বিভুরঞ্জন সরকার
১ সেপ্টেম্বর বিএনপি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে ঢাকায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে দলটি। অধিকাংশ জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হলেও কয়েকটি জায়গায় হামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে। ঢাকার শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর একদলীয় স্বৈরাচারী বাকশাল সরকার চেপে আছে। তাদের বিদায় দিতে হবে। আমরা রাজপথে নেমেছি। রাজপথে শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় দিয়ে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।’
নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা ও বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও বিএনপির জমায়েতে জনসমাগম বাড়ছে। বিএনপিকে সরকারি দল গণনার বাইরে রাখতে চাইলেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের চাপে-তাপে বিএনপি দুর্বল হলেও যে শেষ হয়ে যায়নি–উপলক্ষ পেলেই বিএনপি তা প্রমাণ করতে পারছে। এতে বিএনপির নেতারা নিশ্চয়ই খুশি।
কিন্তু আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় দেওয়ার যে আশা বিএনপি করছে তা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় আছে।
বিএনপির দাবি মেনে সরকার যে পদত্যাগ করবে না, সেটা পরিষ্কার করেই সরকারি দলের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে। বিএনপির প্রতি সরকারের যে কোনো দরদ বা সহানুভূতি নেই, সেটাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক বার স্পষ্ট করেই বলেছেন। বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার প্রস্তাবও নাকচ করা হয়েছে। নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হওয়ার সম্ভাবনা অতি আশাবাদী রাজনীতিবিদেরাও দেখছেন না। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। সরকারকে বিএনপি চেপে ধরতে চেষ্টা করবে, কিন্তু তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
বিএনপি যদি বিদ্যমান বাস্তবতায় নির্বাচনে অংশগ্রহণে রাজি থাকে তাহলে দেশের রাজনীতি এক দিকে চলবে। আর বিএনপি যদি ‘গায়ে মানে না আপনি মোড়ল’ দলগুলোর প্ররোচনায় আন্দোলনের খোয়াবনামা রচনা করে, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হবে। আন্দোলনের হুমকি দিয়ে সরকারকে দুর্বল করা যাবে না। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আন্দোলনের ব্যাকরণ আওয়ামী লীগের চেয়ে আর কারও বেশি জানা নেই। তা ছাড়া আন্দোলনের বাস্তব পরিস্থিতি দেশে বিরাজ করছে না। নানা কারণে মানুষের মনে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-অসন্তোষ থাকলেও খালেদা-তারেক-জামায়াতের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ প্রস্তুত হয়েছে বলে মনে হয় না।
আওয়ামী লীগ নিয়ে মানুষ খুব বেশি আশাবাদী না হলেও শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের প্রত্যাশা এখনো অটুট আছে বলেই মনে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে কিছু কঠোর পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেবেন বলে মানুষ মনে করছে। এ ছাড়া তাঁর কাছে মানুষ দুর্নীতিবিরোধী একটি শক্ত ভূমিকা আশা করছে। জনগণের সম্পদ লুট করে যাঁরা দেশের সুনামহানির কারণ ঘটাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি শেখ হাসিনা সদয় না হলেই মানুষ খুশি হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই এসব জনপ্রত্যাশা পূরণে শেখ হাসিনাকে নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে কি?
দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে নতুন ভূমিকায় দেখার আশা করে দেশবাসী। কারা তাঁর সরকার এবং দলের জন্য এর মধ্যেই বোঝা হয়ে উঠেছেন, সেটা নিশ্চয়ই তিনি জানেন। বিএনপিসহ রাজনৈতিক বিরোধীদের শক্তি ও দুর্বলতাও তিনি জানেন। তাঁর চোখ এবং কান খোলা। কাজেই পাল্টাপাল্টির রাজনীতি নয়, শেখ হাসিনার কাছে মানুষ বৃত্ত ভাঙার রাজনীতি আশা করে। মানুষ এটা বিশ্বাস করে যে শেখ হাসিনা পায়ের মাপে জুতা কেনেন, জুতার মাপে পা বানান না।
২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের শত্রু বিএনপি-জামায়াত নয়, আওয়ামী লীগের শত্রু হলো দলের অভ্যন্তরীণ সংকট।’
প্রশ্ন হলো, দলীয় সংকট সমাধানের জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ এবার আওয়ামী লীগ নিচ্ছে কি না।
মিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগ সঠিক অবস্থানে আছে কি না, সেটাও বিবেচনার সময় এসেছে। আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে আজ যে সংকট বা বিপর্যয় তার জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিবির শক্তিক্ষয় ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্ব একটি কারণ বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের অহংবোধ, ব্যক্তিগত আচার-আচরণ নিয়ে ন্যায্য সমালোচনা থাকলেও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো দূর করার চেষ্টা না করে আওয়ামী লীগ থেকেই সরে যাওয়ার নীতি কি সিপিবির শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে?
যে দল দেশ শাসন করছে এবং নানামুখী বিরোধিতা মোকাবিলা করে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার আশা করছে, তার রাজনৈতিক কৌশল ক্ষমতার রাজনীতি থেকে অনেক দূরের একটি আদর্শবাদী ছোট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সব সময় খাপে খাপে মিলে যাবে, এমন আশা করা যায় না।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছেন: ‘সকল দিক সমানভাবে রক্ষা করা মানুষের পক্ষে দুঃসাধ্য। এই জন্য মানুষকে কোনো না কোনো বিষয়ে রফা করিয়া চলিতেই হয়। কেবলমাত্র যদি থিয়োরি লইয়া থাকিতে হয়, তাহা হইলে তুমি কড়া, ক্রান্তি, দন্তি, কাক, সূক্ষ্ম, অতিসূক্ষ্ম এবং সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভগ্নাংশ লইয়া, ঘরে বসিয়া পাটিগণিতের বিচিত্র সমস্যা পূরণ করিতে পার। কিন্তু কাজে নামিলেই অতিসূক্ষ্ম অংশগুলি ছাঁটিয়া চলিতে হয়, নতুবা হিসাব মিলাইতে মিলাইতে কাজ করিবার সময় পাওয়া যায় না।’
এটাও অস্বীকার করা যাবে না যে আওয়ামী লীগ দুর্বল হলে সামগ্রিকভাবে ক্ষতি হয় আমাদের দেশেরই। আওয়ামী লীগকে দুর্বল করতে পারলে দেশকেও পিছিয়ে দেওয়ায় কাজটি সহজ হয়। মনে রাখতে হবে, রাজনীতিতে পরিমাণটাই সব সময় প্রধান বিষয় নয়। গুণটাও বড় ব্যাপার। এটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকেও উপলব্ধি করতে হবে।
আবারও রবীন্দ্রনাথের শরণ নিতে হচ্ছে। তাঁর কথা: ‘যাহারা কোনো কর্তব্য সমাধা করিতে চাহে না, তাহারা এক কর্তব্যের কথা উঠিলেই দ্বিতীয় কর্তব্যের কথা তুলিয়া মুখ চাপা দিতে চায়।...আমাদিগকেও ধীরে ধীরে একটি একটি করিয়া কর্তব্য সাধন করিতে হইবে।’
ঘরের শত্রু বিভীষণদের মোকাবিলা করেই আওয়ামী লীগকে কর্তব্যসাধনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
১ সেপ্টেম্বর বিএনপি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে ঢাকায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে দলটি। অধিকাংশ জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হলেও কয়েকটি জায়গায় হামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে। ঢাকার শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর একদলীয় স্বৈরাচারী বাকশাল সরকার চেপে আছে। তাদের বিদায় দিতে হবে। আমরা রাজপথে নেমেছি। রাজপথে শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় দিয়ে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।’
নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা ও বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও বিএনপির জমায়েতে জনসমাগম বাড়ছে। বিএনপিকে সরকারি দল গণনার বাইরে রাখতে চাইলেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের চাপে-তাপে বিএনপি দুর্বল হলেও যে শেষ হয়ে যায়নি–উপলক্ষ পেলেই বিএনপি তা প্রমাণ করতে পারছে। এতে বিএনপির নেতারা নিশ্চয়ই খুশি।
কিন্তু আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিদায় দেওয়ার যে আশা বিএনপি করছে তা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় আছে।
বিএনপির দাবি মেনে সরকার যে পদত্যাগ করবে না, সেটা পরিষ্কার করেই সরকারি দলের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে। বিএনপির প্রতি সরকারের যে কোনো দরদ বা সহানুভূতি নেই, সেটাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক বার স্পষ্ট করেই বলেছেন। বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার প্রস্তাবও নাকচ করা হয়েছে। নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হওয়ার সম্ভাবনা অতি আশাবাদী রাজনীতিবিদেরাও দেখছেন না। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। সরকারকে বিএনপি চেপে ধরতে চেষ্টা করবে, কিন্তু তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
বিএনপি যদি বিদ্যমান বাস্তবতায় নির্বাচনে অংশগ্রহণে রাজি থাকে তাহলে দেশের রাজনীতি এক দিকে চলবে। আর বিএনপি যদি ‘গায়ে মানে না আপনি মোড়ল’ দলগুলোর প্ররোচনায় আন্দোলনের খোয়াবনামা রচনা করে, তাহলে পরিস্থিতি অন্য রকম হবে। আন্দোলনের হুমকি দিয়ে সরকারকে দুর্বল করা যাবে না। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আন্দোলনের ব্যাকরণ আওয়ামী লীগের চেয়ে আর কারও বেশি জানা নেই। তা ছাড়া আন্দোলনের বাস্তব পরিস্থিতি দেশে বিরাজ করছে না। নানা কারণে মানুষের মনে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-অসন্তোষ থাকলেও খালেদা-তারেক-জামায়াতের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ প্রস্তুত হয়েছে বলে মনে হয় না।
আওয়ামী লীগ নিয়ে মানুষ খুব বেশি আশাবাদী না হলেও শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের প্রত্যাশা এখনো অটুট আছে বলেই মনে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে কিছু কঠোর পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেবেন বলে মানুষ মনে করছে। এ ছাড়া তাঁর কাছে মানুষ দুর্নীতিবিরোধী একটি শক্ত ভূমিকা আশা করছে। জনগণের সম্পদ লুট করে যাঁরা দেশের সুনামহানির কারণ ঘটাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি শেখ হাসিনা সদয় না হলেই মানুষ খুশি হবে। আগামী নির্বাচনের আগেই এসব জনপ্রত্যাশা পূরণে শেখ হাসিনাকে নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে কি?
দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে নতুন ভূমিকায় দেখার আশা করে দেশবাসী। কারা তাঁর সরকার এবং দলের জন্য এর মধ্যেই বোঝা হয়ে উঠেছেন, সেটা নিশ্চয়ই তিনি জানেন। বিএনপিসহ রাজনৈতিক বিরোধীদের শক্তি ও দুর্বলতাও তিনি জানেন। তাঁর চোখ এবং কান খোলা। কাজেই পাল্টাপাল্টির রাজনীতি নয়, শেখ হাসিনার কাছে মানুষ বৃত্ত ভাঙার রাজনীতি আশা করে। মানুষ এটা বিশ্বাস করে যে শেখ হাসিনা পায়ের মাপে জুতা কেনেন, জুতার মাপে পা বানান না।
২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের শত্রু বিএনপি-জামায়াত নয়, আওয়ামী লীগের শত্রু হলো দলের অভ্যন্তরীণ সংকট।’
প্রশ্ন হলো, দলীয় সংকট সমাধানের জন্য বিশেষ কোনো উদ্যোগ এবার আওয়ামী লীগ নিচ্ছে কি না।
মিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগ সঠিক অবস্থানে আছে কি না, সেটাও বিবেচনার সময় এসেছে। আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে আজ যে সংকট বা বিপর্যয় তার জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিবির শক্তিক্ষয় ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে দূরত্ব একটি কারণ বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের অহংবোধ, ব্যক্তিগত আচার-আচরণ নিয়ে ন্যায্য সমালোচনা থাকলেও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো দূর করার চেষ্টা না করে আওয়ামী লীগ থেকেই সরে যাওয়ার নীতি কি সিপিবির শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে?
যে দল দেশ শাসন করছে এবং নানামুখী বিরোধিতা মোকাবিলা করে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার আশা করছে, তার রাজনৈতিক কৌশল ক্ষমতার রাজনীতি থেকে অনেক দূরের একটি আদর্শবাদী ছোট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সব সময় খাপে খাপে মিলে যাবে, এমন আশা করা যায় না।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছেন: ‘সকল দিক সমানভাবে রক্ষা করা মানুষের পক্ষে দুঃসাধ্য। এই জন্য মানুষকে কোনো না কোনো বিষয়ে রফা করিয়া চলিতেই হয়। কেবলমাত্র যদি থিয়োরি লইয়া থাকিতে হয়, তাহা হইলে তুমি কড়া, ক্রান্তি, দন্তি, কাক, সূক্ষ্ম, অতিসূক্ষ্ম এবং সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভগ্নাংশ লইয়া, ঘরে বসিয়া পাটিগণিতের বিচিত্র সমস্যা পূরণ করিতে পার। কিন্তু কাজে নামিলেই অতিসূক্ষ্ম অংশগুলি ছাঁটিয়া চলিতে হয়, নতুবা হিসাব মিলাইতে মিলাইতে কাজ করিবার সময় পাওয়া যায় না।’
এটাও অস্বীকার করা যাবে না যে আওয়ামী লীগ দুর্বল হলে সামগ্রিকভাবে ক্ষতি হয় আমাদের দেশেরই। আওয়ামী লীগকে দুর্বল করতে পারলে দেশকেও পিছিয়ে দেওয়ায় কাজটি সহজ হয়। মনে রাখতে হবে, রাজনীতিতে পরিমাণটাই সব সময় প্রধান বিষয় নয়। গুণটাও বড় ব্যাপার। এটা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকেও উপলব্ধি করতে হবে।
আবারও রবীন্দ্রনাথের শরণ নিতে হচ্ছে। তাঁর কথা: ‘যাহারা কোনো কর্তব্য সমাধা করিতে চাহে না, তাহারা এক কর্তব্যের কথা উঠিলেই দ্বিতীয় কর্তব্যের কথা তুলিয়া মুখ চাপা দিতে চায়।...আমাদিগকেও ধীরে ধীরে একটি একটি করিয়া কর্তব্য সাধন করিতে হইবে।’
ঘরের শত্রু বিভীষণদের মোকাবিলা করেই আওয়ামী লীগকে কর্তব্যসাধনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে