শ্যামল আতিক
কয়েক বছর আগে আমাদের দেশের একজন বিখ্যাত তারকা তাঁর শিশুকন্যার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন। তিনি হয়তো সরল মনে, নিজের আনন্দটুকু অন্যের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য ছবিটি পোস্ট করেছেন। কিন্তু তারপর শুরু হয় কুরুচিপূর্ণ, আপত্তিকর বাজে মন্তব্য এবং নানা তর্ক-বিতর্ক। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে এত বেশি মাতামাতি ও বিতর্ক হয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত এই উত্তাপ পত্রিকার পাতায় গিয়ে গড়িয়েছে।
আমরা প্রায়ই শুনতে পাই, সেলিব্রেটিরা তাঁদের শিশুর ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। এই ঘটনাগুলো শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই ঘটছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তারপরও আমরা সচেতন হই না। প্রায়ই শিশুদের স্পর্শকাতর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিই। শিশু জন্মের পর থেকে প্রতিনিয়ত আমরা এ ধরনের ভুল করছি।
পরিবারে নতুন শিশুর আগমন, নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয়। মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য পরিবারের মানুষজন ছবি তোলা, শিশুকে নিয়ে মাতামাতি, আনন্দ-ফুর্তি-উৎসব, সোশ্যাল মিডিয়ায় নবজাতকের ছবি শেয়ার করা ইত্যাদি আরও অনেক কিছু করছেন।
প্রিয়জনেরা জন্মের পর নবজাতকের ছবি তোলেন সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনি কি জানেন এর মাধ্যমে শিশুর কী ধরনের সর্বনাশ করছেন? ছবি তোলার সময় ব্যবহৃত ফ্ল্যাশের আলোয় নবজাতকের চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আসলে নবজাতকের নাজুক চোখ এখনো তীব্র আলো সহ্য করার মতো অবস্থায় যায়নি। এ ক্ষেত্রে আপনার সামান্য ভুল শিশুকে ভোগাতে পারে সারা জীবন।
আপনি হয়তো অন্যকে জানানো অথবা শুধু লাইক পাওয়ার আশায় সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশুর ছবি পোস্ট দিচ্ছেন। অথবা শিশুর প্রতিটি স্মরণীয় ঘটনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দটুকু সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাইছেন। শিশুদের ছবি বা ভিডিও এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করাকে বলে ‘শেয়ারেন্টিং’ (Sharenting)। কিন্তু আমরা কি জানি, এভাবে ছবি শেয়ার করার ফলে ভবিষ্যতে শিশুর জীবন কতটা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে, এর নেতিবাচক পরিণতি বা প্রতিক্রিয়ার রেশ কতটা ভয়ংকর হতে পারে? হয়তোবা এই ছবির নেতিবাচক রেশ শিশুকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হতে পারে।
প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ইন্টারনেটে শেয়ার করা কোনো ছবিই হারিয়ে যায় না, ডেটাবেইসে থেকে যায়। এমনকি ছবি পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে ডিলিট করে দিলেও। যখনই শিশুর কোনো ছবি ইন্টারনেটে পোস্ট দিলেন, সেটি আর ব্যক্তিগত বা প্রাইভেট রইল না, মুহূর্তেই পাবলিক হয়ে গেল। পরে এই ছবিগুলো যে যার মতো করে দেখতে পারবে, ব্যবহার করতে পারবে।
প্রতিনিয়ত ছবি শেয়ার করার ফলে অনলাইন জগতে শিশুর ডিজিটাল ফুট প্রিন্ট তৈরি হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত সার্চ টুলগুলো উন্নত ও শক্তশালী হচ্ছে। ভবিষ্যতে আপনার শিশুর নাম, জন্মতারিখ, জিওট্যাগ লোকেশন এবং ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে যে কেউই এসব ছবি দেখার সুযোগ পাবে। আপনার অজান্তেই শিশুদের এসব ছবি পণ্যের বিজ্ঞাপনেও ব্যবহার করা হতে পারে।
আশঙ্কা এখানে নয়। ভবিষ্যতে এসব ছবি কীভাবে ব্যবহার হবে, এটাই মূল আতঙ্ক। আসলে সোশ্যাল মিডিয়ার পরতে পরতে ওত পেতে আছে বিপদ। আপনার একটু অসতর্কতা বা হেঁয়ালিপনা ধ্বংস করে দিতে পারে শিশুর ভবিষ্যৎ। লাগামহীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার ও ডিফফেক প্রযুক্তি এখন একটি মূর্তিমান আতঙ্ক। আপনার শিশুও এর শিকার হতে পারে। ভবিষ্যতে এই শিশু যদি বিখ্যাত বা সেলিব্রেটি কেউ হয়, তখন এই ছবির জন্য সে বিব্রত কিংবা অসম্মানিতও হতে পারে।
