ভুলে সমস্বরে জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত করে। তাই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সীমিত কর্মসূচি গ্রহণ করে।