রমজানে দেশের এক কোটি মানুষের মধ্যে ছয়টি পণ্য সরবরাহ করবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।

ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্যাকেটজাত এসব পণ্য সরবরাহ করা হবে। গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে পেঁয়াজ, ডাল, চিনি, তেল, ছোলা ও খেজুর—এই ছয় খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর ও বরিশাল মহানগর বাদে দেশের সব মহানগর, জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্ধারিত এক কোটি মানুষের মধ্যে টিসিবি সাশ্রয়ী দামে ছয়টি প্যাকেটজাত পণ্য সরবরাহ করবে। তবে ঢাকা ও বরিশালে বর্তমানে চলমান পন্থায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নির্ধারিত লোকজনের মধ্যে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে। ফ্যামিলি কার্ডধারী লোকজনই কেবল টিসিবির সাশ্রয়ী দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন। অন্য কোনো ব্যক্তি টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের লাইনে দাঁড়ালেও তা কিনতে পারবেন না। শুধু কার্ডধারীরাই এই সুযোগ পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৩০ লাখ ডেটাবেইস এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে তালিকাভুক্ত ৭০ লাখ মানুষের মধ্যে এই কার্ড দেওয়া হচ্ছে।

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে প্যাকেটের আকার ও কী ধরনের পলিপ্যাকে করা হচ্ছে সে-সংক্রান্ত নির্দেশনা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। একটি পরিবার দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি ছোলা ও দুই কেজি খেজুর সাশ্রয়ী দামে কিনতে পারবে।

টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে নির্ধারিত লোকজনের মধ্যে টিসিবির প্যাকেটজাত ছয়টি পণ্য দেওয়া হবে। কবে থেকে এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে তা আগামী মাসের শুরুতেই জানিয়ে দেওয়া হবে। ঢাকা ও বরিশাল মহানগরের লোকজনের মধ্যে চলমান প্রক্রিয়ায় পণ্য বিক্রি করা হবে। ঢাকা শহরে বিপুলসংখ্যক লোকজনের মধ্যে প্যাকেটজাত পণ্য দেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডেটাবেইস থেকে ৩০ লাখ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ডেটাবেইস থেকে ৭০ লাখ লোকের মধ্যে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে ছয়টি পণ্য বিক্রি করা হবে।’

হঠাৎ করেই দেশের বাজারে দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল, ডাল, তেল, চিনি থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সাশ্রয়ী দামে পণ্য কেনার জন্য দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। শুধু আমদানি করা পণ্যই নয়। এ বছর শাকসবজির দামও মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকার দেশের এক কোটি মানুষের মধ্যে সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রির পরিকল্পনা হাতে নেয়। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু হচ্ছে।