ফারুক মেহেদী, ঢাকা
দুয়ারে খুশির ঈদ। তবে উৎসবের আগে খরচের চাপে ত্রাহি অবস্থা মধ্যবিত্তের। করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই প্রায় সব জিনিসপত্রের দাম বাড়তির দিকে। অনেকে হারানো কাজ বা চাকরি ফিরে পাননি। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরতে শুরু করলেও করোনার ধকল কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। সাধারণ শ্রমজীবী, চাকরিজীবীর বেতন-ভাতা কিংবা আয়ও বাড়েনি আহামরি কিছু। ফলে আয় না বাড়া মানুষকে বাধ্য হয়েই নিত্যপণ্য থেকে, জামা-জুতাসহ ঈদের বাজারসদাই সামলাতে বিপদেই পড়েছেন।
এর প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতিতে। গত কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতির পারদ কেবলই উঠছে। সবশেষ মার্চে এসে তা ৬ দশমিক ২২ শতাংশে পৌঁছেছে। ঈদের বাজারের দিকে তাকিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এ হার এপ্রিল শেষে আরও বাড়বে। সাধারণ মানুষের খরচ বাড়ার বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে, ব্যাংকে তাদের টাকা জমানো কমানোর মধ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, এক মাসের ব্যবধানে ব্যাংকের আমানত প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কমেছে।
এদিকে, বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেট আউটলুক’ প্রতিবেদনে খাদ্য-জ্বালানির আগুন ২০২৪ সাল পর্যন্ত জ্বলবে বলে আভাস দিয়েছে। এরই মধ্যে আবার ঈদকে ঘিরে যে হারে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আসার কথা তা সেভাবে আসছে না। ফলে প্রবাসনির্ভর পরিবারকেও বাজেট কাটছাঁট করে সীমিত খরচেই চলতে হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিত্যপণ্যে দামে উত্তাপ শিগগির কমছে না। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর কমিয়ে এবং বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে ডলার খরচ কমানো যেতে পারে।
রাজধানীর মিরপুরে মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট শপিং মার্কেটের সামনে কথা হয় আরিফের সঙ্গে। তিনি বেসরকারি চাকরি করেন। দু হাতে দুটি ব্যাগ। সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানেরা আছেন। সবাই কমবেশি কিনেছেন। বললেন, ‘ভাইরে, এবারের ঈদ আনন্দের না, কষ্টের। গত দুই বছরে একটি টাকাও বেতন বাড়েনি। অথচ দেখেন, রীতি মেনে সবার জন্য জামা–কাপড় কিনতে হলো; সবকিছুতে অন্তত ২৫-৩০ শতাংশ বেশি দাম দিলাম। চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা, চিনি, মাছ, মাংস– প্রতিটি জিনিস অনেক বেশি দামে কিনতে হয়। একটা তরমুজ কিনতে গেলে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। কোন জিনিসটা কমে কিনতে পারি–বলেন? এটাকে কী আনন্দের ঈদ বলবেন?’ তিনি আরও যোগ করলেন, ‘ব্যাংকে কিছু টাকা জমাতাম। সেটাও গত দু মাস হলো বন্ধ করে দিয়ে যেটুকু জমেছিল তা তুলে এখন বাড়তি খরচ মেটাচ্ছি।’ বলেই তিনি স্ত্রী-সন্তানদের তাড়া খেয়ে সামনে হাঁটতে থাকলেন। আরিফের মতো এ অভিজ্ঞতা এখন দেশের অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের।
সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো–বিবিএসের গত মার্চ মাসের মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বলছে, গত মার্চ মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থাৎ, গত বছরের মার্চে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, তা এখন মিলছে ১০৬ টাকা ২২ পয়সা খরচ করে। এই সময়ে সে হিসাবে আয় বাড়েনি। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের সমস্যা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মানুষ ব্যাংকে টাকা জমানো কমিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়; জমানো আমানতও ভেঙে ফেলছে। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৯ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা। তার এক মাস পরে জানুয়ারিতে এসে তা হয়েছে ১৪ লাখ ১ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে সাত হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে জিনিসপত্রের মাত্রাতিরিক্ত দামের ফলে আমানত কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতে আমানত বেড়েছিল ৯২ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমানত বেড়েছে ৫১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) গত সাত মাসে ব্যাংক খাতে আমানত আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম এসেছে ৪১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির যে চিত্র তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি। আমাদের দেশেও তা বাড়ছে। আমাদের মূল্যস্ফীতি এবং বহির্বাণিজ্যের যে চাপ তা পুরো বিষয়টিকে জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশকে, যারা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বৈদেশিক মুদ্রা বাজার থেকে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তা কমার কোনো লক্ষণ নেই। তাই এই মুহূর্তে দরকার ডলারের দাম সমন্বয় করা। না হলে সামনে রিজার্ভ সংকট বাড়তে পারে।’
বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি আউটলুক বলছে, ২০২২ সালে জ্বালানির দাম ৫০ শতাংশ বাড়বে। কৃষি পণ্য ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়বে ২০ শতাংশের বেশি। ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে বা রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে খাদ্যপণ্য, জ্বালানিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বর্তমানের অনুমানের চেয়েও বেশি বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্র সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।
আর বাংলাদেশের মতো আমদানিনির্ভর দেশকে এ জন্য বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬ হাজার ৮৩৬ কোটি ১৮ লাখ (৬৮.৩৬ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। যা গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন) চেয়ে ২ শতাংশ বেশি।
আর এতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও চাপের মধ্যে রয়েছে। কারণ পণ্য আমদানিতে আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ এক সময় ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। তা নেমে এখন ৪৩–৪৪ বিলিয়ন ডলারে ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ একদিকে, বেশি দামে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে, অন্যদিকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আগের চেয়ে কম আসছে। চলতি মাসের ২১ দিনে প্রায় ১৪১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদের আগে পরিবার ও স্বজনদের কাছে প্রবাসীদের অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বরাবরই বেশি থাকে। কিন্তু এবার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে তা ১৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উৎসবের সময় একটু ব্যয় বাড়ে এটা স্বাভাবিক। তবে মানুষ খরচের চাপে আছে সন্দেহ নেই। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ। যারা বোনাস পায়নি, আয় বাড়েনি তারা বেশি অসুবিধায় আছে।’ তিনি বলেন, এই প্রতিযোগিতায় স্বল্প আয়ের মানুষেরও কেনাকাটা করতে হয়। এতে তারা পিষ্ট হচ্ছে। বলতে পারেন চাপের মধ্যেও আনন্দ আরকি!
দুয়ারে খুশির ঈদ। তবে উৎসবের আগে খরচের চাপে ত্রাহি অবস্থা মধ্যবিত্তের। করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই প্রায় সব জিনিসপত্রের দাম বাড়তির দিকে। অনেকে হারানো কাজ বা চাকরি ফিরে পাননি। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরতে শুরু করলেও করোনার ধকল কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। সাধারণ শ্রমজীবী, চাকরিজীবীর বেতন-ভাতা কিংবা আয়ও বাড়েনি আহামরি কিছু। ফলে আয় না বাড়া মানুষকে বাধ্য হয়েই নিত্যপণ্য থেকে, জামা-জুতাসহ ঈদের বাজারসদাই সামলাতে বিপদেই পড়েছেন।
এর প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতিতে। গত কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতির পারদ কেবলই উঠছে। সবশেষ মার্চে এসে তা ৬ দশমিক ২২ শতাংশে পৌঁছেছে। ঈদের বাজারের দিকে তাকিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এ হার এপ্রিল শেষে আরও বাড়বে। সাধারণ মানুষের খরচ বাড়ার বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে, ব্যাংকে তাদের টাকা জমানো কমানোর মধ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, এক মাসের ব্যবধানে ব্যাংকের আমানত প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কমেছে।
এদিকে, বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেট আউটলুক’ প্রতিবেদনে খাদ্য-জ্বালানির আগুন ২০২৪ সাল পর্যন্ত জ্বলবে বলে আভাস দিয়েছে। এরই মধ্যে আবার ঈদকে ঘিরে যে হারে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় আসার কথা তা সেভাবে আসছে না। ফলে প্রবাসনির্ভর পরিবারকেও বাজেট কাটছাঁট করে সীমিত খরচেই চলতে হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, নিত্যপণ্যে দামে উত্তাপ শিগগির কমছে না। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে পণ্য আমদানিতে শুল্ক-কর কমিয়ে এবং বিলাসপণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে ডলার খরচ কমানো যেতে পারে।
