ফারুক মেহেদী, ঢাকা
মধ্যবয়সী হাবিব সাহেব একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক। গতকাল বৃহস্পতিবার একটু আগেই বাসায় ফিরেছেন। মতিঝিলের অফিস থেকে দীর্ঘ সময় যানজটে কাটিয়ে শরীরে একরাশ ক্লান্তি। মিরপুরে বাসায় ফিরে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে টিভিটা চালু করতেই ভেসে উঠল, ব্রেকিং নিউজ: ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট। একের পর এক তথ্য আসছে। লক্ষকোটির অঙ্ক। কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না। বলা হচ্ছে বিরাট বাজেট। হিসাববিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে জাতীয় বাজেট নিয়ে তাঁর আগ্রহ আছে। আরেকটু বাড়তি আগ্রহ রোববার অফিসের আলোচনায় বিশেষজ্ঞ মত দেওয়ার জন্য।
এরই মধ্যে ভেসে আসছে, ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা। ঘাটতি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। পুরো বাজেটের টাকার সংস্থান না থাকায় ঋণ করে খরচ মেটানো হবে। আবার দুর্মূল্যের বাজারে বেশি খরচ হলেও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে রাখার ইচ্ছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। এ রকম আরও কিছু খটমটে শব্দ হাবিবের মাথার এক পাশে যেন হাতুড়িপেটা করছে! হিসাববিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি থাকার পরও নিত্য টানাটানি সংসারে হিসাব মেলাতে পারলেন না। সংসারের চাল, ডাল, তেল, চিনির হিসাব করতে করতেই চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন!
এরই মধ্যে হন্তদন্ত হয়ে স্ত্রী সোমা হাতে এক কাপ গরম চা আর বাজেটে দাম বাড়ার আগেই বেশ কিছু কেনাকাটার ফর্দ ধরিয়ে দিয়ে গেলেন।
টিভি দেখতে দেখতে, চায়ে চুমুক দিয়ে ঝরঝরে হওয়ার বদলে হাবিব ঘামতে থাকেন। মাথার মধ্যে কাজ করছে নিজের বাজেট বাস্তবায়নের হতাশা। মাসে বেতন ৫৫ হাজার টাকা। সংসারে খরচ ৭০ হাজারের ওপরে। প্রতি মাসে আত্মীয়-বন্ধুদের কাছে আর কত হাত পাতবেন। হাবিবের চিন্তা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট না তাঁর ওপর ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে যায়। এখন সোমার তালিকা নিয়ে বাজারে গেলেই দেখা যাবে, বাজেটের দোহাই দিয়ে গড়পড়তা সব জিনিসের দাম আরেক দফা বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। অনেক পণ্যে শুল্ক-কর ছাড় দিলেও দোকানদারেরা এসবের ধার ধারেন না।
টিভির স্ক্রিনে চোখ রেখে ত্যক্তবিরক্ত হাবিব বাজারে যাবেন না-যাবেন না—এই নিয়ে আকাশ-পাতাল ভাবছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, বাজেটের পর বাজারে যাওয়া মানেই কোনো কারণ ছাড়া অনেকগুলো বাড়তি টাকা পকেট থেকে চলে যাওয়া। মাসটা তো পার করতে হবে। হতে পারে, মোটা অঙ্কের বাজেটে সরকার তুষ্ট, বিরোধী দল রুষ্ট। কিন্তু মাঝে পড়ে তাঁর মতো মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পিষ্ট।
করোনার প্রভাবে হাবিবের চাকরিটা চলে যেতে যেতেও টিকে আছে। বেতন বাড়ার কোনো প্রশ্ন নেই। প্রশ্ন তোলার সাহস নেই। অথচ খরচ যাচ্ছে বেড়ে। বাড়িভাড়া, সংসার খরচ, বাচ্চার স্কুলের বেতন, প্রাইভেট শিক্ষকের খরচ, গ্রামে মা-বাবাকে টাকা পাঠানোসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। তাঁর ধারণা, এর মধ্যে কোনোভাবে টিকে আছে তাঁর মতো মানুষেরা।
অর্থমন্ত্রীর বাজেটের আশাজাগানিয়া সব ঘোষণার খবর একে একে হাবিবের চোখ ছুঁয়ে যাচ্ছে। কিন্তু স্বস্তি নেই। এরই মধ্যে টিভি স্ক্রলে জানিয়ে দেওয়া হলো ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৫-৭ টাকা বাড়ছে। কোথায় যাবেন। গত কয়েক মাসে ভোজ্যতেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ভরা মৌসুমেও চালের দামে রকেট গতি। বাড়ছে রান্নার গ্যাসের দাম।
হাবিব ভাবছেন, মধ্যবিত্তের এই কষ্টের জীবনে বড় বাজেট কী যোগ করবে। করোনার পর ব্যবসায় লোকসানের ক্ষত, চাকরি নেই, কাজ নেই, উদ্যোগ-বিনিয়োগে স্থবিরতা, বিপুল রাজস্ব ঘাটতির মতো বিশেষ পরিস্থিতিতেও বেশি খরচের উচ্চাশা অর্থমন্ত্রীর। সরকার নতুন উন্নয়ন বাজেটে যে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা খরচ করবে বলছে, তাতে হয়তো মানুষের কাজের সুযোগ হবে, আয় বাড়বে। তবে এ কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়বে এর চেয়েও বেশি হারে। অথচ অর্থমন্ত্রী কীভাবে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে ঠেকিয়ে রাখবেন–এটা তাঁর ছোট মাথায় ঢুকছে না। কারণ তিনি এত দিন জেনে এসেছেন, বাজারে টাকা বেশি এলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে—এটা চিরায়ত রীতি। ফলে সরকার কাগজে-কলমে ঠেকিয়ে রাখলেও বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়তো পারবে না।
হাবিবের ভয়, সরকার বাজেটের প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ ঘাটতি পূরণে মরিয়া হবে। রাজস্ব আয় ঠিকমতো না হলে এ ঘাটতি আরও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। টিভি স্ক্রলে তিনি দেখছেন, সরকার ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা বিদেশ থেকে আর ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা দেশের ভেতর থেকে ঋণ নেবে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকেই নেবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এ বড় বড় অঙ্ক দেখে সব তালগোল পাকিয়ে যায় তাঁর। তিনি এতটুকু জানেন, সরকার যদি এভাবে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খরচ করে, তাহলে বেসরকারি খাত বিনিয়োগের জন্য ঠিকমতো ঋণ পাবে কি না সন্দেহ রয়েছে। আর তাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হলে, মানুষের কাজের সুযোগ কমবে। এর ফলে কোম্পানি, ব্যক্তি বা সরকারের আয়ও কমে যেতে পারে।
নিঃসঙ্গ হাবিব টিভির পর্দায় অর্থমন্ত্রীর রঙিন স্কেচে আঁকা বাজেট বক্তৃতায় আশাজাগানিয়া বাংলাদেশের ছবি তুলে ধরা দেখছেন। শুনতে ভালোই লাগছে। কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন–অর্থমন্ত্রীর বাজেটের এ স্লোগানের মর্মবাণীর পুরো পাঠোদ্ধার করতে পারেন না। তবে সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রতিশ্রুতি সত্য হলে অনেক বেকারের চাকরি হবে, অনেকে হয়তো দারিদ্র্যসীমার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসবে। দুই বছরের বেশি কষ্ট করার ইতিবাচক ছবিটা তাঁর চোখে কেন জানি ভাসছে না।
বাজেট বক্তৃতা চলছে, হাবিব উসখুস করছেন। কখনো চেয়ারে বসছেন, কখনো চেয়ার ছেড়ে বিছানায়। ভাবছেন, তাঁর মতো মধ্যবিত্তের বাস্তবজীবনে বাজেটের সরাসরি প্রভাব নেতিবাচক। তারপরও রীতি মেনে বাজেট করে সরকার। বাস্তবায়ন না হলেও বরাদ্দ আর অঙ্কের বড় বড় হিসাব ঠিকই মিলিয়ে দেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রণালয় এবারও ঠিক করেছে নতুন অর্থবছরে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা খরচ করে দেশ চালানোর ব্যয় মেটাবে, করোনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠে মানুষের চাকরি দেবে, দারিদ্র্য কমাবে, অসহায় মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে খাবার তুলে দেবে, নতুন নতুন রাস্তাঘাট, সেতু, অবকাঠামো বানাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরাবে, সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে, শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ শেষ এটি উদ্বোধনের অপেক্ষা, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেলের কাজ শেষ করে মানুষকে উন্নত জীবনের স্বাদ দেবে। এ সময় তাঁর বাসার কাছ দিয়ে যাওয়া নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কথা মনে পড়ে। আহা…কী যে ভালো লাগছে। তাঁর এত দিনের চলাচলের ভোগান্তির একটা হিল্লে হবে। আশায় আছেন, বাকি কটা দিন একটু আরামে অফিসে যেতে পারবেন। ভাবতেই ভালো লাগার আবেশ তৈরি মনে।
কিন্তু তার স্থায়িত্বই বা কতক্ষণ। কারণ এবারের বাজেটে যে ২ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে। তাতে না জানি কত অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কত টাকা অপচয় হবে। এসব ভাবতেই ভেতরে একটা কেউকেটা ভাব আসে। পরক্ষণেই মনে হয়, ‘আদার ব্যাপারী’র এসবের খোঁজ না রাখলেও চলবে।
হাবিবের ভালো লাগছে, বাজেটে এবার ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে বিপুল কর ছাড় দেওয়া হয়েছে, বহু পণ্যের শুল্ক-কর-ভ্যাট কমানো হয়েছে, কখনো প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমদানিনির্ভরতা কমাতে এবং দেশীয় শিল্পের প্রসারে বিলাসবহুল পণ্য বিশেষ করে গাড়ি, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশন, বিদেশি পাখি, বিদেশি ল্যাপটপ, বিদেশি ফলমূল, ফুল আমদানিতে শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে। মতিঝিল ব্যাংকপাড়ায় অফিস হওয়ায় গেল কিছুদিন ধরে তিনি ডলার সংকট লক্ষ্য করেছে। তাঁরও মনে হয়েছে, দেশে উৎপাদিত পণ্য বাঁচাতে আমদানি নিরুৎসাহিত করা দরকার। তাহলে তাঁর মতো মানুষের চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তবে দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনসেটে ভ্যাট বাড়ানোয় কিছুটা হতাশ তিনি। ভেবেছিলেন, সামনে বোনাস-টোনাস পেলে একো দেশি ভালো স্মার্টফোন কিনবেন। কারণ, দুদিন পর বাচ্চার পড়াশোনার কাজেই হয়তো লাগবে। হতাশার আরও একটা কারণ এবারও ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা না বাড়ানো। ধনীদের না ধরে কেন ছাপোষাদের দিকে সরকারের এত কড়া নজর, তা তিনি বুঝতে পারেন না।
টিভিতে দেখাচ্ছে, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছায় অর্থমন্ত্রী দেশি শিল্পের জন্য বেশ শুল্ক-কর সুবিধা দিয়েছেন। ব্যবসা সম্প্রসারণে বিভিন্ন স্তরের করপোরেট কর কমানোর কথা বলেছেন। এতে তাঁর মতো সাধারণ ভোক্তা বা গ্রাহকের কী লাভ হবে, তা জানা নেই। কারণ অভিজ্ঞতা বলে, শুল্ক-করের সুবিধা শেষমেশ ব্যবসায়ীদের পকেটেই যায়। তাঁরা জিনিসপত্রের দাম খুব কমান এমন নজির নেই। ফলে শুল্ক-কর সুবিধা দেওয়ার সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়।
বাজেটে বিদেশে পাচার করা কালোটাকা ফিরিয়ে আনলে বিশেষ কর সুবিধা দেওয়ার খবর দেখে অবাক হাবিব। যদিও কিছুদিন ধরে পত্র-পত্রিকা, টিভিতে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এরা কম কর দিয়ে টাকা বৈধ করবেন, তাঁদের সরকারের কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। তিনি বুঝতে পারছেন না, দেশের টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে নামমাত্র কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বৈধ করার সুযোগ মিলবে–এটা কেমন বিচার? মন খারাপ হয়। পরক্ষণেই মনে হয়, এত জটিল বিষয় তাঁর না ভাবলেও চলবে। কারণ কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দীর্ঘ দিন বহাল থাকলেও তাতে বিরাট কোনো লাভ হয়েছে, এমন কেউ বলতে পারবে না।
অনেকক্ষণ ধরে বাজেট নিয়ে আকাশ-পাতাল ভাবতে ভাবতে হাবিবের চা জুড়িয়ে পানি। সঙ্গে স্ত্রীর গরমাগরম বাণী, ‘চা ঠান্ডা হলো, আবারও বাজারেও যাচ্ছ না, কী হয়েছেটা কী?’ হতাশ হাবিব থেকে টিভি স্ক্রলে চোখ পড়ে সোমার। অর্থমন্ত্রীর বরাতে বলা হচ্ছে–নতুন অর্থবছরে স্পট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে নতুন করদাতা ধরা হবে। বুঝতে পারেন না, এ কোন নতুন আপদ। হাবিব বোঝালেও আতঙ্কিত সোমার ভাবনা, রাস্তাঘাটে তাঁর মতো গৃহিণীর এ নিয়ে বিপদে পড়তে হবে। সোমার মনে হয়, দেশে প্রায় লাখের ওপরে কোটিপতি রয়েছেন। তাঁদের না ধরে এ কোন ব্যবস্থা।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন অর্থবছরে করের পরিধি বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ থাকবে কর বিভাগের। তাতে অবশ্য খুব একটা আশাবাদী হতে পারেননি হাবিব। কারণ প্রতিবছরই এ ঘোষণা থাকে, বাস্তবায়ন হয় না। বর্তমানে ৭৫ লাখের বেশি টিআইএনধারী করদাতা থাকলেও কর দেন মাত্র ২৯ লাখ করদাতা। যদিও আসছে বাজেটে রিটার্নের সঙ্গে আগের বছরের কর দেওয়ার প্রত্যয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাতে পরিস্থিতির খুব একটা হেরফের হবে—এমনটা মনে হচ্ছে না তাঁর।
টিভি চলছে, ইতিমধ্যে বাজেট বিশ্লেষণে চলে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা। নানাজনের নানা মত। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত বাড়ছে। বাজারে আর যাওয়া হয় না। এশার আজান হয়ে গেছে। ক্লান্ত হাবিব ফ্রেশ হয়ে নামাজের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। কিন্তু বুঝতে পারছেন না, জীবনের হিসাব মেলানোর ফরিয়াদ তিনি কাকে শোনাবেন।
মধ্যবয়সী হাবিব সাহেব একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক। গতকাল বৃহস্পতিবার একটু আগেই বাসায় ফিরেছেন। মতিঝিলের অফিস থেকে দীর্ঘ সময় যানজটে কাটিয়ে শরীরে একরাশ ক্লান্তি। মিরপুরে বাসায় ফিরে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে টিভিটা চালু করতেই ভেসে উঠল, ব্রেকিং নিউজ: ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট। একের পর এক তথ্য আসছে। লক্ষকোটির অঙ্ক। কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না। বলা হচ্ছে বিরাট বাজেট। হিসাববিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে জাতীয় বাজেট নিয়ে তাঁর আগ্রহ আছে। আরেকটু বাড়তি আগ্রহ রোববার অফিসের আলোচনায় বিশেষজ্ঞ মত দেওয়ার জন্য।
এরই মধ্যে ভেসে আসছে, ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা। ঘাটতি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। পুরো বাজেটের টাকার সংস্থান না থাকায় ঋণ করে খরচ মেটানো হবে। আবার দুর্মূল্যের বাজারে বেশি খরচ হলেও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে রাখার ইচ্ছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। এ রকম আরও কিছু খটমটে শব্দ হাবিবের মাথার এক পাশে যেন হাতুড়িপেটা করছে! হিসাববিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি থাকার পরও নিত্য টানাটানি সংসারে হিসাব মেলাতে পারলেন না। সংসারের চাল, ডাল, তেল, চিনির হিসাব করতে করতেই চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন!
এরই মধ্যে হন্তদন্ত হয়ে স্ত্রী সোমা হাতে এক কাপ গরম চা আর বাজেটে দাম বাড়ার আগেই বেশ কিছু কেনাকাটার ফর্দ ধরিয়ে দিয়ে গেলেন।
টিভি দেখতে দেখতে, চায়ে চুমুক দিয়ে ঝরঝরে হওয়ার বদলে হাবিব ঘামতে থাকেন। মাথার মধ্যে কাজ করছে নিজের বাজেট বাস্তবায়নের হতাশা। মাসে বেতন ৫৫ হাজার টাকা। সংসারে খরচ ৭০ হাজারের ওপরে। প্রতি মাসে আত্মীয়-বন্ধুদের কাছে আর কত হাত পাতবেন। হাবিবের চিন্তা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বাজেট না তাঁর ওপর ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে যায়। এখন সোমার তালিকা নিয়ে বাজারে গেলেই দেখা যাবে, বাজেটের দোহাই দিয়ে গড়পড়তা সব জিনিসের দাম আরেক দফা বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। অনেক পণ্যে শুল্ক-কর ছাড় দিলেও দোকানদারেরা এসবের ধার ধারেন না।
টিভির স্ক্রিনে চোখ রেখে ত্যক্তবিরক্ত হাবিব বাজারে যাবেন না-যাবেন না—এই নিয়ে আকাশ-পাতাল ভাবছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, বাজেটের পর বাজারে যাওয়া মানেই কোনো কারণ ছাড়া অনেকগুলো বাড়তি টাকা পকেট থেকে চলে যাওয়া। মাসটা তো পার করতে হবে। হতে পারে, মোটা অঙ্কের বাজেটে সরকার তুষ্ট, বিরোধী দল রুষ্ট। কিন্তু মাঝে পড়ে তাঁর মতো মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পিষ্ট।
করোনার প্রভাবে হাবিবের চাকরিটা চলে যেতে যেতেও টিকে আছে। বেতন বাড়ার কোনো প্রশ্ন নেই। প্রশ্ন তোলার সাহস নেই। অথচ খরচ যাচ্ছে বেড়ে। বাড়িভাড়া, সংসার খরচ, বাচ্চার স্কুলের বেতন, প্রাইভেট শিক্ষকের খরচ, গ্রামে মা-বাবাকে টাকা পাঠানোসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। তাঁর ধারণা, এর মধ্যে কোনোভাবে টিকে আছে তাঁর মতো মানুষেরা।
অর্থমন্ত্রীর বাজেটের আশাজাগানিয়া সব ঘোষণার খবর একে একে হাবিবের চোখ ছুঁয়ে যাচ্ছে। কিন্তু স্বস্তি নেই। এরই মধ্যে টিভি স্ক্রলে জানিয়ে দেওয়া হলো ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৫-৭ টাকা বাড়ছে। কোথায় যাবেন। গত কয়েক মাসে ভোজ্যতেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ভরা মৌসুমেও চালের দামে রকেট গতি। বাড়ছে রান্নার গ্যাসের দাম।
হাবিব ভাবছেন, মধ্যবিত্তের এই কষ্টের জীবনে বড় বাজেট কী যোগ করবে। করোনার পর ব্যবসায় লোকসানের ক্ষত, চাকরি নেই, কাজ নেই, উদ্যোগ-বিনিয়োগে স্থবিরতা, বিপুল রাজস্ব ঘাটতির মতো বিশেষ পরিস্থিতিতেও বেশি খরচের উচ্চাশা অর্থমন্ত্রীর। সরকার নতুন উন্নয়ন বাজেটে যে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা খরচ করবে বলছে, তাতে হয়তো মানুষের কাজের সুযোগ হবে, আয় বাড়বে। তবে এ কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়বে এর চেয়েও বেশি হারে। অথচ অর্থমন্ত্রী কীভাবে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে ঠেকিয়ে রাখবেন–এটা তাঁর ছোট মাথায় ঢুকছে না। কারণ তিনি এত দিন জেনে এসেছেন, বাজারে টাকা বেশি এলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে—এটা চিরায়ত রীতি। ফলে সরকার কাগজে-কলমে ঠেকিয়ে রাখলেও বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়তো পারবে না।
হাবিবের ভয়, সরকার বাজেটের প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ ঘাটতি পূরণে মরিয়া হবে। রাজস্ব আয় ঠিকমতো না হলে এ ঘাটতি আরও বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। টিভি স্ক্রলে তিনি দেখছেন, সরকার ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা বিদেশ থেকে আর ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা দেশের ভেতর থেকে ঋণ নেবে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকেই নেবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এ বড় বড় অঙ্ক দেখে সব তালগোল পাকিয়ে যায় তাঁর। তিনি এতটুকু জানেন, সরকার যদি এভাবে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খরচ করে, তাহলে বেসরকারি খাত বিনিয়োগের জন্য ঠিকমতো ঋণ পাবে কি না সন্দেহ রয়েছে। আর তাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হলে, মানুষের কাজের সুযোগ কমবে। এর ফলে কোম্পানি, ব্যক্তি বা সরকারের আয়ও কমে যেতে পারে।
নিঃসঙ্গ হাবিব টিভির পর্দায় অর্থমন্ত্রীর রঙিন স্কেচে আঁকা বাজেট বক্তৃতায় আশাজাগানিয়া বাংলাদেশের ছবি তুলে ধরা দেখছেন। শুনতে ভালোই লাগছে। কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন–অর্থমন্ত্রীর বাজেটের এ স্লোগানের মর্মবাণীর পুরো পাঠোদ্ধার করতে পারেন না। তবে সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রতিশ্রুতি সত্য হলে অনেক বেকারের চাকরি হবে, অনেকে হয়তো দারিদ্র্যসীমার বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসবে। দুই বছরের বেশি কষ্ট করার ইতিবাচক ছবিটা তাঁর চোখে কেন জানি ভাসছে না।
বাজেট বক্তৃতা চলছে, হাবিব উসখুস করছেন। কখনো চেয়ারে বসছেন, কখনো চেয়ার ছেড়ে বিছানায়। ভাবছেন, তাঁর মতো মধ্যবিত্তের বাস্তবজীবনে বাজেটের সরাসরি প্রভাব নেতিবাচক। তারপরও রীতি মেনে বাজেট করে সরকার। বাস্তবায়ন না হলেও বরাদ্দ আর অঙ্কের বড় বড় হিসাব ঠিকই মিলিয়ে দেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর মন্ত্রণালয় এবারও ঠিক করেছে নতুন অর্থবছরে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা খরচ করে দেশ চালানোর ব্যয় মেটাবে, করোনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠে মানুষের চাকরি দেবে, দারিদ্র্য কমাবে, অসহায় মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে খাবার তুলে দেবে, নতুন নতুন রাস্তাঘাট, সেতু, অবকাঠামো বানাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরাবে, সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে, শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ শেষ এটি উদ্বোধনের অপেক্ষা, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেলের কাজ শেষ করে মানুষকে উন্নত জীবনের স্বাদ দেবে। এ সময় তাঁর বাসার কাছ দিয়ে যাওয়া নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কথা মনে পড়ে। আহা…কী যে ভালো লাগছে। তাঁর এত দিনের চলাচলের ভোগান্তির একটা হিল্লে হবে। আশায় আছেন, বাকি কটা দিন একটু আরামে অফিসে যেতে পারবেন। ভাবতেই ভালো লাগার আবেশ তৈরি মনে।
কিন্তু তার স্থায়িত্বই বা কতক্ষণ। কারণ এবারের বাজেটে যে ২ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে। তাতে না জানি কত অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কত টাকা অপচয় হবে। এসব ভাবতেই ভেতরে একটা কেউকেটা ভাব আসে। পরক্ষণেই মনে হয়, ‘আদার ব্যাপারী’র এসবের খোঁজ না রাখলেও চলবে।
হাবিবের ভালো লাগছে, বাজেটে এবার ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখতে বিপুল কর ছাড় দেওয়া হয়েছে, বহু পণ্যের শুল্ক-কর-ভ্যাট কমানো হয়েছে, কখনো প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমদানিনির্ভরতা কমাতে এবং দেশীয় শিল্পের প্রসারে বিলাসবহুল পণ্য বিশেষ করে গাড়ি, ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশন, বিদেশি পাখি, বিদেশি ল্যাপটপ, বিদেশি ফলমূল, ফুল আমদানিতে শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে। মতিঝিল ব্যাংকপাড়ায় অফিস হওয়ায় গেল কিছুদিন ধরে তিনি ডলার সংকট লক্ষ্য করেছে। তাঁরও মনে হয়েছে, দেশে উৎপাদিত পণ্য বাঁচাতে আমদানি নিরুৎসাহিত করা দরকার। তাহলে তাঁর মতো মানুষের চাকরির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তবে দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনসেটে ভ্যাট বাড়ানোয় কিছুটা হতাশ তিনি। ভেবেছিলেন, সামনে বোনাস-টোনাস পেলে একো দেশি ভালো স্মার্টফোন কিনবেন। কারণ, দুদিন পর বাচ্চার পড়াশোনার কাজেই হয়তো লাগবে। হতাশার আরও একটা কারণ এবারও ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা না বাড়ানো। ধনীদের না ধরে কেন ছাপোষাদের দিকে সরকারের এত কড়া নজর, তা তিনি বুঝতে পারেন না।
টিভিতে দেখাচ্ছে, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছায় অর্থমন্ত্রী দেশি শিল্পের জন্য বেশ শুল্ক-কর সুবিধা দিয়েছেন। ব্যবসা সম্প্রসারণে বিভিন্ন স্তরের করপোরেট কর কমানোর কথা বলেছেন। এতে তাঁর মতো সাধারণ ভোক্তা বা গ্রাহকের কী লাভ হবে, তা জানা নেই। কারণ অভিজ্ঞতা বলে, শুল্ক-করের সুবিধা শেষমেশ ব্যবসায়ীদের পকেটেই যায়। তাঁরা জিনিসপত্রের দাম খুব কমান এমন নজির নেই। ফলে শুল্ক-কর সুবিধা দেওয়ার সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়।
বাজেটে বিদেশে পাচার করা কালোটাকা ফিরিয়ে আনলে বিশেষ কর সুবিধা দেওয়ার খবর দেখে অবাক হাবিব। যদিও কিছুদিন ধরে পত্র-পত্রিকা, টিভিতে এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। এরা কম কর দিয়ে টাকা বৈধ করবেন, তাঁদের সরকারের কোনো সংস্থা প্রশ্ন করবে না বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। তিনি বুঝতে পারছেন না, দেশের টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে নামমাত্র কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে বৈধ করার সুযোগ মিলবে–এটা কেমন বিচার? মন খারাপ হয়। পরক্ষণেই মনে হয়, এত জটিল বিষয় তাঁর না ভাবলেও চলবে। কারণ কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দীর্ঘ দিন বহাল থাকলেও তাতে বিরাট কোনো লাভ হয়েছে, এমন কেউ বলতে পারবে না।
অনেকক্ষণ ধরে বাজেট নিয়ে আকাশ-পাতাল ভাবতে ভাবতে হাবিবের চা জুড়িয়ে পানি। সঙ্গে স্ত্রীর গরমাগরম বাণী, ‘চা ঠান্ডা হলো, আবারও বাজারেও যাচ্ছ না, কী হয়েছেটা কী?’ হতাশ হাবিব থেকে টিভি স্ক্রলে চোখ পড়ে সোমার। অর্থমন্ত্রীর বরাতে বলা হচ্ছে–নতুন অর্থবছরে স্পট অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে নতুন করদাতা ধরা হবে। বুঝতে পারেন না, এ কোন নতুন আপদ। হাবিব বোঝালেও আতঙ্কিত সোমার ভাবনা, রাস্তাঘাটে তাঁর মতো গৃহিণীর এ নিয়ে বিপদে পড়তে হবে। সোমার মনে হয়, দেশে প্রায় লাখের ওপরে কোটিপতি রয়েছেন। তাঁদের না ধরে এ কোন ব্যবস্থা।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন অর্থবছরে করের পরিধি বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ থাকবে কর বিভাগের। তাতে অবশ্য খুব একটা আশাবাদী হতে পারেননি হাবিব। কারণ প্রতিবছরই এ ঘোষণা থাকে, বাস্তবায়ন হয় না। বর্তমানে ৭৫ লাখের বেশি টিআইএনধারী করদাতা থাকলেও কর দেন মাত্র ২৯ লাখ করদাতা। যদিও আসছে বাজেটে রিটার্নের সঙ্গে আগের বছরের কর দেওয়ার প্রত্যয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাতে পরিস্থিতির খুব একটা হেরফের হবে—এমনটা মনে হচ্ছে না তাঁর।
টিভি চলছে, ইতিমধ্যে বাজেট বিশ্লেষণে চলে এসেছেন বিশেষজ্ঞরা। নানাজনের নানা মত। চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত বাড়ছে। বাজারে আর যাওয়া হয় না। এশার আজান হয়ে গেছে। ক্লান্ত হাবিব ফ্রেশ হয়ে নামাজের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। কিন্তু বুঝতে পারছেন না, জীবনের হিসাব মেলানোর ফরিয়াদ তিনি কাকে শোনাবেন।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে