পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই নির্মাণ করা হয়েছে জামালপুরের ইসলামপুর-ঝগড়ারচর সড়ক। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ধসে পড়ছে সড়কের প্যালাসাইডিংয়ের সিসি ব্লক। এ ছাড়া জলাবদ্ধতায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সরকার সড়ক মেরামতের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখেই মেরামতকাজ করা হয়েছে। তাঁরা ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানান। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সড়কটি মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুরের ইসলামপুর পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু মোড় থেকে ঝগড়ারচর বাজার পর্যন্ত পৌনে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পাকা সড়কটি ২০১৭ সালে পাকাকরণ করা হয়। ২০২০ সালের জুন মাসে ৬ কোটি ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৮ টাকা ব্যয়ে সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু করে ২০২১ সালের মে মাসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাজ বুঝিয়ে দেয় এলইঅ্যান্ডএমডব্লিউ (জেভি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পোড়ারচর সরদারপাগড়া ও চন্দনপুর এলাকায় সড়কের প্যালাসাইডিংয়ের সিসি ব্লক ধসে পড়ছে। ফলে মূল সড়ক ধসে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পোড়ারচর দাখিল মাদ্রাসা সেতুর পশ্চিম পাশে, পোড়ারচর বাজার, টুংরাপাড়া মোড়, মরাকান্দী নছিমুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসা মোড়, পোড়াবাড়ির পূর্বপাশে ফুটওভারব্রিজ ও চন্দনপুর বন্দেআলী ফুটওভারব্রিজের সংযোগ সড়কে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। চন্দনপুর পশ্চিমপাড়া মোড়, কড়ইতলা মোল্লাবাজারসহ অর্ধশত পয়েন্টে ছোটবড় অন্তত ১০০টি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ইট ও পিচ উঠে বড় ধরনের খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ইসলামপুর-ঝগড়ারচর-শেরপুর সদরে চালাচলকারী শত শত গাড়ি ও হাজার হাজার যাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। চলাচল বন্ধ রয়েছে ভারী যানবাহনও।

পোড়ারচর সরদারপাড়া গ্রামের আবুল মিয়া, বিনা পারভীন, হাসমত আলী বলেন, বৃষ্টি হতে না হতেই সড়কে অর্ধশত স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে সড়কের প্যালাসাইডিংয়ের সিসি ব্লক ধসে পড়ছে। এতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পথচারীরা দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছেন।

চন্দনপুর গ্রামের হযরত শেখ, হেলাল উদ্দিন ও দিশা খাতুন বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের ব্যবস্থা না করে সড়ক মেরামত করায় প্যালাসাইডিংয়ের সিসি ব্লক ধসে পড়ছে। কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিন দিন সড়কে গর্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে।

অটোরিকশাচালক বেলাল মিয়া, নুর হোসেন ও তোতা মিয়া বলেন, সরকার সড়ক মেরামতে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখেই সড়কের মেরামতের কাজ করা হয়েছে।

মাহিন্দ্রা গাড়ির চালক ফিরোজ শেখ বলেন, বৃষ্টি হতে না হতেই সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে ইট, খোয়া, পিচ উঠে গিয়ে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ধসে যাচ্ছে প্যালাসাইডিংয়ে সিসি ব্লক। মাঝেমধ্যেই যানবাহন উল্টে ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটছে।

গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারী বলেন, ‘সাধ্যমতো সড়কের মেরামতের কাজ করে আসছি। প্রয়োজন বড় বরাদ্দের।’