যশোরের চৌগাছায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গোলযোগে শওকত আলী খান (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তিনি নিহত হয়েছেন নাকি স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানোর জন্য থানায় নিয়েছে।

একই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী পলি পারভীন (৪০) ও তাঁর ছেলে ইমরান হোসেনকে (২০) হেফাজতে নিয়েছে।

গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ ও প্রত্যক্ষদর্শী সেলিম হোসেন জানান, গতকাল শনিবার শওকত আলী খান গ্রামের সেলিম হোসেনের বাড়িতে রাজমিস্ত্রি সহকারীর কাজ করছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী পলি পারভীন ও তাঁর ছেলে ইমরান ঘটনাস্থলে এসে শওকতের কাছে পাওনা ১ হাজার ৯০০ টাকা ও ৭ কেজি চাল চান।

এ নিয়ে উভয় পক্ষের তর্কাতর্কি হয়। এ সময় পলি পারভীন গালিগালাজ করলে শওকত আলী রাগান্বিত হয়ে নিজ বাড়ি থেকে ছেলেদের ডেকে নিয়ে এসে বিতণ্ডায় জড়ান।

উভয়পক্ষের বিতন্ডার সময় তাঁড়া খেয়ে পলি পারভীন ও তার ছেলে ইমরান দৌড়ে নিজেদের ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়।

এ সময় শওকত আলীর ছেলেরা পলি পারভিনের ঘরে ইট ও লাঠি নিয়ে হামলা করলে তারা ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চায়।

এমন সময় শওকত আলী সেলিমের বাড়ির সামনের রাস্তায় পড়ে যান। নিহতের সন্তান শাওন (৬) বলেন, ‘একটি ইট বুকে লাগলে আব্বা পড়ে যায়।’

স্থানীয়রা শওকত আলীকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দুপুর ১২.৪০ মিনিটে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুর ইসলাম তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে সেলিম হোসেন মরদেহটি গ্রামে নিতে চেষ্টা করলে পুলিশ সংবাদ পেয়ে সেটি উদ্ধার করে থানায় নেয়।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুর ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ব্যক্তিরা মারধরের ব্যাপারে কিছুই বলেন নি। মৃত ঘোষণার পর তারা স্বাভাবিক মৃত হিসেবেই তাঁর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যান।’

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে সুরাহতল করা হয়েছে। সেটিতে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য আগামীকাল রোববার যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হবে।’

তবে স্থানীয়রা জানান, গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে শওকত আলীর বড় ভাবি সাদিয়া খাতুন এবং প্রতিবেশী পলী পারভীন উভয়েই নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন।

নির্বাচনে পলিকে শওকত আলী ভোট না দেওয়ায় এটি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। তাঁর জেরেই এ ঘটনা ঘটেছে।