উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে যশোরের মনিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজয়ী ইউপি সদস্য মেহেদী হাসানের নামে গেজেট প্রকাশ হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই ওয়ার্ডের পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী ও রিট আবেদনকারী দেলোয়ার হোসেন এই অভিযোগ করেছেন।

গত ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন এ গেজেট প্রকাশ করে।

রিট আবেদনকারী দেলোয়ার হোসেন জানান, উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে গেজেট প্রকাশ করায় তাঁর পক্ষের আইনজীবী ফয়জুর রহমান চৌধুরী তিনজনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। গত মঙ্গলবার ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠানো হয়।

তাঁরা তিনজন হলেন মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ জাকির হাসান, নির্বাচন কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খন্দকার ও যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম।

নোটিশে এ তিন কর্মকর্তাকে গেজেট পরবর্তী কার্যক্রম বন্ধ রেখে আদালতের আদেশ আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে কার্যকর করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় কেন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে, মনিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চার নম্বর রোহিতা ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট পুনঃগণনার আদেশ চেয়ে গত ১ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে আবেদন করেন।

আদালত তাঁর আবেদন আমলে নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর রুল জারি করেন। রুলে আদালত গেজেট স্থগিত রেখে পুনরায় ভোট গণনার জন্য ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে আদেশ দেন।

আদালতের সেই আদেশ বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ না নিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর ওই ওয়ার্ডের বিজয়ী প্রার্থীর নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়া মনিরামপুরের রোহিতা ইউপি নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে ফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন টর্চ লাইট প্রতীকের প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন। কারচুপি করে তাঁকে তিন ভোটে হারিয়ে দিয়ে টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী মেহেদী হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ এ প্রার্থীর।

এ অভিযোগে পুনরায় ভোট গণনা ও গেজেট স্থগিত চেয়ে গত ১ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন দেলোয়ার হোসেন।

বাদীর আবেদনের ভিত্তিতে ১৩ ডিসেম্বর আদালত রুল জারি করেন। তাতে ভোট পুনরায় গণনা ও গেজেট স্থগিত রাখতে বিবাদীদের নির্দেশ দেন আদালত। রুল জারির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন আদালত।

নোটিশ প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মনিরামপুরের সব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে কোনো ওয়ার্ডে মামলা আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। আমরা রোহিতার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মামলার বিষয়টি জানিয়েছি। আদালতে মামলা থাকায় ওই ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থীর শপথ না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’