এ কে এম শামসুদ্দিন
আমার এ লেখাটি যখন প্রকাশিত হবে, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে দিল্লিতে অবস্থান করছেন। টানা চতুর্থবার সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের মাধ্যমে তাঁর বিদেশ সফর শুরু করেছেন। যদিও সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শেখ হাসিনা চলতি মাসের ৮ তারিখ ভারতে গিয়েছিলেন। তবে বর্তমান সফরটি পূর্বনির্ধারিত এবং একটি আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফর। মনে করা হচ্ছে, সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকা লিখেছে, দ্বিপক্ষীয় এ সফরে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের তালিকায় তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি ভাগাভাগি, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিক হত্যাকাণ্ড বন্ধসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের অগ্রাধিকারের তালিকার মধ্যে থাকছে পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়ক নির্মাণ, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় ভারতীয় ট্রেন চলাচলের সুবিধা আদায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারত কর্তৃক রাডার নেটওয়ার্ক স্থাপন বাস্তবায়ন ও ফেনী নদী থেকে আগরতলার জন্য পানি তোলার ‘স্থায়ী ব্যবস্থা’র জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করা ইত্যাদি।
এ কথা সবারই জানা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আপত্তির কারণে তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি প্রায় দেড় দশক ধরে ঝুলে আছে। তাদের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারটির সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি। ফলে তিস্তা চুক্তি আর স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি। অগত্যা বাংলাদেশ বাধ্য হয়ে যখন তিস্তায় পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি ও দুই তীর সংরক্ষণ করে সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার এক মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে চেয়েছে এবং সেই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীন অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করলে, ভারত সঙ্গে সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানায়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের আপত্তির মুখে কিছু করবে, তা কল্পনা করা যায় না। ফলে বাংলাদেশের এই উদ্যোগও আটকে আছে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা মনে করছেন, অনেক দিন ঝুলে থাকা এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আগ্রহের বিষয়ে মোদি ও হাসিনার বৈঠকের কোনো না কোনো পর্যায়ে আলোচনা হতে পারে।
ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেই হিসাবে ২০২৬ সালেই এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। চুক্তি থাকলেও ভারত কখনো বাংলাদেশকে হিস্যার পানি দেয়নি। গঙ্গার উজানে চুক্তি অনুযায়ী পানি না ছেড়ে ভারত তা নিয়ন্ত্রণ করছে বলেই ভাটিতে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঐতিহাসিক ওই পানি চুক্তিতে গঙ্গার পানিবণ্টনের সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। সেখানে শুষ্ক ও ভরা মৌসুমে ভারত ও বাংলাদেশ কোন প্রক্রিয়ায় কতটুকু পানি ভাগাভাগি করবে, তার গ্যারান্টি ক্লজ রয়েছে। তবে, এই গ্যারান্টি ক্লজে যা-ই থাকুক না কেন, ভারত পদ্মায় পানিপ্রবাহে বরাবরই বিঘ্ন ঘটিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে পদ্মার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের কথা শোনা যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই চুক্তি বছর বছর নবায়ন না করে স্থায়ী চুক্তি করা যায় কি না? ভারত এদিক দিয়ে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি স্মার্ট। তারা বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে আগরতলার জন্য পানি তোলার বছরভিত্তিক কোনো চুক্তি করতে চাইছে না। তারা একেবারে স্থায়ী চুক্তিই করতে চাইছে। তাহলে আমরা কেন পদ্মার পানিবণ্টনের স্থায়ী চুক্তি করতে পারব না? অবশ্য পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘চুক্তি স্থায়ী করেই বা কী হবে, যেখানে ভারত তাদের মেজাজ-মর্জিমতো পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিনিয়ত চুক্তি ভঙ্গ করছে, সেখানে সরকার কিছুই করতে পারছে না। ভবিষ্যতেও যে কিছু করবে, সে ভরসাও পাচ্ছি না।’
ভারতের সঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো—সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড। ভারত এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা বহুবার শুনিয়েছে। কিন্তু কোনোকালেই তা রক্ষা করেনি। তাদের সীমান্তরক্ষীরা ইচ্ছামতো হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, গত সাত বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা দুই শর বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে। ইদানীং একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, এসব হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ভারতের বিএসএফ সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর উল্টো দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সীমান্তে কেউ যদি দোষ করে, সেই দোষের ডিগ্রি যত গভীরই হোক না কেন তাকে গুলি করে হত্যা করতে হবে—এমন অমানবিক মনোভাব আর কোন দেশের সীমান্তরক্ষীদের আছে?
লক্ষ করা যাচ্ছে, দিন যতই যাচ্ছে, বাংলাদেশের কাছে ভারতের সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার চাহিদাও যেন ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে; বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ নতুন করে সরকার গঠন করার পর ভারতের এই প্রবৃত্তি লক্ষ করা গেছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম নেই। প্রতিবারই ভারত নতুন নতুন ইস্যু উত্থাপন করছে এবং সে মোতাবেক চুক্তি স্বাক্ষরও হয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার এবারের সফরকালেও ভারতের অনুরোধে নতুন আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। ভারতের অগ্রাধিকার তালিকার এমন দু-একটি নতুন গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
প্রথমেই দেখা যাক, পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়ক নির্মাণের বিষয়টি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার ভারত সফর শেষে প্রকাশিত দুই দেশের যৌথ বিবৃতির ১৯ অনুচ্ছেদে হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণের বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য ভারত প্রস্তাব দিয়েছিল। এ সংবাদটি তখন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে আমি এ বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকায় একটি নিবন্ধও লিখেছিলাম। ভারতের ওই প্রস্তাবে এই মহাসড়ক নির্মাণের অন্যতম উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যকার শিলিগুড়ি করিডর হিসেবে পরিচিত পথের বিকল্প পথ হিসেবে ভারত এ মহাসড়ক ব্যবহার করবে। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধানতম সড়ক হিসেবেই ব্যবহৃত হবে। বাংলাদেশের ম্যাপ লক্ষ করলেই বোঝা যাবে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যাওয়ার হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জের দূরত্বই সবচেয়ে কম। যদি এই মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের রণকৌশলের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ভবিষ্যতে যদি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তাতে পশ্চিম ও পূর্ব দিক থেকে হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক বরাবর কাট অফ করে দেওয়া যায়, তাহলে বৃহত্তর রংপুর বিভাগ বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
অতএব, এটা অনুমান করা ভুল হবে না যে এই মহাসড়ক নির্মিত হলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন হবে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়বে। যদিও এ মহাসড়ক নির্মাণে ভারতের দেওয়া প্রস্তাবে কী আছে, তা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়; তবু হিলি থেকে মহেন্দ্রগঞ্জের মধ্যকার যেকোনো যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার আগে উপরোল্লিখিত প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানতে হবে। এই সড়ক নির্মাণের পেছনে শুধু বাণিজ্যিক লাভের কথা বিবেচনা করলেই চলবে না; রণকৌশলগত দিক দিয়ে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। তা ছাড়া, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক নিঃসন্দেহে একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প হবে। এই মহাসড়ক নির্মাণ হলে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর প্রায় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করতে হবে। এই সেতু নির্মাণে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অর্থের জন্য তখন আমাদের হাত পাততে হতে পারে। যদি তা-ই হয় তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে, ঋণ নেব আমরা এবং সুদসহ এই ঋণ আমরাই শোধ করব, অথচ সুবিধা ভোগ করবে ভারত। যেমন হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করল বাংলাদেশ, এখন নতুন প্রস্তাবে পেট্রাপোল থেকে বেনাপোল, যশোর, রূপদিয়া, নড়াইল, পদ্মা সেতু হয়ে আগরতলা পর্যন্ত রেললাইন বসাতে চায় ভারত।
বাংলাদেশের সর্বত্র ভূমি ব্যবহার করে অন্তত ১৪টি রুটে ট্রেন চালাতে চায় ভারত। তাতে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের রেলযোগাযোগ সহজ হবে। শুধু সহজই হবে না, পথের দৈর্ঘ্য ও মোটা অঙ্কের অর্থ দুটোই কমবে তাদের। ভারতের এই প্রস্তাবের বিপরীতে শোনা যাচ্ছে, ভুটান সীমান্তে ভারতের হাসিমারা পর্যন্ত রেললাইন চাইবে বাংলাদেশ। ভারতের প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে ‘পরীক্ষামূলক’ একটি ট্রেন চালানোর কথা বলা হয়েছে। ভারতের এই ‘পরীক্ষামূলক’ প্রস্তাবের কথা শুনে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ‘পরীক্ষামূলক ফারাক্কা বাঁধ’ চালুর কথা মনে পড়ে গেল। ভারত সেই যে পরীক্ষামূলক ফারাক্কা বাঁধ চালু করেছিল, তাতে বাংলাদেশ আজও কষ্ট ভোগ করছে, দেশের শতাধিক ছোট-বড় নদী শুকিয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলে রাডার স্থাপন বাস্তবায়ন চুক্তি বাংলাদেশের জন্য যে আরও মারাত্মক হবে—তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এসব রাডার পরিচালনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যদি ভারতের হাতে থাকে, তাহলে তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য যে হুমকির কারণ হবে, তা বোঝার জন্য সামরিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে রাডার স্টেশন স্থাপন করে অন্য একটি দেশ যাবতীয় তথ্য নিয়ে যাবে, তা রাষ্ট্রের জন্য কত যে ক্ষতিকর, এ দেশের যেকোনো নাগরিকই তা বুঝতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণ এবং বাংলাদেশের সর্বত্র ভূমি ব্যবহার করে ভারতের ট্রেন চালানোর সুযোগ করে দিলে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় মারাত্মক কোনো প্রভাব ফেলবে কি না? এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী কিংবা সামরিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সরকার বিশদ বিচার-বিশ্লেষণ করেছে কি না? যদি আলোচনা করে থাকে ভালো, আর যদি না করে, তাহলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ মারাত্মক হুমকির মুখে যে পড়বে—সন্দেহ নেই। তখন এই সরকার হয়তো না-ও থাকতে পারে। কিন্তু এ দেশের জনগণ থাকবে। শুধু বাণিজ্যিক কিংবা নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করলে চলবে না। এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সরকারকে এ দেশ ও মাটি, সর্বোপরি এ দেশের নাগরিকদের স্বার্থ ও নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে।
লেখক: এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলামিস্ট
আমার এ লেখাটি যখন প্রকাশিত হবে, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে দিল্লিতে অবস্থান করছেন। টানা চতুর্থবার সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের মাধ্যমে তাঁর বিদেশ সফর শুরু করেছেন। যদিও সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শেখ হাসিনা চলতি মাসের ৮ তারিখ ভারতে গিয়েছিলেন। তবে বর্তমান সফরটি পূর্বনির্ধারিত এবং একটি আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফর। মনে করা হচ্ছে, সফরকালে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকা লিখেছে, দ্বিপক্ষীয় এ সফরে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের তালিকায় তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি ভাগাভাগি, ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিক হত্যাকাণ্ড বন্ধসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতের অগ্রাধিকারের তালিকার মধ্যে থাকছে পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়ক নির্মাণ, বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় ভারতীয় ট্রেন চলাচলের সুবিধা আদায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারত কর্তৃক রাডার নেটওয়ার্ক স্থাপন বাস্তবায়ন ও ফেনী নদী থেকে আগরতলার জন্য পানি তোলার ‘স্থায়ী ব্যবস্থা’র জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করা ইত্যাদি।
এ কথা সবারই জানা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আপত্তির কারণে তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি প্রায় দেড় দশক ধরে ঝুলে আছে। তাদের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারটির সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি। ফলে তিস্তা চুক্তি আর স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি। অগত্যা বাংলাদেশ বাধ্য হয়ে যখন তিস্তায় পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি ও দুই তীর সংরক্ষণ করে সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার এক মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে চেয়েছে এবং সেই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীন অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করলে, ভারত সঙ্গে সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানায়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের আপত্তির মুখে কিছু করবে, তা কল্পনা করা যায় না। ফলে বাংলাদেশের এই উদ্যোগও আটকে আছে। বাংলাদেশের কর্মকর্তারা মনে করছেন, অনেক দিন ঝুলে থাকা এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের আগ্রহের বিষয়ে মোদি ও হাসিনার বৈঠকের কোনো না কোনো পর্যায়ে আলোচনা হতে পারে।
ভারতের সঙ্গে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সেই হিসাবে ২০২৬ সালেই এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। চুক্তি থাকলেও ভারত কখনো বাংলাদেশকে হিস্যার পানি দেয়নি। গঙ্গার উজানে চুক্তি অনুযায়ী পানি না ছেড়ে ভারত তা নিয়ন্ত্রণ করছে বলেই ভাটিতে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ঐতিহাসিক ওই পানি চুক্তিতে গঙ্গার পানিবণ্টনের সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। সেখানে শুষ্ক ও ভরা মৌসুমে ভারত ও বাংলাদেশ কোন প্রক্রিয়ায় কতটুকু পানি ভাগাভাগি করবে, তার গ্যারান্টি ক্লজ রয়েছে। তবে, এই গ্যারান্টি ক্লজে যা-ই থাকুক না কেন, ভারত পদ্মায় পানিপ্রবাহে বরাবরই বিঘ্ন ঘটিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে পদ্মার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের কথা শোনা যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই চুক্তি বছর বছর নবায়ন না করে স্থায়ী চুক্তি করা যায় কি না? ভারত এদিক দিয়ে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি স্মার্ট। তারা বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে আগরতলার জন্য পানি তোলার বছরভিত্তিক কোনো চুক্তি করতে চাইছে না। তারা একেবারে স্থায়ী চুক্তিই করতে চাইছে। তাহলে আমরা কেন পদ্মার পানিবণ্টনের স্থায়ী চুক্তি করতে পারব না? অবশ্য পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘চুক্তি স্থায়ী করেই বা কী হবে, যেখানে ভারত তাদের মেজাজ-মর্জিমতো পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিনিয়ত চুক্তি ভঙ্গ করছে, সেখানে সরকার কিছুই করতে পারছে না। ভবিষ্যতেও যে কিছু করবে, সে ভরসাও পাচ্ছি না।’
ভারতের সঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো—সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড। ভারত এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা বহুবার শুনিয়েছে। কিন্তু কোনোকালেই তা রক্ষা করেনি। তাদের সীমান্তরক্ষীরা ইচ্ছামতো হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, গত সাত বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা দুই শর বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে। ইদানীং একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, এসব হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ভারতের বিএসএফ সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর উল্টো দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সীমান্তে কেউ যদি দোষ করে, সেই দোষের ডিগ্রি যত গভীরই হোক না কেন তাকে গুলি করে হত্যা করতে হবে—এমন অমানবিক মনোভাব আর কোন দেশের সীমান্তরক্ষীদের আছে?
লক্ষ করা যাচ্ছে, দিন যতই যাচ্ছে, বাংলাদেশের কাছে ভারতের সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার চাহিদাও যেন ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে; বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ নতুন করে সরকার গঠন করার পর ভারতের এই প্রবৃত্তি লক্ষ করা গেছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম নেই। প্রতিবারই ভারত নতুন নতুন ইস্যু উত্থাপন করছে এবং সে মোতাবেক চুক্তি স্বাক্ষরও হয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার এবারের সফরকালেও ভারতের অনুরোধে নতুন আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। ভারতের অগ্রাধিকার তালিকার এমন দু-একটি নতুন গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।
প্রথমেই দেখা যাক, পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়ক নির্মাণের বিষয়টি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার ভারত সফর শেষে প্রকাশিত দুই দেশের যৌথ বিবৃতির ১৯ অনুচ্ছেদে হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণের বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য ভারত প্রস্তাব দিয়েছিল। এ সংবাদটি তখন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে আমি এ বিষয় নিয়ে আজকের পত্রিকায় একটি নিবন্ধও লিখেছিলাম। ভারতের ওই প্রস্তাবে এই মহাসড়ক নির্মাণের অন্যতম উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যকার শিলিগুড়ি করিডর হিসেবে পরিচিত পথের বিকল্প পথ হিসেবে ভারত এ মহাসড়ক ব্যবহার করবে। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধানতম সড়ক হিসেবেই ব্যবহৃত হবে। বাংলাদেশের ম্যাপ লক্ষ করলেই বোঝা যাবে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যাওয়ার হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জের দূরত্বই সবচেয়ে কম। যদি এই মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের রণকৌশলের দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। ভবিষ্যতে যদি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তাতে পশ্চিম ও পূর্ব দিক থেকে হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক বরাবর কাট অফ করে দেওয়া যায়, তাহলে বৃহত্তর রংপুর বিভাগ বাংলাদেশ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
অতএব, এটা অনুমান করা ভুল হবে না যে এই মহাসড়ক নির্মিত হলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন হবে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়বে। যদিও এ মহাসড়ক নির্মাণে ভারতের দেওয়া প্রস্তাবে কী আছে, তা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়; তবু হিলি থেকে মহেন্দ্রগঞ্জের মধ্যকার যেকোনো যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার আগে উপরোল্লিখিত প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানতে হবে। এই সড়ক নির্মাণের পেছনে শুধু বাণিজ্যিক লাভের কথা বিবেচনা করলেই চলবে না; রণকৌশলগত দিক দিয়ে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। তা ছাড়া, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক নিঃসন্দেহে একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প হবে। এই মহাসড়ক নির্মাণ হলে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর প্রায় ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করতে হবে। এই সেতু নির্মাণে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে অর্থের জন্য তখন আমাদের হাত পাততে হতে পারে। যদি তা-ই হয় তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে, ঋণ নেব আমরা এবং সুদসহ এই ঋণ আমরাই শোধ করব, অথচ সুবিধা ভোগ করবে ভারত। যেমন হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করল বাংলাদেশ, এখন নতুন প্রস্তাবে পেট্রাপোল থেকে বেনাপোল, যশোর, রূপদিয়া, নড়াইল, পদ্মা সেতু হয়ে আগরতলা পর্যন্ত রেললাইন বসাতে চায় ভারত।
বাংলাদেশের সর্বত্র ভূমি ব্যবহার করে অন্তত ১৪টি রুটে ট্রেন চালাতে চায় ভারত। তাতে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের রেলযোগাযোগ সহজ হবে। শুধু সহজই হবে না, পথের দৈর্ঘ্য ও মোটা অঙ্কের অর্থ দুটোই কমবে তাদের। ভারতের এই প্রস্তাবের বিপরীতে শোনা যাচ্ছে, ভুটান সীমান্তে ভারতের হাসিমারা পর্যন্ত রেললাইন চাইবে বাংলাদেশ। ভারতের প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে ‘পরীক্ষামূলক’ একটি ট্রেন চালানোর কথা বলা হয়েছে। ভারতের এই ‘পরীক্ষামূলক’ প্রস্তাবের কথা শুনে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ‘পরীক্ষামূলক ফারাক্কা বাঁধ’ চালুর কথা মনে পড়ে গেল। ভারত সেই যে পরীক্ষামূলক ফারাক্কা বাঁধ চালু করেছিল, তাতে বাংলাদেশ আজও কষ্ট ভোগ করছে, দেশের শতাধিক ছোট-বড় নদী শুকিয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলে রাডার স্থাপন বাস্তবায়ন চুক্তি বাংলাদেশের জন্য যে আরও মারাত্মক হবে—তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এসব রাডার পরিচালনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ যদি ভারতের হাতে থাকে, তাহলে তা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য যে হুমকির কারণ হবে, তা বোঝার জন্য সামরিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে রাডার স্টেশন স্থাপন করে অন্য একটি দেশ যাবতীয় তথ্য নিয়ে যাবে, তা রাষ্ট্রের জন্য কত যে ক্ষতিকর, এ দেশের যেকোনো নাগরিকই তা বুঝতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, হিলি-মহেন্দ্রগঞ্জ মহাসড়ক নির্মাণ এবং বাংলাদেশের সর্বত্র ভূমি ব্যবহার করে ভারতের ট্রেন চালানোর সুযোগ করে দিলে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় মারাত্মক কোনো প্রভাব ফেলবে কি না? এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী কিংবা সামরিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সরকার বিশদ বিচার-বিশ্লেষণ করেছে কি না? যদি আলোচনা করে থাকে ভালো, আর যদি না করে, তাহলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ মারাত্মক হুমকির মুখে যে পড়বে—সন্দেহ নেই। তখন এই সরকার হয়তো না-ও থাকতে পারে। কিন্তু এ দেশের জনগণ থাকবে। শুধু বাণিজ্যিক কিংবা নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করলে চলবে না। এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সরকারকে এ দেশ ও মাটি, সর্বোপরি এ দেশের নাগরিকদের স্বার্থ ও নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে।
লেখক: এ কে এম শামসুদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও কলামিস্ট
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে