তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
আর কয়েক দিন পরই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ শুরু হবে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেতু চালুর পর রাজধানীর নৈমিত্তিক যানজটে যুক্ত হবে এই যানবাহনের বড় অংশ। সেই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগরী প্রস্তুত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় চলাচলকারী বাসের বড় অংশই গাবতলী ও এই সংলগ্ন এলাকা থেকে ছাড়ে। এসব বাস পদ্মা সেতু হয়েই চলাচল করবে। ফলে তাদের শহরের ভেতর দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে হবে। এ ছাড়া যেসব যানবাহন পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ, সিলেট বা ময়মনসিংহে যাবে, সেসব গাড়িরও ঢাকা শহরের ভেতর দিয়েই যেতে হবে। আর সেতু চালু হলে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে, সেটা সবাই মানছেন।
পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে পদ্মা সেতু চালুর পর প্রতিদিন সেতু দিয়ে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। এর মধ্যে ট্রাক পারাপার হবে ১০ হাজার ২৪৪টি। বাস ও হালকা যানবাহন পারাপার হবে সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি। সমীক্ষা অনুযায়ী যানবাহনের এই সংখ্যা ২০২৫ সালের দিকে বেড়ে যাবে, তখন সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা দাঁড়াবে দৈনিক ৪১ হাজার। এসব যানবাহনের একটি বড় অংশ মহানগরী ঢাকার ভেতর দিয়ে চলাচল করবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা শহরের যানবাহনের চাপ বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা ধারণা করছি, দৈনিক ১০ থেকে ১৫ হাজার নতুন ট্রাফিক যুক্ত হতে পারে। এখন এমনিতেই সবকিছু ঢাকামুখী। সেতু চালু হওয়ার পর যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ হবে। ফলে সবাই ঢাকায় আসতে চাইবে। দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরি হয়ে চলাচল করে, এমন অনেক যানবাহন পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে। হানিফ ফ্লাইওভারে এখনই যানবাহনের জট লেগে যায়।’ তিনি বলেন, ‘যখন দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহন কোনো বাধা ছাড়াই ঢাকায় ঢুকবে, তখন যানজট তীব্রতর হবে। সরকার যদি বিকল্প কোনো উপায় না বের করে, তাহলে ঢাকার যানজট ভয়াবহ রূপ নেবে। ঢাকার চারপাশ দিয়ে এর আগে রিং রোডের পরিকল্পনা ছিল, সেটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।’
এদিকে ২০১৬ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঢাকা মহানগরে যানজট, শাসনব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক
গবেষণায় বলা হয়েছিল, ২০০৪ সালে ঢাকার রাস্তায় প্রতি ঘণ্টায় গাড়ির গতিসীমা ছিল গড়ে ২১ দশমিক ২ কিলোমিটার। যানবাহনের পরিমাণ যদি একই হারে বাড়তে থাকে এবং তা নিরসনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে ২০২৫ সালে এই শহরে যানবাহনের গতি হবে ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটার, যা মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ঢাকা শহরে যানজট কমাতে সাধারণত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ২৬ জুন থেকে সেতুতে যান চলাচল শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই জট আরও বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলের যেসব গাড়ি চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ যাবে, সেসব গাড়িকে ঢাকা শহরের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এর জন্য কোনো ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি। রিং রোড চালুর কথা বলা হচ্ছে বহু বছর ধরে। সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। এ অবস্থায় বাড়তি গাড়ির জন্য বিকল্প পথ কী হতে পারে, সেটাও চূড়ান্ত হয়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘ঢাকা শহরের মধ্যে সকাল সাতটা পর্যন্ত এবং রাত নয়টার পরে বড় বাস চলাচল করতে পারে। বাকি সময়টাতে বড় বাস শহরে ঢোকার অনুমতি নেই। তাই আমি মনে করি যানজট হবে না।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বলছেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে যেসব যানবাহন ঢাকায় ঢুকবে, সে বিষয়ে আমরা কিছুটা পরিকল্পনা নিচ্ছি। যাত্রাবাড়ীর দিকে ট্রাফিক পুলিশ বাড়ানো হবে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য। তবে দেখার বিষয় সেতু চালু হলে, কোন সময় গাড়ি বেশি আসে, কী ধরনের গাড়ি চলে, এসব দেখার পরে আমাদের পরিকল্পনা সংশোধন করব।’
সরকারের ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পরে ঢাকা শহরে যানজটের অবস্থা এবং ব্যবস্থাপনা কেমন হতে পারে সে বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে একটি সভা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
পদ্মা সেতু ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল সহজতর করতে ট্রান্সপোর্ট অবকাঠামো উন্নয়ন ও ট্রাফিক ডাইভারশনসহ একটি সমন্বিত পরিকল্পনা তৈরি করতে আজ রোববার ডিটিসিএর একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের অংশীজনদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
আর কয়েক দিন পরই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ শুরু হবে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেতু চালুর পর রাজধানীর নৈমিত্তিক যানজটে যুক্ত হবে এই যানবাহনের বড় অংশ। সেই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য ঢাকা মহানগরী প্রস্তুত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় চলাচলকারী বাসের বড় অংশই গাবতলী ও এই সংলগ্ন এলাকা থেকে ছাড়ে। এসব বাস পদ্মা সেতু হয়েই চলাচল করবে। ফলে তাদের শহরের ভেতর দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে হবে। এ ছাড়া যেসব যানবাহন পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ, সিলেট বা ময়মনসিংহে যাবে, সেসব গাড়িরও ঢাকা শহরের ভেতর দিয়েই যেতে হবে। আর সেতু চালু হলে যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে, সেটা সবাই মানছেন।
পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে পদ্মা সেতু চালুর পর প্রতিদিন সেতু দিয়ে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। এর মধ্যে ট্রাক পারাপার হবে ১০ হাজার ২৪৪টি। বাস ও হালকা যানবাহন পারাপার হবে সাড়ে ১৩ হাজারের বেশি। সমীক্ষা অনুযায়ী যানবাহনের এই সংখ্যা ২০২৫ সালের দিকে বেড়ে যাবে, তখন সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা দাঁড়াবে দৈনিক ৪১ হাজার। এসব যানবাহনের একটি বড় অংশ মহানগরী ঢাকার ভেতর দিয়ে চলাচল করবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা শহরের যানবাহনের চাপ বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা ধারণা করছি, দৈনিক ১০ থেকে ১৫ হাজার নতুন ট্রাফিক যুক্ত হতে পারে। এখন এমনিতেই সবকিছু ঢাকামুখী। সেতু চালু হওয়ার পর যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ হবে। ফলে সবাই ঢাকায় আসতে চাইবে। দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরি হয়ে চলাচল করে, এমন অনেক যানবাহন পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে। হানিফ ফ্লাইওভারে এখনই যানবাহনের জট লেগে যায়।’ তিনি বলেন, ‘যখন দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহন কোনো বাধা ছাড়াই ঢাকায় ঢুকবে, তখন যানজট তীব্রতর হবে। সরকার যদি বিকল্প কোনো উপায় না বের করে, তাহলে ঢাকার যানজট ভয়াবহ রূপ নেবে। ঢাকার চারপাশ দিয়ে এর আগে রিং রোডের পরিকল্পনা ছিল, সেটি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।’
এদিকে ২০১৬ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঢাকা মহানগরে যানজট, শাসনব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক
গবেষণায় বলা হয়েছিল, ২০০৪ সালে ঢাকার রাস্তায় প্রতি ঘণ্টায় গাড়ির গতিসীমা ছিল গড়ে ২১ দশমিক ২ কিলোমিটার। যানবাহনের পরিমাণ যদি একই হারে বাড়তে থাকে এবং তা নিরসনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে ২০২৫ সালে এই শহরে যানবাহনের গতি হবে ঘণ্টায় ৪ কিলোমিটার, যা মানুষের হাঁটার গতির চেয়ে কম।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ঢাকা শহরে যানজট কমাতে সাধারণত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। ২৬ জুন থেকে সেতুতে যান চলাচল শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই জট আরও বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলের যেসব গাড়ি চট্টগ্রাম, উত্তরবঙ্গ ও ময়মনসিংহ যাবে, সেসব গাড়িকে ঢাকা শহরের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এর জন্য কোনো ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি। রিং রোড চালুর কথা বলা হচ্ছে বহু বছর ধরে। সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি। এ অবস্থায় বাড়তি গাড়ির জন্য বিকল্প পথ কী হতে পারে, সেটাও চূড়ান্ত হয়নি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘ঢাকা শহরের মধ্যে সকাল সাতটা পর্যন্ত এবং রাত নয়টার পরে বড় বাস চলাচল করতে পারে। বাকি সময়টাতে বড় বাস শহরে ঢোকার অনুমতি নেই। তাই আমি মনে করি যানজট হবে না।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বলছেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে যেসব যানবাহন ঢাকায় ঢুকবে, সে বিষয়ে আমরা কিছুটা পরিকল্পনা নিচ্ছি। যাত্রাবাড়ীর দিকে ট্রাফিক পুলিশ বাড়ানো হবে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য। তবে দেখার বিষয় সেতু চালু হলে, কোন সময় গাড়ি বেশি আসে, কী ধরনের গাড়ি চলে, এসব দেখার পরে আমাদের পরিকল্পনা সংশোধন করব।’
সরকারের ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পরে ঢাকা শহরে যানজটের অবস্থা এবং ব্যবস্থাপনা কেমন হতে পারে সে বিষয়ে অংশীজনদের নিয়ে একটি সভা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন
পদ্মা সেতু ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল সহজতর করতে ট্রান্সপোর্ট অবকাঠামো উন্নয়ন ও ট্রাফিক ডাইভারশনসহ একটি সমন্বিত পরিকল্পনা তৈরি করতে আজ রোববার ডিটিসিএর একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের অংশীজনদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১৩ ঘণ্টা আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১৬ ঘণ্টা আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে