অস্ট্রেলিয়া রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন আর এই টুর্নামেন্টের আগে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সাফল্য বলতে মাত্র একটি জয়। ওয়ানডেতে দুই দলের তিন সাক্ষাতের তিনটিতেই জয় অস্ট্রেলিয়ার। ক্রিকেট মাঠে এই দুই লড়াই তাই অসম এক ম্যাচের পূর্বাভাস দিলেও বাস্তবতা এবার একটু ভিন্ন!

এই বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলছে আফগানরা। আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্যদেশ ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আকাশে উড়ছে তারা। আর ৭ ম্যাচে  ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের স্বপ্নে বিভোর আফগানরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে শুরু করেছে ‘মাইন্ডগেম’!

আফগানদের জায়গায় আফগান পেসার নাভিন-উল-হকের নাম বলাটাই শ্রেয়। মুম্বাইয়ে আজ মাঠে নামার আগে তিনি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে খোঁচা মেরে লিখেছেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করার পর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে কী করে, তা দেখার অপেক্ষায়।’ হ্যাশট্যাগে যুক্ত করে দিয়েছেন একটি প্রশ্ন—‘মানবাধিকার না ২ পয়েন্ট’।

২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর রক্ষণশীল নীতির কারণে সমালোচিত আফগানরা। বিশেষ করে নারীদের পড়াশোনা, চাকরি ও খেলাধুলায় নানা বিধিনিষেধ আরোপের কারণে দুই দফায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ২০২১ সালের নভেম্বরে হোবার্ট টেস্ট বাতিলের পর এ বছরই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ওয়ানডে সিরিজ বাতিল করে সিএ। আর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন আফগান ক্রিকেটাররা। সেই ক্ষোভ থেকেই নাভিনের জিজ্ঞাসা—‘মানবাধিকার না ২ পয়েন্ট’?

তালেবানের যে নীতির কারণে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বাতিল করা, সেই নীতির পরিবর্তন না হওয়ার পরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলায় কেউ কেউ এটাকে সিএর ‘দ্বৈতনীতি’ হিসেবে দেখছে। এটা অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্বৈতনীতি’ নয় কি? অস্ট্রেলিয়ার হয়ে গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন স্টিভ স্মিথ। এই প্রশ্নে দক্ষ কূটনীতিকের মতো স্টিভের উত্তর, ‘আমরা স্পষ্টতই ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেছি এবং আগামীকাল (আজ) খেলতে যাচ্ছি। কাজেই এই প্রশ্নটা আমার জন্য নয়। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়াও আমার সাজে না।’

কিন্তু পেশাদার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) কি নাভিনের উত্তর না দিয়ে পারে! নাভিনের ওই পোস্টের পরই সিএর এক মুখপাত্র নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়াকে যা বলেছেন তার মর্মার্থ এই—নারীদের শিক্ষা, চাকরি, পার্ক ও জিমনেসিয়ামে প্রবেশাধিকারে কড়াকড়ি আরোপের কারণেই তিন ওয়ানডের সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত ছিল সিএর। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলা আর আইসিসির ইভেন্টে খেলার পার্থক্য এই দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার ব্যাপারটি ছিল সিএর নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু আইসিসির ইভেন্ট চলে আইসিসির নিয়মে।

নাভিনের খোঁচার জবাব নিশ্চয়ই আজ মাঠেই দিতে চাইবেন স্টিভ, ওয়ার্নার, প্যাট কামিন্সরা!