আবদুল বাছেদ
এই ধরিত্রীতে প্রাণের সূত্রপাত হয়েছিল পানিতে। পানি থেকে উঠে এসে মানুষ গড়েছে সভ্যতা। সেই সভ্যতা গড়তে গিয়েও মানুষের দরকার পড়েছে খরস্রোতা তটিনীর। সভ্যতার শিখা ধিকেধিকে জাজ্বল্যমান হয়ে ওঠার সঙ্গে মানুষের জীবনে যুক্ত হয়েছে একে একে নানা অনুষঙ্গ। তারই একটি অর্থনীতি, অর্থাৎ টাকাকে ঘিরে গড়ে ওঠা নীতির সমাহার। তবে আজকের এই অসম পুঁজিবাদের যুগে মানুষের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে অর্থনীতির পরিকাঠামো। সেই কাঠামোর বিধান বা অনুকম্পা বলে দেয় কে কতটুকু খাবে, কতটুকু পরবে, কার বিলাসিতার সীমানা হবে কত দূর...।
সেই কাঠামোর বেড়াজালে আজকের দুনিয়ায় বছরে ৩১ লাখ শিশু অনাহারে মরে, যা প্রতি ১০ সেকেন্ডে একজন। আর চরম অপুষ্টিতে ভোগে ৪ কোটি ৫০ লাখ শিশু। প্রাপ্তবয়স্কদের বেলায় এই পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্বে সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে, যা ২০২০ সালের চেয়ে দ্বিগুণ। যখন খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী, তখন আমাদের পরিত্রাণ হবে কিসে?
এত শিশু যখন ক্ষুধার তাড়নায় মারা যাচ্ছে, তখনো বাজারে পুষ্টিকর খাবার আছে, শুধু সেই খাবারের দাম ছুঁতে পারেন না ক্ষুধিতের পিতা-মাতা। তাই খাবারের দাম সবার হাতের নাগালে রাখতে মার্কিন উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদ গুন্টার পাওলি আমাদের সামনে আনেন ‘সমুদ্র অর্থনীতি’র ধারণা। যে ধারণা বলে, ধরণির ভূভাগে ফসল বা খাদ্য উৎপাদন-বিপণনে যদ্রূপ শ্রম ও সময় ব্যয় হয়, সমুদ্র থেকে তা আহরণে তদ্রূপ উৎপাদন খরচ পড়ে না। ফলত সমুদ্র থেকে আহরিত খাদ্য স্বল্পমূল্যেই ভোক্তার কাছে পৌঁছানো সম্ভব বলে মত দেন পাওলি ও তাঁর অনুচরগণ। অর্থাৎ, সভ্যতার এতটা পথ পাড়ি দেওয়ার পরও আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য আবারও মুখ ফেরাতে হচ্ছে সেই পানির দিকেই।
বাংলাদেশও এমন এক দেশ, যেখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২৮ শতাংশ খর্বকায় এবং ১০ শতাংশ কৃশকায়তায় ভোগে। যেসব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে, তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম এবং তাদের অন্যান্য রোগের সংক্রমণ ঝুঁকিও বেশি। তারা প্রায়ই একাগ্রতার সমস্যায় ভোগে এবং কোনো কিছুতে বেশি মনোযোগ দিতে পারে না, বিকশিত হয় না তাদের শিক্ষাজীবন। অথচ সব শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবে...’। শিরোধার্য সংবিধানের এই ধারাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনাকে এখনই কাজে না লাগানোর বিকল্প নেই।
আমাদের আছে ২০০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রসীমা, যা মূল ভূখণ্ডের ৮১ ভাগের সমান। এই সুদীর্ঘ সীমানায় রয়েছে প্রাণিজ-অপ্রাণিজ, তেল-গ্যাসসহ নানা খনিজ সম্পদ। তবে মাত্র ১৫ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার থেকে মাছ আহরণ করতে পারেন জেলেরা। সক্ষমতা না থাকায় এখনো ১ লাখ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা থেকে মাছ আহরণ সম্ভব হয়নি। মাছ ধরার আধুনিক ট্রলার ও দক্ষ জনবল না থাকায় গভীর সমুদ্র এলাকা থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। সমুদ্রবিরোধ নিরসনের পরে ‘সেভ আওয়ার সি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিবছর বঙ্গোপসাগর থেকে ৮০ লাখ টন মাছ ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের জেলেরা ধরতে পারছেন মাত্র ৭ লাখ টন মাছ। দেশে বছরে যে পরিমাণ মাছ আহরিত হয়, তার মাত্র ১৫ শতাংশ আসে গভীর সমুদ্র থেকে। পুষ্টির অধিকার নিশ্চিত করতে হলে এখনই মাছ আহরণের সক্ষমতা ও পরিমাণ বাড়ানোর বিকল্প নেই।
সমুদ্রবিরোধ নিরসনের পর প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমার যেভাবে সমুদ্র অর্থনীতিতে এগিয়ে গেছে, তার ধারেকাছেও নেই বাংলাদেশ। চীনের সহায়তায় মিয়ানমার এরই মধ্য তেল-গ্যাস উত্তোলন শুরু করে দিয়েছে। ভারতও সেই পথে বেশ অগ্রসর। আর মাছ আহরণের দিক থেকেও ভারত ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ শত ক্রোশ পিছিয়ে। এই পশ্চাদ্গামিতা আর কত দিন?
সক্ষমতা ও উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবছরই বাজেট পাস হয়। সেই সব বাজেটে আগের বছরের চেয়ে বেশি অর্থই বরাদ্দ দেওয়া হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বাবদ সংশোধিত বাজেট ছিল ৩ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। আর একই অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এই অর্থ ব্যয় হবে মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প, ইলিশের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পে।
বাজেট উত্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী প্রাণিজ আমিষের শতভাগ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড একুয়াকালচার ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সম্মুখ সারির দেশ হওয়া সত্ত্বেও এ দেশের শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে কেন? সেই ভাবনা কি ভাববার নয়? দেশের অভ্যন্তরের খাল, জলাশয় ও পুকুরে উৎপাদিত মাছ রপ্তানি কমিয়ে সামুদ্রিক মাছ আহরণ ও রপ্তানির ওপর জোর দিলে একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও পুষ্টিহীনতার মোকাবিলা সম্ভব।
অর্থমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সুনীল অর্থনীতির বিকাশ সাধনে সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০; সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ নীতিমালা, ২০২২ এবং সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে মনিটরিং, কন্ট্রোল, সার্ভিলেন্স (এমসিএস) ব্যবস্থা প্রণীত হয়েছে এবং চট্টগ্রামে জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে পাঁচটি মেরিন ফিশারিজ সার্ভিলেন্স চেকপোস্ট নির্মাণ এবং ছয়টি প্যাট্রলিং ভেসেল ও হাইস্পিড বোট সংযোজনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সহব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে ৪৫০টি মৎস্যজীবী গ্রাম প্রতিষ্ঠা করে জেলেদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সবশেষে এই বলার যে, এসব খাতে বরাদ্দের অর্থ যথাযথভাবে ব্যয়ের বিকল্প নেই। বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তর করতে হলে সব শিশুর পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সেই সুস্থ-সবল শিশুদের নিয়ে আমরা গড়তে পারব বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
এই ধরিত্রীতে প্রাণের সূত্রপাত হয়েছিল পানিতে। পানি থেকে উঠে এসে মানুষ গড়েছে সভ্যতা। সেই সভ্যতা গড়তে গিয়েও মানুষের দরকার পড়েছে খরস্রোতা তটিনীর। সভ্যতার শিখা ধিকেধিকে জাজ্বল্যমান হয়ে ওঠার সঙ্গে মানুষের জীবনে যুক্ত হয়েছে একে একে নানা অনুষঙ্গ। তারই একটি অর্থনীতি, অর্থাৎ টাকাকে ঘিরে গড়ে ওঠা নীতির সমাহার। তবে আজকের এই অসম পুঁজিবাদের যুগে মানুষের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে অর্থনীতির পরিকাঠামো। সেই কাঠামোর বিধান বা অনুকম্পা বলে দেয় কে কতটুকু খাবে, কতটুকু পরবে, কার বিলাসিতার সীমানা হবে কত দূর...।
সেই কাঠামোর বেড়াজালে আজকের দুনিয়ায় বছরে ৩১ লাখ শিশু অনাহারে মরে, যা প্রতি ১০ সেকেন্ডে একজন। আর চরম অপুষ্টিতে ভোগে ৪ কোটি ৫০ লাখ শিশু। প্রাপ্তবয়স্কদের বেলায় এই পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্বে সাড়ে ৩৪ কোটি মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে, যা ২০২০ সালের চেয়ে দ্বিগুণ। যখন খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী, তখন আমাদের পরিত্রাণ হবে কিসে?
এত শিশু যখন ক্ষুধার তাড়নায় মারা যাচ্ছে, তখনো বাজারে পুষ্টিকর খাবার আছে, শুধু সেই খাবারের দাম ছুঁতে পারেন না ক্ষুধিতের পিতা-মাতা। তাই খাবারের দাম সবার হাতের নাগালে রাখতে মার্কিন উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদ গুন্টার পাওলি আমাদের সামনে আনেন ‘সমুদ্র অর্থনীতি’র ধারণা। যে ধারণা বলে, ধরণির ভূভাগে ফসল বা খাদ্য উৎপাদন-বিপণনে যদ্রূপ শ্রম ও সময় ব্যয় হয়, সমুদ্র থেকে তা আহরণে তদ্রূপ উৎপাদন খরচ পড়ে না। ফলত সমুদ্র থেকে আহরিত খাদ্য স্বল্পমূল্যেই ভোক্তার কাছে পৌঁছানো সম্ভব বলে মত দেন পাওলি ও তাঁর অনুচরগণ। অর্থাৎ, সভ্যতার এতটা পথ পাড়ি দেওয়ার পরও আমাদের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য আবারও মুখ ফেরাতে হচ্ছে সেই পানির দিকেই।
বাংলাদেশও এমন এক দেশ, যেখানে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ২৮ শতাংশ খর্বকায় এবং ১০ শতাংশ কৃশকায়তায় ভোগে। যেসব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে, তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম এবং তাদের অন্যান্য রোগের সংক্রমণ ঝুঁকিও বেশি। তারা প্রায়ই একাগ্রতার সমস্যায় ভোগে এবং কোনো কিছুতে বেশি মনোযোগ দিতে পারে না, বিকশিত হয় না তাদের শিক্ষাজীবন। অথচ সব শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবে...’। শিরোধার্য সংবিধানের এই ধারাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনাকে এখনই কাজে না লাগানোর বিকল্প নেই।
আমাদের আছে ২০০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রসীমা, যা মূল ভূখণ্ডের ৮১ ভাগের সমান। এই সুদীর্ঘ সীমানায় রয়েছে প্রাণিজ-অপ্রাণিজ, তেল-গ্যাসসহ নানা খনিজ সম্পদ। তবে মাত্র ১৫ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার থেকে মাছ আহরণ করতে পারেন জেলেরা। সক্ষমতা না থাকায় এখনো ১ লাখ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা থেকে মাছ আহরণ সম্ভব হয়নি। মাছ ধরার আধুনিক ট্রলার ও দক্ষ জনবল না থাকায় গভীর সমুদ্র এলাকা থেকে মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। সমুদ্রবিরোধ নিরসনের পরে ‘সেভ আওয়ার সি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিবছর বঙ্গোপসাগর থেকে ৮০ লাখ টন মাছ ধরা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের জেলেরা ধরতে পারছেন মাত্র ৭ লাখ টন মাছ। দেশে বছরে যে পরিমাণ মাছ আহরিত হয়, তার মাত্র ১৫ শতাংশ আসে গভীর সমুদ্র থেকে। পুষ্টির অধিকার নিশ্চিত করতে হলে এখনই মাছ আহরণের সক্ষমতা ও পরিমাণ বাড়ানোর বিকল্প নেই।
সমুদ্রবিরোধ নিরসনের পর প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমার যেভাবে সমুদ্র অর্থনীতিতে এগিয়ে গেছে, তার ধারেকাছেও নেই বাংলাদেশ। চীনের সহায়তায় মিয়ানমার এরই মধ্য তেল-গ্যাস উত্তোলন শুরু করে দিয়েছে। ভারতও সেই পথে বেশ অগ্রসর। আর মাছ আহরণের দিক থেকেও ভারত ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ শত ক্রোশ পিছিয়ে। এই পশ্চাদ্গামিতা আর কত দিন?
সক্ষমতা ও উৎপাদন বাড়াতে প্রতিবছরই বাজেট পাস হয়। সেই সব বাজেটে আগের বছরের চেয়ে বেশি অর্থই বরাদ্দ দেওয়া হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বাবদ সংশোধিত বাজেট ছিল ৩ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। আর একই অর্থবছরে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৪ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। এই অর্থ ব্যয় হবে মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প, ইলিশের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পে।
বাজেট উত্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী প্রাণিজ আমিষের শতভাগ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড একুয়াকালচার ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সম্মুখ সারির দেশ হওয়া সত্ত্বেও এ দেশের শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগে কেন? সেই ভাবনা কি ভাববার নয়? দেশের অভ্যন্তরের খাল, জলাশয় ও পুকুরে উৎপাদিত মাছ রপ্তানি কমিয়ে সামুদ্রিক মাছ আহরণ ও রপ্তানির ওপর জোর দিলে একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও পুষ্টিহীনতার মোকাবিলা সম্ভব।
অর্থমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সুনীল অর্থনীতির বিকাশ সাধনে সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০; সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ নীতিমালা, ২০২২ এবং সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে মনিটরিং, কন্ট্রোল, সার্ভিলেন্স (এমসিএস) ব্যবস্থা প্রণীত হয়েছে এবং চট্টগ্রামে জয়েন্ট মনিটরিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে পাঁচটি মেরিন ফিশারিজ সার্ভিলেন্স চেকপোস্ট নির্মাণ এবং ছয়টি প্যাট্রলিং ভেসেল ও হাইস্পিড বোট সংযোজনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সহব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে ৪৫০টি মৎস্যজীবী গ্রাম প্রতিষ্ঠা করে জেলেদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সবশেষে এই বলার যে, এসব খাতে বরাদ্দের অর্থ যথাযথভাবে ব্যয়ের বিকল্প নেই। বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তর করতে হলে সব শিশুর পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সেই সুস্থ-সবল শিশুদের নিয়ে আমরা গড়তে পারব বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে