রাজীব কুমার সাহা
আমাদের সমাজের প্রাত্যহিক জীবনে একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘বাটপাড়’। সাধারণত নেতিবাচক অর্থে শব্দটি ব্যবহৃত হয়। কথায় আছে ‘চোরের ওপর বাটপাড়ি’, অর্থাৎ চৌর্যবৃত্তির চেয়েও বাটপাড়ি অধিকতর নেতিবাচক। কেননা সে চোরের মাল আত্মসাৎ বা হরণকারী। বাংলা ভাষায় বাটপাড় শব্দটি কীভাবে প্রবেশ করল আজ জানব তার ইতিবৃত্ত।
‘বাট’ ও ‘পাড়’ শব্দ সহযোগে বাটপাড় শব্দটি গঠিত। এটি বাংলা শব্দ এবং বিশেষণ পদ। আভিধানিকভাবে বাটপাড় শব্দের অর্থ হলো ঠক, ভণ্ড, প্রতারক, লুটেরা, রাহাজানকারী প্রভৃতি। বাটপাড় শব্দের ‘বাট’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘বর্ত্ম’ থেকে। যার অর্থ হলো রাস্তা বা পথ।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে আমরা পথ অর্থে ‘বাট’ শব্দটির সন্ধান পাই। যেমন ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে।’ এই সূত্র ধরে ‘বাটপাড়’ শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাই ‘যে বাটে পড়ে’, অর্থাৎ যে ব্যক্তি রাস্তা বা পথে আক্রমণ করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘যোগাযোগ’ উপন্যাসে নেতিবাচক অর্থে শব্দটির দেখা পাই এরূপে, ‘এখন থেকে চুরির উপর বাটপাড়ি করবার রাস্তা আটক রইল।’ এ ছাড়া ‘পুনশ্চ’ কাব্যগ্রন্থের ‘চিররূপের বাণী’ কবিতায় পাই, ‘কেটে গেল হাজার বছর, লক্ষ বছর, প্রাণের কান্না থামে না।পথে পথে বাটপাড়ি।’
আগেকার দিনে মুক্তিপণের জন্য মানুষ অপহরণ, সন্ধ্যা নামলেই পথিকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া, বাড়ি থেকে গবাদিপশুসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করা প্রভৃতি ছিল নিত্যদিনের অপরাধকর্ম। এর মধ্যে চলতিপথে প্রতারণার মাধ্যমে সহপথিকের সবকিছু হরণ করে নেওয়াই ছিল বাটপাড়দের প্রধান কাজ। বাটপাড়েরা পথিককে প্রথম থেকেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে সুযোগমতো তার সর্বস্ব লুটে নিত। বর্তমান সময়ে যেমনটি করে ছিনতাইকারীরা। কিন্তু ছিনতাইকারী এবং বাটপাড়দের কর্মকৌশল এক রকম নয়। ছিনতাইকারীরা মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায় জোরপূর্বক আর বাটপাড়েরা নিয়ে যায় প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে।
কর্মকৌশলের ধরন বিবেচনায় বর্তমান সময়ে যারা বিভিন্ন যানবাহনে সহযাত্রী সেজে নেশাদ্রব্য খাইয়ে বা চোখে-মুখে মলম মেখে প্রতারণার মাধ্যমে সর্বস্ব হরণ করে নিয়ে যায়, তাদের ‘বাটপাড়’ বলা যায়। যদিও সুনির্দিষ্টভাবে তাদের ডাকা হয় ‘অজ্ঞানপার্টি’ বা ‘মলমপার্টি’ নামে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের প্রতারণা বাটপাড়িরই নামান্তর। যেমন একজন ব্যক্তি কোনো জিনিস বিক্রি করবে, সে ক্ষেত্রে সেই জিনিসের ত্রুটিগুলো গোপন করে বাড়তি গুণাগুণ আরোপ করে সেই দ্রব্য বিক্রি করাও কিন্তু বাটপাড়ি।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বাটপাড় শব্দটির সঙ্গে লোক ঠকানো, প্রতারণা, জালিয়াতি প্রভৃতি অপকর্মের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। বাটপাড় শব্দটির সঙ্গে আরেকটি শব্দের যোগ রয়েছে, সেটি হলো টাউট। আমাদের ভাষাভাষী সমাজে টাউট-বাটপাড় দুটি শব্দই প্রতারণা-জালিয়াতি-লোক ঠকানো অর্থে প্রযুক্ত হয়।
লেখক: আভিধানিক ও প্রাবন্ধিক
আমাদের সমাজের প্রাত্যহিক জীবনে একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘বাটপাড়’। সাধারণত নেতিবাচক অর্থে শব্দটি ব্যবহৃত হয়। কথায় আছে ‘চোরের ওপর বাটপাড়ি’, অর্থাৎ চৌর্যবৃত্তির চেয়েও বাটপাড়ি অধিকতর নেতিবাচক। কেননা সে চোরের মাল আত্মসাৎ বা হরণকারী। বাংলা ভাষায় বাটপাড় শব্দটি কীভাবে প্রবেশ করল আজ জানব তার ইতিবৃত্ত।
‘বাট’ ও ‘পাড়’ শব্দ সহযোগে বাটপাড় শব্দটি গঠিত। এটি বাংলা শব্দ এবং বিশেষণ পদ। আভিধানিকভাবে বাটপাড় শব্দের অর্থ হলো ঠক, ভণ্ড, প্রতারক, লুটেরা, রাহাজানকারী প্রভৃতি। বাটপাড় শব্দের ‘বাট’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘বর্ত্ম’ থেকে। যার অর্থ হলো রাস্তা বা পথ।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে আমরা পথ অর্থে ‘বাট’ শব্দটির সন্ধান পাই। যেমন ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে।’ এই সূত্র ধরে ‘বাটপাড়’ শব্দটি বিশ্লেষণ করলে পাই ‘যে বাটে পড়ে’, অর্থাৎ যে ব্যক্তি রাস্তা বা পথে আক্রমণ করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘যোগাযোগ’ উপন্যাসে নেতিবাচক অর্থে শব্দটির দেখা পাই এরূপে, ‘এখন থেকে চুরির উপর বাটপাড়ি করবার রাস্তা আটক রইল।’ এ ছাড়া ‘পুনশ্চ’ কাব্যগ্রন্থের ‘চিররূপের বাণী’ কবিতায় পাই, ‘কেটে গেল হাজার বছর, লক্ষ বছর, প্রাণের কান্না থামে না।পথে পথে বাটপাড়ি।’
আগেকার দিনে মুক্তিপণের জন্য মানুষ অপহরণ, সন্ধ্যা নামলেই পথিকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া, বাড়ি থেকে গবাদিপশুসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করা প্রভৃতি ছিল নিত্যদিনের অপরাধকর্ম। এর মধ্যে চলতিপথে প্রতারণার মাধ্যমে সহপথিকের সবকিছু হরণ করে নেওয়াই ছিল বাটপাড়দের প্রধান কাজ। বাটপাড়েরা পথিককে প্রথম থেকেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে সুযোগমতো তার সর্বস্ব লুটে নিত। বর্তমান সময়ে যেমনটি করে ছিনতাইকারীরা। কিন্তু ছিনতাইকারী এবং বাটপাড়দের কর্মকৌশল এক রকম নয়। ছিনতাইকারীরা মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায় জোরপূর্বক আর বাটপাড়েরা নিয়ে যায় প্রতারণার কৌশল গ্রহণ করে।
কর্মকৌশলের ধরন বিবেচনায় বর্তমান সময়ে যারা বিভিন্ন যানবাহনে সহযাত্রী সেজে নেশাদ্রব্য খাইয়ে বা চোখে-মুখে মলম মেখে প্রতারণার মাধ্যমে সর্বস্ব হরণ করে নিয়ে যায়, তাদের ‘বাটপাড়’ বলা যায়। যদিও সুনির্দিষ্টভাবে তাদের ডাকা হয় ‘অজ্ঞানপার্টি’ বা ‘মলমপার্টি’ নামে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের প্রতারণা বাটপাড়িরই নামান্তর। যেমন একজন ব্যক্তি কোনো জিনিস বিক্রি করবে, সে ক্ষেত্রে সেই জিনিসের ত্রুটিগুলো গোপন করে বাড়তি গুণাগুণ আরোপ করে সেই দ্রব্য বিক্রি করাও কিন্তু বাটপাড়ি।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বাটপাড় শব্দটির সঙ্গে লোক ঠকানো, প্রতারণা, জালিয়াতি প্রভৃতি অপকর্মের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। বাটপাড় শব্দটির সঙ্গে আরেকটি শব্দের যোগ রয়েছে, সেটি হলো টাউট। আমাদের ভাষাভাষী সমাজে টাউট-বাটপাড় দুটি শব্দই প্রতারণা-জালিয়াতি-লোক ঠকানো অর্থে প্রযুক্ত হয়।
লেখক: আভিধানিক ও প্রাবন্ধিক
প্রবৃদ্ধির শীর্ষে থেকেও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫০ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়েছে
৭ ঘণ্টা আগেদুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও।
৯ ঘণ্টা আগেজমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগে