তাঁকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন মেসি

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১১: ০৮

মেক্সিকোয় ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ডিয়েগো ম্যারাডোনার হোটেল রুমের সঙ্গী ছিলেন সতীর্থ পেদ্রো পাসকুলি। ফুটবল ঈশ্বর তাঁর বেডরুমের দেয়ালটা সাজিয়েছিলেন ভার্জিন ম্যারি ও আর্জেন্টাইন গায়িকা ভ্যালেরিয়া লিঞ্চের ছবি সেঁটে। সে সময় ম্যারাডোনার দরকার ছিল একজন আস্থাশীল সঙ্গী। যিনি চার সপ্তাহের ফুটবল যুদ্ধে তাঁকে আত্মবিশ্বাস জোগাবেন। পাসকুলি সে কাজটিই করেছিলেন।

দুর্দান্ত নেতৃত্বগুণে কীভাবে অসাধ্যসাধন হয়, সেটির অন্যতম উদাহরণ ম্যারাডোনা। দলকে দারুণভাবে উজ্জীবিত রাখতে পারতেন তিনি।সতীর্থরাও ম্যারাডোনাকে বিশ্বকাপ এনে দিতে মাঠে সবকিছু করতে রাজি ছিলেন। কাতারে যেমন নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে আসা লিওনেল মেসিকে অধরা শিরোপা এনে দিতে সব উজাড় করে দিতে চান তাঁর সতীর্থরা। আর মেসিও মাঠের পারফরম্যান্সে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ৩৬ বছর আগের ম্যারাডোনাকে। ভিন্ন প্রজন্মের, ভিন্ন সময়ের দুই মহাতারকা মিলে যাচ্ছেন এক বিন্দুতে, সবুজ ক্যানভাসে বাঁ পায়ের জাদুতে মোহিত করছেন কোটি কোটি মানুষকে।

মিল আরও দেখুন, ১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শুরুটা হয়েছিল হার দিয়ে। কাতারেও উড়তে থাকা লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের মাটিতে নামায় সৌদি আরব। এরপর মেসির জাদুতে ঘুরে দাঁড়িয়ে আর্জেন্টিনা নিশ্চিত করেছে কোয়ার্টার ফাইনাল। গ্রুপ পর্বে মেক্সিকোর বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে ‘ডেড লক’ ভাঙা গোলটি করে যেন ম্যারাডোনাকেই স্মরণ করেছিলেন তিনি। ২৫ নভেম্বর ফুটবল ঈশ্বরের দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবসে এর চেয়ে বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি আর কী হতে পারে!

শেষ ষোলোয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরেক মাইলফলকের সাক্ষী হলেন মেসি। ক্যারিয়ারের ১০০০তম এবং অধিনায়ক হিসেবে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে করলেন দুর্দান্ত এক গোল। এ নিয়ে এক অ্যাসিস্ট ও তিন গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের শীর্ষেও উঠে এলেন তিনি।ছিয়াশিতে অবশ্য পাঁচ গোলের পাশাপাশি পাঁচ অ্যাসিস্ট করেছিলেন ম্যারাডোনা। মেসিও যেন হাঁটছেন সেই পথে। এরই মধ্যে যোগ্য শিষ্য হিসেবে গুরুর অনেক রেকর্ডও যে ভেঙে ফেলেছেন তিনি।

 ক্যারিয়ারের ৭৮৯তম গোলটি করে আনন্দের আতিশয্যে মেসি উঠে পড়লেন হুলিয়ান আলভারাসের কোলে। কী মিল, ছিয়াশির বিশ্বকাপে সতীর্থ অস্কার রুগেরির কোলে উঠে গোল উদ্‌যাপন করেছিলেন ম্যারাডোনাও। কাতারে মেসির দলকে দেখে সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকারের মন্তব্য, ‘এই দল আমাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ম্যারাডোনার দলকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।’

সেই বিশ্বকাপে লিনেকারদের কাঁদিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। এবার মেসি-জাদু দেখে রিও ফার্দিনান্দ বলে ফেললেন, ‘বিশ্বকাপে সেরা একক পারফরম্যান্স। এটা প্রায় ঈশ্বরের মতো।’ আর সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালেন শিয়েরার বললেন, ‘আমরা ভাগ্যবান তাঁকে (মেসি) স্টেডিয়ামে দেখে।’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর চারদিকে উঠল তুমুল ধ্বনি, ‘মেসি, মেসি, মেসি’। তা দেখে মেসি লাজুক চেহারায় শুধু বলেন, ‘এটা অসাধারণ অনুভূতি। সমর্থকদের সঙ্গে সুন্দর মুহূর্তটি ভাগাভাগি করতে পেরে আমি আনন্দিত।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের ভিন্ন বক্তব্যের পরও সালমা হত্যায় নিজ ভাষ্য়ে অনড় র‍্যাব

ফারুকীরা কীভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসে: সারজিস আলম

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য ডাক্তারের তদবিরের ঘোষণা

এই সরকারের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ কি আছে, অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশ্ন

বাংলাদেশ সিরিজের আগে ধাক্কা খেয়েই চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত