রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার শিল্প এলাকাখ্যাত চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)। এই ইউপিতে আগামী ১৫ জুন ভোট হবে। সম্প্রতি তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ভোটের লড়াইয়ের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন পাওয়া নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগসহ দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।

গত ২৫ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হুমায়ুন কবীর বৃহত্তর চট্টগ্রামের ২১টি ইউপির নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী চন্দ্রঘোনা ইউপি ছাড়াও রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভা ও খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন হবে।

তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৯ মে ও প্রার্থিতা বাছাইয়ের শেষ তারিখ ২৬ মে। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।

চন্দ্রঘোনা ইউপির তফসিল ঘোষণার অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা উপজেলা ও জেলার শীর্ষনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগসহ দলীয় মনোনয়ন পেতে তদবির করছেন। এদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কাপ্তাইয়ের নেতারা বলেছেন, বিগত নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় আসন্ন চন্দ্রঘোনা ইউপি নির্বাচনে কোনো প্রার্থী না থাকার সম্ভাবনা আছে।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি লোকমান আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মামুন জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিগত নির্বাচনে উপজেলার ৪টি ইউপি নির্বাচনে দলের কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি। সে অনুযায়ী তাঁরা ইউপি নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দিচ্ছেন না। যদি শেষ মুহূর্তে দলের হাইকমান্ড কোনো সিদ্ধান্ত দেয়, তখন বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নূর উল্ল্যা ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন মিলন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক হানিফ বাবুল এবং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হোসেন।

যোগাযোগ করা হলে বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী বলেন, ‘সর্বশেষ ২০১৭ সালে চন্দ্রঘোনা ইউপি নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করি। বিগত ৫টি বছর ইউনিয়নের উন্নয়নে আমি সব সময় জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছি। আশা করছি, স্থানীয় সাংসদসহ দলের নীতিনির্ধারকেরা আমার কাজের মূল্যায়ন করে আবার মনোনয়ন দেবেন।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন মিলন বলেন, ‘দল করতে গিয়ে আমি ২০০১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) কর্তৃক মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাবন্দী ছিলাম। ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ করে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে আগামী নির্বাচনে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’

বিগত সময়ে একবার ইউপি চেয়ারম্যান হওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক বিপ্লব মারমা নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখনো আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’

সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন উপজেলা যুবদল নেতা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারব না।’