মা-বাবা না বুঝেই শিশুর স্পর্শকাতর ছবি পোস্ট দেন; বিশেষ করে শিশুর বস্ত্রহীন ছবি সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। তাই শিশু যত ছোটই হোক, শিশুর পোশাকহীন ছবি অথবা পোশাক পরিবর্তন করার ছবি ইন্টারনেটে শেয়ার করবেন না। গোসল করানোর মুহূর্ত বা খালি গায়ে ঘোরাঘুরির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না। শিশুকে বুকের দুধ পানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবেন না। এ ধরনের ছবির জন্য ভবিষ্যতে আপনি ও আপনার শিশু দুজনই বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন।
কারণ এসব ছবি খারাপ লোকের হাতে পড়লে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করতে পারে। অনাবৃত শরীরের ভিডিও দিয়ে বর্তমান এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও তৈরি করা যায়। এসব ছবি দিয়ে সাইবার অপরাধীরা পর্নো ফিল্ম তৈরি করে বিক্রি করছে পর্নোগ্রাফি সাইটে।
অনেকে শিশুর অসুস্থ হওয়ার ছবি পোস্ট করেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ছবিগুলো দেখতে মলিন, ফ্যাকাশে, রোগা টাইপের হয়; অর্থাৎ দেখতে এত সুন্দর হয় না। কিন্তু পরে এই ছবির জন্য সহপাঠী বা বন্ধুরা তার সঙ্গে উপহাস বা মজা করতে পারে।
শিশুর আচরণগত বা মানসিক বা শারীরিক কোনো সমস্যা থাকলে, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে অন্যের কাছে সমাধান চাইবেন না। এর ফলে শিশু শেমিং বা বুলিংয়ের শিকার হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, কোনো বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া।
শিশুর রাগারাগি বা কান্নাকাটি করার ভিডিও পোস্ট করবেন না। পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে শিশু কান্নাকাটি বা মন খারাপ করেছে, এ ধরনের বিষয়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন না। কারণ আবেগীয় অবস্থা অন্যের কাছে প্রকাশিত হয়ে গেলে শিশু মানসিকভাবে আঘাত পেতে পারে। শিশু ছোট হলে তারও যে একটি সত্তা আছে, তার মধ্যেও যে মান-অভিমান-অপমানবোধ আছে, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
শিশুর জন্মদিন, জন্মনিবন্ধন সনদ, পাসপোর্ট, মেডিকেল রিপোর্ট, বাসার ঠিকানা ইত্যাদি কখনোই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না। কারণ শিশুর নাম-পরিচয় ও ছবি ব্যবহার করে অন্য কোথাও নিজের সন্তান বলে মিথ্যা তথ্য দিতে পারে। কোন স্কুলে পড়ে, কোন শিক্ষকের কাছে পড়তে যায়, কখন কোথায় যায়, কী করে ইত্যাদি তথ্য মিডিয়ায় শেয়ার দিলে অপরাধীরা আপনার অবস্থান শনাক্ত করতে পারবে। পেশাদার কিডন্যাপাররা এ তথ্য ব্যবহার করতে পারে।
আপনার শিশুর সহপাঠী বা বন্ধুদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন না। কারণ অন্য শিশুর অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া ছবি পোস্ট দেওয়া একধরনের অন্যায়। আপনি বলতে পারেন, অন্য শিশুর ছবি বাদ দিলাম, কিন্তু আমার সন্তানের ছবি আমি পোস্ট দেব তাতে আপত্তি থাকবে কেন? আপনি সন্তান জন্ম দিয়েছেন বলে সন্তানের মালিক হয়ে গেছেন, ব্যাপারটি তা নয়। শিশুর ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করাকে ফ্রান্সে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাদের পার্লামেন্টে এ বিষয়ে আইন পাস হয়েছে।
আইন না মেনে শিশুর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে মা-বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এমনকি মা-বাবা যদি একই ভুল বারবার করেন তাহলে তাঁদের ছবি তোলার অধিকারও নিষিদ্ধ হতে পারে। ফ্রান্সের এই আইনকে শিশু মনোবিজ্ঞানীরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আমাদের দেশেও এ ধরনের আইন করার সময় এসেছে। শাস্তির ভয়ে বহু অভিভাবক অন্তত শিশুর বস্ত্রহীন বা স্পর্শকাতর ছবি পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কেও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
লেখক: প্যারেন্টিং গবেষক
কয়েক বছর আগে আমাদের দেশের একজন বিখ্যাত তারকা তাঁর শিশুকন্যার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন। তিনি হয়তো সরল মনে, নিজের আনন্দটুকু অন্যের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য ছবিটি পোস্ট করেছেন। কিন্তু তারপর শুরু হয় কুরুচিপূর্ণ, আপত্তিকর বাজে মন্তব্য এবং নানা তর্ক-বিতর্ক। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে এত বেশি মাতামাতি ও বিতর্ক হয়েছিল যে শেষ পর্যন্ত এই উত্তাপ পত্রিকার পাতায় গিয়ে গড়িয়েছে।
আমরা প্রায়ই শুনতে পাই, সেলিব্রেটিরা তাঁদের শিশুর ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। এই ঘটনাগুলো শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই ঘটছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তারপরও আমরা সচেতন হই না। প্রায়ই শিশুদের স্পর্শকাতর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিই। শিশু জন্মের পর থেকে প্রতিনিয়ত আমরা এ ধরনের ভুল করছি।
পরিবারে নতুন শিশুর আগমন, নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয়। মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য পরিবারের মানুষজন ছবি তোলা, শিশুকে নিয়ে মাতামাতি, আনন্দ-ফুর্তি-উৎসব, সোশ্যাল মিডিয়ায় নবজাতকের ছবি শেয়ার করা ইত্যাদি আরও অনেক কিছু করছেন।
প্রিয়জনেরা জন্মের পর নবজাতকের ছবি তোলেন সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনি কি জানেন এর মাধ্যমে শিশুর কী ধরনের সর্বনাশ করছেন? ছবি তোলার সময় ব্যবহৃত ফ্ল্যাশের আলোয় নবজাতকের চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আসলে নবজাতকের নাজুক চোখ এখনো তীব্র আলো সহ্য করার মতো অবস্থায় যায়নি। এ ক্ষেত্রে আপনার সামান্য ভুল শিশুকে ভোগাতে পারে সারা জীবন।
আপনি হয়তো অন্যকে জানানো অথবা শুধু লাইক পাওয়ার আশায় সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশুর ছবি পোস্ট দিচ্ছেন। অথবা শিশুর প্রতিটি স্মরণীয় ঘটনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়ার মাধ্যমে আনন্দটুকু সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চাইছেন। শিশুদের ছবি বা ভিডিও এভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করাকে বলে ‘শেয়ারেন্টিং’ (Sharenting)। কিন্তু আমরা কি জানি, এভাবে ছবি শেয়ার করার ফলে ভবিষ্যতে শিশুর জীবন কতটা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে, এর নেতিবাচক পরিণতি বা প্রতিক্রিয়ার রেশ কতটা ভয়ংকর হতে পারে? হয়তোবা এই ছবির নেতিবাচক রেশ শিশুকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হতে পারে।
প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ইন্টারনেটে শেয়ার করা কোনো ছবিই হারিয়ে যায় না, ডেটাবেইসে থেকে যায়। এমনকি ছবি পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে ডিলিট করে দিলেও। যখনই শিশুর কোনো ছবি ইন্টারনেটে পোস্ট দিলেন, সেটি আর ব্যক্তিগত বা প্রাইভেট রইল না, মুহূর্তেই পাবলিক হয়ে গেল। পরে এই ছবিগুলো যে যার মতো করে দেখতে পারবে, ব্যবহার করতে পারবে।
প্রতিনিয়ত ছবি শেয়ার করার ফলে অনলাইন জগতে শিশুর ডিজিটাল ফুট প্রিন্ট তৈরি হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত সার্চ টুলগুলো উন্নত ও শক্তশালী হচ্ছে। ভবিষ্যতে আপনার শিশুর নাম, জন্মতারিখ, জিওট্যাগ লোকেশন এবং ফেসিয়াল রিকগনিশনের মাধ্যমে যে কেউই এসব ছবি দেখার সুযোগ পাবে। আপনার অজান্তেই শিশুদের এসব ছবি পণ্যের বিজ্ঞাপনেও ব্যবহার করা হতে পারে।
আশঙ্কা এখানে নয়। ভবিষ্যতে এসব ছবি কীভাবে ব্যবহার হবে, এটাই মূল আতঙ্ক। আসলে সোশ্যাল মিডিয়ার পরতে পরতে ওত পেতে আছে বিপদ। আপনার একটু অসতর্কতা বা হেঁয়ালিপনা ধ্বংস করে দিতে পারে শিশুর ভবিষ্যৎ। লাগামহীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসার ও ডিফফেক প্রযুক্তি এখন একটি মূর্তিমান আতঙ্ক। আপনার শিশুও এর শিকার হতে পারে। ভবিষ্যতে এই শিশু যদি বিখ্যাত বা সেলিব্রেটি কেউ হয়, তখন এই ছবির জন্য সে বিব্রত কিংবা অসম্মানিতও হতে পারে।
মা-বাবা না বুঝেই শিশুর স্পর্শকাতর ছবি পোস্ট দেন; বিশেষ করে শিশুর বস্ত্রহীন ছবি সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। তাই শিশু যত ছোটই হোক, শিশুর পোশাকহীন ছবি অথবা পোশাক পরিবর্তন করার ছবি ইন্টারনেটে শেয়ার করবেন না। গোসল করানোর মুহূর্ত বা খালি গায়ে ঘোরাঘুরির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না। শিশুকে বুকের দুধ পানের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবেন না। এ ধরনের ছবির জন্য ভবিষ্যতে আপনি ও আপনার শিশু দুজনই বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন।
কারণ এসব ছবি খারাপ লোকের হাতে পড়লে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করতে পারে। অনাবৃত শরীরের ভিডিও দিয়ে বর্তমান এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পর্নো ভিডিও তৈরি করা যায়। এসব ছবি দিয়ে সাইবার অপরাধীরা পর্নো ফিল্ম তৈরি করে বিক্রি করছে পর্নোগ্রাফি সাইটে।
অনেকে শিশুর অসুস্থ হওয়ার ছবি পোস্ট করেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ছবিগুলো দেখতে মলিন, ফ্যাকাশে, রোগা টাইপের হয়; অর্থাৎ দেখতে এত সুন্দর হয় না। কিন্তু পরে এই ছবির জন্য সহপাঠী বা বন্ধুরা তার সঙ্গে উপহাস বা মজা করতে পারে।
শিশুর আচরণগত বা মানসিক বা শারীরিক কোনো সমস্যা থাকলে, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে অন্যের কাছে সমাধান চাইবেন না। এর ফলে শিশু শেমিং বা বুলিংয়ের শিকার হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, কোনো বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়া।
শিশুর রাগারাগি বা কান্নাকাটি করার ভিডিও পোস্ট করবেন না। পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে বলে শিশু কান্নাকাটি বা মন খারাপ করেছে, এ ধরনের বিষয়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন না। কারণ আবেগীয় অবস্থা অন্যের কাছে প্রকাশিত হয়ে গেলে শিশু মানসিকভাবে আঘাত পেতে পারে। শিশু ছোট হলে তারও যে একটি সত্তা আছে, তার মধ্যেও যে মান-অভিমান-অপমানবোধ আছে, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।
শিশুর জন্মদিন, জন্মনিবন্ধন সনদ, পাসপোর্ট, মেডিকেল রিপোর্ট, বাসার ঠিকানা ইত্যাদি কখনোই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না। কারণ শিশুর নাম-পরিচয় ও ছবি ব্যবহার করে অন্য কোথাও নিজের সন্তান বলে মিথ্যা তথ্য দিতে পারে। কোন স্কুলে পড়ে, কোন শিক্ষকের কাছে পড়তে যায়, কখন কোথায় যায়, কী করে ইত্যাদি তথ্য মিডিয়ায় শেয়ার দিলে অপরাধীরা আপনার অবস্থান শনাক্ত করতে পারবে। পেশাদার কিডন্যাপাররা এ তথ্য ব্যবহার করতে পারে।
আপনার শিশুর সহপাঠী বা বন্ধুদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন না। কারণ অন্য শিশুর অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া ছবি পোস্ট দেওয়া একধরনের অন্যায়। আপনি বলতে পারেন, অন্য শিশুর ছবি বাদ দিলাম, কিন্তু আমার সন্তানের ছবি আমি পোস্ট দেব তাতে আপত্তি থাকবে কেন? আপনি সন্তান জন্ম দিয়েছেন বলে সন্তানের মালিক হয়ে গেছেন, ব্যাপারটি তা নয়। শিশুর ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করাকে ফ্রান্সে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাদের পার্লামেন্টে এ বিষয়ে আইন পাস হয়েছে।
আইন না মেনে শিশুর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে মা-বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এমনকি মা-বাবা যদি একই ভুল বারবার করেন তাহলে তাঁদের ছবি তোলার অধিকারও নিষিদ্ধ হতে পারে। ফ্রান্সের এই আইনকে শিশু মনোবিজ্ঞানীরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আমাদের দেশেও এ ধরনের আইন করার সময় এসেছে। শাস্তির ভয়ে বহু অভিভাবক অন্তত শিশুর বস্ত্রহীন বা স্পর্শকাতর ছবি পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কেও অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
লেখক: প্যারেন্টিং গবেষক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৭ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৭ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে