টানা দুই সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি চলেছে। রাস্তাঘাট সংস্কার, রং করা, আলোকায়ন, আলপনা আঁকা, সড়ক বিভাজকে দৃষ্টিনন্দন গ্রিল বসানোর কাজ শেষ। প্রস্তুত হয়েছে মঞ্চও। রাজশাহীতে বাংলাদেশ-ভারত সাংস্কৃতিক উৎসবের পঞ্চম আসরের জন্য এসব কর্মযজ্ঞ চলেছে। দিনরাত কাজ করে এ আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সাজিয়ে তোলা হয়েছে শহর।

উৎসবে যোগ দিতে আজ শুক্রবার আসবেন ভারতীয় অতিথিরা। অতিথিদের একটি অংশ আসবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে। আরেক দল ঢাকা হয়ে আকাশপথে আসবেন রাজশাহী। স্থলবন্দর এবং বিমানবন্দরেই তাঁদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা।

চার দিনের এ মিলনমেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামীকাল শনিবার। তাই শেষ মুহূর্তে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী কলেজ মাঠে গিয়ে প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। আগের দিন বুধবার বিকেলেও মাঠ পরিদর্শন করেন তিনি। অনুষ্ঠানের জন্য বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে কলেজটিকে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ৫০ বছর পূর্তিতে ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ এ আয়োজন করতে যাচ্ছে। পৃষ্ঠপোষকতা করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। প্রতিবেশী অতিথিদের আগমনে রাজশাহীকে বর্ণিল সাজে সাজিয়েছেন রাসিক মেয়র। রাজশাহী শহরের সবখানেই ফুটে উঠেছে চাকচিক্য। শহরজুড়ে শোভা পাচ্ছে দুই দেশের পতাকা এবং তোরণে তোরণে ঐতিহাসিক ছবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন।

দুই দেশের এ মিলনমেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে আসবেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণুদেব বর্মা। থাকবেন বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে আসছেন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী রাম প্রসাদ পাল, বিহার রাজ্য সরকারের মন্ত্রী সৈয়দ শাহনেওয়াজ হোসেন ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিমন্ত্রী হুমায়ুন কবীর।

সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন আসছেন প্রতিবেশী দেশ থেকে। আগামীকাল শনিবার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের নেতৃত্বে একটি কালচারাল টিমও আসার কথা। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক থেকে শুরু করে রাজশাহী বিভাগের সাংসদেরাও থাকবেন অনুষ্ঠানে। আমন্ত্রিত অতিথিরা শনিবার শহরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর অতিথিরা জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে রাজশাহী কলেজে দুই দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগামী রবি ও সোমবার রাজশাহী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এ আয়োজনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। সিটি করপোরেশন ছাড়াও রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অর্থ দিয়ে এ আয়োজনে সহযোগিতা করছেন।

এ উৎসবের মধ্য দিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বিস্তৃত এবং দৃঢ় হবে বলে আশা করছেন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন।