স্বপ্না রেজা
মন খারাপ করা দিনগুলো। কোনোভাবেই ভালো হচ্ছিল না। হচ্ছে না। কোথায় আছি বা কোথায় যাচ্ছি, হিসাব মেলে না। অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় পাড়ি দেওয়া। এত ধ্বংসাত্মক আচরণ আর নির্বিকার হত্যাকাণ্ড ভালো লাগছিল না, ভালো লাগার কথাও নয়। কে কাকে হত্যা করছে, কেন করছে, কে কার প্রতিদ্বন্দ্বী, কার মনে কী—এখন এসব প্রশ্নের উত্তরও খোঁজাখুঁজি করা বৃথা। তবে এটা ঠিক, দেশটার জন্য খুব মায়া হয়। প্রাণের ভেতরে এই মায়ার টান। সমস্ত অস্তিত্বে এই মায়া ছড়িয়ে যায়, দিনে দিনে ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়। এসবের অন্য কোনো মানে, অর্থ নেই, ব্যক্তিস্বার্থ নেই। শুধুই নিবিড় ভালোবাসা আমার প্রিয় মাতৃভূমি, প্রিয় মাতৃভাষার জন্য। নিশ্চয়ই আমার মতো অসংখ্য, অজস্র মানুষের একই অবস্থা।
একজন বলছিল, ছাত্র হত্যার লক্ষণ কিন্তু ভালো নয়। প্রশ্ন ওঠে, ছাত্র হত্যা কে করছে? যারা আন্দোলনে আছে বা সমর্থন করছে, তারা একবাক্যে বলবে যে, বলছে সরকার আর তার পুলিশ বাহিনী। আর যারা সরকারপন্থী তারা বলবে, তৃতীয় পক্ষ বলছে। আবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় জর্জরিত কেউ করতে পারে এসব। যারা বর্তমান সরকারের সাফল্য সইতে পারছে না, তারাও রাজনৈতিক ক্ষমতায় আসীন হওয়ার চেতনায় অধীর। দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে চায়। আবার আরেকটা শ্রেণি রয়েছে সুবিধাবাদী। যারা মনে করে, পরিস্থিতি যেদিকে যাবে সে অনুযায়ী কথা বলা ভালো। সেটাই সমর্থন করবে। তাহলে রিস্ক থাকে না ভবিষ্যতে ফায়দা লুটতে। এই চেতনাবিহীন সুবিধাবাদী মানুষের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। যদি বলা হয়, এই শ্রেণির মানুষ মুখোশ আর পোশাকের আড়ালে দেশটাকে চিবিয়ে খাচ্ছে, সম্ভবত দ্বিমত করার লোকের সংখ্যা কমবে না, বরং বাড়বে। সবশেষে থাকে নিরীহ জনগণ। এরা কেবলই পরিস্থিতির শিকার হয়। সব অন্যায়, জুলুমের নির্মম বলি হতে হয়। তবে কঠিন সত্য হলো, এই নিরীহ শ্রেণি একবার জেগে উঠলে তাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখা সম্ভব হয় না। তবে যে যাই বলুক তার মতো করে, এটা দৃঢ়ভাবে বলতেই হয়, কোনো হত্যাই কাম্য হতে পারে না। ছাত্র হত্যা তো নয়ই।
সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা নিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোথায় শেষ হবে লেখা, তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এখনো কিন্তু পারছি না। শেষ লেখায় বলার চেষ্টা করেছিলাম, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। যেদিন লেখাটা পত্রিকার পাতায় এল, সেই দিন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার ফলাফলটা দৃশ্যমান হতে শুরু করল। এমন পরিস্থিতি সম্ভবত স্বাধীনতা অর্জনের পর এই প্রথম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের সংঘটিত ঘটনাও কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়। ছাত্রদের বুকে গুলি চালানোর মানে হলো দেশের ভবিষ্যৎ গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং দেশে যে এক অরাজকতার পরিস্থিতি বিরাজমান, তাকে দৃশ্যমান হতে সহায়তা করা। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা বলে দেয় যে, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি মোটেও ভালো নেই, ভালো ছিল না। যা ভালো তা যেন স্রেফ ‘মেকআপ’। তাহলে? কোনটা বেশি মূল্যবান—দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিভিন্ন স্থাপনা, নাকি মানবসম্পদ? যারা বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান, তারা এক বাক্যে বলবেন, মানবসম্পদ। কারণ, ব্যক্তির মেধা ও জ্ঞানেই উন্নয়ন বা স্থাপনা তৈরি হয়। কোনো উন্নয়ন বা স্থাপনা এমনি এমনি গড়ে ওঠে না। এবং এটা কোনো এক ব্যক্তির অর্জন হয় না। এটা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হয়। আবার রাজনৈতিক দৃষ্টিতে বলা হয়, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা দাবি করে যে তারাই এই কাজটা করেছে। যা হোক, মানবসম্পদ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, স্থাপনাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, স্থাপনাগুলো মানুষ তার মেধা, জ্ঞান ও অর্থায়নে তৈরি করে। দেশের প্রতিটি অবকাঠামোগত উন্নয়নে রয়েছে জনগণের অংশগ্রহণ, সেটা শ্রমে, অর্থে ও মেধায়। মজার বিষয় হলো, জনগণ এসব কিন্তু বিনা মূল্যে ব্যবহার বা সেবা গ্রহণ করে না। সেই সুযোগ নেই বললেই চলে। তাকে রাজস্ব দিয়ে, মূল্য দিয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয়।
স্থাপনাগত উন্নয়ন জনগণের দাবিতে কিংবা প্রয়োজনে হয়। সময়ের প্রয়োজনে এর রূপ বদল হয়। যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে চলতে হয়। বাস্তবতার চেহারাটাও বদলে যায়। এসব করে মানুষ। কাজেই মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়, সুস্থ ও সুরক্ষিতভাবে বেঁচে থাকতে হয়। মেধা, জ্ঞানে, দক্ষতায় গড়ে উঠতে হয়।
সাম্প্রতিককালে যে স্থাপনার ওপর আঘাত, তা এক অর্থে শুধু স্থাপনার ওপরই আঘাত নয়, মানুষের ওপরও আঘাত। তাদের নাগরিক অধিকারের ওপর আঘাত। আবার ছাত্রদের ওপর যে আঘাত, তা কেবল ছাত্রদের ওপর আঘাতই নয়, দেশের ভবিষ্যৎকে চপেটাঘাত। মা-বাবাকে নিঃস্ব করে দেওয়ার এক নির্মম লীলা।
যে নারী মা হন, তাঁর থাকে সন্তানের জন্য নাড়ির টান। দুনিয়ার সব সন্তানকেই তাঁর সন্তান মনে হয়। এবার কোটা সংস্কার নিয়ে যে ঘটনার সূত্রপাত, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও নৃশংস। মায়ের বুক খালি হওয়ার মতো দুঃখজনক ঘটনার বিকল্প ঘটনা আর হয় না। এই শূন্যতা পূরণ হয় না, হওয়ার নয়। দেশে যদি ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির প্রচলনটাই একমাত্র মুখ্য থাকে, তাহলে ছাত্র হারানোর যন্ত্রণা থাকে না। দেশ কী হারায় বা হারাল, তা বোঝার প্রয়োজনও বোধ করে না। আর সন্তান হারানো অভিভাবকদের অর্থ দিয়ে সহায়তার বিষয়টিও ভালো লাগে না আর। অর্থ দিয়ে কী সব শূন্যতা পূরণ হয়? হয় না। যদি নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যর্থতা স্বীকার করে অভিভাবকদের কাছ থেকে শোনার সুযোগ করা যেত যে, তাদের কাছে এখন কী প্রত্যাশা রইল যে এমন একটি কঠিন শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করা যায়, তাহলে অন্তত মা-বাবার সম্মানটা রক্ষা হতো এবং অপরাধীর শাস্তির বিষয়টা পরিষ্কার হতো, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
আমরা যাঁরা রাজনীতি করি, তাঁরা সাধারণ জনগণকে বোকা ভাবতে ভালোবাসি। তার একটা সাম্প্রতিক সময়ের দৃষ্টান্ত হলো, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের লুকোচুরি খেলা। ফেসবুক বন্ধ ঘোষণা করে দিয়ে দেখা গেল এক প্রতিমন্ত্রী নিয়মিত তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে চলেছেন। কী অদ্ভুত আচরণ! এই দ্বৈত নীতি কেন?
যা হোক, মন খারাপ করা দিন কবে শেষ হবে জানি না। আদৌ শেষ হবে কি না, তা-ও জানা নেই।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
মন খারাপ করা দিনগুলো। কোনোভাবেই ভালো হচ্ছিল না। হচ্ছে না। কোথায় আছি বা কোথায় যাচ্ছি, হিসাব মেলে না। অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় পাড়ি দেওয়া। এত ধ্বংসাত্মক আচরণ আর নির্বিকার হত্যাকাণ্ড ভালো লাগছিল না, ভালো লাগার কথাও নয়। কে কাকে হত্যা করছে, কেন করছে, কে কার প্রতিদ্বন্দ্বী, কার মনে কী—এখন এসব প্রশ্নের উত্তরও খোঁজাখুঁজি করা বৃথা। তবে এটা ঠিক, দেশটার জন্য খুব মায়া হয়। প্রাণের ভেতরে এই মায়ার টান। সমস্ত অস্তিত্বে এই মায়া ছড়িয়ে যায়, দিনে দিনে ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়। এসবের অন্য কোনো মানে, অর্থ নেই, ব্যক্তিস্বার্থ নেই। শুধুই নিবিড় ভালোবাসা আমার প্রিয় মাতৃভূমি, প্রিয় মাতৃভাষার জন্য। নিশ্চয়ই আমার মতো অসংখ্য, অজস্র মানুষের একই অবস্থা।
একজন বলছিল, ছাত্র হত্যার লক্ষণ কিন্তু ভালো নয়। প্রশ্ন ওঠে, ছাত্র হত্যা কে করছে? যারা আন্দোলনে আছে বা সমর্থন করছে, তারা একবাক্যে বলবে যে, বলছে সরকার আর তার পুলিশ বাহিনী। আর যারা সরকারপন্থী তারা বলবে, তৃতীয় পক্ষ বলছে। আবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় জর্জরিত কেউ করতে পারে এসব। যারা বর্তমান সরকারের সাফল্য সইতে পারছে না, তারাও রাজনৈতিক ক্ষমতায় আসীন হওয়ার চেতনায় অধীর। দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে চায়। আবার আরেকটা শ্রেণি রয়েছে সুবিধাবাদী। যারা মনে করে, পরিস্থিতি যেদিকে যাবে সে অনুযায়ী কথা বলা ভালো। সেটাই সমর্থন করবে। তাহলে রিস্ক থাকে না ভবিষ্যতে ফায়দা লুটতে। এই চেতনাবিহীন সুবিধাবাদী মানুষের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। যদি বলা হয়, এই শ্রেণির মানুষ মুখোশ আর পোশাকের আড়ালে দেশটাকে চিবিয়ে খাচ্ছে, সম্ভবত দ্বিমত করার লোকের সংখ্যা কমবে না, বরং বাড়বে। সবশেষে থাকে নিরীহ জনগণ। এরা কেবলই পরিস্থিতির শিকার হয়। সব অন্যায়, জুলুমের নির্মম বলি হতে হয়। তবে কঠিন সত্য হলো, এই নিরীহ শ্রেণি একবার জেগে উঠলে তাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখা সম্ভব হয় না। তবে যে যাই বলুক তার মতো করে, এটা দৃঢ়ভাবে বলতেই হয়, কোনো হত্যাই কাম্য হতে পারে না। ছাত্র হত্যা তো নয়ই।
সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা নিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোথায় শেষ হবে লেখা, তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এখনো কিন্তু পারছি না। শেষ লেখায় বলার চেষ্টা করেছিলাম, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। যেদিন লেখাটা পত্রিকার পাতায় এল, সেই দিন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার ফলাফলটা দৃশ্যমান হতে শুরু করল। এমন পরিস্থিতি সম্ভবত স্বাধীনতা অর্জনের পর এই প্রথম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায়। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের সংঘটিত ঘটনাও কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে আরেকটি কলঙ্কিত অধ্যায়। ছাত্রদের বুকে গুলি চালানোর মানে হলো দেশের ভবিষ্যৎ গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং দেশে যে এক অরাজকতার পরিস্থিতি বিরাজমান, তাকে দৃশ্যমান হতে সহায়তা করা। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা বলে দেয় যে, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি মোটেও ভালো নেই, ভালো ছিল না। যা ভালো তা যেন স্রেফ ‘মেকআপ’। তাহলে? কোনটা বেশি মূল্যবান—দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিভিন্ন স্থাপনা, নাকি মানবসম্পদ? যারা বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান, তারা এক বাক্যে বলবেন, মানবসম্পদ। কারণ, ব্যক্তির মেধা ও জ্ঞানেই উন্নয়ন বা স্থাপনা তৈরি হয়। কোনো উন্নয়ন বা স্থাপনা এমনি এমনি গড়ে ওঠে না। এবং এটা কোনো এক ব্যক্তির অর্জন হয় না। এটা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হয়। আবার রাজনৈতিক দৃষ্টিতে বলা হয়, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা দাবি করে যে তারাই এই কাজটা করেছে। যা হোক, মানবসম্পদ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, স্থাপনাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, স্থাপনাগুলো মানুষ তার মেধা, জ্ঞান ও অর্থায়নে তৈরি করে। দেশের প্রতিটি অবকাঠামোগত উন্নয়নে রয়েছে জনগণের অংশগ্রহণ, সেটা শ্রমে, অর্থে ও মেধায়। মজার বিষয় হলো, জনগণ এসব কিন্তু বিনা মূল্যে ব্যবহার বা সেবা গ্রহণ করে না। সেই সুযোগ নেই বললেই চলে। তাকে রাজস্ব দিয়ে, মূল্য দিয়ে সেবা গ্রহণ করতে হয়।
স্থাপনাগত উন্নয়ন জনগণের দাবিতে কিংবা প্রয়োজনে হয়। সময়ের প্রয়োজনে এর রূপ বদল হয়। যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে চলতে হয়। বাস্তবতার চেহারাটাও বদলে যায়। এসব করে মানুষ। কাজেই মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়, সুস্থ ও সুরক্ষিতভাবে বেঁচে থাকতে হয়। মেধা, জ্ঞানে, দক্ষতায় গড়ে উঠতে হয়।
সাম্প্রতিককালে যে স্থাপনার ওপর আঘাত, তা এক অর্থে শুধু স্থাপনার ওপরই আঘাত নয়, মানুষের ওপরও আঘাত। তাদের নাগরিক অধিকারের ওপর আঘাত। আবার ছাত্রদের ওপর যে আঘাত, তা কেবল ছাত্রদের ওপর আঘাতই নয়, দেশের ভবিষ্যৎকে চপেটাঘাত। মা-বাবাকে নিঃস্ব করে দেওয়ার এক নির্মম লীলা।
যে নারী মা হন, তাঁর থাকে সন্তানের জন্য নাড়ির টান। দুনিয়ার সব সন্তানকেই তাঁর সন্তান মনে হয়। এবার কোটা সংস্কার নিয়ে যে ঘটনার সূত্রপাত, তা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও নৃশংস। মায়ের বুক খালি হওয়ার মতো দুঃখজনক ঘটনার বিকল্প ঘটনা আর হয় না। এই শূন্যতা পূরণ হয় না, হওয়ার নয়। দেশে যদি ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির প্রচলনটাই একমাত্র মুখ্য থাকে, তাহলে ছাত্র হারানোর যন্ত্রণা থাকে না। দেশ কী হারায় বা হারাল, তা বোঝার প্রয়োজনও বোধ করে না। আর সন্তান হারানো অভিভাবকদের অর্থ দিয়ে সহায়তার বিষয়টিও ভালো লাগে না আর। অর্থ দিয়ে কী সব শূন্যতা পূরণ হয়? হয় না। যদি নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যর্থতা স্বীকার করে অভিভাবকদের কাছ থেকে শোনার সুযোগ করা যেত যে, তাদের কাছে এখন কী প্রত্যাশা রইল যে এমন একটি কঠিন শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করা যায়, তাহলে অন্তত মা-বাবার সম্মানটা রক্ষা হতো এবং অপরাধীর শাস্তির বিষয়টা পরিষ্কার হতো, যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
আমরা যাঁরা রাজনীতি করি, তাঁরা সাধারণ জনগণকে বোকা ভাবতে ভালোবাসি। তার একটা সাম্প্রতিক সময়ের দৃষ্টান্ত হলো, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের লুকোচুরি খেলা। ফেসবুক বন্ধ ঘোষণা করে দিয়ে দেখা গেল এক প্রতিমন্ত্রী নিয়মিত তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে চলেছেন। কী অদ্ভুত আচরণ! এই দ্বৈত নীতি কেন?
যা হোক, মন খারাপ করা দিন কবে শেষ হবে জানি না। আদৌ শেষ হবে কি না, তা-ও জানা নেই।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে