ফরিদপুরে পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে ৩৮ হাজার মেট্রিক টন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২২, ০৮: ১৮
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৫: ০৬

ফরিদপুরে চলতি মৌসুমে ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষিরা ৫ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন করেছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ৩৮ হাজার মেট্রিক টন কম হয়েছে। ফরিদপুর জেলায় পেঁয়াজের ১৭ হাজার মেট্রিক টন চাহিদা রয়েছে। বাকি পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।

জেলার কানাইপুর বাজারসহ কয়েকটি পেঁয়াজের বাজারের গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে চাষিরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে মণপ্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজচাষি আশুতোষ মালো বলেন, এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদে খরচ একটু বেশি হয়েছে। মণপ্রতি উৎপাদন খরচ হয়েছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। চাষি পর্যায়ে তাঁরা মণপ্রতি ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা দর পেলে বেশি লাভ হতো।

কানাইপুর বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও পেঁয়াজচাষি শাহজাহান মিয়া বলেন, শুক্রবার ও মঙ্গলবার এ বাজারে হাট বসে। গত ১৫ দিনে চাষিরা মণপ্রতি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দাম পাচ্ছেন। যা আগে হাজারের নিচে ছিল।

তিনি আরও বলেন, জেলার পেঁয়াজের বাজার হিসেবে বেশি পরিচিত বাইলে বাজার, রামকান্তপুর বাজার, ঠনঠনিয়া বাজার, ময়েনদিয়া বাজার, ফকিরের বাজার, নালার মোড় বাজার, কাদিরদী বাজার, সাতৈর বাজার। এই বাজারগুলোতে চাষিরা প্রচুর পেঁয়াজ নিয়ে আসেন।

কানাইপুর বাজারের আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বিলাল মাতুব্বর বলেন, তাঁরা চাষিদের কাছ থেকে যে দরে পেঁয়াজ কিনছেন তার থেকে সামান্য বেশি দরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করছেন। তিনি দাবি করেন, চাষিদের পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক কোনো ব্যবস্থা নেই, যে কারণেই দ্রুত বাজারে ছেড়ে দেন তাঁরা।

কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পেঁয়াজচাষি ফকির বেলায়েত হোসেন বলেন, এই অঞ্চলের চাষিরা মূলত লাল তীর কিং নামের পেঁয়াজের আবাদ বেশি করেন। তবে এই পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। ফরিদপুর অঞ্চলে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নির্মাণের দাবি তাঁদের।

তিনি বলেন, ৫২ শতাংশের বিঘায় ভালো ফলন হলে ১শ ২০ থেকে ৩০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হয়রত আলী বলেন, এই মৌসুমে জেলায় ৪১ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। জেলায় সরকারি হিসাবে ৫ লাখ ৫১ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত বছরের চেয়ে এ বছর উৎপাদন ৩৮ হাজার মেট্রিকটন কম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাজারের যে দর যাচ্ছে তাতে চাষিরা মণপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভ পাচ্ছেন।

ফরিদপুরের মাটি পেঁয়াজ আবাদে উপযোগী, তাই দেশের মোট পেঁয়াজ উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে এই জেলা। ফরিদপুরে তিন ধরনের পেঁয়াজ চাষ হয়। মুড়ি কাটা, হালি ও দানা পেঁয়াজ। নয়টি উপজেলার মধ্যে নগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা ও সদরপুরে পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয়। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত