দীর্ঘ ১৯ বছর পর আগামী মার্চে ভালুকা উপজেলা শাখা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ত্রিবার্ষিক এই সম্মেলন সামনে রেখে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা জোরালো তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার পদপ্রত্যাশীদের কর্মী-সমর্থকেরা ফেসবুকে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রে, কে হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অভিভাবক?

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ভালুকা উপজেলা আওয়ামী লীগের উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় চারবারের সাংসদ অধ্যাপক ডা. এম আমান উল্লাহকে সভাপতি ও গোলাম মোস্তফাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫৩ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই কমিটির বয়স এখন ১৯ বছর। ওই কমিটির অনেক নেতাই মারা গেছেন। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির অনেক নেতাও মারা গেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম আমান উল্লাহ প্রয়াত হয়েছেন। অ্যাডভোকেট শওকত আলী ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় প্রভাষক আ ফ ম আফজাল হোসাইন বলেন, ‘কর্মিবান্ধব ও তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের প্রয়োজন। যাঁরা তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য ও দক্ষ, যাঁরা তৃণমূল কর্মীদের মূল্যায়ন করবেন—এমন কমিটি চাই।’

বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী সাংসদ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, শাহ মো. আশরাফুল হক জজ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এম এ ওয়াহেদ।

আর সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ মনিরা সুলতানা মনি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম আফরোজ খান (আরিফ), পৌর মেয়র ডা. এ কে এম মেজবাহ্ উদ্দিন কাইয়ুম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজিম উদ্দিন।

আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ—উপজেলায় সংগঠন শক্তিশালী না হওয়ায় অনেক ত্যাগ স্বীকার করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হয়। তাঁদের দাবি, দলকে সংগঠিত করতে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি প্রয়োজন। কারণ নির্বাচন এলেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ওপর দিয়ে ধকল বয়ে যায়। নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করা হলে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা জানান, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রকৃত যোদ্ধাকে দায়িত্বে চান, যাঁরা সংগঠনের সঙ্গে বেইমানি করবে না। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করবে। সংগঠনকে বিতর্কিত করেন যাঁরা, তাঁদের যেন জায়গা না দেওয়া হয়।

সাংসদ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু বলেন, ‘তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রাণ। যোগ্য ও দক্ষ কর্মিবান্ধব কমিটি চাই। আগামী দিনে নতুন কমিটি দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় কাজ করবে। তৃণমূল কর্মীদের মূল্যায়ন করবে।’