বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫: ৫৮
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৭

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে বহু কৃষকের শীতকালীন শস্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত সোমবার থেকে টানা ২-৩ দিনের অকাল বৃষ্টিপাতে দক্ষিণাঞ্চলের বীজতলা, আমন ধান ও সবজিখেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

লালমোহন (ভোলা): কয়েক দিনের অকাল বৃষ্টিতে লালমোহনের প্রায় ১ হাজার ২০০ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কয়েক দিনে প্রবল বাতাস ও টানা বর্ষণে হেলে পড়ে আমনের খেত, তলিয়ে যায় বোরোর বীজতলা, রবিশস্য এবং শীতকালীন সবজি। এসব ফসল পুরোপুরি বিনষ্টের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২২৭ হেক্টর জমির বিভিন্ন রকমের ফসল নষ্ট হয়েছে।

কৃষকেরা যে মুহূর্তে ফসল চাষ করেছেন, ঠিক তখনই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাঁদের ফসল। এর মধ্যে অনেকেই এবার এনজিও থেকে ঋণ এবং ধারদেনা করে ফসলের আবাদ করেছেন। ফসলের ক্ষতি হলে তাঁরা কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবেন, সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এবার আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের মুখ অনেকটাই মলিন।

লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের কৃষক সুজন সরকার বলেন, ‘আমি ৬৪ শতাংশ জমিতে সরিষা করেছিলাম। অসময়ে বৃষ্টির কারণে সব সরিষার বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। এই বীজ বপন করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঋণ নিয়ে কৃষিকাজ করছি। কীভাবে ঋণ শোধ করব বুঝতে পারছি না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এফ এম শাহাবুদ্দিন জানান, যেসব কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে তাদের নামের তালিকা করে বিনা মূল্যে সার ও বীজ দেওয়া হচ্ছে।

নড়িয়া (শরীয়তপুর): নড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে ৩ হাজার ৬৩৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।

নড়িয়া উপজেলার নয়ন মাদবর কান্দি গ্রামের কৃষক দিন ইসলাম জানান, এই বছর তিনি ২ একর জমিতে রসুন ও পেঁয়াজ আবাদ করছেন। তার এই ২ একর জমিতে ফসল আবাদ করতে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

কৃষক আয়ুব খানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এই বছর তিনি কয়েক রকম ফসল মিলিয়ে প্রায় ৫ একর জমিতে ফসল আবাদ করেছেন এতে করে তার প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে জমিতে ফসল লাগিয়েছি।’

নড়িয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রোকন উজ্জামান বলেন, ‘বৃষ্টির শুরু থেকেই আমরা কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফসল রক্ষার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি। নড়িয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ফলে কৃষকের প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির একটি তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।’

বোরহানউদ্দিনে (ভোলা): বৃষ্টির পানিতে বোরহানউদ্দিনেও তলিয়ে যায় আমন ধানের খেতগুলো। এ ছাড়া শীতকালীন সবজির খেতেও বৃষ্টির পানি জমেছিল। সাচড়া ইউনিয়নের বাথান বাড়ি গ্রামের কৃষক শাফিজল হক বলেন, ‘আমি ৫ একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছি ৷ বৃষ্টির কারণে অনেক ধান গাছ থেকে পড়ে গেছে ৷ ’

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারক বলেন, ঘরে তোলার আগে ঝড় বৃষ্টিতে কিছু কিছু জায়গায় আমন ধান ও শীতকালীন শস্যের ক্ষতি হয়েছে। তবে এর পরিমাণ কতটুকু তা এখনো জানা যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। তাঁদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনে আ.লীগের অংশগ্রহণ প্রশ্নে ভারতীয় সংবাদপত্রকে যা বললেন ড. ইউনূস

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে বাধা দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো: উপদেষ্টা আসিফ

‘এই দিন দিন না, আরও দিন আছে’, আদালতে বললেন কামরুল

ট্রেনে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করল তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা

প্রথমবার ব্যর্থ, পরদিন ভোরে হাসপাতালের ১৬ তলা থেকে লাফিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত