খুলনা মহানগরীকে ভাঙনকবল থেকে রক্ষায় ভৈরব নদের তীর দিয়ে নির্মিত শহর রক্ষা বাঁধ গত ২৩ বছরেও হয়নি সংস্কার। দীর্ঘ সময়ে সংস্কার না হওয়ায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত খুলনা মহানগরী। এই নদের তীরে রয়েছে দক্ষিণ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যকেন্দ্রে বড় বাজার ও জেলাখানা হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস।

নদীরভাঙন থেকে মহানগরী রক্ষায় ১৯৯৩-৯৪ অর্থ বছরে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় সেকেন্ডারি টাউন ইন্টিগ্রেটেড ফ্লাড প্রোটেকশন প্রজেক্টের আওতায় খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৮ সালে ভৈরব নদের তীরে ৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ফরেস্ট ঘাট থেকে বিআইডব্লিউটিএ ঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধের বিভিন্ন স্থানের ব্লক সরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

অপরদিকে ব্লক সরে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে ঘাট। নদীর নদী পারাপারে যাত্রীদের হয় সমস্যা ঝুঁকি নিয়ে তাদের নৌকায় ট্রলারে ওঠানামা করতে হয়। যে কারণে ব্যবসায়ী এলাকাবাসীসহ রয়েছেন আতঙ্কের মধ্যে।

এ ব্যাপারে বড় বাজারের ব্যবসায়ী মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘২৩ বছরেও বাঁধ মেরামত হয়নি। বিভিন্নস্থানের ব্লক নদীগর্ভে চলে গেছে। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। কখন না জানি নদীতে দোকান বিলীন হয়ে যায়।’

অপরদিকে মো. আওলাদ হোসেন বলেন, ‘ব্লক সরে ঘাট ভেঙে গেছে। নৌকার ট্রলারে উঠতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।’

অপরদিকে বাঁধ রক্ষায় ইতিমধ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম।

তিনি বলেন, ‘শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু হবে।’

জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

অপরদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে বাঁধটি সংস্কারে কোনো সংস্থার সহায়তা পাওয়ার।’