রাজধানীর মিরপুরে মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট শপিং মার্কেটের সামনে কথা হয় আরিফের সঙ্গে। তিনি বেসরকারি চাকরি করেন। দু হাতে দুটি ব্যাগ। সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তানেরা আছেন। সবাই কমবেশি কিনেছেন। বললেন, ‘ভাইরে, এবারের ঈদ আনন্দের না, কষ্টের। গত দুই বছরে একটি টাকাও বেতন বাড়েনি। অথচ দেখেন, রীতি মেনে সবার জন্য জামা–কাপড় কিনতে হলো; সবকিছুতে অন্তত ২৫-৩০ শতাংশ বেশি দাম দিলাম। চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা, চিনি, মাছ, মাংস– প্রতিটি জিনিস অনেক বেশি দামে কিনতে হয়। একটা তরমুজ কিনতে গেলে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। কোন জিনিসটা কমে কিনতে পারি–বলেন? এটাকে কী আনন্দের ঈদ বলবেন?’ তিনি আরও যোগ করলেন, ‘ব্যাংকে কিছু টাকা জমাতাম। সেটাও গত দু মাস হলো বন্ধ করে দিয়ে যেটুকু জমেছিল তা তুলে এখন বাড়তি খরচ মেটাচ্ছি।’ বলেই তিনি স্ত্রী-সন্তানদের তাড়া খেয়ে সামনে হাঁটতে থাকলেন। আরিফের মতো এ অভিজ্ঞতা এখন দেশের অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের।
সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো–বিবিএসের গত মার্চ মাসের মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বলছে, গত মার্চ মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ। অর্থাৎ, গত বছরের মার্চে যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত, তা এখন মিলছে ১০৬ টাকা ২২ পয়সা খরচ করে। এই সময়ে সে হিসাবে আয় বাড়েনি। ফলে দেশের সাধারণ মানুষের সমস্যা বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মানুষ ব্যাংকে টাকা জমানো কমিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়; জমানো আমানতও ভেঙে ফেলছে। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৯ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা। তার এক মাস পরে জানুয়ারিতে এসে তা হয়েছে ১৪ লাখ ১ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে আমানত কমেছে সাত হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিলে জিনিসপত্রের মাত্রাতিরিক্ত দামের ফলে আমানত কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতে আমানত বেড়েছিল ৯২ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমানত বেড়েছে ৫১ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) গত সাত মাসে ব্যাংক খাতে আমানত আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম এসেছে ৪১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির যে চিত্র তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি। আমাদের দেশেও তা বাড়ছে। আমাদের মূল্যস্ফীতি এবং বহির্বাণিজ্যের যে চাপ তা পুরো বিষয়টিকে জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে আমাদের মতো দেশকে, যারা আমদানির ওপর নির্ভরশীল। বৈদেশিক মুদ্রা বাজার থেকে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। তা কমার কোনো লক্ষণ নেই। তাই এই মুহূর্তে দরকার ডলারের দাম সমন্বয় করা। না হলে সামনে রিজার্ভ সংকট বাড়তে পারে।’
বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি আউটলুক বলছে, ২০২২ সালে জ্বালানির দাম ৫০ শতাংশ বাড়বে। কৃষি পণ্য ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়বে ২০ শতাংশের বেশি। ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে বা রাশিয়ার ওপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে খাদ্যপণ্য, জ্বালানিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বর্তমানের অনুমানের চেয়েও বেশি বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্র সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।
আর বাংলাদেশের মতো আমদানিনির্ভর দেশকে এ জন্য বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬ হাজার ৮৩৬ কোটি ১৮ লাখ (৬৮.৩৬ বিলিয়ন) ডলারের এলসি খুলেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। যা গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন) চেয়ে ২ শতাংশ বেশি।
আর এতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও চাপের মধ্যে রয়েছে। কারণ পণ্য আমদানিতে আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ এক সময় ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। তা নেমে এখন ৪৩–৪৪ বিলিয়ন ডলারে ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ একদিকে, বেশি দামে পণ্য আমদানি করতে হচ্ছে, অন্যদিকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আগের চেয়ে কম আসছে। চলতি মাসের ২১ দিনে প্রায় ১৪১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদের আগে পরিবার ও স্বজনদের কাছে প্রবাসীদের অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বরাবরই বেশি থাকে। কিন্তু এবার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে তা ১৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উৎসবের সময় একটু ব্যয় বাড়ে এটা স্বাভাবিক। তবে মানুষ খরচের চাপে আছে সন্দেহ নেই। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ। যারা বোনাস পায়নি, আয় বাড়েনি তারা বেশি অসুবিধায় আছে।’ তিনি বলেন, এই প্রতিযোগিতায় স্বল্প আয়ের মানুষেরও কেনাকাটা করতে হয়। এতে তারা পিষ্ট হচ্ছে। বলতে পারেন চাপের মধ্যেও আনন্দ আরকি!
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে