অর্ণব সান্যাল, ঢাকা
‘এইটা ছেঁড়াদিয়া, এইখানে হিম্মত ভাঁজ কইরা আলমারির ভিত্রে গুছায়া রাখতে হয়…’
গল্পের শুরুর দিকেই এমন কথা শুনিয়ে দিয়েছিল ছেঁড়াদিয়ার সোহরাব কোম্পানির শাহজাহান বলি। তবে ছেঁড়াদিয়াতে হিম্মত ভাঁজ করার হুমকি বাংলা ওটিটির দুনিয়ায় কানেই তোলেনি ‘বলি’। উল্টো এ দেশীয় কনটেন্ট হিসেবে হিম্মত দেখানোর দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছে সোহরাব-রুস্তমের নতুন এই ওয়েব সিরিজ।
বর্তমানে বিনোদনের অন্যতম প্রতিশব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো। বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে তা প্রকট হলেও, এ দেশে এখনো হাঁটি হাঁটি পা পা শেষ হয়নি। দৌড়ানোর সময় তো আরেকটু দূরে। সেই দৌড়ানোর রেসেই পাল্লা দেওয়ার চেষ্টা করেছে হালের ‘বলি’। পুরো ওয়েব সিরিজ দেখার পর বলাই যায়, সেই চেষ্টায় শতভাগ সফলতা না পেলেও লেটার মার্কের কাছাকাছি যেতেই পারে শঙ্খ দাশগুপ্তের এই সৃষ্টি।
লেখার শুরুতেই ছেঁড়াদিয়ার নাম জানা গেছে। ৩ ডিসেম্বর হইচইয়ে রিলিজ হওয়া ‘বলি’ ওয়েব সিরিজের মূল কাহিনি সাগরের বুকে জেগে ওঠা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপকে ঘিরে। প্রথম পর্বেই বুঝে ফেলা যায়, সেই ছোট্ট দ্বীপে আছে একটি জটিল ক্ষমতা কাঠামোর সব সমীকরণ। যেমন আছে দুই কোম্পানির একে-অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার লড়াই, তেমনি আছে কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করা চেয়ারম্যানের কলকাঠি। আর সব কিছুর সঙ্গেই সম্পর্কিত টাকার লোভ ও একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা। সেই সঙ্গে লড়াইয়ের মাঠে থাকা দুই পক্ষের মধ্যে আছে তৃতীয় একটি পক্ষ। যেটি কিনা মধ্যস্থতাও করে, আবার প্রয়োজনে দুই নৌকায় পা দেয়।
এতটুকু শোনার পর এ দেশের বাস্তবতা থেকে ছেঁড়াদিয়াকে কি আলাদা করতে পারছেন? সম্ভব নয়। চিত্রনাট্যকার অন্তত এই জায়গায় সফল যে পুরো ভৌগোলিক অঞ্চলের বাস্তবতা একটি দ্বীপের প্রেক্ষাপটে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। ‘বলি’ দেখতে দেখতে একটি প্রশ্ন জাগতেই পারে, অর্থ আর ক্ষমতার এই সমীকরণ কি পুরো বিশ্বে নেই?
হ্যাঁ, তা আছে প্রবলভাবেই। একটি নির্দিষ্ট জায়গাকে কেন্দ্র করে এমন গল্প দেখানোর চল ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্য। বিশেষ করে ভারত এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে অনেক। ‘বলি’ সেই চেনা ছকটাই অনুসরণ করেছে বলা চলে। তবে তা অন্ধ অনুকরণ ছিল না। বরং নিজেদের ঢংয়ে সোহরাব-রুস্তমের জীবনের গল্প বলার একটা চেষ্টা দেখা গেছে সিরিজের সবকটি পর্বেই।
এমন ঘরানার অন্যান্য ভাষার সার্থক ওয়েব সিরিজগুলোয় সহিংসতা ও যৌনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ‘বলি’তেও তা বর্তমান। তবে পরিমিত পরিমাণে, অন্তত দৃষ্টিকটু মনে হয়নি। বিশেষ করে শুঁড়িখানার বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলার দৃশ্যে সেসবের অনুপাত মাত্রাছাড়া ছিল না, অন্তত এ ক্ষেত্রে দেশীয় ট্যাবু ভাঙা গেছে। কিন্তু ‘বলি’ আসলে কোন কালের রেখায় কোন সময়টার গল্প বলতে চেয়েছে, সেটি বিভ্রান্তিকর। কখনো চরিত্রগুলোর পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে মনে হয়েছে গত শতকের শেষ দিক, আবার রুস্তমের মুখে ‘হ্যাডম’ শব্দ বা শুঁড়িখানায় হালের আইটেম সং বাজতে শুনলে, সেই ভাবনায় ধন্দ তৈরি হচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই। অস্ত্রের প্রদর্শনীতেও সেই একই বিভ্রান্তি রয়ে গেছে।
পুরো ওয়েব সিরিজে ক্যামেরার কাজ ছিল দেখার মতো। দরিয়া ও দ্বীপ—এ দুটিকে ক্যামেরায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। ক্যামেরায় আলো-ছায়ার খেলাও ছিল দুর্দান্ত। তবে বিজ্ঞাপনের চোখ থেকে পুরোপুরি কি বের হতে পারলেন শঙ্খ দাশগুপ্ত? এই প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে।
চরিত্র ফুটিয়ে তোলার কাজে চঞ্চল চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন লাভলু নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছেন। এ দুই শিল্পীর কাজে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে ভালোভাবেই। হুজুরের চরিত্রে ইরেশ যাকের বা আনারকলির চরিত্রে সোহানা সাবা ছিলেন সপ্রতিভ। আলাদা করে বলতে হয় নাসির উদ্দিন খান ও জিয়াউল হক পলাশের কথা; দুজনেই নতুন মোড়কে নিজেদের ছাড়িয়ে গেছেন। আর সোহেল মণ্ডল দিয়েছেন আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘বলি’ এ দেশীয় ওটিটি কনটেন্টের দুনিয়ায় কিছু সীমারেখা অতিক্রম করার হিম্মত অন্তত দেখিয়েছে। সেই সাহসে ভর করেই নাহয় সামনের দিকে তাকানো যাক।
‘এইটা ছেঁড়াদিয়া, এইখানে হিম্মত ভাঁজ কইরা আলমারির ভিত্রে গুছায়া রাখতে হয়…’
গল্পের শুরুর দিকেই এমন কথা শুনিয়ে দিয়েছিল ছেঁড়াদিয়ার সোহরাব কোম্পানির শাহজাহান বলি। তবে ছেঁড়াদিয়াতে হিম্মত ভাঁজ করার হুমকি বাংলা ওটিটির দুনিয়ায় কানেই তোলেনি ‘বলি’। উল্টো এ দেশীয় কনটেন্ট হিসেবে হিম্মত দেখানোর দৌড়ে বেশ এগিয়ে আছে সোহরাব-রুস্তমের নতুন এই ওয়েব সিরিজ।
বর্তমানে বিনোদনের অন্যতম প্রতিশব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো। বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে তা প্রকট হলেও, এ দেশে এখনো হাঁটি হাঁটি পা পা শেষ হয়নি। দৌড়ানোর সময় তো আরেকটু দূরে। সেই দৌড়ানোর রেসেই পাল্লা দেওয়ার চেষ্টা করেছে হালের ‘বলি’। পুরো ওয়েব সিরিজ দেখার পর বলাই যায়, সেই চেষ্টায় শতভাগ সফলতা না পেলেও লেটার মার্কের কাছাকাছি যেতেই পারে শঙ্খ দাশগুপ্তের এই সৃষ্টি।
লেখার শুরুতেই ছেঁড়াদিয়ার নাম জানা গেছে। ৩ ডিসেম্বর হইচইয়ে রিলিজ হওয়া ‘বলি’ ওয়েব সিরিজের মূল কাহিনি সাগরের বুকে জেগে ওঠা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপকে ঘিরে। প্রথম পর্বেই বুঝে ফেলা যায়, সেই ছোট্ট দ্বীপে আছে একটি জটিল ক্ষমতা কাঠামোর সব সমীকরণ। যেমন আছে দুই কোম্পানির একে-অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার লড়াই, তেমনি আছে কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করা চেয়ারম্যানের কলকাঠি। আর সব কিছুর সঙ্গেই সম্পর্কিত টাকার লোভ ও একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা। সেই সঙ্গে লড়াইয়ের মাঠে থাকা দুই পক্ষের মধ্যে আছে তৃতীয় একটি পক্ষ। যেটি কিনা মধ্যস্থতাও করে, আবার প্রয়োজনে দুই নৌকায় পা দেয়।
এতটুকু শোনার পর এ দেশের বাস্তবতা থেকে ছেঁড়াদিয়াকে কি আলাদা করতে পারছেন? সম্ভব নয়। চিত্রনাট্যকার অন্তত এই জায়গায় সফল যে পুরো ভৌগোলিক অঞ্চলের বাস্তবতা একটি দ্বীপের প্রেক্ষাপটে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। ‘বলি’ দেখতে দেখতে একটি প্রশ্ন জাগতেই পারে, অর্থ আর ক্ষমতার এই সমীকরণ কি পুরো বিশ্বে নেই?
হ্যাঁ, তা আছে প্রবলভাবেই। একটি নির্দিষ্ট জায়গাকে কেন্দ্র করে এমন গল্প দেখানোর চল ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সহজলভ্য। বিশেষ করে ভারত এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে অনেক। ‘বলি’ সেই চেনা ছকটাই অনুসরণ করেছে বলা চলে। তবে তা অন্ধ অনুকরণ ছিল না। বরং নিজেদের ঢংয়ে সোহরাব-রুস্তমের জীবনের গল্প বলার একটা চেষ্টা দেখা গেছে সিরিজের সবকটি পর্বেই।
এমন ঘরানার অন্যান্য ভাষার সার্থক ওয়েব সিরিজগুলোয় সহিংসতা ও যৌনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ‘বলি’তেও তা বর্তমান। তবে পরিমিত পরিমাণে, অন্তত দৃষ্টিকটু মনে হয়নি। বিশেষ করে শুঁড়িখানার বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলার দৃশ্যে সেসবের অনুপাত মাত্রাছাড়া ছিল না, অন্তত এ ক্ষেত্রে দেশীয় ট্যাবু ভাঙা গেছে। কিন্তু ‘বলি’ আসলে কোন কালের রেখায় কোন সময়টার গল্প বলতে চেয়েছে, সেটি বিভ্রান্তিকর। কখনো চরিত্রগুলোর পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে মনে হয়েছে গত শতকের শেষ দিক, আবার রুস্তমের মুখে ‘হ্যাডম’ শব্দ বা শুঁড়িখানায় হালের আইটেম সং বাজতে শুনলে, সেই ভাবনায় ধন্দ তৈরি হচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই। অস্ত্রের প্রদর্শনীতেও সেই একই বিভ্রান্তি রয়ে গেছে।
পুরো ওয়েব সিরিজে ক্যামেরার কাজ ছিল দেখার মতো। দরিয়া ও দ্বীপ—এ দুটিকে ক্যামেরায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। ক্যামেরায় আলো-ছায়ার খেলাও ছিল দুর্দান্ত। তবে বিজ্ঞাপনের চোখ থেকে পুরোপুরি কি বের হতে পারলেন শঙ্খ দাশগুপ্ত? এই প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে।
চরিত্র ফুটিয়ে তোলার কাজে চঞ্চল চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন লাভলু নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়েছেন। এ দুই শিল্পীর কাজে প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে ভালোভাবেই। হুজুরের চরিত্রে ইরেশ যাকের বা আনারকলির চরিত্রে সোহানা সাবা ছিলেন সপ্রতিভ। আলাদা করে বলতে হয় নাসির উদ্দিন খান ও জিয়াউল হক পলাশের কথা; দুজনেই নতুন মোড়কে নিজেদের ছাড়িয়ে গেছেন। আর সোহেল মণ্ডল দিয়েছেন আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘বলি’ এ দেশীয় ওটিটি কনটেন্টের দুনিয়ায় কিছু সীমারেখা অতিক্রম করার হিম্মত অন্তত দেখিয়েছে। সেই সাহসে ভর করেই নাহয় সামনের দিকে তাকানো যাক।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে