শাপলা খন্দকার (বগুড়া) ও রঞ্জন কুমার দে (শেরপুর)
ফাল্গুন শেষে চৈত্র পেরিয়ে বৈশাখ এলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা। আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি হলেও বগুড়ায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। বৃষ্টি না হওয়ায় আম, জাম, লিচুর ফলন, বোরো ধানসহ রবিশস্যের ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। সেই সঙ্গে জামগাছেও মুকুল আসছে না।
বৃষ্টির অভাবে ধানের জমিগুলোতেও দেখা দিয়েছে পানিস্বল্পতা। অতিরিক্ত সেচের কারণে বাড়ছে ধানের উৎপাদন ব্যয়। বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে ধানের জমিতে শিষ সাদা হতে দেখা গেছে।
এদিকে আইন উপেক্ষা করে নির্মাণকাজ পরিচালনা করা, ইটভাটা, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বাড়া, প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হওয়া ইত্যাদি কারণে প্রকৃতির বৈরী আচরণ ভাবিয়ে তুলছে আবহাওয়াবিদদের।
অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, প্রতিবছরের ফাল্গুন ও চৈত্র মাস মিলিয়ে গড়ে সাতবার হয়ে থাকে ভারী এবং ঝোড়ো বৃষ্টি। কিন্তু বগুড়া সদর এলাকায় এ বছরের গত দুই মাসে মাত্র একবার বৃষ্টি হয়েছে। এরপর দীর্ঘ দেড় মাসে বৃষ্টির দেখা আর মেলেনি।
জেলার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বগুড়া জেলা অন্যতম কালবৈশাখী ও বজ্রবৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। প্রতিবছরের এপ্রিল মাসের গড় বৃষ্টিপাত ৮০ দশমিক ৫ মিলিমিটার হয়। এ বছরের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নির্মাণকাজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমেছে। অন্যদিকে বজ্রপাতের আশঙ্কাও বাড়ছে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী মাসের বাকি দিনগুলোর মধ্যে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন বলেন, এ মাসে সারা দেশে তিনটি তাপপ্রবাহ হতে পারে। এর প্রভাবেই দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে।
এদিকে তাপমাত্রা বাড়ায় মৌসুমি বিভিন্ন ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে কৃষকেরা জানান। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে, ডাবের বাদা মরে যাচ্ছে। এমনকি জামগাছে কোনো মুকুল আসছে না বলে তাঁরা জানান।
শেরপুর উপজেলার উচরং গ্রামের সাইফুল ইসলাম সাফি বলেন, ‘বৃষ্টির অভাবে আমার আমবাগানের গুটি ঝরে পড়ছে। কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব।’
একই এলাকার আজগর আলী বলেন, বৃষ্টির অভাবে তাঁর জামগাছে এখনো মুকুল আসেনি।
একই সমস্যা বগুড়া সদর, শেরপুর, গাবতলী ও কাহালুর অঞ্চলগুলোতে দেখা গেছে।
সদর উপজেলার কৃষক আফতাব ফকির ও আলম প্রামাণিক জানান, তাঁদের জমির তিন-চতুর্থাংশ ধানগাছের শিষ সাদা হয়ে গেছে।
কিষানি রুমি খাতুন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়স করেছি। গাছগুলো কুঁকড়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কচি ঢ্যাঁড়সে পোকা আক্রমণ করেছে। এগুলো পানির অভাবেই হয়।’
এ ছাড়া করলা, শসা, বেগুন ও মরিচচাষিরাও জানিয়েছেন তাঁদের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কথা।
বগুড়া কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার বগুড়ার ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে ৬ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এই সময়ে বৃষ্টি না হলে এবং তাপমাত্রা না কমলে ধানের পরাগায়ন ঘটবে না। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
অন্যদিকে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) এনামুল হকের দাবি, পানির অভাবে নয়, ব্লাস্ট রোগের প্রভাবে ব্রি-২৮ ধানের শিষ শুকিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য রোগনিরোধক ওষুধ প্রয়োগের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। ব্রি-২৮ পুরাতন জাতের ধান। তাই এটিতে রোগবালাই হচ্ছে। এখন থেকে কৃষকদের উচিত ব্রি-৮১ ও ৮৮ চাষ করা। তিনি আরও বলেন, সেচের ব্যবস্থা থাকায় অনাবৃষ্টির প্রভাবে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো সমস্যা হবে না; বরং লক্ষ্যমাত্রার বেশিই ফলন হতে পারে। তবে বৃষ্টির অভাবে রবিশস্য এবং আম, লিচুর গুটি ঝরে যাওয়াসহ ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘বিভিন্ন কারণেই বৃষ্টিপাত কম হতে পারে। তবে সেটা নির্ভর করে একটা এলাকার পরিবেশকে আমরা কীভাবে পরিচালনা করব। সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। ফলে আমাদের অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, শব্দদূষণসহ বিভিন্ন ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ জন্য আমাদের সমন্বিত পরিবেশ পরিকল্পনার দিকে মনোযোগী হতে হবে।’
ফাল্গুন শেষে চৈত্র পেরিয়ে বৈশাখ এলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা। আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি হলেও বগুড়ায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। বৃষ্টি না হওয়ায় আম, জাম, লিচুর ফলন, বোরো ধানসহ রবিশস্যের ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। সেই সঙ্গে জামগাছেও মুকুল আসছে না।
বৃষ্টির অভাবে ধানের জমিগুলোতেও দেখা দিয়েছে পানিস্বল্পতা। অতিরিক্ত সেচের কারণে বাড়ছে ধানের উৎপাদন ব্যয়। বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে ধানের জমিতে শিষ সাদা হতে দেখা গেছে।
এদিকে আইন উপেক্ষা করে নির্মাণকাজ পরিচালনা করা, ইটভাটা, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বাড়া, প্রাকৃতিক জলাধার ধ্বংস হওয়া ইত্যাদি কারণে প্রকৃতির বৈরী আচরণ ভাবিয়ে তুলছে আবহাওয়াবিদদের।
অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, প্রতিবছরের ফাল্গুন ও চৈত্র মাস মিলিয়ে গড়ে সাতবার হয়ে থাকে ভারী এবং ঝোড়ো বৃষ্টি। কিন্তু বগুড়া সদর এলাকায় এ বছরের গত দুই মাসে মাত্র একবার বৃষ্টি হয়েছে। এরপর দীর্ঘ দেড় মাসে বৃষ্টির দেখা আর মেলেনি।
জেলার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বগুড়া জেলা অন্যতম কালবৈশাখী ও বজ্রবৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। প্রতিবছরের এপ্রিল মাসের গড় বৃষ্টিপাত ৮০ দশমিক ৫ মিলিমিটার হয়। এ বছরের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত মাত্র ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নির্মাণকাজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা স্বাভাবিকের তুলনায় কমেছে। অন্যদিকে বজ্রপাতের আশঙ্কাও বাড়ছে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী মাসের বাকি দিনগুলোর মধ্যে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন বলেন, এ মাসে সারা দেশে তিনটি তাপপ্রবাহ হতে পারে। এর প্রভাবেই দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে।
এদিকে তাপমাত্রা বাড়ায় মৌসুমি বিভিন্ন ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে কৃষকেরা জানান। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে, ডাবের বাদা মরে যাচ্ছে। এমনকি জামগাছে কোনো মুকুল আসছে না বলে তাঁরা জানান।
শেরপুর উপজেলার উচরং গ্রামের সাইফুল ইসলাম সাফি বলেন, ‘বৃষ্টির অভাবে আমার আমবাগানের গুটি ঝরে পড়ছে। কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ব।’
একই এলাকার আজগর আলী বলেন, বৃষ্টির অভাবে তাঁর জামগাছে এখনো মুকুল আসেনি।
একই সমস্যা বগুড়া সদর, শেরপুর, গাবতলী ও কাহালুর অঞ্চলগুলোতে দেখা গেছে।
সদর উপজেলার কৃষক আফতাব ফকির ও আলম প্রামাণিক জানান, তাঁদের জমির তিন-চতুর্থাংশ ধানগাছের শিষ সাদা হয়ে গেছে।
কিষানি রুমি খাতুন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়স করেছি। গাছগুলো কুঁকড়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কচি ঢ্যাঁড়সে পোকা আক্রমণ করেছে। এগুলো পানির অভাবেই হয়।’
এ ছাড়া করলা, শসা, বেগুন ও মরিচচাষিরাও জানিয়েছেন তাঁদের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার কথা।
বগুড়া কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার বগুড়ার ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭১৫ হেক্টর জমিতে ৬ লাখ ৮৪ হাজার মেট্রিক টন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এই সময়ে বৃষ্টি না হলে এবং তাপমাত্রা না কমলে ধানের পরাগায়ন ঘটবে না। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
অন্যদিকে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) এনামুল হকের দাবি, পানির অভাবে নয়, ব্লাস্ট রোগের প্রভাবে ব্রি-২৮ ধানের শিষ শুকিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য রোগনিরোধক ওষুধ প্রয়োগের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। ব্রি-২৮ পুরাতন জাতের ধান। তাই এটিতে রোগবালাই হচ্ছে। এখন থেকে কৃষকদের উচিত ব্রি-৮১ ও ৮৮ চাষ করা। তিনি আরও বলেন, সেচের ব্যবস্থা থাকায় অনাবৃষ্টির প্রভাবে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো সমস্যা হবে না; বরং লক্ষ্যমাত্রার বেশিই ফলন হতে পারে। তবে বৃষ্টির অভাবে রবিশস্য এবং আম, লিচুর গুটি ঝরে যাওয়াসহ ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘বিভিন্ন কারণেই বৃষ্টিপাত কম হতে পারে। তবে সেটা নির্ভর করে একটা এলাকার পরিবেশকে আমরা কীভাবে পরিচালনা করব। সে ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। ফলে আমাদের অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, শব্দদূষণসহ বিভিন্ন ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ জন্য আমাদের সমন্বিত পরিবেশ পরিকল্পনার দিকে মনোযোগী হতে হবে।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে