গাজীপুরের টঙ্গীতে পোশাক কারখানা খোলার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। অন্যদিকে, গাজীপুর মহানগরীর একটি কারখানায় বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল বুধবার পৃথক সময়ে এ বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।

টঙ্গী: টঙ্গীতে কাজের বিরতির দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের করা বিক্ষোভের একদিন পর কারখানাটি বন্ধ করে দিয়েছে পলমল গ্রুপ। গতকাল বুধবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে বন্ধের নোটিশ দেখতে পান শ্রমিকেরা। পরে কারখানার খোলার দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

কারখানা সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাতে দুই পালায় কারখানাটির প্রায় ২০০ শ্রমিক কাজ করছিলেন। এ সময় শ্রমিকেরা রাতে কাজের ফাঁকে দুই ঘণ্টার বিরতি দাবিতে জানান। তবে সে দাবি মেনে নেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

পরদিন মঙ্গলবার দিনভর কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হলে শ্রমিকেরা ফিরে যায়। বুধবার সকালে ফের কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার প্রধান ফটকে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভরত শ্রমিকেরা জানান, কারখানায় রাতে কাজের ফাঁকে দুই ঘণ্টার বিরতির দাবি জানিয়ে কারখানায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করায় কারখানার মালিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন। কারখানা চালু না করা হলে এ বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তাঁরা।

কারখানা মালিক মো. নাফিস সিকদার বলেন, ‘ঝামেলা এড়াতে কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। দিনে কাজ শেষ না হওয়ায় রাতে অতিরিক্ত মজুরি দিয়ে কাজ করানো হয়। রাতে দুই ঘণ্টা বিরতি দেওয়া সম্ভব নয়।’

শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) আব্দুল জলিল বলেন, শ্রমিকেরা বুধবার সকালে কারখানাটির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। বেলা বাড়লে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা স্লোগান দিতে দিতে টঙ্গীর কল-কারখানা পরিদর্শকের কার্যালয়ের দিকে চলে যান।

গাজীপুর সদর: গাজীপুর মহানগরীর সালনা এলাকায় বকেয়া বেতন দাবিতে শ্যামলী গার্মেন্টস নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল বুধবার বেলা তিনটা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।

কারখানার শ্রমিকেরা জানান, শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া কর্মকর্তাদের পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বারবার বেতন দেওয়ার কথা বলেও কর্তৃপক্ষ বেতন দিতে টালবাহানা করছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ, উত্তর) মো. জাকির হাসান বলেন, ‘সাধারণত এ কারখানার শ্রমিকদের বেতন পরের মাসের ২০ তারিখে দেওয়া হয়। এবার তাদের বকেয়াসহ বেতন দেওয়ার কথা ছিল গত ২৫ অক্টোবর। কিন্তু নির্দিষ্ট তারিখ বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকেরা বুধবার বিকেল থেকে সড়কে নেমে আসে। আমরা মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আলোচনা চলাকালে মহাসড়কে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যান। ফলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।’

এ ঘটনায় শ্যামলী গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।