তানিম আহমেদ, ঢাকা
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার জন্য বিএনপিসহ একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বন্ধুদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে তারা।
তাই আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনীতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে জন্য তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপকর্ম তাঁদের জানানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার গেরো
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ চাপে আছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারকে পিআর সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কথা বলা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নেয়, তাদের ফলো করে কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। তাই আগে থেকে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
এরই অংশ হিসেবে নির্বাচনের আগে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের সিমলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৈত্রী সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবারই আওয়ামী লীগ ও সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সিমলা গিয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও ভালো সম্পর্ক। তাদের মধ্যে আমাদের কথাগুলো ক্লিয়ার করা যেতে পারে। এই অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে
এক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এক বছরে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে চাল, ডালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। সরকারি টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকে সাজানো পণ্য কিনতে ভিড় করেছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেখানে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ—এ চারটি পণ্যের চাহিদা বেশি। নির্বাচনের আগে বিষয়টি বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, ডাল, গম, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। যাতে করে সরকার অনেক ছাড় দেওয়ার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এটা যে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে দাম বেড়েছে, এই ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। দল হিসেবে আমরাও চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। এই ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নেবে।’
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, ডাল, চিনির দাম বেড়েছে। সমুদ্রপথে বেড়েছে জাহাজের ভাড়া। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলছেন, পণ্যের দাম বাড়া কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এই ব্যাপারে উচিত হলো, অন্যান্য দেশ যেভাবে ট্যাকেল করছে, অর্থাৎ সেখানে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমন্বয় করছে। এটা কোনো দেশ বা সরকারের ব্যক্তিগত না। সাধারণ জনগণের সমস্যা। তাই সবাইকে নিয়েই এটার সমাধান করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীব্যাপী অস্থির বাজার পরিস্থিতির ধকল সামাল দিতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা বাজারের ওপর বিরতিহীন নজর রাখছি এবং সংকট উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে বিএনপিসহ আটটি দল অংশ নেয়নি। একইভাবে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি নতুন ইসির জন্য নাম আহ্বান করলেও তাতে নাম দেননি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দলগুলোর দাবি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে লাভ নেই। নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য তারা আন্দোলন করবে।
তবে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আন্দোলনকে ইস্যু হিসেবে মনে করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, দেশের মানুষের দাবি ছিল ইসি একটি আইনের মাধ্যমে হতে হবে। সেই আইনটি সর্বসম্মতভাবে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যাতে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সাংসদ সদস্যরাও ছিলেন। এখন নতুন কমিশন গঠন নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তেমন তুলতে পারবে না।
কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
ফারুক খান বলেন, ‘সংসদে বিএনপির সাংসদরা আইনের পক্ষে কথা বলেছিল। এখন তারা আইনের বিরুদ্ধে বলছে। এটা তাদের চরিত্র। আমরা মনে করি দলটির উচিত হবে সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
ডিজিটাল আইনের নতুন নীতিমালা
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া বিধি অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারী কোনো বার্তা আদান-প্রদান করলে আদালত ও বিটিআরসির নির্দেশ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বার্তা প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করে দিতে হবে। প্রথম ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে অবস্থান করেন, তবে দেশে যিনি অবস্থান করবেন, তিনি ‘প্রথম’ বলে অভিযুক্ত হবেন।
নতুন এই নীতিমালাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এখানে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, তাঁরা যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণকে সচেতন করতে পারেন। মানুষের ভিউ যাতে তুলে ধরতে পারেন, সেই সুযোগ থাকা উচিত। সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেশন-২০২১ আইন না হওয়া এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করার বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা, নির্বাচন কমিশন গঠন, ডিজিটাল আইনসহ কয়েকটি ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। এরই মধ্যে আবার বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলে আসছে বিএনপি। নির্বাচন কাছে এলে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ার আশঙ্কা। তাই এখন থেকে চাপ এড়ানোর কৌশল খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এরই মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিকে ঘোলাটে করার জন্য বিএনপিসহ একটি পক্ষ চেষ্টা করছে। তারা পশ্চিমা ছাড়াও আওয়ামী লীগের বন্ধুদের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছে। এ ছাড়া পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে তারা।
তাই আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, রাজনীতি যাতে ঘোলাটে না হয় সে জন্য তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। সেখানে দেশের উন্নয়নের কথা তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপকর্ম তাঁদের জানানো হবে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার গেরো
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত ১০ ডিসেম্বর ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগ চাপে আছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারকে পিআর সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগের কথা বলা বলেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকের কার্যপত্রে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় বলেছে, শ্রম আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বৈঠকে বলা হয়, বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব পদক্ষেপ নেয়, তাদের ফলো করে কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ। তাই আগে থেকে সরকারকে তৎপর হতে হবে।
এরই অংশ হিসেবে নির্বাচনের আগে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন দেশ সফর করবেন। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের সিমলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৈত্রী সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে গত বৃহস্পতিবারই আওয়ামী লীগ ও সরকারের একটি প্রতিনিধিদল সিমলা গিয়েছে। সেখানে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাপান, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব আমাদের বন্ধু। এই দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রেরও ভালো সম্পর্ক। তাদের মধ্যে আমাদের কথাগুলো ক্লিয়ার করা যেতে পারে। এই অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে
এক বছর ধরেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এক বছরে সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে চাল, ডালসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের। সরকারি টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ট্রাকে সাজানো পণ্য কিনতে ভিড় করেছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সেখানে চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজ—এ চারটি পণ্যের চাহিদা বেশি। নির্বাচনের আগে বিষয়টি বড় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, ডাল, গম, চালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। যাতে করে সরকার অনেক ছাড় দেওয়ার পরেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এটা যে কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘জিনিসপত্রের যে দাম বেড়েছে, এই ব্যাপারে সরকার সতর্ক আছে। দল হিসেবে আমরাও চাই জিনিসপত্রের দাম কমুক। এই ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নেবে।’
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, ডাল, চিনির দাম বেড়েছে। সমুদ্রপথে বেড়েছে জাহাজের ভাড়া। এ কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলছেন, পণ্যের দাম বাড়া কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এই ব্যাপারে উচিত হলো, অন্যান্য দেশ যেভাবে ট্যাকেল করছে, অর্থাৎ সেখানে সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমন্বয় করছে। এটা কোনো দেশ বা সরকারের ব্যক্তিগত না। সাধারণ জনগণের সমস্যা। তাই সবাইকে নিয়েই এটার সমাধান করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়। করোনা-পরবর্তী সময়ে পৃথিবীব্যাপী অস্থির বাজার পরিস্থিতির ধকল সামাল দিতে আমাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। আমরা বাজারের ওপর বিরতিহীন নজর রাখছি এবং সংকট উত্তরণের আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিতর্ক
নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ডিসেম্বর মাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি। এতে বিএনপিসহ আটটি দল অংশ নেয়নি। একইভাবে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি নতুন ইসির জন্য নাম আহ্বান করলেও তাতে নাম দেননি বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। দলগুলোর দাবি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে লাভ নেই। নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য তারা আন্দোলন করবে।
তবে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আন্দোলনকে ইস্যু হিসেবে মনে করছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, দেশের মানুষের দাবি ছিল ইসি একটি আইনের মাধ্যমে হতে হবে। সেই আইনটি সর্বসম্মতভাবে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। যাতে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির সাংসদ সদস্যরাও ছিলেন। এখন নতুন কমিশন গঠন নিয়ে তাঁরা রাজনৈতিক ফায়দা তেমন তুলতে পারবে না।
কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
ফারুক খান বলেন, ‘সংসদে বিএনপির সাংসদরা আইনের পক্ষে কথা বলেছিল। এখন তারা আইনের বিরুদ্ধে বলছে। এটা তাদের চরিত্র। আমরা মনে করি দলটির উচিত হবে সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
ডিজিটাল আইনের নতুন নীতিমালা
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করেন দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের জন্য নতুন খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে। খসড়া বিধি অনুযায়ী, বিধি লঙ্ঘনকারী কোনো বার্তা আদান-প্রদান করলে আদালত ও বিটিআরসির নির্দেশ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বার্তা প্রথম যিনি দিয়েছিলেন, তাঁকে শনাক্ত করে দিতে হবে। প্রথম ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে অবস্থান করেন, তবে দেশে যিনি অবস্থান করবেন, তিনি ‘প্রথম’ বলে অভিযুক্ত হবেন।
নতুন এই নীতিমালাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নতুন সংস্করণ বলে দাবি করছেন অনেকেই। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এখানে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমকর্মীদের একটি জায়গা থাকা উচিত। কারণ, তাঁরা যাতে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনগণকে সচেতন করতে পারেন। মানুষের ভিউ যাতে তুলে ধরতে পারেন, সেই সুযোগ থাকা উচিত। সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত।
ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেশন-২০২১ আইন না হওয়া এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান। তিনি বলেন, ‘দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করার বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হওয়া উচিত। এই ক্ষেত্রে সরকারেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৩ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৬ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৬ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১০ দিন আগে