করোনার অচলাবস্থা কাটার পর থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য তৈরি থাকাটা এখন চাকরিপ্রত্যাশীদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মাস দেড়েক ধরে প্রতি শুক্রবারেই বহু চাকরিপ্রত্যাশীকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুটো বা তারও বেশি পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। আজ শুক্রবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা।

ছুটির দিনে একই সময়ে একাধিক পরীক্ষার ভিড়ে দু-একটি পরীক্ষা ছাড়তে হচ্ছে অনেক চাকরিপ্রত্যাশীর। এই সমস্যা থেকে তাঁদের মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) শুক্র ও শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার পরেও যাচ্ছে না এ সমস্যা।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা। এগুলো হলো কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদের মৌখিক, সোনালী ব্যাংকের অফিসার (আইটি) পদের এমসিইউ, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সহায়কের মৌখিক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত

মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকের ব্যবহারিক এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যাটালিয়ন আনসার পদের বাছাই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হয়েছে এসব পরীক্ষা।

আজ ১৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা আছে। এগুলো হলো কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, পদ্মা অয়েল কোম্পানি, শিল্প মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, স্থাপত্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরীক্ষা।

এরপর আগামীকাল শনিবার রয়েছে সরকারি পাঁচ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা। একসঙ্গে এতগুলো পরীক্ষা হওয়াটা বেকারদের সঙ্গে নিষ্ঠুর তামাশা উল্লেখ করে চাকরিপ্রত্যাশী যুব প্রজন্মের প্রধান সমন্বয়ক রিপন হোসাইন বলেন, ‘টাকা খরচ করে আবেদন করেও আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি না। বয়সও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জানালেন, সমন্বয় করে পরীক্ষা নেওয়াটা আপাতত সম্ভব নয়। তবে ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডের পরীক্ষা একসঙ্গে নেওয়া যায় কি না, সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে। এটা করা হলে চাকরিপ্রত্যাশীদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করেন তিনি।

অন্যদিকে একই দিনে এতগুলো নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ায় রাজধানীতে তীব্র যানজটের আশঙ্কাও রয়েছে। যানজটের কারণে পরীক্ষার্থী অথবা সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়ে, সে বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ সতর্ক থাকবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ। তিনি বলেছেন, ‘শুক্রবার নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বাড়তি যানজট এবং জনদুর্ভোগ এড়াতে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা যান চলাচল ঠিক রাখব। প্রার্থীরা যেন সহজে পরীক্ষার হলে যেতে পারে এবং সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারেন, সেটা আমরা দেখব।’