মাদারীপুর প্রতিনিধি
কত দিন মায়ের মুখে হাসি নেই। আর্থিক অনটন থেকে পরিবারকে টেনে তুলতে আশায় দিন গুনছিলেন ছেলে সামিউল (২১)। কিন্তু এদিক-ওদিক ঘুরেও ভালো কোনো কাজ জোটেনি। এর মধ্যেই হঠাৎ করে সামিউলের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন একই গ্রামের মিরাজ। মাঝেমধ্যে সামিউলকে বাড়িতে ডেকেও খাওয়াতেন। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বলগ্রামের তরুণ সামিউলকে মিরাজই প্রথম ইউরোপের স্বপ্ন দেখান। জাদুর কাঠির মতো ইতালির স্পর্শে নাকি জীবন সোনায় সোনায় ভরে যাবে—এমন মনভোলানো কথায় রাজি হন সামিউলের মা।
পরে জানতে পারেন, সামিউলের ইতালিযাত্রা লিবিয়াতেই থেমে গেছে। বলগ্রামের বাসিন্দা সামিউলের মা রেবা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই দফায় ১৫ লাখ টাকা দিসি। মিরাজ আমার ছেলেরে লিবিয়া পাঠাইসে। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য শিপন নামের আরেক দালালকে আবার টাকা পাঠাইসি। ইতালি দরকার নাই, আমার বাজানরে বুকে আইনা দেন।’
সামিউলের মা জানান, লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে নৌকায় ইতালি যাওয়ার পথে কোস্টগার্ডের হাতে ধরা পড়ে লিবিয়ার জেলখানায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর ছেলে।
ধনী হওয়ার আশায় দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়া গিয়ে সামিউলের মতো মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকার এমন প্রায় ১২০ জন বর্তমানে লিবিয়ার জেলখানায় বন্দী। দেশে থাকা স্বজনেরা বন্দী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন। সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তাঁরা। এদিকে জেলা প্রশাসন বলছে, লোভের কারণে অবৈধ পথে বিদেশযাত্রাই বারবার এমন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। লিবিয়ায় বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় এক বছর আগে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন মাদারীপুরসহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার দুই শতাধিক মানুষ। এঁদের মধ্যে মাদারীপুরেরই ১২০ জন। সর্বশেষ তিন মাস আগে নৌপথে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে কোস্টগার্ডের কাছে ধরা পড়েন অনেকে। পরে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় লিবিয়ার ‘আল-জাহারা
খামছাখামছিল ৫৫’ নামক কারাগারে। এসব যুবক এখন জেলখানায় অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাঁদের ছাড়িয়ে আনার জন্য লিবিয়ার স্থানীয় দালালদের টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত পরিবারগুলো। দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতিটি পরিবারকে গুনতে হয়েছে ১৫-২০ লাখ টাকা।
মাদারীপুর সদরের রাজারহাটের বাসিন্দা লিমা বেগম বলেন, ‘আমি মোশারফ নামের একজনের মাধ্যমে আমার স্বামীকে লিবিয়া পাঠিয়েছি। ইতালি যাওয়ার পথে তিনবার পুলিশের হাতে ধরা খাইছেন। বারবারই আমি টাকা পাঠাইসি। আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’
লিমা জানান, লিবিয়ায় অবস্থানরত দালাল চক্রের মূল হোতা সোহেল নামের একজন অন্য সবার মতো তাঁর কাছ থেকেও নানা বাহানায় মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছেন। সোহেলের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার কনোরায়। সেখানকার আফজাল হোসেন নামের একজন সোহেলের সহযোগী হিসেবে টাকা নেন।
এদিকে দালাল চক্রের বেশির ভাগই পলাতক। অভিযুক্ত একজন মাদারীপুর সদর চরমুগিরার কুমারের ট্যাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। আমি শুধু আমার বোনজামাইকে লিবিয়া পাঠিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা।’
এদিকে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে মানব পাচার আইনে মামলা হয় মাত্র দুটি। পরের বছর হয় একটি। এ দুই বছরে কেউই গ্রেপ্তার হননি। ২০১৯ সালে হওয়া তিন মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনজন। ২০২০ সালে মামলা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১টিতে, গ্রেপ্তার হন ৩৫ জন। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘অবৈধ উপায়ে ইতালি যাওয়ার আশায় অনেকেই শুরুর দিকে পুলিশকে কিছু জানান না। পরে পরিস্থিতি খারাপ হলে আমরা জানি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই অভিযান চালাই।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘স্বজনেরা আমাদের লিখিত দিয়েছেন। বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে আমরা চেষ্টা করছি।’ এ সময় তিনি এসব প্রতারক চক্রের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
কত দিন মায়ের মুখে হাসি নেই। আর্থিক অনটন থেকে পরিবারকে টেনে তুলতে আশায় দিন গুনছিলেন ছেলে সামিউল (২১)। কিন্তু এদিক-ওদিক ঘুরেও ভালো কোনো কাজ জোটেনি। এর মধ্যেই হঠাৎ করে সামিউলের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন একই গ্রামের মিরাজ। মাঝেমধ্যে সামিউলকে বাড়িতে ডেকেও খাওয়াতেন। মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বলগ্রামের তরুণ সামিউলকে মিরাজই প্রথম ইউরোপের স্বপ্ন দেখান। জাদুর কাঠির মতো ইতালির স্পর্শে নাকি জীবন সোনায় সোনায় ভরে যাবে—এমন মনভোলানো কথায় রাজি হন সামিউলের মা।
পরে জানতে পারেন, সামিউলের ইতালিযাত্রা লিবিয়াতেই থেমে গেছে। বলগ্রামের বাসিন্দা সামিউলের মা রেবা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই দফায় ১৫ লাখ টাকা দিসি। মিরাজ আমার ছেলেরে লিবিয়া পাঠাইসে। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য শিপন নামের আরেক দালালকে আবার টাকা পাঠাইসি। ইতালি দরকার নাই, আমার বাজানরে বুকে আইনা দেন।’
সামিউলের মা জানান, লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে নৌকায় ইতালি যাওয়ার পথে কোস্টগার্ডের হাতে ধরা পড়ে লিবিয়ার জেলখানায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তাঁর ছেলে।
ধনী হওয়ার আশায় দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়া গিয়ে সামিউলের মতো মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকার এমন প্রায় ১২০ জন বর্তমানে লিবিয়ার জেলখানায় বন্দী। দেশে থাকা স্বজনেরা বন্দী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন। সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তাঁরা। এদিকে জেলা প্রশাসন বলছে, লোভের কারণে অবৈধ পথে বিদেশযাত্রাই বারবার এমন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। লিবিয়ায় বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় এক বছর আগে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন মাদারীপুরসহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার দুই শতাধিক মানুষ। এঁদের মধ্যে মাদারীপুরেরই ১২০ জন। সর্বশেষ তিন মাস আগে নৌপথে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে কোস্টগার্ডের কাছে ধরা পড়েন অনেকে। পরে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় লিবিয়ার ‘আল-জাহারা
খামছাখামছিল ৫৫’ নামক কারাগারে। এসব যুবক এখন জেলখানায় অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তাঁদের ছাড়িয়ে আনার জন্য লিবিয়ার স্থানীয় দালালদের টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত পরিবারগুলো। দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতিটি পরিবারকে গুনতে হয়েছে ১৫-২০ লাখ টাকা।
মাদারীপুর সদরের রাজারহাটের বাসিন্দা লিমা বেগম বলেন, ‘আমি মোশারফ নামের একজনের মাধ্যমে আমার স্বামীকে লিবিয়া পাঠিয়েছি। ইতালি যাওয়ার পথে তিনবার পুলিশের হাতে ধরা খাইছেন। বারবারই আমি টাকা পাঠাইসি। আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’
লিমা জানান, লিবিয়ায় অবস্থানরত দালাল চক্রের মূল হোতা সোহেল নামের একজন অন্য সবার মতো তাঁর কাছ থেকেও নানা বাহানায় মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়েছেন। সোহেলের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার কনোরায়। সেখানকার আফজাল হোসেন নামের একজন সোহেলের সহযোগী হিসেবে টাকা নেন।
এদিকে দালাল চক্রের বেশির ভাগই পলাতক। অভিযুক্ত একজন মাদারীপুর সদর চরমুগিরার কুমারের ট্যাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। আমি শুধু আমার বোনজামাইকে লিবিয়া পাঠিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা।’
এদিকে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে মানব পাচার আইনে মামলা হয় মাত্র দুটি। পরের বছর হয় একটি। এ দুই বছরে কেউই গ্রেপ্তার হননি। ২০১৯ সালে হওয়া তিন মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনজন। ২০২০ সালে মামলা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১টিতে, গ্রেপ্তার হন ৩৫ জন। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘অবৈধ উপায়ে ইতালি যাওয়ার আশায় অনেকেই শুরুর দিকে পুলিশকে কিছু জানান না। পরে পরিস্থিতি খারাপ হলে আমরা জানি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই অভিযান চালাই।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘স্বজনেরা আমাদের লিখিত দিয়েছেন। বন্দীদের ফিরিয়ে আনতে আমরা চেষ্টা করছি।’ এ সময় তিনি এসব প্রতারক চক্রের বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে