কাঁধে ১১ কিলোমিটার নিয়েও বাঁচানো গেল না

রুমা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২২, ০৮: ১৯
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১৪: ০৬

বান্দরবানের রুমা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে নতুন ম্রংখ্যংপাড়ার বাসিন্দা বৈইংসাতি ত্রিপুরা (৩৩)। গত বুধবার দুপুরে ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দেন এই নারী। তবে নবজাতকের নাভির ফুল আটকে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।

এ অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যায় বাঁশে কাপড় বেঁধে তৈরি স্ট্রেচারে প্রসূতিকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁর আত্মীয়স্বজন। কিন্তু দুর্গম পথে ১১ কিলোমিটার যেতেই প্রসূতির মৃত্যু হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর মরদেহ পাড়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা বৈইংসাতি ত্রিপুরার মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুর্গম পথ ও এলাকায় চিকিৎসকের অভাবে বৈইংসাতি ত্রিপুরার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও আত্মীয়স্বজন জানান। তবে শিশুটি রুমা সদরে খ্রিষ্টান মিশনে সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলার রেমাক্রী-প্রাংসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ইউজিন ত্রিপুরা মেস্তরাম।

ম্রংখ্যংপাড়াবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানা যায়, স্নেহ কুমার ত্রিপুরার স্ত্রী বৈইংসাতি ত্রিপুরা গত বুধবার বেলা দুইটার দিকে ছেলেসন্তান জন্ম দেন। তবে বাচ্চার নাভি ফুল আটকে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। দুর্গম নতুন ম্রংখ্যংপাড়া থেকে রুমা সদর দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রতিবেশীরা প্রসূতিকে বাঁশে কাপড় বেঁধে নিয়ে আসতে থাকেন। ততক্ষণেই তাঁর প্রাণ যায় যায় অবস্থা।

ম্রংখ্যংপাড়া বাসিন্দা লাভে ত্রিপুরা বলেন, পাড়া থেকে হাসপাতালে যেতে দুর্গম ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। ১১ কিলোমিটার যেতেই প্রসূতি মারা যান। তাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে পাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বামং প্রু বলেন, পথের মধ্যে প্রসূতি মা মারা যাওয়ার বিষয়ে খোঁজ নিতে দুর্গম ম্রংখ্যংপাড়ায় স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়েছে। তবে জীবিত অবস্থায় হাসপাতালে পৌঁছতে পারলে চিকিৎসায় সুস্থ করা যেত। প্রাথমিকভাবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ফলে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা যায়।

ম্রংখ্যপাড়া বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইউজিন ত্রিপুরা মেস্তরাম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আজ শুক্রবার সকালে বৈইংসাতি ত্রিপুরাকে সামাজিক নিয়ম অনুযায়ী পাড়ার সম্মিলিত সমাধিতে সমাহিত করা হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত