মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন ২৮ নভেম্বর। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ১৫ বিদ্রোহী প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। ফলে নেতা–কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ায় দলীয় প্রার্থীরা জয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ইতিমধ্যে বিদ্রোহী ওই ১৫ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।

তৃতীয় ধাপের এ নির্বাচনে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান পদে আটজনকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও ১৫ জন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগপন্থী ১৪ জন ও বিএনপিপন্থী রয়েছেন আরও ৭ জন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৭, জাতীয় পার্টির ২, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের ১ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বাবুখালী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মীর সাজ্জাদ আলীর সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বাকি মিয়ার ছেলে বিএনপিপন্থী সৈয়দ শাহ নেওয়াজ সুমন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আলী আহম্মেদ মৃধা মিঞ্জু ও জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সঞ্জয় বিশ্বাস, মিজানুর রহমান পলাশসহ ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দিঘায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকন মিয়ার সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ও সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হিরুর ছেলে আলী রেজাসহ ৯ জন; বিনোদপুরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শিকদার মিজানুর রহমানের সঙ্গে ৭ জন; রাজাপুরে নৌকার প্রার্থী মিজানুর রহমান বিশ্বাসের সঙ্গে ৬ জন; নহাটায় নৌকার প্রার্থী মো. আলী মিয়ার সঙ্গে তৈয়েবুর রহমান তুরাপ ও জাসদের অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ফিরোজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ছাড়াও মহম্মদপুর সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন রাবেয়া বেগম। তাঁর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছে ইকবাল আক্তার কাফুর উজ্জল, ইউসুফ শেখ, মহিদুল ইসলাম, বাবুল আহমেদসহ ৭ জন; পলাশবাড়িয়ায় নৌকার প্রার্থী মো. আলাউদ্দীনের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মুকুল, সৈয়দ সিকান্দার আলী মণিসহ ৭ জন; বালিদিয়ায় নৌকার প্রার্থী মফিজুর রহমান মিনার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. পান্নু মোল্যা, মো. মুরাদ আলী, মাওলানা মাহবুবুর রহমানসহ ৭ জন রয়েছেন।

প্রচারে জমে উঠেছে উপজেলার নির্বাচনী পরিবেশ। ভোটারদের মধ্যেও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কে হবেন ইউনিয়ন পরিষদের অভিভাবক।

বাবুখালী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান পলাশ বলেন, ‘এলাকার সর্বস্তরের মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। তাই আমি নির্বাচনে এসেছি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আমি বিপুল ভোট জয়যুক্ত হব। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা সক্রিয়ভাবে পাশে থাকলেও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের অনেক নেতা পক্ষে কাজ করছেন না। গোপনে তাঁরা বিদ্রোহী ও বিএনপিপন্থী প্রার্থীদের সহায়তা করছেন।

মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সব নেতা–কর্মীকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন এমন ১৫ জনকে দল থেকে ইতিমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তায়জুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে।’