শাইখ সিরাজ
চলমান অস্থিরতা আর সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। দেশে কি বিদেশে। পরিবর্তিত এক অস্থির সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানবসৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশের পাশাপাশি মোকাবিলা করতে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাতগুলোও। গত জুলাইয়ের প্রথম দিকে বন্যায় প্লাবিত হয় দেশের বেশ কিছু অঞ্চল। টানা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষি। কিছুদিন ধরেই বন্যায় কৃষির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চ্যানেল আইয়ের সংবাদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে আসছিলাম।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অবস্থা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। চ্যানেল আইয়ের গাইবান্ধা প্রতিনিধি ফারুক হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, সেখানে দুই দফা বন্যায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৭০ হাজারের মতো কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় অন্তত ৭৬ কোটি টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে। ফারুক হোসেন সরেজমিনে দেখেছেন, জেলার নিম্নাঞ্চল এলাকার পাট, তিল, আউশ, ভুট্টা, চিনাবাদাম, আউশ, রোপা ধানের বীজতলা, কলা ও শাকসবজি বন্যার পানিতে দীর্ঘদিন তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। গাইবান্ধার চরের মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বন্যায় মরিচ, আমন ধানের বীজতলাসহ শাকসবজি তলিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পানি থাকার কারণে কোনো ফসলই আর টেকেনি।
উজানের ঢল এবং টানা বৃষ্টিতে জুলাইয়ের প্রথম দিকে সিরাজগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায় ফেরদৌস রবিন। তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার প্রায় ৩৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় ৬০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে অনেক কৃষক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অধিক বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে পানি বাড়ার কারণে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এ সময় নদীতীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা, সবজিসহ ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল।
সিলেট প্রতিনিধি সাদিকুর রহমান সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরাতে জানিয়েছেন, ওই জেলায় ১ হাজার ৪৭২ হেক্টর জমির আউশ ধান বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ধানের ৬৯৪ হেক্টর বীজতলা। যার ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমির শাকসবজি। যার ক্ষতির পরিমাণ ৭৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে কৃষকেরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি একই রকম। এই অস্থির সময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। বন্যায় যে পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে, হচ্ছে তা আমাদের জাতীয় খাদ্যনিরাপত্তার জন্য ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। করোনার মতো জটিল সময়ে অনেক উন্নত দেশ যখন খাদ্যঘাটতির মধ্য দিয়ে গেছে, আমরা দরিদ্র দেশ হিসেবে খাদ্যঘাটতি সে রকমভাবে টের পাইনি। এর মূল কারণ সে সময় আমাদের কৃষক প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মাঠে ছিলেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হয়নি।
গত মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (বিআইডিএস) একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখার সুযোগ হয়েছিল। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন জানিয়েছিলেন, তাঁদের জরিপ মতে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৫ শতাংশ। জরিপে দেখা গেছে, মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মাছের দাম। এক বছরে মাছের দাম ২০ শতাংশের ওপর বেড়েছে। এরপর রয়েছে পোলট্রি মুরগির দাম। দেশের পোলট্রি খাদ্যের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কয়েক বছরে আমদানি করা এসব খাবারের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, যা শেষ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এমন সময়ে দেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হলে খাদ্যপণ্যের মূল্য পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।
মনে রাখতে হবে, কৃষক শুধু আমাদের খাদ্যই উৎপাদন করার জন্য ফসল ফলান না। আমাদের পাশাপাশি গবাদি প্রাণী, মাছ ও হাঁস-মুরগিরও খাদ্য জোগান কৃষক। গত কয়েক দিনে দেশের সংকট পরিস্থিতিতে কৃষিপণ্য বাজারে বিক্রি করতে না পেরে বহু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমন সংবাদ আমি পেয়েছি। সিলেটের কৃষক বদু মিয়া তাঁর উৎপাদিত ফল-ফসল রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে কৃষকের বাজারে বিক্রি করতেন। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাজারে আসতে পারছেন না। এই সময়ে তাঁকে লোকসানে পড়তে হয়েছে। যার প্রভাব সামনের ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও পড়বে। শুধু বদু মিয়া নন, এই সমস্যার মুখোমুখি হাজার হাজার কৃষক।
দেশের কৃষকেরা এখন ব্যস্ত আমন ধান চাষে। এ বছর রোপা আমন ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ৪০ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়ার কথা। কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল দেশের ৬১টি জেলার ৫ লাখ ৬৬ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এই প্রণোদনার আওতায় বিনা মূল্যে বীজ ও সার পাবেন। প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য রোপা আমন ধানের উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনা মূল্যে পাবেন। সাম্প্রতিক সময়ে এক লাখ টন সার আমদানির কথা শুনছিলাম। আগামীর নয়, আজকের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই আমনচাষিদের সার, জ্বালানি নিশ্চিত করা। কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতেই আমরা যেন কৃষকের কথা ভুলে না যাই। তাঁদের প্রয়োজনটুকু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেটাতে হবে।
সময়টা বড় অনিশ্চিত আর টালমাটাল। একটা স্বাধীন দেশ রক্তাক্ত হবে—এটা কখনোই কাম্য নয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরীহ পেশা কৃষি। খাদ্য উৎপাদনের মতো চরম রাজনৈতিক বিষয়টি নিয়ে কাজ করলেও পক্ষহীন অরাজনৈতিক সাধারণ জীবন যাপন করেন বাংলাদেশের কৃষক। তাঁদের কোনো দল নেই, নেই কোনো দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর নেতা, সংগঠন বা প্ল্যাটফর্ম। কৃষক শুধু বোঝেন মাটির ভাষা, তাঁর জীবনের সব যুদ্ধ শুধু ফসলের মাঠে। সেই কৃষককে তাঁর সময়ের প্রয়োজনটুকু মেটাতে হবে, না হলে আমাদের অনেকেরই না খেয়ে থাকতে হবে।
শাইখ সিরাজ, পরিচালক ও বার্তাপ্রধান চ্যানেল আই
চলমান অস্থিরতা আর সংকট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। দেশে কি বিদেশে। পরিবর্তিত এক অস্থির সময়ের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানবসৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশের পাশাপাশি মোকাবিলা করতে হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাতগুলোও। গত জুলাইয়ের প্রথম দিকে বন্যায় প্লাবিত হয় দেশের বেশ কিছু অঞ্চল। টানা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষি। কিছুদিন ধরেই বন্যায় কৃষির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চ্যানেল আইয়ের সংবাদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে আসছিলাম।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অবস্থা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছি। চ্যানেল আইয়ের গাইবান্ধা প্রতিনিধি ফারুক হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, সেখানে দুই দফা বন্যায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৭০ হাজারের মতো কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় অন্তত ৭৬ কোটি টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে। ফারুক হোসেন সরেজমিনে দেখেছেন, জেলার নিম্নাঞ্চল এলাকার পাট, তিল, আউশ, ভুট্টা, চিনাবাদাম, আউশ, রোপা ধানের বীজতলা, কলা ও শাকসবজি বন্যার পানিতে দীর্ঘদিন তলিয়ে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। গাইবান্ধার চরের মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। বন্যায় মরিচ, আমন ধানের বীজতলাসহ শাকসবজি তলিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পানি থাকার কারণে কোনো ফসলই আর টেকেনি।
উজানের ঢল এবং টানা বৃষ্টিতে জুলাইয়ের প্রথম দিকে সিরাজগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায় ফেরদৌস রবিন। তিনি জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার প্রায় ৩৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় ৬০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে অনেক কৃষক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অধিক বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে পানি বাড়ার কারণে চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এ সময় নদীতীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা, সবজিসহ ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল।
সিলেট প্রতিনিধি সাদিকুর রহমান সিলেট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরাতে জানিয়েছেন, ওই জেলায় ১ হাজার ৪৭২ হেক্টর জমির আউশ ধান বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ধানের ৬৯৪ হেক্টর বীজতলা। যার ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমির শাকসবজি। যার ক্ষতির পরিমাণ ৭৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে কৃষকেরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জসহ আরও বেশ কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি একই রকম। এই অস্থির সময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। বন্যায় যে পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে, হচ্ছে তা আমাদের জাতীয় খাদ্যনিরাপত্তার জন্য ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। করোনার মতো জটিল সময়ে অনেক উন্নত দেশ যখন খাদ্যঘাটতির মধ্য দিয়ে গেছে, আমরা দরিদ্র দেশ হিসেবে খাদ্যঘাটতি সে রকমভাবে টের পাইনি। এর মূল কারণ সে সময় আমাদের কৃষক প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মাঠে ছিলেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হয়নি।
গত মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (বিআইডিএস) একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখার সুযোগ হয়েছিল। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন জানিয়েছিলেন, তাঁদের জরিপ মতে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৫ শতাংশ। জরিপে দেখা গেছে, মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মাছের দাম। এক বছরে মাছের দাম ২০ শতাংশের ওপর বেড়েছে। এরপর রয়েছে পোলট্রি মুরগির দাম। দেশের পোলট্রি খাদ্যের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কয়েক বছরে আমদানি করা এসব খাবারের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, যা শেষ পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এমন সময়ে দেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হলে খাদ্যপণ্যের মূল্য পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।
মনে রাখতে হবে, কৃষক শুধু আমাদের খাদ্যই উৎপাদন করার জন্য ফসল ফলান না। আমাদের পাশাপাশি গবাদি প্রাণী, মাছ ও হাঁস-মুরগিরও খাদ্য জোগান কৃষক। গত কয়েক দিনে দেশের সংকট পরিস্থিতিতে কৃষিপণ্য বাজারে বিক্রি করতে না পেরে বহু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমন সংবাদ আমি পেয়েছি। সিলেটের কৃষক বদু মিয়া তাঁর উৎপাদিত ফল-ফসল রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে কৃষকের বাজারে বিক্রি করতেন। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে তাঁর উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাজারে আসতে পারছেন না। এই সময়ে তাঁকে লোকসানে পড়তে হয়েছে। যার প্রভাব সামনের ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও পড়বে। শুধু বদু মিয়া নন, এই সমস্যার মুখোমুখি হাজার হাজার কৃষক।
দেশের কৃষকেরা এখন ব্যস্ত আমন ধান চাষে। এ বছর রোপা আমন ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ৪০ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়ার কথা। কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল দেশের ৬১টি জেলার ৫ লাখ ৬৬ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এই প্রণোদনার আওতায় বিনা মূল্যে বীজ ও সার পাবেন। প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য রোপা আমন ধানের উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনা মূল্যে পাবেন। সাম্প্রতিক সময়ে এক লাখ টন সার আমদানির কথা শুনছিলাম। আগামীর নয়, আজকের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই আমনচাষিদের সার, জ্বালানি নিশ্চিত করা। কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতেই আমরা যেন কৃষকের কথা ভুলে না যাই। তাঁদের প্রয়োজনটুকু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেটাতে হবে।
সময়টা বড় অনিশ্চিত আর টালমাটাল। একটা স্বাধীন দেশ রক্তাক্ত হবে—এটা কখনোই কাম্য নয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরীহ পেশা কৃষি। খাদ্য উৎপাদনের মতো চরম রাজনৈতিক বিষয়টি নিয়ে কাজ করলেও পক্ষহীন অরাজনৈতিক সাধারণ জীবন যাপন করেন বাংলাদেশের কৃষক। তাঁদের কোনো দল নেই, নেই কোনো দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর নেতা, সংগঠন বা প্ল্যাটফর্ম। কৃষক শুধু বোঝেন মাটির ভাষা, তাঁর জীবনের সব যুদ্ধ শুধু ফসলের মাঠে। সেই কৃষককে তাঁর সময়ের প্রয়োজনটুকু মেটাতে হবে, না হলে আমাদের অনেকেরই না খেয়ে থাকতে হবে।
শাইখ সিরাজ, পরিচালক ও বার্তাপ্রধান চ্যানেল আই
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে