মিজানুর রহমান, তানোর
তখন বছরে ধান মিলত একবারই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সাত বিঘা জমি নিয়ে তিন ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতেন তিনি। মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিতেন। জমির ধান উঠলে ১০ টাকা মণ হিসেবে ১০ মণ ধান দিয়ে রেহাই পেতেন। একসময় সব জমি বিক্রি করে দিলেন। তবে ধানবীজগুলো আগলে রেখেছিলেন।
তিনি হলেন স্থানীয় বিভিন্ন প্রজাতির ধান ও কৃষি ফসলের বীজ সংরক্ষণকারী ইউসুফ মোল্লা। রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরের তানোর উপজেলার নিভৃত গ্রাম দুবইলের বাসিন্দা ও দেশের গর্ব তিনি। ১৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ইউসুফ মোল্লা।
ইউসুফ মোল্লা পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। জীবিকার প্রয়োজনে মসজিদে ইমামতি ও মক্তবে পড়িয়েছেন। রাস্তার গাছ পাহারা দিয়েছেন। করেছেন দিনমজুরের কাজও।
অভাব পিছু না ছাড়লেও ধানভরা জমির স্বপ্ন তাঁর রয়েই গিয়েছিল। একদিন পড়াশোনা শিখে ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে গেল। ছেলেরা চাকরিও পেল। কিন্তু নিজের জমি বলতে কিছু ছিল না তাঁর। ২০১২ সালে ফুপাতো ভাইয়ের ছেলে রেজাউল ১০ কাঠা জমি আবাদ করতে দিলেন তাঁকে। পরের দুই বছর ওই জমিরই বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ করতে থাকলেন। লোকে হাসত। অবশেষে সেই গাঁয়ের লোকই তাঁকে আদর্শ কৃষক উপাধি দেন।
ধানবীজ সংগ্রহের পাশাপাশি ইউসুফ মোল্লা এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন। তিনি পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিলুপ্তপ্রায় ধানের চাষ অব্যাহত রেখেছিলেন।
ইউসুফ মোল্লার ছোট ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ধানবীজ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েক বছর ধরেই ২৬ জানুয়ারি বীজ বিনিময় উৎসবের আয়োজন করে আসছিলেন তাঁর ভাই। সবশেষ উৎসবের স্লোগান ছিল ‘স্থানীয় বীজ রক্ষা করি, কৃষির ভিত মজবুত করি’।
তানোর সদরের স্বশিক্ষিত কৃষিবিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রয়াত ইউসুফ মোল্লা ছিলেন দেশের অমূল্য রত্ন। ধান দিয়ে তৈরি করেছিলেন দেশের একমাত্র “বরেন্দ্র বীজ ব্যাংক” ও “ধানবীজ লাইব্রেরি”। সেই বীজ বিতরণ করতেন কৃষকদের মধ্যে। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউসুফ মোল্লা ২০১৩ সালে পেয়েছিলেন জাতীয় পরিবেশ পদক।’
নূর মোহাম্মদ আরও জানান, দেশীয় ধানের জাতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রক্ষার জন্য ইউসুফ মোল্লা প্রায় ৩১০ জাতের ধানের বীজ সংরক্ষণে রেখেছিলেন। এর মধ্যে জীবিত বীজ রয়েছে ২০৫টি এবং প্রদর্শনীর জন্য বীজ ব্যাংকে আছে ১০৫ জাতের ধানের বীজ। ২০১৫ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৬৫৮ জন চাষিকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া ধানের বীজ সরবরাহ করেছিলেন।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামিমুল ইসলাম বলেন, দেশীয় ধানের জন্য বড় মায়া ছিল ইউসুফ মোল্লার। ইউসুফ মোল্লার ধানবীজগুলোর মধ্যে সতিন, রাঁধুনি পাগল, কালিজিরা, পাঙ্গাশ, দাদখানি, বাদশাভোগ, চিনিশংকর, মাগুরশাইল, ঝিঙ্গাশাইল, ভোজনঝুলন, নীলকণ্ঠ, বাসমতী, সোনাকাঠি, দুধসাগর, দলকচু, মধুমালা, ধলেস্বর, গোবিন্দভোগ, কলামুছা, কনকলতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ইউসুফ মোল্লার ছেলে ওমর ফারুক রাজু বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে দেশীয় লুপ্ত ধানবীজ সংরক্ষণ করে আসছিলেন তাঁদের বাবা। তাঁর বিনীত অনুরোধ, তাঁর বাবার কাজগুলো দেখভালের পাশাপাশি অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে সরকার যেন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়।
তখন বছরে ধান মিলত একবারই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সাত বিঘা জমি নিয়ে তিন ছেলে ও এক মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খেতেন তিনি। মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিতেন। জমির ধান উঠলে ১০ টাকা মণ হিসেবে ১০ মণ ধান দিয়ে রেহাই পেতেন। একসময় সব জমি বিক্রি করে দিলেন। তবে ধানবীজগুলো আগলে রেখেছিলেন।
তিনি হলেন স্থানীয় বিভিন্ন প্রজাতির ধান ও কৃষি ফসলের বীজ সংরক্ষণকারী ইউসুফ মোল্লা। রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরের তানোর উপজেলার নিভৃত গ্রাম দুবইলের বাসিন্দা ও দেশের গর্ব তিনি। ১৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ইউসুফ মোল্লা।
ইউসুফ মোল্লা পড়াশোনা করেছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। জীবিকার প্রয়োজনে মসজিদে ইমামতি ও মক্তবে পড়িয়েছেন। রাস্তার গাছ পাহারা দিয়েছেন। করেছেন দিনমজুরের কাজও।
অভাব পিছু না ছাড়লেও ধানভরা জমির স্বপ্ন তাঁর রয়েই গিয়েছিল। একদিন পড়াশোনা শিখে ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে গেল। ছেলেরা চাকরিও পেল। কিন্তু নিজের জমি বলতে কিছু ছিল না তাঁর। ২০১২ সালে ফুপাতো ভাইয়ের ছেলে রেজাউল ১০ কাঠা জমি আবাদ করতে দিলেন তাঁকে। পরের দুই বছর ওই জমিরই বিভিন্ন ভাগে বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ করতে থাকলেন। লোকে হাসত। অবশেষে সেই গাঁয়ের লোকই তাঁকে আদর্শ কৃষক উপাধি দেন।
ধানবীজ সংগ্রহের পাশাপাশি ইউসুফ মোল্লা এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও ঔষধি গাছ লাগিয়েছেন। তিনি পরিবেশবান্ধব উপায়ে বিলুপ্তপ্রায় ধানের চাষ অব্যাহত রেখেছিলেন।
ইউসুফ মোল্লার ছোট ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, ধানবীজ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েক বছর ধরেই ২৬ জানুয়ারি বীজ বিনিময় উৎসবের আয়োজন করে আসছিলেন তাঁর ভাই। সবশেষ উৎসবের স্লোগান ছিল ‘স্থানীয় বীজ রক্ষা করি, কৃষির ভিত মজবুত করি’।
তানোর সদরের স্বশিক্ষিত কৃষিবিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘প্রয়াত ইউসুফ মোল্লা ছিলেন দেশের অমূল্য রত্ন। ধান দিয়ে তৈরি করেছিলেন দেশের একমাত্র “বরেন্দ্র বীজ ব্যাংক” ও “ধানবীজ লাইব্রেরি”। সেই বীজ বিতরণ করতেন কৃষকদের মধ্যে। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউসুফ মোল্লা ২০১৩ সালে পেয়েছিলেন জাতীয় পরিবেশ পদক।’
নূর মোহাম্মদ আরও জানান, দেশীয় ধানের জাতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রক্ষার জন্য ইউসুফ মোল্লা প্রায় ৩১০ জাতের ধানের বীজ সংরক্ষণে রেখেছিলেন। এর মধ্যে জীবিত বীজ রয়েছে ২০৫টি এবং প্রদর্শনীর জন্য বীজ ব্যাংকে আছে ১০৫ জাতের ধানের বীজ। ২০১৫ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৬৫৮ জন চাষিকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া ধানের বীজ সরবরাহ করেছিলেন।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামিমুল ইসলাম বলেন, দেশীয় ধানের জন্য বড় মায়া ছিল ইউসুফ মোল্লার। ইউসুফ মোল্লার ধানবীজগুলোর মধ্যে সতিন, রাঁধুনি পাগল, কালিজিরা, পাঙ্গাশ, দাদখানি, বাদশাভোগ, চিনিশংকর, মাগুরশাইল, ঝিঙ্গাশাইল, ভোজনঝুলন, নীলকণ্ঠ, বাসমতী, সোনাকাঠি, দুধসাগর, দলকচু, মধুমালা, ধলেস্বর, গোবিন্দভোগ, কলামুছা, কনকলতা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ইউসুফ মোল্লার ছেলে ওমর ফারুক রাজু বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে দেশীয় লুপ্ত ধানবীজ সংরক্ষণ করে আসছিলেন তাঁদের বাবা। তাঁর বিনীত অনুরোধ, তাঁর বাবার কাজগুলো দেখভালের পাশাপাশি অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে সরকার যেন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১০ ঘণ্টা আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১৩ ঘণ্টা আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে