জাহাঙ্গীর হোসেন, নকলা
শেরপুরের নকলায় পুরোদমে বোরো ধান কাটা চলছে। তবে নতুন ফসল ঘরে তোলার মৌসুমেও বিষণ্নতার ছাপ কৃষকের মুখে। পরিবারে নেই আনন্দ। ধানের দাম কম থাকায়, শ্রমিকের সংকট ও ধানকাটা শ্রমিকের উচ্চ মজুরির কারণে কৃষক পরিবারে বিরাজ করছে হতাশা। অনেকেই ধার-দেনা করে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে, কেউবা আবার গরু-ছাগল বিক্রি করে মাঠে খরচ করেছেন।
এখন উৎপাদিত ফসলের সব ধান যদি কাটার পেছনে খরচ করতে হয়, তাহলে ধার-দেনা শোধ করবেন কী দিয়ে, সংসারই-বা চলবে কীভাবে, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাবেন কোথা থেকে—এসব দুশ্চিন্তা জেঁকে বসেছে কৃষকের মাথায়। এসব হিসাব-নিকাশ কষতে গিয়ে চোখে সরষে ফুল দেখছেন কৃষকেরা। তাই কষ্টে ফলানো খেতের ধান এখন যেন কৃষকের কাছে ভারী বোঝা হয়ে দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় বর্তমানে একজন শ্রমিকের মজুরি ১ হাজার ৪০০ টাকা। তিন বেলা খাওয়ার পেছনে খরচ হয় আরও কমপক্ষে ১০০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রত্যেক শ্রমিকের পেছনে দৈনিক খরচ দাঁড়ায় ১ হাজার ৫০০ টাকা। একজন শ্রমিক এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতক জমির ধান কাটতে পারেন। রয়েছে খেত থেকে আঁটি আনা, ধানমাড়াই ও বাজারজাত খরচ। ১০ শতক জমিতে ধান হচ্ছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ মণ। কোথাও আরও কম। প্রতি মণ ধান ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করলে ১০ শতক জমির ধান বিক্রি করে কৃষকের টাকা আসছে ২ হাজার ৯২৫ টাকা। উৎপাদন খরচ, শ্রমিকের মজুরি, অন্যান্য খরচসহ মোট ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাদ দিলে ১০ শতক জমিতে কৃষকের লোকসান থাকছে ৫৭৫ টাকা।
পৌরসভার লাভা মহল্লার কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘৩ একর জমিতে ধানের আবাদ করেছি। এতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। দৈনিক ১ হাজার ৫০০ টাকা প্রতিজন শ্রমিকের মজুরিতে ধান কাটতে হচ্ছে। এতে শ্রমিকের পেছনে খরচ হবে ৪৫ হাজার টাকা। ধান পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১৩৫ মণ। বাজারজাত পর্যন্ত আরও খরচ হবে ১৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে খরচ দাঁড়াবে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায়। ৬৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি করলে মোট টাকা আসবে ৮৭ হাজার ৭৫০ টাকা। এতে লোকসান গুনতে হবে ১৭ হাজার ২৫০ টাকা।
উরফা ইউনিয়নের বারমাইশা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক রাইদুল ইসলাম বলেন, কালবৈশাখী এবং শিলাবৃষ্টির কারণে ধানখেতের বেশ ক্ষতি হয়েছে। মাটিতে নুয়ে পড়েছে ধান। এখন ১ হাজার ৫০০ টাকার মজুরিতে একজন শ্রমিক সারা দিনে ৫ শতক জমির বেশি ধান কাটতে পারছেন না। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৫ শতক জমিতে ধান হচ্ছে ১ মণ করে। তিনি জানান, জমি পরিষ্কার এবং গবাদিপশুর খড় জোগাড় করতে গিয়ে তাঁকে টাকা ঢালতে হচ্ছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াবেন, তা ভাবতে পারছেন না তিনি।
উরফা গ্রামের কৃষক আলীমদ্দিন বলেন, ‘কামলাগরে কইলাম, তোমরা ধান কেটেকুটে আমারে তিন ভাগের এক ভাগ দিয়া বাকি সব নিয়া যাওগা। কেও রাজি অয় না। অহন কেমনে কী করমু। সামনে খালি অন্ধকার দেখতাছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে নকলায় ১৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৯ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। তবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শ্রমিক যদি কম মজুরিতে ধান না কাটেন, তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই। তবে সংকট নিরসনে সরকার ৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে করে কৃষক মেশিনের সাহায্যে স্বল্প সময়ে এবং কম খরচে অনেক বেশি ধান কাটতে ও মাড়াই করতে পারেন। তবে কৃষক পর্যায়ে এখনো মেশিনের চাহিদা দেখা যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে কোম্পানি হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করছে। কিন্তু এ মেশিনে ধান মাড়াই করলে খড় পাওয়া যায় না। তাই কৃষক এ মেশিন নিতে চাচ্ছেন না। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের জন্য হাফ ফিড কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন আনতে। যাতে কৃষক ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পাশাপাশি খড়ও পেতে পারেন।
শেরপুরের নকলায় পুরোদমে বোরো ধান কাটা চলছে। তবে নতুন ফসল ঘরে তোলার মৌসুমেও বিষণ্নতার ছাপ কৃষকের মুখে। পরিবারে নেই আনন্দ। ধানের দাম কম থাকায়, শ্রমিকের সংকট ও ধানকাটা শ্রমিকের উচ্চ মজুরির কারণে কৃষক পরিবারে বিরাজ করছে হতাশা। অনেকেই ধার-দেনা করে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে, কেউবা আবার গরু-ছাগল বিক্রি করে মাঠে খরচ করেছেন।
এখন উৎপাদিত ফসলের সব ধান যদি কাটার পেছনে খরচ করতে হয়, তাহলে ধার-দেনা শোধ করবেন কী দিয়ে, সংসারই-বা চলবে কীভাবে, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাবেন কোথা থেকে—এসব দুশ্চিন্তা জেঁকে বসেছে কৃষকের মাথায়। এসব হিসাব-নিকাশ কষতে গিয়ে চোখে সরষে ফুল দেখছেন কৃষকেরা। তাই কষ্টে ফলানো খেতের ধান এখন যেন কৃষকের কাছে ভারী বোঝা হয়ে দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় বর্তমানে একজন শ্রমিকের মজুরি ১ হাজার ৪০০ টাকা। তিন বেলা খাওয়ার পেছনে খরচ হয় আরও কমপক্ষে ১০০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রত্যেক শ্রমিকের পেছনে দৈনিক খরচ দাঁড়ায় ১ হাজার ৫০০ টাকা। একজন শ্রমিক এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতক জমির ধান কাটতে পারেন। রয়েছে খেত থেকে আঁটি আনা, ধানমাড়াই ও বাজারজাত খরচ। ১০ শতক জমিতে ধান হচ্ছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ মণ। কোথাও আরও কম। প্রতি মণ ধান ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করলে ১০ শতক জমির ধান বিক্রি করে কৃষকের টাকা আসছে ২ হাজার ৯২৫ টাকা। উৎপাদন খরচ, শ্রমিকের মজুরি, অন্যান্য খরচসহ মোট ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাদ দিলে ১০ শতক জমিতে কৃষকের লোকসান থাকছে ৫৭৫ টাকা।
পৌরসভার লাভা মহল্লার কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘৩ একর জমিতে ধানের আবাদ করেছি। এতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। দৈনিক ১ হাজার ৫০০ টাকা প্রতিজন শ্রমিকের মজুরিতে ধান কাটতে হচ্ছে। এতে শ্রমিকের পেছনে খরচ হবে ৪৫ হাজার টাকা। ধান পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১৩৫ মণ। বাজারজাত পর্যন্ত আরও খরচ হবে ১৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে খরচ দাঁড়াবে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায়। ৬৫০ টাকা দরে ধান বিক্রি করলে মোট টাকা আসবে ৮৭ হাজার ৭৫০ টাকা। এতে লোকসান গুনতে হবে ১৭ হাজার ২৫০ টাকা।
উরফা ইউনিয়নের বারমাইশা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক রাইদুল ইসলাম বলেন, কালবৈশাখী এবং শিলাবৃষ্টির কারণে ধানখেতের বেশ ক্ষতি হয়েছে। মাটিতে নুয়ে পড়েছে ধান। এখন ১ হাজার ৫০০ টাকার মজুরিতে একজন শ্রমিক সারা দিনে ৫ শতক জমির বেশি ধান কাটতে পারছেন না। ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ৫ শতক জমিতে ধান হচ্ছে ১ মণ করে। তিনি জানান, জমি পরিষ্কার এবং গবাদিপশুর খড় জোগাড় করতে গিয়ে তাঁকে টাকা ঢালতে হচ্ছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াবেন, তা ভাবতে পারছেন না তিনি।
উরফা গ্রামের কৃষক আলীমদ্দিন বলেন, ‘কামলাগরে কইলাম, তোমরা ধান কেটেকুটে আমারে তিন ভাগের এক ভাগ দিয়া বাকি সব নিয়া যাওগা। কেও রাজি অয় না। অহন কেমনে কী করমু। সামনে খালি অন্ধকার দেখতাছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে নকলায় ১৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৯ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। তবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শ্রমিক যদি কম মজুরিতে ধান না কাটেন, তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই। তবে সংকট নিরসনে সরকার ৩ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে করে কৃষক মেশিনের সাহায্যে স্বল্প সময়ে এবং কম খরচে অনেক বেশি ধান কাটতে ও মাড়াই করতে পারেন। তবে কৃষক পর্যায়ে এখনো মেশিনের চাহিদা দেখা যায়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে কোম্পানি হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন সরবরাহ করছে। কিন্তু এ মেশিনে ধান মাড়াই করলে খড় পাওয়া যায় না। তাই কৃষক এ মেশিন নিতে চাচ্ছেন না। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের জন্য হাফ ফিড কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন আনতে। যাতে কৃষক ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পাশাপাশি খড়ও পেতে পারেন।
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
১ দিন আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
১ দিন আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৫ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৯ দিন আগে