সম্পাদকীয়
ফাঁকা মাঠে বসে গলা সাধছিলেন ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’-এর গুপি। সেই সুর আমলকীর রাজার গায়ে আগুন ধরায়। উত্তেজিত রাজা গুপিকে ডেকে বললেন, ‘চেঁচাইছিলি ক্যানে?’ তারপর আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেন গুপির বাদ্যযন্ত্র। গাধার পিঠে চড়িয়ে তাঁকে দেশছাড়া করলেন।
আজকের সময়ে এসেও গুপি গাইন বাঘা বাইনের সেই গল্প যেন সত্যি হয়ে গেল কুষ্টিয়ায়। সেখানকার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের মাজিলা গ্রামে এক সভায় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রেজভি উজ্জামান ঘোষণা দিয়েছেন, আজ থেকে এলাকায় গানবাজনা চলবে না। তাঁর ওই ঘোষণার সময় সেখানে উপস্থিত থাকা মাজিলা দারুস সুন্নাহ্ বহুমুখী মাদ্রাসার মাওলানা আলমগীর হোসাইন, মাজিলা বাজার মসজিদের ইমাম আবু সুফিয়ান শাওন এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা সাব্বির আহমেদও এই সিদ্ধান্তে একমত হন; অর্থাৎ সেখানকার রাজনীতি আর ধর্ম মিলেমিশে সুরের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে!
কুষ্টিয়ার এ খবর আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছে রোববার। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিস্ময়ের কথা হলো, সেই পোস্টে কেউ কেউ এ কর্মকাণ্ডকে স্বাগতও জানিয়েছেন। কিন্তু এলাকার বর্গাচাষি ইজাবুল তা প্রত্যাখ্যানও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘গাজীর গান হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতি, সেটা কেন বন্ধ হবে? তাহলে গ্রামের বাজারের চা-দোকানের টেলিভিশনে সারা দিন যেসব ভিনদেশি সিনেমার গান দেখানো হয়, সেগুলোর কী হবে?’ ইজাবুলের কথার জবাব দেননি কেউ।
লালনের দেশ কুষ্টিয়া। পদ্মাপারের এ মাটি চিরসবুজ ও শ্যামল। সেই পুণ্যভূমির গীতিকবি আজিজুর রহমান লিখেছিলেন, ‘পলাশ ঢাকা কোকিল ডাকা আমারই দেশ ভাইরে, ধানের মাঠে ঢেউখেলানো এমন কোথাও নাইরে...।’ অথচ সেই ভূমি নিয়েও যন্ত্রণার দুঃস্বপ্ন দেখতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, মধুর সুরের কুষ্টিয়া হয়তো অচিরেই হয়ে যাবে সুরহীন, তালহীন, লয়হীন এক জনপদ। চেয়ারম্যান এখন হয়তো সুরসাধনা নিষিদ্ধ করে সুরের গলা টিপে ধরছেন। এরপর একদিন শুনব, ঘরে ঘরে থাকা সব তবলা, হারমোনিয়াম, গিটার, পিয়ানো ভেঙে ফেলে বর্বর উল্লাস করছেন। আর আমলকীর রাজার মতোই পিঠে বন্দুক নিয়ে চিৎকার করে বলছেন, ‘চেঁচাইছিলি ক্যানে?’ যদি তা সত্যি হয়, তাহলে সেটাই হবে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর দৃশ্য।
এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, ধর্মব্যবসায়ীরা ক্রমাগত আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সাহিত্য নিয়ে অবিরাম বিষোদ্গার করে চলেছেন।অসাম্প্রদায়িক যে রাষ্ট্র আমরা গড়তে চেয়েছিলাম একাত্তরে, সেখানে সংস্কৃতি থাকবে উচ্চাসনে—এ রকম একটা বার্তা ছিল। কিন্তু আমরা যেন ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছি। ধর্মব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের মধ্যে যে আঁতাত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তা মোটেও স্বাস্থ্যকর কিছু নয়।
আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, এ রকম জঘন্য সুরহীন দেশ যেন কাউকে দেখতে না হয়, তার আগেই যেন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘সুরের আলো ভুবন ফেলে ছেয়ে,/ সুরের হাওয়া চলে গগন বেয়ে।’ সেটাই যেন সত্যি হয়।
ফাঁকা মাঠে বসে গলা সাধছিলেন ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’-এর গুপি। সেই সুর আমলকীর রাজার গায়ে আগুন ধরায়। উত্তেজিত রাজা গুপিকে ডেকে বললেন, ‘চেঁচাইছিলি ক্যানে?’ তারপর আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেন গুপির বাদ্যযন্ত্র। গাধার পিঠে চড়িয়ে তাঁকে দেশছাড়া করলেন।
আজকের সময়ে এসেও গুপি গাইন বাঘা বাইনের সেই গল্প যেন সত্যি হয়ে গেল কুষ্টিয়ায়। সেখানকার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের মাজিলা গ্রামে এক সভায় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রেজভি উজ্জামান ঘোষণা দিয়েছেন, আজ থেকে এলাকায় গানবাজনা চলবে না। তাঁর ওই ঘোষণার সময় সেখানে উপস্থিত থাকা মাজিলা দারুস সুন্নাহ্ বহুমুখী মাদ্রাসার মাওলানা আলমগীর হোসাইন, মাজিলা বাজার মসজিদের ইমাম আবু সুফিয়ান শাওন এবং স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা সাব্বির আহমেদও এই সিদ্ধান্তে একমত হন; অর্থাৎ সেখানকার রাজনীতি আর ধর্ম মিলেমিশে সুরের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে!
কুষ্টিয়ার এ খবর আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছে রোববার। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিস্ময়ের কথা হলো, সেই পোস্টে কেউ কেউ এ কর্মকাণ্ডকে স্বাগতও জানিয়েছেন। কিন্তু এলাকার বর্গাচাষি ইজাবুল তা প্রত্যাখ্যানও করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘গাজীর গান হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতি, সেটা কেন বন্ধ হবে? তাহলে গ্রামের বাজারের চা-দোকানের টেলিভিশনে সারা দিন যেসব ভিনদেশি সিনেমার গান দেখানো হয়, সেগুলোর কী হবে?’ ইজাবুলের কথার জবাব দেননি কেউ।
লালনের দেশ কুষ্টিয়া। পদ্মাপারের এ মাটি চিরসবুজ ও শ্যামল। সেই পুণ্যভূমির গীতিকবি আজিজুর রহমান লিখেছিলেন, ‘পলাশ ঢাকা কোকিল ডাকা আমারই দেশ ভাইরে, ধানের মাঠে ঢেউখেলানো এমন কোথাও নাইরে...।’ অথচ সেই ভূমি নিয়েও যন্ত্রণার দুঃস্বপ্ন দেখতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, মধুর সুরের কুষ্টিয়া হয়তো অচিরেই হয়ে যাবে সুরহীন, তালহীন, লয়হীন এক জনপদ। চেয়ারম্যান এখন হয়তো সুরসাধনা নিষিদ্ধ করে সুরের গলা টিপে ধরছেন। এরপর একদিন শুনব, ঘরে ঘরে থাকা সব তবলা, হারমোনিয়াম, গিটার, পিয়ানো ভেঙে ফেলে বর্বর উল্লাস করছেন। আর আমলকীর রাজার মতোই পিঠে বন্দুক নিয়ে চিৎকার করে বলছেন, ‘চেঁচাইছিলি ক্যানে?’ যদি তা সত্যি হয়, তাহলে সেটাই হবে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর দৃশ্য।
এ কথা অস্বীকার করা যাবে না, ধর্মব্যবসায়ীরা ক্রমাগত আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সাহিত্য নিয়ে অবিরাম বিষোদ্গার করে চলেছেন।অসাম্প্রদায়িক যে রাষ্ট্র আমরা গড়তে চেয়েছিলাম একাত্তরে, সেখানে সংস্কৃতি থাকবে উচ্চাসনে—এ রকম একটা বার্তা ছিল। কিন্তু আমরা যেন ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছি। ধর্মব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের মধ্যে যে আঁতাত দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তা মোটেও স্বাস্থ্যকর কিছু নয়।
আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, এ রকম জঘন্য সুরহীন দেশ যেন কাউকে দেখতে না হয়, তার আগেই যেন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘সুরের আলো ভুবন ফেলে ছেয়ে,/ সুরের হাওয়া চলে গগন বেয়ে।’ সেটাই যেন সত্যি হয়।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে