রিমন রহমান, রাজশাহী
ছেলেবেলা থেকেই রাজনীতির প্রতি ছিল ভীষণ টান। সে সময় যাঁরা বাম প্রগতিশীল আন্দোলনের রাজনীতি করতেন, তাঁদের সঙ্গে মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জির গড়ে উঠেছিল সখ্য। জড়িয়ে যান রাজনীতিতে। দশম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় রাজশাহীতেই অংশ নেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে। বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে তো বটেই; আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি।
কিন্তু ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জির এখনো রয়ে গেছে আক্ষেপ। রাজশাহীতে যাঁরা ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে জীবিত অবস্থায় শুধু মোশাররফ হোসেনই এ শহরে আছেন। গত শনিবার দুপুরে তাঁকে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হয়। সে অনুষ্ঠানের শুরুতে আজকের পত্রিকার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে তাঁর আক্ষেপের কথা। তিনি জানালেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার জন্য ঢাকায় যে রকম আন্দোলন চলছিল, রাজশাহী কোনো অংশে কম ছিল না। কেননা, তখনকার সময়ে প্রেসিডেন্সি কলেজের পরেই রাজশাহী কলেজকে ধরা হতো। মেধাবী ছাত্ররা এ কলেজে পড়তে আসত। তাদেরই নেতৃত্বে এখানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন অত্যন্ত জোরদার ছিল। অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু, অ্যাডভোকেট মহসিন প্রামাণিক, আবু সাঈদ, আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী, এস এম গাফফার, অ্যাডভোকেট রাজ্জাক, সাঈদ উদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার নাজমুলসহ অনেকেই ছিলেন নেতৃত্বে। একটা কমিটি গঠনের মাধ্যমে রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণা করে ৮৬ বছর বয়সী এই ভাষাসৈনিক বলেন, ‘আন্দোলন যখন আমরা তীব্র থেকে তীব্রতর করলাম, তখন দেখা গেল রাজশাহীর সাধারণ মানুষ, নারীরা পর্যন্ত বাইরে এসে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মিছিল-মিটিংয়ে যোগ দিতে লাগল। তখন আন্দোলন ছিল অত্যন্ত গঠনমূলক। মিছিল হতো, মিছিলের পর মিটিং হতো। এক দিন রান্নাবান্নার চুলা বন্ধ, এটা আন্দোলন। এক দিন মাথায় তেল দেব না—এই রকম প্রোগ্রামও দেওয়া হয়েছিল। কর্মসূচিগুলো ঘোষণা দিত ভাষা আন্দোলনের জন্য গঠিত কমিটি এবং কর্মসূচি সবখানেই পালিত হতো।’
মোশাররফ হোসেনের দাবি, রাজশাহীতে তাঁরাই প্রথম শহীদ মিনার করেছিলেন। সেটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশায় ভোগেন তিনি। বললেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারির আগে থমথমে অবস্থা ছিল। ঢাকায় কিছু একটা ঘটবে, এ রকম একটা ধারণা ছিল। বিকেলে মেইল ট্রেনে আসা এক ব্যক্তি খবর দিলেন ঢাকায় মিছিলে গুলি চলেছে। কয়েকজন শহীদ হয়েছেন। খবর পাওয়ার পর কমিটির সবাই রাজশাহী কলেজের নিউ হোস্টেলে মিটিংয়ে বসি। দু-তিন শ লোককে জোগাড় করি। মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিই, তাঁদের (শহীদদের) নামকে অমর করে রাখার জন্য একটা স্মৃতিস্তম্ভ করা উচিত। এরপর সেই রাতেই কাদামাটির গাঁথুনি দিয়ে একটা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করি।
আখুঞ্জি বলেন, ‘আমরা আগেও দাবি করেছি, এখনো দাবি করি—এই স্মৃতিস্তম্ভই হলো রাষ্ট্রভাষার প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ, প্রথম শহীদ মিনার। একে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’
ভাষাসৈনিকদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না বলেও ক্ষোভ ফুটে ওঠে এ ভাষাসংগ্রামীর মুখে। তিনি বলেন, ‘ভাষাসংগ্রাম হলো মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগৃহ। অথচ বছরে একবারই ভাষাসংগ্রামীদের কে কোথায় আছে একটু জিজ্ঞেস করা হয়। তা ছাড়া কোনো সরকারই আমাদের ভাষাসংগ্রামীদের তথ্য নেন নাই। কে, কোথায়, কী অবস্থায় আছে, তা জিজ্ঞেস করেন নাই। তবে দিবসগুলোতে কিছুকাল ধরে সম্মান দিচ্ছে। গেলাম, বক্তৃতা দিলাম, সঙ্গে একটা বই দিল বা এক কাপ চা খাওয়াল, বিদায়। এই হলো অবস্থা।’
সবখানে ইংরেজির আধিক্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলা ভাষা সর্বস্তরে এখন পর্যন্ত চালু হয়নি। এখনো হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো ইংরেজিতে দেওয়া হয়ে থাকে। অনেক অনেক টাকা খরচা করে সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছে। সমস্ত সাইনবোর্ড ইংরেজিতে। আমাদের কথা হলো, ইংরেজি থাকুক। কিন্তু প্রথমে বাংলায় থাকতে হবে, তারপর ইংরেজি লিখুক।’
তিনি বলেন, ‘দেখা যায়, স্নাতকের পরও চার বাক্যে শুদ্ধ বাংলা লিখতে পারে না কেউ কেউ। এটা বড় লজ্জার কথা। সরকার অন্যান্য দিকে নজর দিলেও রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে আরও প্রমিত ভাষা হিসেবে বাস্তবায়িত করার জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।’
রাষ্ট্রের কাছে আর কী চাওয়া, জানতে চাইলে কিছুটা হেসে এই ভাষাসংগ্রামী বললেন, ‘রাষ্ট্রের কাছে তো অনেক কিছু চাওয়ার আছে। কিন্তু রাষ্ট্রের যে অবস্থা, সেই অবস্থায় কি সেইসব চাওয়া যায়?’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রকে প্রথমত মূল ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এখনো নানান বিতর্ক। এখনো মৌলবাদীদের পিছে টানার অপচেষ্টা। এগুলো দূর করার পরে একটা শক্ত ভিত্তির ওপর রাষ্ট্রকাঠামো দাঁড়ালে তখন রাষ্ট্রের কাছে চাওয়া যায় যে আমি এই চাই, আমাকে এই দাও।’
ছেলেবেলা থেকেই রাজনীতির প্রতি ছিল ভীষণ টান। সে সময় যাঁরা বাম প্রগতিশীল আন্দোলনের রাজনীতি করতেন, তাঁদের সঙ্গে মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জির গড়ে উঠেছিল সখ্য। জড়িয়ে যান রাজনীতিতে। দশম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় রাজশাহীতেই অংশ নেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে। বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে তো বটেই; আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি।
কিন্তু ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জির এখনো রয়ে গেছে আক্ষেপ। রাজশাহীতে যাঁরা ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে জীবিত অবস্থায় শুধু মোশাররফ হোসেনই এ শহরে আছেন। গত শনিবার দুপুরে তাঁকে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মাননা জানানো হয়। সে অনুষ্ঠানের শুরুতে আজকের পত্রিকার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে তাঁর আক্ষেপের কথা। তিনি জানালেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার জন্য ঢাকায় যে রকম আন্দোলন চলছিল, রাজশাহী কোনো অংশে কম ছিল না। কেননা, তখনকার সময়ে প্রেসিডেন্সি কলেজের পরেই রাজশাহী কলেজকে ধরা হতো। মেধাবী ছাত্ররা এ কলেজে পড়তে আসত। তাদেরই নেতৃত্বে এখানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন অত্যন্ত জোরদার ছিল। অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু, অ্যাডভোকেট মহসিন প্রামাণিক, আবু সাঈদ, আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী, এস এম গাফফার, অ্যাডভোকেট রাজ্জাক, সাঈদ উদ্দিন আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার নাজমুলসহ অনেকেই ছিলেন নেতৃত্বে। একটা কমিটি গঠনের মাধ্যমে রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণা করে ৮৬ বছর বয়সী এই ভাষাসৈনিক বলেন, ‘আন্দোলন যখন আমরা তীব্র থেকে তীব্রতর করলাম, তখন দেখা গেল রাজশাহীর সাধারণ মানুষ, নারীরা পর্যন্ত বাইরে এসে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মিছিল-মিটিংয়ে যোগ দিতে লাগল। তখন আন্দোলন ছিল অত্যন্ত গঠনমূলক। মিছিল হতো, মিছিলের পর মিটিং হতো। এক দিন রান্নাবান্নার চুলা বন্ধ, এটা আন্দোলন। এক দিন মাথায় তেল দেব না—এই রকম প্রোগ্রামও দেওয়া হয়েছিল। কর্মসূচিগুলো ঘোষণা দিত ভাষা আন্দোলনের জন্য গঠিত কমিটি এবং কর্মসূচি সবখানেই পালিত হতো।’
মোশাররফ হোসেনের দাবি, রাজশাহীতে তাঁরাই প্রথম শহীদ মিনার করেছিলেন। সেটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশায় ভোগেন তিনি। বললেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারির আগে থমথমে অবস্থা ছিল। ঢাকায় কিছু একটা ঘটবে, এ রকম একটা ধারণা ছিল। বিকেলে মেইল ট্রেনে আসা এক ব্যক্তি খবর দিলেন ঢাকায় মিছিলে গুলি চলেছে। কয়েকজন শহীদ হয়েছেন। খবর পাওয়ার পর কমিটির সবাই রাজশাহী কলেজের নিউ হোস্টেলে মিটিংয়ে বসি। দু-তিন শ লোককে জোগাড় করি। মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিই, তাঁদের (শহীদদের) নামকে অমর করে রাখার জন্য একটা স্মৃতিস্তম্ভ করা উচিত। এরপর সেই রাতেই কাদামাটির গাঁথুনি দিয়ে একটা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করি।
আখুঞ্জি বলেন, ‘আমরা আগেও দাবি করেছি, এখনো দাবি করি—এই স্মৃতিস্তম্ভই হলো রাষ্ট্রভাষার প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ, প্রথম শহীদ মিনার। একে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’
ভাষাসৈনিকদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না বলেও ক্ষোভ ফুটে ওঠে এ ভাষাসংগ্রামীর মুখে। তিনি বলেন, ‘ভাষাসংগ্রাম হলো মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগৃহ। অথচ বছরে একবারই ভাষাসংগ্রামীদের কে কোথায় আছে একটু জিজ্ঞেস করা হয়। তা ছাড়া কোনো সরকারই আমাদের ভাষাসংগ্রামীদের তথ্য নেন নাই। কে, কোথায়, কী অবস্থায় আছে, তা জিজ্ঞেস করেন নাই। তবে দিবসগুলোতে কিছুকাল ধরে সম্মান দিচ্ছে। গেলাম, বক্তৃতা দিলাম, সঙ্গে একটা বই দিল বা এক কাপ চা খাওয়াল, বিদায়। এই হলো অবস্থা।’
সবখানে ইংরেজির আধিক্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলা ভাষা সর্বস্তরে এখন পর্যন্ত চালু হয়নি। এখনো হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলো ইংরেজিতে দেওয়া হয়ে থাকে। অনেক অনেক টাকা খরচা করে সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছে। সমস্ত সাইনবোর্ড ইংরেজিতে। আমাদের কথা হলো, ইংরেজি থাকুক। কিন্তু প্রথমে বাংলায় থাকতে হবে, তারপর ইংরেজি লিখুক।’
তিনি বলেন, ‘দেখা যায়, স্নাতকের পরও চার বাক্যে শুদ্ধ বাংলা লিখতে পারে না কেউ কেউ। এটা বড় লজ্জার কথা। সরকার অন্যান্য দিকে নজর দিলেও রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে আরও প্রমিত ভাষা হিসেবে বাস্তবায়িত করার জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।’
রাষ্ট্রের কাছে আর কী চাওয়া, জানতে চাইলে কিছুটা হেসে এই ভাষাসংগ্রামী বললেন, ‘রাষ্ট্রের কাছে তো অনেক কিছু চাওয়ার আছে। কিন্তু রাষ্ট্রের যে অবস্থা, সেই অবস্থায় কি সেইসব চাওয়া যায়?’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রকে প্রথমত মূল ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এখনো নানান বিতর্ক। এখনো মৌলবাদীদের পিছে টানার অপচেষ্টা। এগুলো দূর করার পরে একটা শক্ত ভিত্তির ওপর রাষ্ট্রকাঠামো দাঁড়ালে তখন রাষ্ট্রের কাছে চাওয়া যায় যে আমি এই চাই, আমাকে এই দাও।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে