রেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা
ভোটের লড়াই মাঠে গড়ানোর আগেই চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলো। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল অংশ না নেওয়ায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চায় নিজেদের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে, সেটা দেখাতে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বিভিন্ন দল এবং সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ এ সময়ে কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), তৃণমূল বিএনপিসহ আরও অনেক দল ফায়দা নিতে তৎপর। আওয়ামী লীগের কাছে আসন ছাড় ছাড়াও তারা সংশ্লিষ্ট আসনে ক্ষমতাসীন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রত্যাহার চায়। এমনকি নির্বাচনী প্রচারের জন্য অর্থও দাবি করছে কিছু দল। যদিও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ছাড়া অন্যরা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছে না।
আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘১৭ তারিখের আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য না করাই ভালো।
কারণ, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে জেতার জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলবে।’
আসন ছাড়, স্বতন্ত্র প্রার্থী উঠিয়ে নেওয়া এবং আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে সরাসরি কথা না বললেও পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনএম।
বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহজাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওনারা (আওয়ামী লীগ) যাঁদের মনোনয়ন দিয়েছেন এবং যাঁরা মাঠে এখন স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের অনেকে শত শত কোটি টাকার মালিক। তাঁদের টাকা, পেশিশক্তির কাছে আমাদের প্রার্থীরা দাঁড়াতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করব, মাঠে থাকব কি না।’
নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ২৯টি। ৩০০ আসনের মধ্যে ২২৯টিতেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। সমঝোতার আসনে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে চিন্তিত অন্য দলগুলো। দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া এসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সক্ষমতা তাদের নেই। এ নিয়েই ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তাদের দেনদরবার চলছে।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে সমালোচনা আছে বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, ‘একটা দল প্রার্থীও দিল, আবার তাদের নেতারা স্বতন্ত্রও দাঁড়াল, এটা নিয়ে সমালোচনা আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২৮০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছি। আসন নিয়ে কী কথা বলব? আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি, আমাদের দলীয় মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছি। সরকারের সঙ্গে জোটে যাব না। বিরোধী দলে থাকতে চাই।’
আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় নেতা অবশ্য বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর চাওয়ার সঙ্গে আমাদের পরিকল্পনার কোনো মিল নেই। তাদের চাওয়া পূরণ করতে গেলে আমাদের প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও ভোট থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এখন এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, দলগুলোর প্রত্যাশা পূরণ করতে গেলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়বে। আবার ছাড় না পেলে দলগুলো শেষ সময়ে বিভিন্ন দোহাই দিয়ে ভোট থেকে সরে যেতে পারে। এতে অংশগ্রহণমূলক ভোট হবে না। সমালোচকেরা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১৪ দলীয় জোটের শরিকেরা ছাড়াও জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, কল্যাণ পার্টিসহ কয়েকটি দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন ছাড় পাওয়ার জন্য দেনদরবার করছে। দলগুলো সংশ্লিষ্ট আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রত্যাহার চাইছে। একই সঙ্গে প্রচারের জন্য চাইছে আর্থিক সাহায্য।
টানা কয়েকটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশ নেওয়া ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, নৌকা ১৪ দলীয় জোটের প্রতীক হয়ে গেছে। ১৪ দলের বাইরে আরও অনেকে অংশগ্রহণ করায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।
ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে দেনদরবারে থাকা একাধিক সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের আসন সমঝোতা হলেই সমাধান হয়ে যাবে, তা নয়। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর্থিকভাবে পেরে ওঠা সম্ভব নয়। সে কারণে ক্ষমতাসীনদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগকে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দলগুলোকে আশ্বস্ত করলেও আওয়ামী লীগ ১৮ ডিসেম্বরের আগে এই কাজে যেতে চায় না। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে টাকা দেওয়ার ঝুঁকি দেখছে দলটি।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর নানামুখী কর্মকাণ্ডের কারণে এমনিতেই সরকার চাপে আছে। আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। আসন ছাড়, আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন দলকে নির্বাচনেও এনেছে। এ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগে আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে কোনো দল নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যেতে পারে। এতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সমালোচকেরাও সুযোগ নেবে।
গত সোমবার গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জোটপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে রাশেদ খান মেনন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরানোর অনুরোধ করেন। শেখ হাসিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঠ থেকে না ওঠানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এরপরও রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুসহ জোটের অনেক নেতা এ বিষয়ে তদবির করে যাচ্ছেন।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমরা জোটে আছি। জোটের প্রার্থী যেখানে থাকবে, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকবে না। জোটের বাইরে আওয়ামী লীগও থাকবে, জাসদও থাকবে, স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা হবে।’
১৪ দলীয় জোটের শরিক একটি দলের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৬-৭টি আসনে আওয়ামী লীগ আমাদের ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেসব আসনে আমাদের প্রার্থীরা নৌকায় নির্বাচন করবেন। কিন্তু ওই সব আসনে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের ছাড় দিলেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা দলীয় নেতার পক্ষে কাজ করবেন। এতে আমাদের তো কোনো ফায়দা হবে না।’
জোটের আরেক নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দলটির যেসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের মাঠ থেকে ওঠাবে না। এ ক্ষেত্রে নৌকা প্রতীক পাওয়ার পরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীদের পরাজয়ের শঙ্কা আছে। এ জন্য আমরা ছাড় দেওয়া আসনে দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরানোর দাবি করেছি।’
আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর জোটের নেতাদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা আছে। সেদিনই আসন সমঝোতার বিষয়টি সবাই জানতে পারবে।’
ভোটের আগে দলগুলোর এমন তৎপরতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘ঝুঁকি’ দেখছেন রাজনীতি-বিশ্লেষকেরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব দলই বিজয়ের নিশ্চয়তা চাইছে, সে নিয়ে দেনদরবার করছে। এমনটা হলে ভোটাররা কেন্দ্রবিমুখ হবে, ভোটও মুখ থুবড়ে পড়বে। যে লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেটা বিচ্যুত হবে।’
ভোটের লড়াই মাঠে গড়ানোর আগেই চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মেলাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া দলগুলো। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল অংশ না নেওয়ায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চায় নিজেদের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে, সেটা দেখাতে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বিভিন্ন দল এবং সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ এ সময়ে কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), তৃণমূল বিএনপিসহ আরও অনেক দল ফায়দা নিতে তৎপর। আওয়ামী লীগের কাছে আসন ছাড় ছাড়াও তারা সংশ্লিষ্ট আসনে ক্ষমতাসীন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রত্যাহার চায়। এমনকি নির্বাচনী প্রচারের জন্য অর্থও দাবি করছে কিছু দল। যদিও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ছাড়া অন্যরা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছে না।
আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘১৭ তারিখের আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য না করাই ভালো।
কারণ, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে জেতার জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলবে।’
আসন ছাড়, স্বতন্ত্র প্রার্থী উঠিয়ে নেওয়া এবং আর্থিক সহযোগিতার বিষয়ে সরাসরি কথা না বললেও পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে বিএনএম।
বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহজাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওনারা (আওয়ামী লীগ) যাঁদের মনোনয়ন দিয়েছেন এবং যাঁরা মাঠে এখন স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ) দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের অনেকে শত শত কোটি টাকার মালিক। তাঁদের টাকা, পেশিশক্তির কাছে আমাদের প্রার্থীরা দাঁড়াতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করব, মাঠে থাকব কি না।’
নিবন্ধিত ৪৪টি দলের মধ্যে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ২৯টি। ৩০০ আসনের মধ্যে ২২৯টিতেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। সমঝোতার আসনে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে চিন্তিত অন্য দলগুলো। দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া এসব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সক্ষমতা তাদের নেই। এ নিয়েই ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তাদের দেনদরবার চলছে।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে সমালোচনা আছে বলে উল্লেখ করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। তিনি বলেন, ‘একটা দল প্রার্থীও দিল, আবার তাদের নেতারা স্বতন্ত্রও দাঁড়াল, এটা নিয়ে সমালোচনা আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২৮০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছি। আসন নিয়ে কী কথা বলব? আমরা তো শুরু থেকেই বলে আসছি, আমাদের দলীয় মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছি। সরকারের সঙ্গে জোটে যাব না। বিরোধী দলে থাকতে চাই।’
আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় নেতা অবশ্য বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর চাওয়ার সঙ্গে আমাদের পরিকল্পনার কোনো মিল নেই। তাদের চাওয়া পূরণ করতে গেলে আমাদের প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও ভোট থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। এখন এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, দলগুলোর প্রত্যাশা পূরণ করতে গেলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়বে। আবার ছাড় না পেলে দলগুলো শেষ সময়ে বিভিন্ন দোহাই দিয়ে ভোট থেকে সরে যেতে পারে। এতে অংশগ্রহণমূলক ভোট হবে না। সমালোচকেরা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১৪ দলীয় জোটের শরিকেরা ছাড়াও জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, কল্যাণ পার্টিসহ কয়েকটি দল আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন ছাড় পাওয়ার জন্য দেনদরবার করছে। দলগুলো সংশ্লিষ্ট আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রত্যাহার চাইছে। একই সঙ্গে প্রচারের জন্য চাইছে আর্থিক সাহায্য।
টানা কয়েকটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে অংশ নেওয়া ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, নৌকা ১৪ দলীয় জোটের প্রতীক হয়ে গেছে। ১৪ দলের বাইরে আরও অনেকে অংশগ্রহণ করায় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।
ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে দেনদরবারে থাকা একাধিক সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের আসন সমঝোতা হলেই সমাধান হয়ে যাবে, তা নয়। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর্থিকভাবে পেরে ওঠা সম্ভব নয়। সে কারণে ক্ষমতাসীনদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে এ বিষয়ে আওয়ামী লীগকে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে দলগুলোকে আশ্বস্ত করলেও আওয়ামী লীগ ১৮ ডিসেম্বরের আগে এই কাজে যেতে চায় না। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে টাকা দেওয়ার ঝুঁকি দেখছে দলটি।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর নানামুখী কর্মকাণ্ডের কারণে এমনিতেই সরকার চাপে আছে। আওয়ামী লীগ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। আসন ছাড়, আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন দলকে নির্বাচনেও এনেছে। এ ক্ষেত্রে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগে আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে কোনো দল নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যেতে পারে। এতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি সমালোচকেরাও সুযোগ নেবে।
গত সোমবার গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জোটপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে রাশেদ খান মেনন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরানোর অনুরোধ করেন। শেখ হাসিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঠ থেকে না ওঠানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এরপরও রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুসহ জোটের অনেক নেতা এ বিষয়ে তদবির করে যাচ্ছেন।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমরা জোটে আছি। জোটের প্রার্থী যেখানে থাকবে, সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী থাকবে না। জোটের বাইরে আওয়ামী লীগও থাকবে, জাসদও থাকবে, স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা হবে।’
১৪ দলীয় জোটের শরিক একটি দলের শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৬-৭টি আসনে আওয়ামী লীগ আমাদের ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সেসব আসনে আমাদের প্রার্থীরা নৌকায় নির্বাচন করবেন। কিন্তু ওই সব আসনে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের ছাড় দিলেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা দলীয় নেতার পক্ষে কাজ করবেন। এতে আমাদের তো কোনো ফায়দা হবে না।’
জোটের আরেক নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দলটির যেসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের মাঠ থেকে ওঠাবে না। এ ক্ষেত্রে নৌকা প্রতীক পাওয়ার পরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীদের পরাজয়ের শঙ্কা আছে। এ জন্য আমরা ছাড় দেওয়া আসনে দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরানোর দাবি করেছি।’
আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগামী ১০ ডিসেম্বর জোটের নেতাদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা আছে। সেদিনই আসন সমঝোতার বিষয়টি সবাই জানতে পারবে।’
ভোটের আগে দলগুলোর এমন তৎপরতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘ঝুঁকি’ দেখছেন রাজনীতি-বিশ্লেষকেরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব দলই বিজয়ের নিশ্চয়তা চাইছে, সে নিয়ে দেনদরবার করছে। এমনটা হলে ভোটাররা কেন্দ্রবিমুখ হবে, ভোটও মুখ থুবড়ে পড়বে। যে লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেটা বিচ্যুত হবে।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে