প্রচারে হামলা, যুবক নিহত

পাবনা ও আটঘরিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫: ১১
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৪০

পাবনার আটঘরিয়ায় দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারে হামলা চালিয়ে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এদিকে হেমায়েতপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলামের তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।

আটঘরিয়ায় দেবোত্তর ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারে হামলা চালিয়ে সেলিম হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে ওই যুবকের লাশ নিয়ে উপজেলার সদর দেবোত্তর বাজার বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। নিহত সেলিম হোসেন উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের বাসিন্দা। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুরে উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের শ্রীকান্তপুর গ্রামের স্বতন্ত্র প্রার্থী কে এম শাহীন তাঁর (আনারস) কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রায়পুর গ্রামে গণসংযোগে যাচ্ছিলেন। সেখানে নৌকার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা হামলা চালায়। হামলায় সেলিম হোসেন আহত হলে পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কে এম শাহীন বলেন, নির্বাচনী প্রচারে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলায় চালালে সেলিম হোসেন আহত হন। পরে আহত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. মোহাইমিন হোসেন চঞ্চলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। 
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে উপজেলার সদর দেবোত্তর বাজার চৌরাস্তা মোড়ে লাশ রেখে প্রায় ১ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাকসুদা আক্তার মাসুর নেতৃত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবিরের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।

এদিকে পাবনার হেমায়েতপুরে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলামের তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার দিকে নির্বাচনী অফিসগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলামের। হামলার জন্য তিনি দলের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাউদ্দিন মালিথা ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম (আলম হাজিকে) অভিযুক্ত করেছেন।

নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম মধু অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা নৌকা প্রতীক না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছেন। নীতি নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে জামায়াতের প্রার্থীর সঙ্গে আঁতাত করে তাঁকে নির্বাচনে মাঠ থেকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করছেন। তাঁর ভোটার ও কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাতে শুক্রবার রাতে নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে তাঁরা। একই সঙ্গে গুলি ছুড়েও তাঁর কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার বিচার চান।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। বর্তমান চেয়ারম্যান আনারস প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী আলাউদ্দিন মালিথা বলেন, নির্বাচনে জনসমর্থন না পেয়ে নৌকার প্রার্থী তাঁকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। 
স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জামায়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। এর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 
হেমায়েতপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাজমুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত